
ইজরায়েলের প্রতিষ্ঠা ও তার অবৈধ বৈধতা নিয়ে বিতর্কের ইতিহাস অত্যন্ত জটিল এবং অনেক পরতে বিস্তৃত। নিম্নে এই ইতিহাস ও বিতর্কের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হলো:
ফিলিস্তিনের ভূমি ঐতিহাসিকভাবে বিভিন্ন জাতি, সংস্কৃতি এবং ধর্মের মানুষের বাসস্থান ছিল। রোমান, বাইজেন্টাইন, ওমেইয়া, আব্বাসিয়া, অটোমান তুর্কি— প্রতিটি সাম্রাজ্য এই ভূমির উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ রেখেছে। আধুনিক যুগের শুরুর দিকে, এই অঞ্চল মূলত আরব ফিলিস্তিনিদের বসবাসের স্থান ছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ফিলিস্তিন ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের অধীনে আসে। এই সময়ে জিওনিস্ট আন্দোলনের উত্থান ঘটে, যারা ইহুদি জাতির জন্য একটি জাতীয় আবাসস্থলের দাবি জানায়। বালফোর ঘোষণায় ব্রিটিশ সরকার এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানায়, যা বহু ইহুদি অভিবাসীর আগমনের পথ প্রশস্ত করে।
১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনের ভূমি ইহুদি ও আরব রাষ্ট্রে বিভাজনের প্রস্তাব দেয়। এই প্ল্যানে অধিকাংশ জনসংখ্যার বিপরীতে অধিকাংশ ভূমি ইহুদি রাষ্ট্রকে দেওয়া হয়, যা অনেক ফিলিস্তিনির কাছে অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য মনে হয়।
১৯৪৮ সালে ইজরায়েল তার স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং পরবর্তীতে প্যালেস্টাইনের বিস্তৃত অংশ দখল করে নেয়। এই ঘটনাকে ‘নাকবা’ বা মহাদুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যেখানে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়।
১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে ইজরায়েল পশ্চিম তীর, গাজা অঞ্চল, গোলান উচ্চতা এবং সিনাই উপদ্বীপ দখল করে নেয়। এই দখলের মাধ্যমে ইজরায়েল আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে এবং অঞ্চলটিতে তার প্রভাব আরও বিস্তার করে।
বর্তমানে, ইজরায়েল ও ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে দ্বন্দ্ব একটি জটিল আন্তর্জাতিক বিষয় হিসেবে অব্যাহত আছে। অবৈধ বসতি নির্মাণ, সামরিক অভিযান, এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ চলমান। এই সমস্ত ঘটনা ইজরায়েলের বৈধতা প্রশ্নের উপর পুনর্বার আলোকপাত করে।
ইতিহাসের এই পথ ধরে চলতে গিয়ে, ইজরায়েলের প্রতিষ্ঠা ও বিস্তারের প্রক্রিয়া বিশ্ব রাজনীতিতে এক অস্থিরতার কারণ হয়ে উঠেছে, যার মূলে রয়েছে তার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ও বিতর্ক।
২টি মন্তব্য
নাজমুল আহসান
ইজরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান হোক। আল্লাহ ফিলিস্তিনকে রক্ষা করুন।
হালিমা আক্তার
চমৎকার তথ্য মূলক লেখা। ফিলিস্তিনে ইসরাইলের দখলদারিত্বের অবসান হোক। একটি স্বাধীন ভুমির উপর আগ্রাসন মেনে নেওয়া যায় না। অথচ দীর্ঘদিন যাবত চলে আসছে। আল্লাহ সহায় হোন।