অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি, বাঙালি ইতিহাসের এক গৌরবময় দিন। যেদিন ভাষার জন্য বাঙালির এই আত্মদানের দিনটিকে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। বাঙালির সঙ্গে গোটা বিশ্ববাসী এ দিনটিকে পালন করবে মাতৃভাষার প্রতি গভীর ভালোবাসা বুকে নিয়ে।
নেট ঘেটে দেখলাম এর ব্যতিক্রম ঘটে না পাকিস্তানেও। প্রতিবছর দেশটিতে কাগজে কলমে ভালোভাবেই ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়। করাচি, ইসলামাবাদ ও লাহোরের মত শহরেও দিবসটি ঘটা করেই পালন করা হয়।
এদিন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভাষা বিষয়ক সেমিনার হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও আয়োজন করা হয় বিশেষ আলোচনার। থাকে প্রভাতফেরির আয়োজন। তবে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে কেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়, সে বিষয়ে সঠিক ইতিহাস জানে না পাকিস্তানের নতুন প্রজন্ম।
তারা জানেওনা আজ থেকে ৬৬ বছর আগে এ দিন ঢাকার রাজপথ হয়ে উঠেছিল উত্তাল। পাকিস্তানি শাসকদের হুমকি-ধমকি, রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে ভাষার দাবিতে রাজপথে নামে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র-শিক্ষক, শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সী অসংখ্য মানুষ। বসন্তের আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে হাজারো কণ্ঠে আওয়াজ ওঠে, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। এ সময় আকস্মিক জনতার মিছিলে গর্জে ওঠে পুলিশের গুলি। সালাম, বরকত, রফিক, শফিক, জব্বারসহ বাংলা মায়ের অকুতোভয় সন্তানদের তাজা রক্তে রঞ্জিত হলো মাটি। মানব ইতিহাসে সংযোজিত হলো এক অভূতপূর্ব অধ্যায়। সে অমর একুশের পথ ধরেই উন্মেষ ঘটে বাঙালির স্বাধিকার চেতনার।
কিন্তু সে ব্যাপারে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের এবং স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের কখনওই স্বচ্ছ ধারণা দেয়া হয়না। কেবল ১৯৫২ সালে উর্দুর মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা এবং একটি ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে কিছু ধারনা রয়েছে তাদের। দেশটির পাঠ্যক্রমেও এ বিষয়ক পূর্ণ ইতিহাসের অনুপস্থিতি রয়েছে।
বহু জাতিগোষ্ঠীর দেশ পাকিস্তানে ৬৫ থেকে ৭২টির মতো বিভিন্ন ভাষার চর্চা রয়েছে। তবে এই সবগুলো ভাষার সঠিক চর্চা এবং সব গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় লেখাপড়ার সুযোগ নেই।
(সুত্র: নেট থেকে)
২৩টি মন্তব্য
রিতু জাহান
হুম, বর্তমানে আন্তর্জাতিকভাবে বেশ ঘটা করেই এ দিবসটি পালন করা হয়। তবে পাকিস্তান যে করে এটাতে বেশ বিস্ময়কর লাগে আমার কাছে।
আমিও সেদিন পড়লাম বিষয়টা।
সালাম আমাদের সে সব ভাষা শহীদদের প্রতি।
শুভকামনা জানবেন।
তৌহিদ
পাকিস্তান পালন করেতো ঠ্যালায় পড়ে, না হলে বাংলাদেশের ১৪ গুষ্ঠি উদ্ধার করতে তারা মোটেও পিছপা হয়না। আমরা আসলেই ভাগ্যবান জাতি। যদি এরকম হতো তাদের জন্য আমাদের এরকম কিছু পালন করতে হচ্ছে!! আমিতো চিন্তা করতেই ভয় পাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
পাকিস্তানে একুশে ফেব্রুয়ারী পালিতো হয়, এটা আমার জানা ছিলো না। শুনেছি ওরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও কারন সম্পর্কে তাদের নব-প্রজন্মদের ভুল-ভাল তথ্য দিয়েছে। সেখানে বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন নিয়ে সঠিক তথ্য আর ইতিহাস তুলে ধরবেনা এটা বলা বাহুল্য। পাকিস্তান শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে শুধুমাত্র দেশটির সরকার ও বিদ্বেসী মনোভাব সম্পন্ন শাষকদের কারনে। তাদের জন্যে আপনার সাথে আমিও সমবেদনা জানাই।
লেখা ভালো লাগলো পড়ে ভাই। শুভ কামনা।
তৌহিদ
ইউনেস্কো এ দিবসটি ঘোষনার পর থেকে তারা পালন করতে বাধ্য হয় আপু। ভাবতেই ভালো লাগে আমাদের ভাষার জন্য এখন তারাও এ দিবস পালন করে, করতে বাধ্য। মাঝেমধ্যে মনেহয় চিৎকার করে তাদের বলি – দ্যাখ শয়তান, কেমন লাগে!!
সাবিনা ইয়াসমিন
হুম, বলতে পারলে মন্দ হতো না। তবে কিনা মশা আমাদের যতই কামড়াক আমরা কিন্তু মশাদের কামড়াই না। মেরে ফেলি 😂
তৌহিদ
হা হা হা
ইঞ্জা
এ বিষয়টি জানতাম না, ধন্যবাদ আমাদের সাথে বিষয়টি জানানোর জন্য, এর সাথে আমি আরেকটি বিষয় যোগ করতে চাই, তারা এয়ো জানেনা তাদের পূর্বপুরুষ কতো জঘন্য ভাবে ‘৭১এ আমাদের দেশকে মৃত্যুপুরী বানিয়ে দিয়েছিলো, কতো ভয়াবহ নৃশংসতা করেছিলো, তারা যা জানে তা হলো ভারতীয় সেনাবাহিনীই এইসব করেছিলো। 😤
তৌহিদ
জ্বী দাদা, ঠিকই বলেছেন। তাদের প্রজন্ম জানে ভারতের সাথে তাদের যুদ্ধ, এদেশের সাথে নয়। সঠিক ইতিহাস তাদের কাছে লুকিয়ে রেখেছে বা লজ্জায় আমাদের কথা বলতে চায়না।
মন্ত্যব্যের জন্য ধন্যবাদ দাদা।
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা ভাই
জিসান শা ইকরাম
এটিই সবচেয়ে আনন্দের যে, ওরা জাতিয় ভাবে এই দিবস পালন করে।
বাংলাদেশের অভ্যদয়ের ইতিহাস ওদের বইতে অনুপস্থিত।
এমন পোস্ট দেয়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
তৌহিদ
আমাদের প্রজন্মের জানা উচিত তারা কি করে আসলে আমাদের সাথে। তাদের দেশের ছেলেমেয়েরা মুক্তিযুদ্ধ জানেনা। তারা জানে ভারতের সাথে তাদের যুদ্ধ হয়েছে। কি লজ্জা!!
আর এখনতো ২১শে ফেব্রুয়ারি পালন করতে তারা বাধ্য।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
ছাইরাছ হেলাল
ওরা ইউনেস্কোর ঘোষণানুজায়ী এ দিনটি পালন করে, প্রকৃত ইতিহাস জানে না,
জানার চেষ্টা করে বলেও মনে হয় না, মাথামোটা ওরা।
সময় উপযোগী সুন্দর লেখা।
তৌহিদ
ধন্যবাদ ভাই, তারা আসলেই গন্ড মূর্খই থেকে গেলো। দেখেন না মুক্তিযুদ্ধের সময় কৃতকর্মের জন্য আজও ক্ষমা চায়নি।
মাহমুদ আল মেহেদী
পাকিস্তান যে ২১শে ফেব্রুয়ারি পালন করে তা আসলেই জানলাম ভাই আপনার মাধ্যমে। এবং তারা কি প্রকৃত ঘটনা কি তাদের প্রজন্মের কাছে তুলে ধরে তা তো মনে হয় না ।
তৌহিদ
তুলে ধরবে কিভাবে? না হলে যে নতুন প্রজন্মের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এটা তাদের জন্য লজ্জার।
নিতাই বাবু
যেই পাকিস্তান ভাষা আন্দোলনকারীদ্রর উপর চড়াও হয়েছিল, সেই পাকিস্তান যে বর্তমানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি ঘটা করে পালন করে, তা সত্যি আগে জানা ছিল না। আপনার পোস্টের মাধ্যমেই জানা হলো। ধন্যবাদ অজস্র। ভালো থাকবেন আশা করি।
তৌহিদ
পোষ্টটি তাহলে দেয়া স্বার্থক হয়েছে দাদা। ভালো থাকবেন, পাশে থাকবেন।
মোঃ মজিবর রহমান
ওরা পালন করতে হয় আন্তর্জাতিকভাবে তাই করে, ের পুরনিতিহাস পাঠ করে যদি না করে তবে তাঁরা খুবই অপাকজাতি।
তারপরও আমরা সৌভাগ্যবান যে তাঁরা করছে।
তবে বিশ্বাস একদিন না একদিন ইতিহাস জানবেই। এবং তাঁদের অতীত পুরুষদের অনেকে ঘৃণা করবে।
তৌহিদ
সেদিন অবশ্যই আসবে। যেদিন বাংলাদেশের কাছে পাকিরা ক্ষমা চাইবে। আমরা না হোক,আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তা দেখবেই দেখবে।
শুন্য শুন্যালয়
দুঃখজনক হলেও সত্যি আমরা অন্যদের নিয়ে চর্চা বেশি করছি। পাকিস্থান কে নিয়ে যেদিন থেকে আমরা আলাপ বন্ধ করবো, সেদিনই আমরা সত্যি মুক্ত হবো। ইগ্নোর করার চাইতে বড় প্রতিশোধ কিন্তু আর নেই।
আমরা নিজেরাই ২১শে ফেব্রুয়ারীকে শুধুমাত্র ভাষা আন্দোলন বা শহীদ দিবসে আটকে রেখেছি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এখন বেশ বড়সড় করে অনেক দেশেই পালন করা হয়। আমাদের দেশের কজন বলতে পারবে এবছরের থীম কী ছিলো? আমার মনেহয় ৮০%ই পারবে না। আন্তর্জাতিক শব্দটা ব্যবহার করলে দায়িত্ব অনেক বেড়ে যায়। আমরা এটার ইনিশিয়েটিভ নিয়েছিলাম, আমাদের রক্ষা করতে হবে। আদিবাসীদের ভাষার ইম্পোর্টেন্স ছিলো এবছরের থীম।
এনিওয়ে, অনেক বকলাম। 🙂
তৌহিদ
এটা ঠিক আমরা অন্যদের নিয়ে অনেকেই চর্চা বেশি করি, কিন্তু কিছু চর্চায় জ্ঞান বাড়ে এটা তেমনই পোস্ট। আন্তর্জাতিকভাবে ২১শে ফেব্রুয়ারি পালন হয় বড়সর ভাবে সেটা যেমন ঠিক, আমরা সেই পুরোনোভাবেই পালন করি এটাও ঠিক। তবে আমরা যে আবেগ নিয়ে পালন করি অন্যান্যরা সেই আবেগ নিয়ে করে কি? প্রশ্ন রাখলাম আপনার কাছেই।
আন্তর্জাতিক ভাবে পালন করলে দ্বায়িত্ব বেড়ে যায় বলেই পাকিদের জানা উচিত বা তাদের প্রজন্মের জানা উচিত কেন ২১ শে ফেব্রুয়ারিকেই এ দিবস ঘোষনা করা হলো। আশাকরি বোঝাতে পেরেছি।
শুন্য শুন্যালয়
আমি শুধু আপনার পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে এটা বলিনি, ফেসবুক লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন কেন বলেছি।
ভিন্ন মতাদর্শের মানুষরা কোনদিন সত্যিটা বুঝতে পারবেনা, তারা চলবে তাদের নিজস্ব গতিতে।
সিপাহী বিদ্রোহ ইংরেজদের কাছে বিদ্রোহই থাকবে, আর ভারতীয়দের কাছে প্রথম স্বাধীনতাযুদ্ধ।
পাকিস্থানের মতো অসভ্য একটা জাতী নিয়ে কোন আগ্রহ নেই। আমি চাই আমাদের দেশের মানুষ সত্যিকারের ইতিহাস ভালোভাবে জানুক, এটা শুধুমাত্র প্রথা না হয়ে থাকুক।
তৌহিদ
সবার বিবেক জাগ্রত হোক। ধন্যবাদ।