এক যে ছিল বৃদ্ধ জেলে। নদীর পাড়ে তার একটা কুড়ে ঘর ছিল। জেলেটি সারাদিন নদীতে মাছ ধরে বেড়াত। রাতের বেলা এসে একা একা কুড়ে ঘরটিতে থাকত। একটা বাশের বাশি ছিল তার। কুড়ে ঘরে বসে রাতের বেলা বাশিটিতে দারুন শুর তুলত সে। সে শুর ছড়িয়ে পরত আসে পাশের গ্রামে। গ্রামের লোকজন অনেক রাত পর্যন্ত বৃদ্ধ জেলের বাশির শুর শুনতে পেত। এত সুন্দর বাশির সুর গ্রামের লোকজন অন্য কোথাও কোন দিন শোনেনি। সবার কাছে বাশির শুরটা রহস্যময় মনে হত। সবাই বলতো, বৃদ্ধ লোকটার সাথে জ্বীন আছে। সেই জ্বীনটাই বাশিতে সুর তোলে। বৃদ্ধ মাঝির পক্ষে বাশিতে এত সুন্দর সুর তোলা সম্ভব হতে পারেনা।
এমন কথা বললে বৃদ্ধ জেলে ক্ষেপে যেত।
বলত, আমার কুড়ে ঘরে আমি ছাড়া আর কে বাশি বাজাতে আসবে। আমিই রাতের বেলা কুড়ে ঘরে বসে বাশি বাজাতে থাকি। বাশি বাজাতে আমার ভাল লাগে।
-তাহলে এখন আমাদের বাজিয়ে শোনায়। লোকজন বলত।
-আমি দিনে বাশি বাজাতে পারিনা। তোমরা ইচ্ছা করলে রাতের বেলা আমার কুড়ে ঘরে যেতে পার। দেখবে, বাশিটা আমি নিজেই বাজাচ্ছি।
এই কথা বলার পর লোকজনের মনে আরো বেশি সন্দেহ হতে থাকে।
কয়েকজন কৌতুহলী লোক রাতের বেলা বৃদ্ধের কুড়ে ঘরে আসল। দেখল বৃদ্ধ লোকটি নিজেই বাশিটা বাজাচ্ছে।
তখন সবার মনের সন্দেহ দুর হয়ে গেল। সবাই ভাবতে শুরু করল, আসলেই বৃদ্ধ লোকটি নিজেই বাজায় বাশিটা। দারুন সুর তোলার ক্ষমতা আছে তার।
কিছুদিন পর বৃদ্ধ জেলেটি মারা গেল। কিন্তু তারপরেও গ্রামের লোকজন প্রতিদিন রাতে বাশির সুরটা বাজতে শুনতো। বৃদ্ধের কুড়ে ঘর থেকে সমস্ত গ্রামে ছড়িয়ে পরত বাশির শুরটা। যখন কেউ বৃদ্ধের কুড়ে ঘরের কাছে যেত, সাথে সাথে বাশির সুরটাও থেমে যেত।
গ্রামের সবাই তখন বলত, বৃদ্ধ জেলেতো মারা গেছে, তাহলে কে বাশি বাজায়…
★
৮টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
রহস্য আসলেই ………
ভালো লিখেছেন।
আবু জাকারিয়া
আপনাকে ধন্যবাদ।
নওশিন মিশু
কিছুই বুঝলাম না….
আবু জাকারিয়া
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
কে বাশিঁ বাজাতো!
অশরীরী আত্মার সাথে ভাব হয়েছিলো তাঁর? যে তাঁর মৃত্যুর পরও তাঁকে স্বরণ করে বাঁশিঁ বাজাতো, আর অন্য কেউ আসলে থেমে যেতো।
আবু জাকারিয়া
আমারও একই প্রশ্ন, বৃদ্ধ লোকটা মারা গেল, তাহলে বাশি কে বাজায়?
স্বপ্ন
আমি কিন্তু বাঁজাতাম না। 🙂 ভাল লেগেছে।
আবু জাকারিয়া
আমারতো সন্দেহ হচ্ছিল। ধন্যবাদ