কবিগুরুর অজর গীতাঞ্জলির বাণী বাঙালিদের মনে যখন-তখন আসেই। সঙ্কটে তা আসে মনের প্রণোদনার উতস হয়ে। চারপাশের যত উদ্ভট অবাস্তব আজগুবির বয়ানে বচনে মন একদমই তিতিবিরক্ত … তখন কবিগুরুর বাণী-ই আউড়াই –
“তুমি দূত পাঠিয়েছো বারেবারে-
তারা বলে গেলো ভালোবাসো –
অন্তর হতে বিদ্বেষবিষ নাশো”।।
সঙ্গেসঙ্গেই আরও মনে আসলো অবিস্মরণীয় লাইনগুলি –
“যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু নিভাইছে তব আলো –
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছো তুমি কি বেসেছো ভালো?”
ক্ষমা যাদের কিছুতে প্রাপ্য না, বিধাতার সংবিধানে ক্ষমাহীন নিশ্চয় তারা। আমরা প্রায় সকল ধর্মগ্রন্থের মধ্যেই পাই – বিধাতা সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। আমাদেরও অপছন্দ তাদের। কিন্তু সমস্যা এই যে তেনারা সেটি মোটেও বোঝেন না। তেনারা “উলটো বুঝিলি রাম”-এর দলের এক দঙ্গল অপরাজনীতির ধারক নেতানেত্রীগঙ। যাদের মুখনিসৃতঃ বিবৃতি হতে জনগণের জন্য কোনও দিকনির্দেশনার বদলে হাস্যকর উদাহরণ হিসেবে পাওয়া যায় সহস্র চিত্র সর্বত্র। তেনাদের দলীয় চামচা ব্যাতীত অন্য কারও কাছে তাদের বচন আদৃত নয়। এদেশে বহুকাল ধরেই তাদের দৌরাত্মে নাভিশ্বাস জনগণের। তবু তাদের দেশপ্রেমের ভন্ডামো চলছেই। সংবিধান ছুঁড়ে ফেলার মতো ধৃষ্টতাপূর্ণ ঔদ্ধত্য তাদের নেত্রী দেখিয়েছেন ইতোপূর্বে। অতঃপর গাঁটছাড়া বেঁধেই জোটাবদ্ধ রাষ্ট্রবিরোধীদের সঙ্গে। নেত্রীর জোটের প্রধান শক্তি জামায়াত-শিবির-হেফাজতী ধর্মান্ধগণ। দেশের মানুষ এসব জানে। এবঙ দলীয় নেতারা বিভিন্ন উস্কানীময় দাঙ্গা বাঁধাতে ততপর। বিগত বছরগুলিতে সেইসব অন্যায় অপততপরতায় দেশ ও দশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার অন্তরায় হয়েই দেশের প্রধান বিরোধী দল আজও অবাস্তব সংবিধান অমান্যের দৃষ্টান্ত হলেন, প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ইতিবাচক আহ্বানের সম্পূর্ণ বিপরীতে। তাদের সীমাহীন অন্যায় কর্মকান্ড বেমালুমই ভুলে চরম ভন্ডের মুখোশেই আবৃত করলেন নিজেকে এবঙ বিবৃতিদান করলেন অবলীলায় – “অতীতে যত অন্যায় আচরণ আমার পরিবারের উপর দলের সদস্যদের সঙ্গে হয়েছে ক্ষমা করে দিলাম”!!! উল্টোরথেই সওয়ার তিনি ও তার জোটের দল!!! যাদের কাছে জাতির আর চাওয়াপাওয়ার অবশিষ্ট কিছুই নাই তারাই শোনাতে চাইছে জাতিরে ক্ষমার বাণী!!! ক্ষমাসুন্দর শব্দটাই যেন বা কলুষিত!!! আমরা ভুলিনি তাদের অন্যায়-অত্যাচারের কুকীর্তি। ২০০১-এ নির্বাচন জিতেই বিজয় উল্লাসে হিন্দু মেয়েদেরকে বেইজ্জত করার চরমতম অন্যায়। যেন একাত্তুরের পাকিস্তানী হায়েনাদের দল। আজও যারা বিবৃতি শেষে – “বাংলাদেশ জিন্দাবাদ” বলেই দলীয় শ্লোগান দেয়। এতে যে বাংলাদেশের চেতনার প্রথম সোপান একুশে ফেব্রুয়ারিকেও অবমাননা করে চলেছে দলটি তার কি ক্ষমা কোনওভাবে হয়???? প্রশ্নটি রাখলাম জাতির বিবেক তরুণ প্রজন্মের কাছেই। আরও একটি প্রশ্ন – ভোলা কি সম্ভব কিছুতে বিএনপি শাসনামলে শেখ হাসিনা নজিরহীন গ্রেনেড হামলার শিকার??? আইভি রহমানের বোমায় অর্ধাংশের উড়ে যাওয়া রক্তাক্ত দৃশ্যটি??? আর আজও যারা শরীরে বয়ে চলেছে ক্ষত তারা কি বিএনপিকে করেছে ক্ষমা??? দুইটি প্রশ্ন রাখলাম আমার অনুজসম / সন্তানতুল্য প্রজন্মের নিকট। আমার বিশ্বাস তারা জবাবে রুখে দাঁড়াবে চেতনা ধ্বংসকারীদের অসত ভন্ড রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধে।
কার্তিক ১৪২০ বঙ্গাব্দ।।
১৩টি মন্তব্য
খসড়া
সঙ্কোচেরই বিহ্বলতা নিজেরই অপমান
সঙ্কটের কল্পনাতে হয়োনা ম্রিয়মাণ।
নুরুন্ননাহার শিরীন
(y) 🙂 অপমানে তাহাদেরও হতে হবে সমানে সমান … কিন্তু তা হবারই নয় … ক্ষমাও নয় তাদের তরে। এই-ই বলতে চেয়েছি। আশাবাদ, বিশ্বাস আমাদের তরুণ প্রজন্মের উপর।
ছাইরাছ হেলাল
ভণ্ডদের ভণ্ডামির অবসান অবশ্যই হবে ।
কিন্তু আমাদের যে স্মৃতি বৈকল্য বিরাজমান ,ভয় এখানটাতেই ।
নুরুন্ননাহার শিরীন
(y) 🙂 স্মৃতি বৈকল্য হতে জাগ্রত করার লক্ষ্যেই আমাদের এখানে লেখালিখি … শেয়ার করে ছড়িয়ে দেয়া … তাইনা ভাই?
“ভন্ডের ভন্ডামির অবসান অবশ্যই হবে” তাই-ই যেন অচিরে হয় … আমরা অপেক্ষায় …
জিসান শা ইকরাম
তাকিয়ে আছি সেই সোনালী দিনের প্রত্যাশায়
যেদিন বিচার হবে এইসব ভন্ড , প্রতারক দেশদ্রোহীদের —
নুরুন্ননাহার শিরীন
(y) 🙂 জিশান, ভন্ডের দলের মুখ ব্যাদান করা হাসির বিনিময় চলছে … দেখছি টেলিভিশনে … বিচার-আচার পড়েই রবে অনন্ত কাল এই যেন বা ভবিতব্য লিখিত হচ্ছে!! তবুও তোমার কথাটি সত্য হউক ক্ষীণকায় আশার হাত ধরেছি!!
সীমান্ত উন্মাদ
জিসান শা ইকরাম
জিসান শা ইকরাম বলেছেনঃ
অক্টোবর ২২, ২০১৩, ৫:০৯ অপরাহ্ন
তাকিয়ে আছি সেই সোনালী দিনের প্রত্যাশায়
যেদিন বিচার হবে এইসব ভন্ড , প্রতারক দেশদ্রোহীদের –
মামা কথাটাই আমারো কথা। অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।
নুরুন্ননাহার শিরীন
(y) 🙂 মামার কথা ভাগ্নের কথা। এবঙ আমারও সেটি-ই আশালতা …
লীলাবতী
অবশ্যই এই সব অপরাধীদের বিচার হবেই , এই বাংলার মাটিতে ।
নুরুন্ননাহার শিরীন
(y) 🙂 এই কথাটি সত্য হউক এই আশাই আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে আজও …
স্বপ্ন
হতাশ হবেন না আপু , সত্য জিতবেই একদিন। জয় বাংলা ।
TANDRA
অনেক দেরিতে হলেও শুভেচ্ছা গ্রহন করে স্নেহ টুকু দেবেন। আপু আমাদের ব্যারথতা সত্যকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারা।
TANDRA
আপু বিএনপি র জন্ম ও বর্তমান সবই মিথ্যার উপর এখানে তারা দন্দয়ায় মান। তারাজেভাবে এগুচ্ছে সে ভাবে আমরা না এগুলে দাঁড়াতে পারবেনা। আমরা নিজেদের মাঝে খুব বেশী বিভাজন করছি, এটা দূর করতে না পারলে ভবিস্ত্যত ভালনা। আমরা দলে, পরিবারে দূরত্ব তৈরি করছি যা মোটেও কাম্য না।
অনেক মুক্তি যোদ্বা পরিবার কেন আমাদের থেকে দূরে যাচ্ছে তা জানতে হবে? অনেক সাধারন মানুষ কেন আমাদের দল থেকে দূরে যাচ্ছে তা বুঝতে হবে ১৯৭১ আর বর্তমান সময় এক নয়। একদল্ কে সাথে নিয়ে ক্ষমতায় এসে ভুলে যাওয়ায় কাম্য না। আরও অনেক দল আছে তাদের সাথে কম্প্রমাইস করে অতিদ্রত ঘর গুছানো দরকার বলে মনে করি।
মোঃ মজিবর রহমান।