ঘুষ

ইঞ্জা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ০৮:১৬:৫৫অপরাহ্ন সমসাময়িক ২৪ মন্তব্য

 

 

 

 

ঘুষ যার ইংরেজি bribes, ইহা যারা খায় তারা পানির মতো করে খায় যেন ইহা স্বর্গীয় মেওয়া, ঘুষ খাদকের কোন বাছবিচার নাই, যাহা পাই তাহা খায় অবস্থা, ছোট ঘুষ পাঁচ টাকা, দশ টাকা দিয়ে শুরু হয় আর বড় ঘুষ হয় লাখে কোটি কোটিতে, যারা ঘুষ খায় তারা প্রায় সময় টেবিলের নিচ দিয়েই বেশি খায়, আবার অনেকেই আছেন চোখে চোখ রেখেই খায়, মানে লাজলজ্জা হীন আর কি।
ঘুষ কারা খায় তা নিশ্চয় বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখেনা, তবুও বলি।
ঘুষের লেনদেন সবচাইতে বেশি হয় সরকারী দফতর গুলোতে, সরকারের উঁচুনীচু সকল পদেই প্রায় এই লেনদেন হয়, সরকারী কর্মচারী হওয়া মানেই ঘুষ খাওয়ার লাইসেন্স পাওয়া।
বেসরকারি খাতে ঘুষ লেনদেন প্রায় নেই বললেই চলে, উল্টো ঘুষ দিতে দিতে জান কোরবান হয়ে যায়।

কিছু উদাহরণ দিইঃ
আপনি ইলেক্ট্রিক মিটার, লাইন নেবেন, ঘ্যাস লাইন নেবেন, জায়গা কিনছেন বা বিক্রি করছেন, খাজনা দেবেন, ওয়াসার লাইন নেবেন ঘুষ ছাড়া আপনি এই ইহজনমে এইসব আনতে পারবেননা, ইহা অসম্ভবকে সম্ভব করা অনন্ত জলিলেরও সম্ভব না, উপরন্তু ঘুষ দিয়েও হয়রানির শেষ থাকেনা, উপর থেকে নিচ পর্যন্ত আপনাকে শুধুই দিয়ে যেতে হবে, এর কোন ছাড় নেই।

আরেকটা হলো আপনি আমদানিকারক, বিদেশ থেকে যাহায় আমদানি করুননা কেন আপনাকে ঘুষ ছাড়া মাল পোর্ট থেকে বের কর‍তে দেওয়া হবেনা, আপনি যদি দামের সঠিক মূল্য ডিক্লেয়ার করেন তাহলে বলবে আপনি ওভার (বেশি) দাম দেখিয়ে বিদেশে মুদ্রা পাচার করেছেন, যদি কম মূল্য দেখান তাহলে বলবে আপনি কেন কম মূল্য দেখাচ্ছেন, এইসবের অর্থ হলো ঘুষ দাও, মাল নিয়ে সূর সূর করে বেড়িয়ে যাও, বুঝেন ঠ্যালা।
আপনি যদি রফতানিকারক হোন তাহলেও ঘুষ ছাড়া মাল পাঠাতে পারবেননা।
উপরোক্ত ঘুষখোরদের আপনি পাবেন কাস্টমস অফিসার, পোর্ট অফিসার হিসাবে।
এছাড়াও বন্দরের ভিতর বাহিরে টপ টু বটম পদে পদে ঘুষ খায়, তা নদী বন্দর হোক, সাগর বন্দর হোক বা বিমানবন্দর হোক, সকল বন্দর, কাস্টমসে ঘুষ দিতেই হবে, ওরা খাবেই।

ঘুষ খাওয়ার ব্যাপারে পুলিশের নাম প্রথমেই আসে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা, এই বিষয়ে বলে বিপদে পড়তেও রাজিনা আমি, ভানু বন্দোপাধ্যায় বলেছিলো বাঘে ধরলে আটারো ঘা আর পুলিশে ধরলে নাকি ছত্রিশ ঘা।

এই দেশে সরকারী যে কোন বিষয়ে কাজ করতে বাধ্য হলে আপনাকে ঘুষ দিতেই হবে, আপনি বাড়ী, গাড়ী যায় করেননা কেন গজুষ লেনদেন ছাড়া কিছুই হবেনা।

এখন আসি আসল কথায়ঃ

কিছুদিন আগে এক পরিসংখ্যান বলে জানা যায় যে, বাংলাদেশে ধনীর হার বাড়ছে, আমি বলি না বাড়ার কোন কারণ দেখিনা, কোন এমপি মন্ত্রী প্রথম যখন নির্বাচন করে তখন তাদের সম্পদের পরিমাণ থাকে খুবই অল্প, কিন্তু এমপি, মন্ত্রী হওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে উনাদের সম্পদের পরিমাণ ফুলে ফেফেঁ আকাশ ছুয়েঁ যায় কেন তা একবার চিন্তা করে দেখুন।

আবার দেশে প্রতিদিন হাজার হাজার কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য হয়, যাহা আমাদের প্রতি বছরের বাজেটের চাইতেও বেশি, বুঝুন ঠ্যালা।

আমার মতামতঃ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি ঘুষ লেনদেনকে স্বিকৃতী দিয়ে ট্যাক্স ধার্য করে দেন তাহলে দেখা যাবে আমাদের সাধারণ জনগণের ট্যাক্সের দরকার পড়বেনা, সরকারী কর্মচারীরা ঘুষের ট্যাক্স দিয়েই দেশ চালাতে পারবে।

অতএব সবাই বলুন জয় ঘুষ বাবা।

১জন ১জন
0 Shares

২৪টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ