ISIS / ISIL / Waffen / @albaraka_news

গত পর্ব ( বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-৫ ) ছিল নাইন-ইলাভেনের শেকড় অধ্যায়ের শেষ পর্ব। বলেছিলাম, এতো কেবল সুচনা গেল, আগামী পর্বগুলোতে আমরা সবাই মিলে সুত্র মিলাবোঃ নাইন-ইলাভেনের ষড়যন্ত্রের ফসল ঘরে তুলতে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে কি কি ইতিহাস ধিকৃত অমানবিক কান্ড ঘটিয়েছিল আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরব সহ তাদের দোসর পাকিস্তান। জানবো,  আফগানিস্তান যুদ্ধের ঘটনার অন্তরালের ঘটনাগুলো একটার পর একটা সুত্র মিলিয়ে। মিলাবো তথ্য সুত্র পর্বঃ ৬ এ।

এক নজরে চলুন দেখে নেই, আফগানিস্তানের জঙ্গিবাদের বীজতলায় যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান, সৌদি আরব এর ধংস যজ্ঞের যে তথ্য সুত্র মিলাবো, উত্তর খুজবো কি কি প্রশ্নের, তাঁর সুচিরুপঃ

  • লাদেনের সেই ‘গর্তে’ পালা করে মুজাহিদদের গেরিলা প্রশিক্ষন দিতে আসতেন পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেনা কর্মকর্তারা। গেরিলাযুদ্ধ, আত্মঘাতী হামলা, গাড়িতে বিস্ফোরক লুকিয়ে হামলা-এইসব কৌশলই আইএসআই আর সিআইএ’র কাছ থেকে শিখেছিল নাকি জঙ্গীরা!! আসলেই কি তাই?
  • সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার পাচ্ছে পাকিস্তান ও তাঁর সেনাবাহিনী, আর এ কারনেই নাকি টিকে থেকে সোনার ডিম পাড়া হাঁস-তালেবান?

simble

  • রুশ বিরোধী লড়াইয়ে আফগান জঙ্গীদের নাকি সরাসরি সিআইএ সাহায্য ও প্রশিক্ষন দিত?
  • আফগান শিশুদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রনীত জিহাদী বই।
  • আফগান রণাঙ্গনে নাকি সব সময় তৎপর ছিল সৌদি আরব ও আইএসআই?
  • দেশান্তরি লাদেন কিভাবে জঙ্গী হয়ে উঠল?
  • কিভাবে যাত্রা শুরু করলো আল-কায়দা?
  • এবং এই অধ্যায়ের সব শেষেঃ মোস্ট ওয়ান্ডেড লাদেন।

চলুন এই অধ্যায়ের উত্তর খুঁজি পর্ব ৬ থেকেঃ

 ২০১৪ সালের জুনে মার্কিন দৈনিক খবর ফাঁস করেছে-‘বিন লাদেনের পুতুল তৈরি করছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’। দানবীয় চেহারার এই লাদেন পুতুল তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিখ্যাত খেলনা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হাসব্রো এক্সিকিউটিভকে। চীনে চলছে এই পুতুল বানানোর কাজ। ভয়ঙ্কর চেহারার লাদেন পুতুলকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ছড়িয়ে দেবার পরিকল্পনা সিআইএ’র। উদ্দ্যেশ্য ছোটবেলা থেকেই শিশুদের মনে লাদেনরুপি জঙ্গীদের বিরুদ্ধে ঘৃনা তৈরি করা।

আল-কায়দা তথা বিন লাদেনের জন্ম রহস্য যারা জানেন এই খবর তাদের কাছে সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা কৌতুক। সেটা এ কারনে যে ২০১৪ সালের দানবীয় লাদেন পুতুলই শুধু নয়। রক্ত মাংসের একজন লাদেন আর আল-কায়দা নামের ভয়ঙ্কর একটি দানবীয় সংগঠনের জন্মদাতা যুক্তরাষ্ট্র ও তাঁর দীর্ঘ দিনের বন্ধু সৌদি আরব। পুরো ৮০’র দশক থেকে শুরু করে নতুন শতাব্দির সূচনা পর্যন্ত দুই দশকে অর্থ, অস্ত্র আর প্রশিক্ষন দিয়ে কিভাবে একটু একটু করে বিন লাদেন ও আল-কায়দা নামের এই ফ্রাঙ্কেনস্টাইন তৈরি করা হল সেই তথ্য এখন অনেকটাই প্রকাশ্য। সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার পতন আর সেই পতনের পর নয়া শত্রু হিসেবে জঙ্গীবাদের উত্থান; ইতিহাসের এই দুই পর্বেই যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ ও সৌদি আরবের প্রানের বন্ধু ছিলেন বিন লাদেন। এমনকি এই বন্ধুত্ব অটুট ছিল নাইন-ইলাভেনের সূচনা লগ্নেও। ফ্রান্সের ফাঁস হওয়া গোয়েন্দা তথ্য অন্তত সেটাই বলছে।

২০০১ সালের নভেম্বরে বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোতে ছাপা হওয়া একটা খবর দুনিয়াজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। খবরটা হলো-‘বিন লাদেনের সাথে এজেন্টের সাক্ষাত’। সময়টা ছিল নাইন-ইলাভেন ট্র্যাজেডির মাত্র দুই মাস আগে। ৪ জুলাই ব্যাক্তিগত একজন চিকিৎসক, একজন নার্স ও চার দেহরক্ষী নিয়ে পাকিস্তানের কোয়েটা থেকে দুবাইয়ে আসেন বিন লাদেন। তাঁর শরীরের অবস্থা ভাল নয়। তিনি হেপাটাইটিস সি-তে ভুগছেন। সেই সাথে কিডনিতে ইনফেকশান। নিয়মিত কিডনি ডায়াকাইসিস করাতে হচ্ছে তাকে। লাদেন ভর্তি হয়েছেন দুবাইয়ের একটি আমেরিকান হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগে। সেখানেই তাঁর সাথে দেখা করতে আসেন দুবাইয়ে থাকা সিআইএ’র এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। প্রথমে তাকে ঐ হাসপাতালের লিফটে এবং পরে তাকে লাদেনের রুমের দিকে যেতে দেখা গেছে। এর কদিন পরই সি আইএ’র ঐ অফিসারকে ওয়াশিংটনে ডেকে পাঠানো হয়। তারপর আসেন আরো একজন সিআইএ এজেন্ট। দশদিন ঐ হাসপাতালে ছিলেন লাদেন। এই দশদিনে সৌদি আরবের আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার আনাগোনা দেখা গেছে, ঐ হাসপাতালে। তাদের একজন সৌদি গোয়েন্দা প্রধান প্রিন্স তুর্কী আল ফয়সাল। নাইন-ইলাভেনের আগে পরে যুক্তরাষ্ট্রে তুর্কীর রহস্যময় তৎপরতার কথা আপনারা আগেই জেনেছেন। মূলত ৮০’র দশক থেকেই আফগান মিজাহিদ এবং বিন লাদেনের সাথে তুর্কীর যোগাযোগ। (The Guardian, Thursday, 1 November, 2001)।

doll 2rusia warosama war russia1ছবিঃ দানবীয় চেহারার লাদেন পুতুল ও আফগানিস্তানে রুশ বিরোধী লড়াইয়ে বিন লাদেন।

লাদেনের অবস্থা তখন রীতিমত সংকটাপন্ন। ডাক্তাররা বলছিলেন তিনি বড়জোর দুই কি তিন বছর বাঁচবেন। নিয়মিত কিডনি ডায়ালাইসিসের জন্য তাকে একটি বহনযোগ্য মেশিন আফগানিস্তানের কান্দাহারে নিয়ে যাবার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তাররা। তবে দুবাইয়ের এই রিপোর্ট নয়-বরং গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা নেতারা। খবরটা বরাবরই জোর গলায় অস্বীকার করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। যেমনটা অস্বীকার করা হয়েছিল টুইন টাওয়ারে হামলা-হামলার পূর্বাপর অনেক তথ্য। ফরাসি গোয়েন্দাদের কাছ থেকে এই তথ্য ফাঁস হওয়াকে কেন্দ্র করে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তখন অনেকখানি জল ঘোলা হয়েছিল। সে অন্য ইতিহাস। আমরা একটু ফিরে যেতে চাই আরও অতীতে ১৯৮৬ সালের বসন্তে!!!!!!

কি সেই ইতিহাস, মিলাবো তথ্য সুত্র, জানবো পর্বঃ ৭।

সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, চোখ-কান খোলা রাখুন; নিরাপদে থাকুন।।

বিঃদ্রঃ বে দুঃখ প্রকাশ করছি যে, একেকটা পর্ব দিতে আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে, প্রতি শনিবার পর্বগুলো দেবার ইচ্ছে থাকলেও ব্যাক্তিগত কাজের ব্যাস্ততার কারনে পোষ্ট দিতে দেরি হয় বলে আমি দুঃখিত, যারা নিয়মিত পর্বগুলো পড়ে আমাকে উৎসাহ দিচ্ছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ। সোনেলা কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ, লিখাটি নিয়মিত প্রকাশে সহযোগিতা করার জন্য। অনেকে সীমান্ত উন্মাদের ফেইসবুক আইডিতে সীমান্ত উন্মাদের পরিচয় জানতে মেসেজ দিচ্ছেন, কিন্তু আমি নিরাপত্তা জনিত কারনে আমার পরিচয় জানিয়ে আপনাদের অনেকের পাঠানো ফেইসবুক বার্তার উত্তর দিতে পারছিনা বলে অনেক অনেক ব্যাথিত এবং একি সাথে আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আমরা এমন একটি সমাজে বসবাস করছিঃ হুমকিই যেখানে আশ্বাস, বেঁচে থাকাটা সেখানে বোনাস বলে বিবেচিত হচ্ছে। সীমান্ত উন্মাদ এই সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাংলাদেশের ১৭ কোটির মানুষেরই প্রতিচ্ছবি। সীমান্ত উন্মাদ সোনেলা ব্লগের প্রত্যেক ব্লগারের কণ্ঠ কণ্ঠস্বরের প্রতিধ্বনি, যারা প্রানের চেয়ে ভালবাসে দেশ, মাটি ও মাতৃভূমিকে। শুভকামনা নিরন্তর।

আগের পর্বগুলোঃ

বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। ভূমিকা পর্ব।

বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-১।

বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-২।

বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-৩

বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-8।

বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। পর্ব-৫।

৬৭১জন ৬৭১জন
0 Shares

১৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ