বাবা রে বাবা, সে তো দেখি-
মহা বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সব খোঁজ খবরই রাখে!
শুধু রাস্তা দিয়ে হাটার সময় তার চারপাশে কি কি ঘটে সে খবর কি একটুকুও রাখে?
সে যে নিয়ম করে রাস্তার একই গর্তে প্রতিদিন পাড়া দেয়, সে কথা কি কেউ তাকে বলেছে?
সে যে চশমা ছাড়া কিছুই দেখেনা, অন্তত তা তো জানার কথা- নাকি?
তবু কেনো চশ্মা ছাড়া বের হয় বাড়ি থেকে? কোনো দুষ্টু নারী তাকে কোনোদিন চোখ মেরে দিলেও তা তো সে ইহকালেও জানবে না! কিহ- জানবে? মনে হয় না।
প্যান্ট বুঝি তার একটাই আছে? না কি ভিন্ন কালারের প্যান্ট পড়া যে দোষের না, সেটা কেউ তাকে বলে দেয় না!
একই ইটে নিয়ম করে করে উসঠা খায়। এটাও বুঝি প্রতিভা কোনো!!
সে যে টঙের দোকানে বসে চা খায়, তার আসমান বরাবর ৮ তলা বিল্ডিং এ যে একখানা জানালা আছে, সে কি তা জানে?
সে জানালার পাশে বসে যে কেউ তার কাণ্ড কারখানা দেখে হেসে কুটিকুটি হয়, তা কি তার দৃষ্টি গোচর হয়?
কেউ চোখে কালো কাজল মেখে তার পথ চেয়ে বসে থাকতে পারে, তা কি কখনো তার কল্পনাতেও এসেছে?
সে প্রতীক্ষার বেদনা যে সেই মেয়েটি- জালিয়াতি করে অধীর প্রতীক্ষায় অসময়ের ঘন বরষার বৃষ্টির ফোঁটাদের মাঝে গুঁজে দেয় পার পেয়ে যায়, সে খবর হয়তো দখিনের কর্কষ শব্দে ধেয়ে আসা কলো মেঘও কখনো রাখেনি।
সেই রমণীর চোখ বেয়ে ধুঁয়ে আসা কাজল, আর কালো মেঘ হতে বর্ষণ হওয়া পানির শেষ ঠিকানাও হবে কিন্তু ঐ নর্দমার কালো পানিতেই। তাও সে জানবে না। এমনি ইয়ে সে!
আচ্ছা যদি তার সামনে এসে বলা হয়, “আমাকে খুব সুন্দর একটা কোথাও বেড়াতে নিয়ে যাবে? তোমার সাথে?”
সে নিশ্চিত কঠিন বিপদে পড়ে যাবে! ঢাকা শহরেও যে কত সুন্দর জায়গা আছে, তা সে কোনোদিনো জানবে না।
তাকে যদি সুইট একটা গিফট এনে দিতে বলা হয়, সেটাও সে পারবেনা। বাড়ির পাশের নায়েন্টি এইটের দোকানই হবে তার একমাত্র ভরসা!
“এই! – এই ছেলে! শোনো?
আজ আমার বিয়ে!
আমাকে তোমার সাথে করে কোথাও নিয়ে যাবে? যে কোনো খানে! তুমি বললেই- আমি যাবো!
তুমি যেখানে নেবে, সেখানেই যেতে রাজি আছি!
বলো নেবে? ”
মৃদু মৃদু বৃষ্টির মাঝে আমি দাঁড়িয়ে থাকবো, আমার ওষ্ঠ-যুগল থর থর করে কাঁপতে থাকবে। উহু ঠান্ডায় নয়, অজানা এক আশংকায়।
আমার দুটি আঁখি তোমার সম্মতির জন্য ব্যাকুল হয়ে তাকিয়ে থাকবে তোমার পানে।
আমি জানি সেদিনও তুমি বেকুবের মত ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকবে। অপ্রস্তুত হয়ে এদিক উদিক তাকাবে…….
তারপর এক পা থেকে অন্য পায়ে ভর দিয়ে বিরক্তি নিয়ে বলবে….. এ কি যন্ত্রণা, কে এই ছেড়ী? পাগল টাগল না কি?
আমি তখন সতী সাদ্ধি নারীর মত মায়া মায়া করে তোমার দিকে তাকাবো!
তুমি তখন বধূ বেশে একলা রমণীকে না পাশ কাটিয়ে চলে যেতে পারবে, না এই পাগলীটাকে দুহাতে বরণ করে নিতে পারবে… শুধুই ইতঃস্তত করবে।
আর আমি সেদিন ও হয়ত তোমার কাণ্ড দেখে হেসে কুটিকুটি হবো।
আর মনে মনে গাইবো রবি ঠাকুরের ঐ গানটা-
“ভালোবেসে সখা নিভৃতে যতনে
আমার নামটি লেখো তোমার মনেরও
মন্দিরে-“
৮টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
মনের অনুভুতি সত্যিই এমনি ভাবনা জাগে মনে।খুব ভাল লাগল। -{@
শাওন এরিক
অনেক ধন্যবাদ মনির ভাই! 🙂
মোঃ মজিবর রহমান
দারুন কয়েকটি বাক্য মন ভরিয়ে দিল।
ধন্যবাদ।
শাওন এরিক
🙂
জিসান শা ইকরাম
ভাল হয়েছে খুব।
শাওন এরিক
🙂
মৌনতা রিতু
এলোমেলো ভাবনার প্রকাশ ভাল হয়েছে।
শাওন এরিক
ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না! 🙂
হঠাৎ হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়া লেখকটিকে মনে রাখার জন্য!