আমার ইশ্বর আমার অন্তরে

পুষ্পিতা আনন্দিতা ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার, ০৬:৫৯:৪৮পূর্বাহ্ন সমসাময়িক ৬ মন্তব্য

এইযে এই ছবিটা ‘God-fearing people’ আর ‘God-loving people’ এর মধ্যে পার্থক্য টেনে দেয়। বছর শেষে মেয়ে আসছে বাপের বাড়ি, বর সন্তান নিয়ে। দেবীপক্ষের সূচনা হয়ে গেছে, মা রওয়ানা দিয়েছেন। তাকে মেয়ের মতো বরণ করব, মায়ের মতো পুজো করব, যত্ন আত্তি করে নয়দিন পরে চোখের জলে বিদায় জানাবো। এরমধ্যে কতো আব্দার তার কাছে, কতো অভিযোগ। দশমীর ভাসানের পরে মনে হয় সব খালি হয়ে গেলো। পুরুত ঠাকুর যখন বিসর্জনের মন্ত্র পড়ে শেষ বারের মতো মায়ের মুখের সামনে আয়না ধরেন ঠিক ওই সময়টায় মনে হয় খুব কাছের কেউ চলে যাবে এখনি, কান্না পায়, আবার এক বছরের অপেক্ষা।

এই ভালবাসাটা এইটা ভয় থেকে আসেনি, মনে হয় আমার দেবী আমার মা, মেয়ে, কাছের মানুষ। সেই মেয়েই আবার চন্ডীরূপে রক্ষাও করবে সেই বিশ্বাস করে হিন্দুরা। এই জিনিসটা কি যে ভাললাগে, দেবীকে মা ভাবা, মেয়ে ভাবা। চক্রধারী কৃষ্ণকে যেমন পুজো করা হয় তেমনি আছে আমাদের বালগোলাপ, যাকে আমরা বলি লালা বা ছেলে! ঈশ্বরের উপরে বাৎসল্য স্নেহ।

আমি শিবের ভক্ত। ভয়টয় পাইনা, বরং ভালবাসি। রাগ করি, অভিমান করি। কিছু ঠিক মতো না হলে মনে হয় লোকটা আমার কথা ভুলে গেলো নাকি! ওইটা একটা স্বস্তির জায়গা, অভাব অভিযোগ জানিয়ে নিজে হালকা হয়ে যাওয়া। সে আমার কথা শুনবে কি শুনবে না সেইটা ম্যাটার না, আমি যে নির্ভর করে হিবিজিবি সব বলে ফেলে স্বস্তি পাইতে পারি সেইটা ম্যাটার করে। আমি বিশ্বাস করিনা মেঘের আড়ালে কেউ আমারে মরনের পরে শাস্তি দিতে বসে আছে, বরং মনে করি আমার ঈশ্বর আমার অন্তরে, আমার সখা, ভালবাসার মানুষ, যে সবসময় আমার সাথেই থাকে।

যাই হোক ভবানী আসছে কদিন পরেই। সাথে আমার শিবশম্ভু, আমার ভোলানাথও আসছে শ্বশুরবাড়ি। বছরের এই কদিন ব্যাট্যা আমার আশেপাশে থাকে। আমার খুব আনন্দ।

==============

পুস্পিতা আনন্দিতা,

নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র।

৪৮৯জন ৪১৫জন
0 Shares

৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ