এত বিভীষিকা, রক্তমাখা এত জামা কিংবা
দীপ্তিহীন এত কান্না কোথায় রাখি
কোথায় রাখি আমি ও আমরা হৃদয়হীন ধর্মীয় আচার ?
কোথায় রাখি নৈরাজ্য প্রতারণা নির্মমতাকে এত
কোন কাঁধেইবা বয়ে যাই রক্তমাখা এত লাশ ?
জ্বলজ্বলে চোখের যে ছেলেটি পড়াশুনা করতো শহরে
কিংবা অসহায় মায়ের শেষ আশ্রয় মেয়েটি
যে কাজ নিয়েছিলো গার্মেন্টসে
লাশ হয়ে ফিরেছে সেও
প্রকাশ্য রাজপথে, নদীতে ভেসে, ধানক্ষেত কিংবা বন্ধ ফ্ল্যাটে
ফিরবে আরো…, ফিরছে…, ফিরছে !
দম বন্ধ করে ওরা পাঠাচ্ছে স্বাধীনতা নামক
মেকি শব্দটি উচ্চারণ করতে
আকণ্ঠ মদের নেশায় চুর হয়ে ওরা পাঠাচ্ছে
অকালমৃত্যু আর নির্মমতার বুলেটের সামনে দাঁড়াতে
বলছে উচ্চারণ করো দৃপ্তস্বরে-
উচ্চারণ করো স্বাধীনতা…, স্বাধীনতা, স্বাধীনতা !
অথচ, মাথা খুঁড়ে মরলেও উচ্চারণ করতে পারিনে
উচ্চারণ করতে দিচ্ছে না ক্ষিপ্র কিছু শব্দকে ।
ওরা ওইগুলোর নাম দিয়েছে ভয়ানক বেআইনি বিস্ফোরক !
বুকের বাঁ পাশে বইয়ে যাচ্ছে আমার ও আমাদের
বুলেটের নির্মম প্রতারণা
বইয়ে দিচ্ছে রক্তের নিবিড় স্রোত
বইয়ে দিচ্ছে…, আহারে, কেবলই বইয়ে দিচ্ছে
আমি ও আমাদের বইয়ে দিচ্ছে অবলীলায়
আমি সয়ে যাই চল্লিশ বছরের অপ্রাপ্তি আর শোক
সয়ে গেছি আমার চল্লিশ বছর, আর পারিনে…
বেদনার দীর্ঘ রজনী থেকে ভীষণ প্রয়োজনে
জানতে চাইছি করতলে নৈরাজ্য-প্রতারণা-নির্মমতায়
দুমড়ে মুচড়ে তছনছ বাসনাগুলো রেখে-
বলো কতখানি রক্ত দেবো আর, কতখানি আর চাই ?
জীবিত এইসব মানবকাঠামো গুলোতো
বিক্ষোভ হতে শেখেনি, শেখেনি অপ্রয়োজনে
বিস্ফোরক বয়ে বেড়াতেও !
তবে ক্যানো কালো ফুলের অসহায় পচনই দেখাচ্ছো
বারবার
সন্ত্রাসের মৃত্যুছোঁয়া উঠোন থেকে ?
দেখো, লাশ কুড়োবার এই দিন
সাপের ভয়ংকর দাঁতের চেয়েও বিষ বয়ে নেয় ডের ।
দেখো, যারা স্বাধীনতা স্বাধীনতা বলে বাংলার সম্ভ্রম
ফেরী করে বেড়ায়, বেড়াচ্ছে, চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে পিস্তল উঁচিয়ে
কপালের এমনই বরাত এরাই আমি ও আমাদের
ক্রুশবিদ্ধ করছে, এরাই মিথ্যের
পা তুলে দিয়েছে আমি ও আমাদের কাঁধে, দিয়েছে
বাংলার দুঃখিনী বন্দরে !
বিশ্বাসহীনতাময় শৃঙ্খল কিংবা অদৃশ্য কালো হাত
দেখো তুমিও,
বেদনার দীর্ঘ রজনী থেকে ভীষণ প্রয়োজনে
জানতে চাইছি করতলে নৈরাজ্য-প্রতারণা-নির্মমতায়
দুমড়ে মুচড়ে তছনছ বাসনাগুলো রেখে-
বলো আর কতখানি রক্ত দেবো, কতখানি আর চাই ?
দেখো, অত্যন্ত নিরুপায় হয়েই আমি বলতে এসেছি
রক্তরাঙা জামার ছোপ ছোপ আলপনায়
বাংলার মাটি ভালো নেই
আমি বলতে এসেছি স্বপ্নময়তা চৈতন্যের দাঁড়
আমিও স্বপ্ন দেখতে চাই, আমাকেও স্বপ্ন দেখতে দাও ।
দেখো, নৈরাজ্য নির্মমতায় রক্তাক্ত আমি ও আমরা
বেদনাময় বিশ্বাসহীনতায় রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছেই তাই শুনতে চাই
আমার মনন রবীন্দ্রনাথের বিশালতা
আমার হৃদয় শেখ মুজিবর রহমানের মহানুভবতা
আমার বিশ্বাস মাওলানা ভাসানীর মন্ত্রনা
দেখো, আমরা শুনতে চাই রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছ থেকে
আমরা শুনতে চাই বিরোধী পক্ষের কাছ থেকে
আমরা শুনতে চাই বাংলার বিবেকের কাছ থেকেও ।
মূলত আজকের এই মৃত্যুভুমি থেকেই আমি ও আমাদের উত্থান
না আমি ডান পক্ষের কেউ নই
আমি বামপক্ষেরও কেউ হিসেবেও নই
আমি অভিজাত কিংবা নিচু শ্রেণীর প্রতিনিধি
হিসেবেও নয় ; আমি সারা বাংলাব্যাপী ছড়িয়ে থাকা
আমার সহোদর সহোদরার একজন হিসেবে
নিষিদ্ধ সময়ের দুঃশাসনকে সবিনয়ে জানাতে চাই
হত্যা আর সন্ত্রাসময় ‘হে দুঃশাসন’ আমি মানিনা তোমাকে !
বেদনাময় দুঃসময় থেকে সবিনয়ে জানাতে চাই
ক্রুদ্ধ দেবতার মত তাকানো
দেখতে চাইছি না আমি আমি ও আমরা
ভয় পাই আমি ও আমরা, চোখ বন্ধ হয়ে আসে আমার ও আমাদের
চোখ বন্ধ হয়ে আসে আমার ও আমাদের…
মাথা তুলে সবিনয়ে এবার আমরাও বলতে চাই, ‘হে রাষ্ট্রযন্ত্র’
মৃত্যুর মঞ্চ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে তুমিও দেখো
কতখানি দুঃখ বুকে বয়ে ক্ষতবিক্ষত বাংলার মানচিত্র !
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ গঠন মূলক সমালোচনা প্রত্যাশা করছি তবে কবিতাখানি সম্পূর্ন না পড়লে কমেন্ট করবেন না দয়া করে । ভুল কিছু বললে মার্জনা চেয়ে নিচ্ছি ।
১৯টি মন্তব্য
শিশির কনা
অসাধারন লেখা । মুগ্ধ হলাম ভাই .
মর্তুজা হাসান সৈকত
ধন্যবাদ আপি । সময় নিয়ে পড়ে অভিমত জানানোয় কৃতজ্ঞতা রইল ।
প্রজন্ম ৭১
। দমবকরওরাপাঠাোধীনতানামক মিকশিটউারণকরত আকমদরনশায়চুরহয়ওরাপাঠাে অকালমৃতুআরিনমমতারবুেলেটরসামন দঁাড়ােত বলছউারণকরাদৃর-উারণকরাাধীনতা…,াধীনতা,াধীনতা ! —- —- সুন্দর কথামালা
মর্তুজা হাসান সৈকত
দুঃখিত প্রজন্ম ৭১ আপনার এ মন্তব্যটি আমি মূলত বুঝতে পারিনি ।
জিসান শা ইকরাম
প্রজন্ম ভাই এটা কি লিখলেন ?
সুন্দর কথামালা ব্যাতিত আর কিছুই তো বুঝলাম না ।
ছাইরাছ হেলাল
দেখুন আলোচনা বা সমালোচনা যাই বলুননা কেন তা করার যোগ্যতা রাখি না ।
তবে যেহেতু পড়তে পছন্দ করি তাই পড়েছি আমার মত করেই ।
একজন নিপাট দেশ প্রেমিকের হৃদয় নিংড়ানো আর্তি বেশ ভাল ভাবেই উপলব্ধি করতে পারছি ।
বর্তমান সব বাস্তবতা তুলে ধরেছেন দারুন পক্ষপাত বিহীন হয়েই । এটি বেশ ভাল হয়েছে ।
এ দেশ আমার , আমাদের এ দেশ ।
আর একটি কথা , এত বড় কবিতায় ধারাবাহিক তাল লয় রক্ষা করা অনেক সময় ই কঠিন
হয়ে পরে । তবে আপনি সামলে নিয়েছেন বলেই মনে হয় ।
অত্যন্ত আনাড়ি হয়েও অনেক কথা লিখলাম ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
আমিতো মূলত গল্প ঢঙের কবিতা লিখে অভ্যস্ত তাই আমার কবিতাগুলো খানিকটা বড়ই হয়ে থাকে । তাই বড় কবিতার অলি গলি খানিকটা চেনা আমার ; একটু আধটু সাহস করতে করতে কবিতা তাই বড়ই হয়ে যায় । ধন্যবাদ সুন্দর অভিমতের জন্য ও আরেকটা কথা আনাড়ি কথাটা সবিনয়ে প্রত্যাখান করলাম । একদিন সমকালীন কবি ও কবিতা নিয়ে আপনার সাথে আলাপচারিতার ইচ্ছে রইল ।
ছাইরাছ হেলাল
আসলে শ্রোতা হিসেবে আমার সামান্য সুনাম কিন্তু আছে ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
🙂 🙂 🙂
জিসান শা ইকরাম
লেখায় লক্ষ কন্ঠের আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হয়েছে
এমন জিজ্ঞাসা এখন সুস্থ বিবেকবান সাধারন মানুষের
হাহাকার , হতাশা , ক্রোধ – সব কিছু উপেক্ষা করে একদিন আমরা আলো দেখবোই ।
অসাধারন একটি কবিতা ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
ধন্যবাদ ভাইয়া । কবিতাটি মধ্য ফেব্রুয়ারিতে লিখা । কবিতাটি মূল অনেকেই অনুধাবন করতে পারেন না এছাড়াও বিভিন্ন কারনে অনেকদিন আলোয় আনিনি । এখন বেশ কয়েক জায়গায় ছড়িয়ে দিলাম ।
আদিব আদ্নান
ভাবনার সমকালীনতায় আধুনিক মননশীলতার পরিচয় পেয়ে ভাল লাগল ।
কবিতার বিষয়ে মতামত দেয়ার সক্ষমতা বহন করি না ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
আপনার এ বিনয় আমাকে মুগ্ধ করেছে তবে আপনি বোধহয় মতামতের চেয়েও বেশী কিছু দিয়ে ফেলেছেন । ২ বছর আগের আমার আমিকে দেখতে পেলাম আপনার মন্তব্যের ভেতর থেকে । ভালো থাকুন সতত ।
প্রজন্ম ৭১
বুঝলাম না এমন কেনো হয়েছে । আমি মোবাইল দিয়ে কপি পেস্ট করেছিলাম কবিতার দুই লাইন । এখন তো আমি নিজেই অবাক হলাম ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
ওসব হিসেব থেকে বাদ । ভালো থাকুন সতত ।
বনলতা সেন
এমন লেখায় মন্তব্য করা আমার জন্য কঠিন ,সমালোচনার প্রশ্নই অঠেনা ।
তবে অনেকগুলো বিষয়ে আপনার পর্যবেক্ষেণ বেশ সুক্ষ্ম কিন্তু সুন্দর ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
এটা কী হলো ; মন্তব্য নয় কী ? এরচে সুন্দর মন্তব্য আমি প্রত্যাশা করিনি ।
সোহেল মাহামুদ(অতি ক্ষুদ্র একজন)
আপনার লেখনী হাত চমৎকার। বিশেষ করে শব্দের দখল প্রশংসনীয়…। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সুগভীর ভাবনা কবিতায় স্পষ্ট ফুটে উঠেছে।
মর্তুজা হাসান সৈকত
ধন্যবাদ ভাইয়া । ভালো থাকুন । আমি মূলত আমার মত করেই চেষ্টা করে যাচ্ছি জানিনা কতটুকুন পারবো ।