বাংলাদেশ তোমার সন্তানেরা বিভক্ত হয়ে গেছে আজ। বিভক্ত হয়ে গেছে প্রবল
ব্যাক্তিস্বার্থে; মানবিক ক্ষুদ্র স্বার্থে ভিন্নতর । অথর্বের দল এই মালিকানা
চায় তোমার কলজের । চায় হৃদপিণ্ড, শিরা, উপশিরা, ধমনীরও । একদল
তাঁদের বিশ্বাস পোষে লেবাসি ধর্মতন্ত্রে, আরেক দলের তৈলমর্দন প্রভুতন্ত্রে ।
ওঠে মেতে সগৌরবে উন্মাদের অশ্লীল উৎসবে ! ফেরি করে রাক্ষুসে ক্ষুধা,
যেন হায়নার হিংস্রতায় যথার্থ জীবন। ভাবখানা এই যেন ন্যায়ের তৌলদণ্ড
ওদের হাতেই ন্যাস্ত করেছেন স্বয়ং আল্লাহ্ তায়লা । নিয়েছে অলৌকিক হাত
থেকে তাঁর । বাংলাদেশ, তোমার সন্তানদের সৃষ্ট অমানবিক সভ্যতার আণবিক
সাবমেরিনই এই বিষাদের মুখোশ হয়ে প্রসারিত করে দেয়, দিচ্ছে ক্রমশই
ধ্বংসের সীমানা কেবল, অস্তিত্বের ভেতরে অন্ধকার । যেন, মানুষরূপী এই
ডায়নোসোরই ভয়ংকর সব বিভীষিকা ছড়িয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবে মানচিত্রের কাঠামো !
বাংলাদেশ, যদিও আঁধারে পথ হাতড়ে এখনো চলতে হয় তোমার । চলছো তুমি
তোমার বিয়াল্লিশেও। অথর্বের দল এই রটায় তবুও অযাচিত জল্পনা কল্পনা জন্ম
রহস্য নিয়েও তোমার । রটায় বিভ্রান্তি ধর্মের প্রতি অবমূল্যায়নের ধোঁয়া তুলে ।
ঝড় তোলে সমালোচনার । মিথ্যের সাথে সত্যির মিশেল মেশায়, ফায়দা তুলে নেয়
সাম্প্রদায়িকতার । আমার দুঃখ, মাতৃগর্ভে অন্ধকারে ছিলাম কথিত, এখন বয়ে
চলছি প্রতিনিয়ত । আমার দুঃখ, কিছু কালকেউটে আর নেকড়ের পালই নিদারুণ এই
দুঃসময়য়ে জাহির হয় ত্রাণকর্তারূপে । জাহির হয় বিশ্বাসরূপে, সেবকরূপে তোমার ।
অথচ তখনও সীমাহীন অন্ধকার আঁকরে তোমার বীরেরা দাঁড়িয়ে রয় ক্রমশই সবচে
দিধাগ্রস্থ-, ক্ষুধা, মৃত্যু, বেদনা, অসত্যের কাঠামোয় । দাঁড়িয়ে রয় কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে ।
বাংলাদেশ, জানি তোমার বিয়াল্লিশেও নিদারুণ দুর্ভাগা তুমি, নির্মম সভ্যতার চরম বিকাশ,
তুমি নেড়িকুত্তার অভয়ারণ্য । লাশের পর লাশের স্তুপই পছন্দ বেশী সন্তানদের তোমার,
পছন্দ কালকেউটে আর নেকড়ের পাল । বাংলাদেশ জানি, সবচে অভাগা তুমি । কেননা,
সক্রিয় কালোহাত, ধর্মীয় আলখেল্লায় পরিপাটি পিশাচ মসনদের নীল নকশা আঁকে এখানেই,
ফেরি করে রাক্ষুসে ক্ষুধা । ভাবখানা এই, যেন ন্যায়ের তৌলদণ্ড তাঁদের হাতেই ন্যাস্ত ।
একদল বিশ্বাস ফেরি করে লেবাসি ধর্মতন্ত্রে, আরেক দলের তৈলমর্দন প্রভুতন্ত্রে । বাংলাদেশ,
তোমার এইসব অবাধ্য, প্রবঞ্চক, বিশ্বাসঘাতক সন্তানদের ষড়যন্ত্র ও স্বার্থসিদ্ধির আণবিক
বারুদ সীমাহীন ভয়াবহতায় চতুর্দিক থেকে নির্বিচারে বিক্ষিপ্ত হয়ে ভাঙতে ভাঙতে বন্ধনহীন
করে দিচ্ছে ক্রমাগত পঞ্চান্ন হাজার বর্গ মাইলের আটষট্টি হাজার গ্রাম বিস্তীর্ণ মানচিত্র তোমার !
২৪টি মন্তব্য
অন্তরা মিতু
“ভাঙতে ভাঙতে বন্ধনহীন
করে দিচ্ছে ক্রমাগত পঞ্চান্ন হাজার বর্গ মাইলের আটষট্টি হাজার গ্রাম বিস্তীর্ণ মানচিত্র”
চমত্কার…………………….
আপনাকে নিয়মিত পেয়ে ভালো লাগছে……..
মর্তুজা হাসান সৈকত
ধন্যবাদ আপি । আশা রাখি আপনাদের সাথে এভাবেই পাবেন ।
অন্তরা মিতু
🙂
মর্তুজা হাসান সৈকত
🙂 😀
মিসু
ভালো লেগেছে খুব ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
ধন্যবাদ মিসু । আপনার ভালো লাগায় সিক্ত হলাম । ভালো থাকুন ।
কৃন্তনিকা
খুবই যুগোপযোগী অসাধারণ একটি কবিতা। 🙂
মর্তুজা হাসান সৈকত
ধন্যবাদ কৃন্তনিকা । ভালো থাকুন সর্বদা । শুভ দুপুর ।
ছাইরাছ হেলাল
আমি আশাবাদি মানুষ , বিনির্মাণে আস্থা রাখি ।
আপনার সচেতনতার জন্য ধন্যবাদ ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
মানুষ আশাতেই বাঁচে, হতাশাবাদী নই আমিও তবে প্রকৃত সরূপ কিন্তু এটাই তাই লিখে দিয়েছি । ধন্যবাদ আপনাকে অভিমতের জন্য ।
জিসান শা ইকরাম
আছি শুধু বেচে থাকা নিয়ে
তারপরেও অদম্য আমরা ।
লেখা ভালো হয়েছে ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
জি ভাইয়া তবে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন একদিন আসবেই । ভালো থাকুন সতত…
আদিব আদ্নান
কঠিন এক বাস্তবতা আপনি তুলে ধরেছেন ।
আশাবাদী হওয়ার জায়গাও খুঁজে পাচ্ছি না ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
পরিবর্তন একদিন আসবেই ভাই । ধন্যবাদ পাঠ প্রতিক্রিয়ায় ।
বনলতা সেন
সন্তানের বিভক্তিতে মা কষ্ট পেলে
দেরিতে হলেও সন্তান একদিন তা বুঝবেই ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
জি আপি সে বাস্তবতাকে সামনে রেখেই লিখা মূলত । ধন্যবাদ ।
প্রজন্ম ৭১
বাংলাদেশ, যদিও আঁধারে পথ হাতড়ে এখনো চলতে হয় তোমার । চলছো তুমি
তোমার বিয়াল্লিশেও। অথর্বের দল এই রটায় তবুও অযাচিত জল্পনা কল্পনা জন্ম
রহস্য নিয়েও তোমার । রটায় বিভ্রান্তি ধর্মের প্রতি অবমূল্যায়নের ধোঁয়া তুলে ।……… বাস্তবতাকে ফটিয়ে তুলেছেন।
মর্তুজা হাসান সৈকত
অনেক ধন্যবাদ ভাই । ভালো থাকুন সবসময় । শুভরাত্রি ।
লীলাবতী
এই বিভক্তি আর ভালো লাগেনা 🙁
মর্তুজা হাসান সৈকত
সেটা লাগেওবা কার । আশা রাখি এ অবস্থা খুব বেশী দীর্ঘস্থায়ী হবেনা ।
শিশির কনা
পড়ে মুগ্ধ হলাম ভাই।
মর্তুজা হাসান সৈকত
ধন্যবাদ আপি । আপনার ভালোলাগায় সিক্ত হলাম । ভালো থাকুন সতত ।
"বাইরনিক শুভ্র"
দুঃখ জনক দেশের অবস্থা আপনার লেখায় ফুটে উঠেছে । আপনার লেখা প্রথম পড়লাম । ভালো লেগেছে ।
মর্তুজা হাসান সৈকত
ধন্যবাদ । ভালো থাকুন সতত ।