ঘুষ যার ইংরেজি bribes, ইহা যারা খায় তারা পানির মতো করে খায় যেন ইহা স্বর্গীয় মেওয়া, ঘুষ খাদকের কোন বাছবিচার নাই, যাহা পাই তাহা খায় অবস্থা, ছোট ঘুষ পাঁচ টাকা, দশ টাকা দিয়ে শুরু হয় আর বড় ঘুষ হয় লাখে কোটি কোটিতে, যারা ঘুষ খায় তারা প্রায় সময় টেবিলের নিচ দিয়েই বেশি খায়, আবার অনেকেই আছেন চোখে চোখ রেখেই খায়, মানে লাজলজ্জা হীন আর কি।
ঘুষ কারা খায় তা নিশ্চয় বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখেনা, তবুও বলি।
ঘুষের লেনদেন সবচাইতে বেশি হয় সরকারী দফতর গুলোতে, সরকারের উঁচুনীচু সকল পদেই প্রায় এই লেনদেন হয়, সরকারী কর্মচারী হওয়া মানেই ঘুষ খাওয়ার লাইসেন্স পাওয়া।
বেসরকারি খাতে ঘুষ লেনদেন প্রায় নেই বললেই চলে, উল্টো ঘুষ দিতে দিতে জান কোরবান হয়ে যায়।
কিছু উদাহরণ দিইঃ
আপনি ইলেক্ট্রিক মিটার, লাইন নেবেন, ঘ্যাস লাইন নেবেন, জায়গা কিনছেন বা বিক্রি করছেন, খাজনা দেবেন, ওয়াসার লাইন নেবেন ঘুষ ছাড়া আপনি এই ইহজনমে এইসব আনতে পারবেননা, ইহা অসম্ভবকে সম্ভব করা অনন্ত জলিলেরও সম্ভব না, উপরন্তু ঘুষ দিয়েও হয়রানির শেষ থাকেনা, উপর থেকে নিচ পর্যন্ত আপনাকে শুধুই দিয়ে যেতে হবে, এর কোন ছাড় নেই।
আরেকটা হলো আপনি আমদানিকারক, বিদেশ থেকে যাহায় আমদানি করুননা কেন আপনাকে ঘুষ ছাড়া মাল পোর্ট থেকে বের করতে দেওয়া হবেনা, আপনি যদি দামের সঠিক মূল্য ডিক্লেয়ার করেন তাহলে বলবে আপনি ওভার (বেশি) দাম দেখিয়ে বিদেশে মুদ্রা পাচার করেছেন, যদি কম মূল্য দেখান তাহলে বলবে আপনি কেন কম মূল্য দেখাচ্ছেন, এইসবের অর্থ হলো ঘুষ দাও, মাল নিয়ে সূর সূর করে বেড়িয়ে যাও, বুঝেন ঠ্যালা।
আপনি যদি রফতানিকারক হোন তাহলেও ঘুষ ছাড়া মাল পাঠাতে পারবেননা।
উপরোক্ত ঘুষখোরদের আপনি পাবেন কাস্টমস অফিসার, পোর্ট অফিসার হিসাবে।
এছাড়াও বন্দরের ভিতর বাহিরে টপ টু বটম পদে পদে ঘুষ খায়, তা নদী বন্দর হোক, সাগর বন্দর হোক বা বিমানবন্দর হোক, সকল বন্দর, কাস্টমসে ঘুষ দিতেই হবে, ওরা খাবেই।
ঘুষ খাওয়ার ব্যাপারে পুলিশের নাম প্রথমেই আসে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা, এই বিষয়ে বলে বিপদে পড়তেও রাজিনা আমি, ভানু বন্দোপাধ্যায় বলেছিলো বাঘে ধরলে আটারো ঘা আর পুলিশে ধরলে নাকি ছত্রিশ ঘা।
এই দেশে সরকারী যে কোন বিষয়ে কাজ করতে বাধ্য হলে আপনাকে ঘুষ দিতেই হবে, আপনি বাড়ী, গাড়ী যায় করেননা কেন গজুষ লেনদেন ছাড়া কিছুই হবেনা।
এখন আসি আসল কথায়ঃ
কিছুদিন আগে এক পরিসংখ্যান বলে জানা যায় যে, বাংলাদেশে ধনীর হার বাড়ছে, আমি বলি না বাড়ার কোন কারণ দেখিনা, কোন এমপি মন্ত্রী প্রথম যখন নির্বাচন করে তখন তাদের সম্পদের পরিমাণ থাকে খুবই অল্প, কিন্তু এমপি, মন্ত্রী হওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে উনাদের সম্পদের পরিমাণ ফুলে ফেফেঁ আকাশ ছুয়েঁ যায় কেন তা একবার চিন্তা করে দেখুন।
আবার দেশে প্রতিদিন হাজার হাজার কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য হয়, যাহা আমাদের প্রতি বছরের বাজেটের চাইতেও বেশি, বুঝুন ঠ্যালা।
আমার মতামতঃ
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি ঘুষ লেনদেনকে স্বিকৃতী দিয়ে ট্যাক্স ধার্য করে দেন তাহলে দেখা যাবে আমাদের সাধারণ জনগণের ট্যাক্সের দরকার পড়বেনা, সরকারী কর্মচারীরা ঘুষের ট্যাক্স দিয়েই দেশ চালাতে পারবে।
অতএব সবাই বলুন জয় ঘুষ বাবা।
২৪টি মন্তব্য
রিতু জাহান
কিছুদিন আগে একটা ভিডিও দেখেছিলাম। সাধারণের সংজ্ঞা নামে। ছেলেটা দারুন বলেছিলো।
আমার কাছে কথা হচ্ছে, আমরা সাধারণরাই ভালো না। আমরা দিতে দিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
ইঞ্জা
অবশ্যই আমরা অভস্থ হয়ে গেছি আপু, কিন্তু না দিয়েও তো রেহাই নেই, আমি নিজেই ভুক্তভো, না দেওয়ার সংকল্প থাকায় জীবনের বড় একটা ধাক্কা খেয়েছি আমার ব্যবসায়ীক জীবনের প্রথম দিকে।
মায়াবতী
আগুনের দিন শেষ হবে একদিন, ঝর্ণার সাথে গান হবে একদিন, এই পৃথিবী ছেড়ে চলো যাই স্বপ্নের সিঁড়ি বেঁয়ে সীমাহীন …. -{@
ইঞ্জা
এমন কথা বলেনা আপু, আল্লাহ্ জীবন দিয়েছেন যখন একদিন তো নিয়েই যাবেন।
মায়াবতী
;(
ইঞ্জা
^:^
তৌহিদ ইসলাম
এসব এখন ওপেন সিক্রেট দাদা। মাঝেমধ্যে মনে হয় আমার সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য ডাক্তার ঘুষ চেয়ে বসে আছে। জয় ঘুষ বাবা।
ইঞ্জা
তার জন্য নিশ্চয় আমাদের বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবেনা, যা দিনকাল পড়ছে। 🙁
মোঃ মজিবর রহমান
https://youtu.be/hE1zsAMGTVE
ঠেলা সামলান কঠিন রে ভাই। চুপ থাকি।
ইঞ্জা
চুপ থাকাটাই যেন এখন নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
কি করবেন ক্ষমতা বা বাহু বল না থাকলে শুধু শুধু কিভাবে লড়বেন।
ইঞ্জা
কিভাবে লড়বো জানিনা, শুধু জানি সরকারের সংস্থা গুলো কঠোর হলে কিছুটা হলেও ঘুষ খাওয়া কমবে।
ছাইরাছ হেলাল
ধুর, আপনি মনে হয় গুজবে কান দিচ্ছেন!!
আপনার জন্য দোয়া চালু রাখতে হবে মনে হয়।
ইঞ্জা
ভাইজান, খুলেই বলুন।
মাহমুদ আল মেহেদী
ঘুষ এমন একটা বিষয় হয়ে গেছে মনে হয় এটাই একটা নিয়ম!
ইঞ্জা
জি ইহা বেনিয়মের নিয়ম। 🙁
জিসান শা ইকরাম
ঘুষ বিহীন সরকারী দপ্তর নেই, সাথে ভোগান্তি বোনাস।
ঘুষ এমন একটি খাদ্য দ্রব্য যেটায় ডায়েটিং করে না কেউ, এটি খেলে রোজাও ভাংগে না।
আসুন আমরা ঘুষের গুনগান গাই।
মায়াবতী
😀 স্যার আমি ও ঘুষ খেয়ে খেয়ে পেট ভরাবো ডায়েটিং আর ভাল লাগে না যে …
ইঞ্জা
সুযোগ পেলে খান কিন্তু দুদক থেকে সাধান। :p
ইঞ্জা
জয় ঘুষ বাবা। :p
তৌহিদ ইসলাম
আমাদের অস্থিমজ্জায় মিশে গেছে ঘুষ। একজন সরকারী চাকুরীজীবী হয়ে নিজেই লজ্জিত। আল্লাহর কাছে শুকড়িয়া এখন পর্যন্ত ঘুষ নামক বস্তুটির সাথে পরিচয় করাননি।
ইঞ্জা
আপনার মতো অল্প কিছু মানুষ ভালো আছে বলেই দেশ বেঁচে আছে এখনো।
নীলাঞ্জনা নীলা
জয় ঘুষ বাবা! 😀
ভাইয়া হাসতে হাসতে আমি শেষ। :D) :D) :D) :D)
ইঞ্জা
আপু মনের দুঃখে এমন লিখেছি। :D)