‘ HICHKI’ হিন্দি মুভি রিভিউ

রোকসানা খন্দকার রুকু ২১ জানুয়ারি ২০২২, শুক্রবার, ০৭:৫১:৩৯অপরাহ্ন মুভি রিভিউ ৮ মন্তব্য

কাল থেকে সকল পরীক্ষা ও স্কুল কলেজ বন্ধ। শিক্ষক আর শিক্ষার্থীদের পাগল হতে আর বেশী দেরী নেই। আমি একটা জিনিস বুঝি না, সব ছেড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সরকার গুতা মারে কেন? কোথাও কোন নিয়মের বালাই নাই। দিব্যি চলছে সব। করোনা বাড়লেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধরে মারো টান!

মারো টানে—ডাকাত আর পথচারীর গল্প মনে পড়লো:

পথচারীকে ডাকাত ডাকাতী করার জন্য আটকে ফেলেছে। বেচারা গরীব, সব সার্চ করেও কিছুই পায়নি। এবার বেচারার কাপড় চোপড় সব খুলে নিয়েছে। শেষতকও কিছু না পেয়ে পথচারীর নিচতলায় একটা হ্যাঁচকা টান দিয়ে এক খাবলা চুল ছিঁড়ে নিলো।

এরপর ডাকাত বললো, এবার যাহ্! বাড়িতে গিয়া বউরে কইতি ব্যাটা ডাকাত রাস্তায় আটকাইছিলো কিন্তু বা*লটাও ছিঁড়তে পারে নাই। তাই প্রমাণ রাইখা দিলাম। আমরাও আর কিছু না পারি প্রমাণ রাখতে শিক্ষা,, দেই টান।

আর কিছু না কই? চলেন মুভি দেখে মন ভালো করি:—

‘হিচকি’ মুভি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক নিয়ে তৈরি। এরকম একটি মুভি ‘তারেজমিন পার’ আমার পছন্দের অন্য একটি মুভি। মুভিতে দেখানো হয়, একজন শিক্ষকের আন্তরিকতাই শিক্ষার্থীদের জন্য যথেষ্ঠ।

হিচকি মুভিটি ব্র্যাড কোহেনের লেখা একটি ইংরেজি সাহিত্য থেকে হওয়া হলিউড মুভি ‘ফ্রন্ট অফ দ্য ক্লাস: হাও টরেট সিনড্রম মেড মি টিচার আই নেভার হ্যাড ’ থেকে বানানো। তবে কিছুটা আলাদা ৷

‘একটি শক্ত হাত অনেকগুলো শক্ত হাতের উত্তরণ’৷

টরেট সিন্ড্রোম নামক রোগে আক্রান্ত রানি মূখার্জী৷ এ কারনে তাঁর কথা বলার সময় কথা আটকে যায়। এ সময় মুখ থেকে শুধু চ..চ…চ এর মতো উদ্ভব আওয়াজ বের হতে থাকে ৷ রানী মূখার্জী তখন থুতনিতে ঘসা মেরে নিজেকে শান্ত করেন।

যিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না তিনি কিনা করবেন শিক্ষকতা! তাই ব্যাংকের লোভনীয় চাকরী ছেড়ে বারবার স্কুলেই পরীক্ষা দেন। এ নিয়ে পরিবারে চরম অশান্তি। তাঁর বাবা তাঁকে সহ্যই করতে পারে না। তবুও রানী অবিচল ও অটল শিক্ষকতাই করবে।

আর তাঁর এ রোগের কারণেই, প্রায় ১২টা স্কুল থেকে রানী মূখার্জীকে বের করে দেয়া হয়। কিন্তু ১৩ নম্বর স্কুলে শেষপর্যন্ত রানী ওরফে নয়নার সুযোগ ঘটে যায়। তবে এ স্কুলে পড়ানোর সুযোগটা অন্য কারনে। সেখানে থাকে বস্তির ‘রাইট ফর এডুকেশন’ ক্যাটাগরীর ছেলেমেয়েরা ! যাদের কিনা আবর্জ্জনা হিসেবেই দেখতেন স্কুলের অন্য শিক্ষকরা। তাঁরা তাই তাদের ক্লাস নেন না। মোটামুটি এখান থেকেই গল্প শুরু ৷

প্রথম ক্লাসেই তারা ম্যামের চেয়ারের পা ভেঙ্গে রেখে দেয়। যাতে তিনি আর কোনদিন না আসেন। রানী মূখার্জী চেয়ার ভেঙ্গে পরে যান। কিন্তু বরণ করেন হাসিমুখে।সবচেয়ে রসাত্মক ডায়ালগ, টিচার যে কোন প্রয়োজনে শিক্ষার্থাদের ফোন করে সাহায্য চাইতে বলেন। ক্লাসের সবচেয়ে বদমাশ খ্যাত ছেলেটি বলে, ম্যাম জাবভী?

হাসি, ঠাট্টা, যন্ত্রণা সব মিলিয়ে একটি মুভি। যাতে দেখানো হয়, মেধা হলো গড গিফটেড। শুধু যত্নের কারণেই ঝরে যায়।

এরপর এরকম কিছুই ঘটে, এবং তা গল্পকে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাত অতি চমৎকার ভাবে। যে শিক্ষার্থীরা ’ডি’ গ্রেডের তাদের রানী মূখার্জীর মতো ‘ডি’ গ্রেডের শিক্ষকই ‘ এ’ গ্রেডে নিয়ে যায়।

‘লোহারে লোহা চেনে, সোনা চেনে,,, এরকম একটা প্রবাদ আসলে এ মুভিতে যায়। একজন শিক্ষক রানি মূখার্জী ম্যাজিকে মুগ্ধ হয়ে মুভিটি শেষ করতে হবে। সাথে তাঁর শিক্ষার্থীরাও দারুন! যারা বস্তিতে নানা কাজে পেটের দায়ে চলেও মেধায় প্রকাশ ঘটাতে সক্ষম হয়।

 

 

মুভির পরিচালক- সিদ্ধার্থ পি মালহোত্রা।

মূল চরিত্র- রানী মূখার্জী, সুপ্রিয় পিলগাঁওকর, নীরজ কবি, হর্ষ মায়ার, বিক্রান্ত সোনি

ছবি- নেটের।

৯৩৮জন ৮১১জন
0 Shares

৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ