
পালংকের পাখার নীচে ফোঁসফাঁস করে চন্দ্রবোড়া সাপ,
মোহিনী চন্দ্রোৎসবে টের পাও কি সেই উত্তাপ?
দেবীর বাহনের মতো যুদ্ধবিমান গুলো করে আগুপিছু,
জেসমিন ফুল হাতে পোড়ায় প্রজাপতি ক্রুশবিদ্ধ শিশু!
এমন ভৌতিক ভাবে গড়াচ্ছে কয়েকশ দিন ও রাত,
জীবন্মৃতের দল ঘুমঘোরে আউড়াচ্ছে- ‘দিওনা আঘাত!
দরোজায় উঁকি দেয় প্রায়ই এক অভিশপ্ত প্রপাতের জল,
আমার হাতের ফাঁকে গলে গলে পড়ে স্বপ্নের নাগবল্লী,
তোমাদের কন্ঠে সুললিত গীতি গায় পুরাতন ধারাপাত,
তন্মধ্যে জানালায় বিস্ফোরিত হলো চেরেনোবিলের চুল্লী,
পুড়তেই যদি জাগে সাধ ছেড়ে দাও গ্রহান্তরের আহ্লাদ,
হায়! আমিতো বিস্ফোরিত হই প্রতিদিন অদৃশ্য সিনেমায়!
মহানায়ক ও নায়িকাদের গোগ্রাসে গিলে নিবে ঠিকঠাক,
ব্ল্যাকহোলের আবেগের চাপ! বন্ধ হবে সংলাপের পাঠ,
ততোদিন গিরিবাজ কবুতর খুঁটে খুঁটে সবটুকু খুদ খাক!
পায়ের পাতার চাপে মরে যায় সোঁদাগন্ধী বহু মাশরুম,
সারি সারি সিগারেটে পুড়ে যাওয়া মোচড়ানো ধোঁয়া,
নিয়ে আসে বর্ণান্ধ পারমাণবিক মেঘ, রাতগুলো নির্ঘুম!
সেখানে এখন সাখীদার সওদা করে ভয় মাখানো পান,
তাজা রং রক্তের! মানুষের ঠোঁট রক্তপিপাসায় তবু লাল!
বাতাসের বিড়বিড় ভরিয়ে রেখেছে অমাবস্যার মাচান,
পৌরাণিক দেহাবশেষের ভারে অবনত হলো জলকেলি,
ডেকেছিল মরা নদে, প্রেমে মূর্ছা গিয়েছিল অন্ধ হাবেলি,
আমি তার কেউ নই ভেবে, স্তব্ধ গলিতে বেরিয়ে এলাম
কেঁপে কেঁপে! তখনো ছাদে অলকানন্দা ছিলো,
আরো ছিলো দূরদেশী সাদা বক, ফোয়ারার বুকে ছিল-
অলৌকিক এক পারিজাত! তবু আমি পেয়েছি আঘাত!
প্রতিটি পতঙ্গই তো প্রায়ই আহত হয় বেনোজল এলে,
তবুও তো ভাবি কি হবে অযথা মাঝনদী জুড়ে শুধু কেঁদে?
তার তো অনেক জল বুক ভরা! পুনরায় উড়ে নিকোটিন,
মনে হয় শিকারের হৃদপিন্ডের মতো ছিড়ে ফেলি রুটিন!
ফুসফুসের অক্সিজেনে দাহ্য জ্বালানির মতো আগুন,
ফুলে ফেঁপে উঠে! আরো বাড়ে শীতের ক্ষেতে ফুলকফি,
বিড়ালেরা ঝুলিয়ে রেখেছে হাস্যকর লজেঞ্চুসের ট্রফি,
মানুষেরা ঝুলে যাও সারি সারি! ডাকছে দক্ষ রিংমাস্টার!
আকাশ জুড়ে আগুন, জ্বলছে দ্বীপগুলি ও পৃথিবীর বুক,
বলেছিল ওডিন মহাবিশ্বেরও আছে জন্মগত তীব্র অসুখ!
স্যালাইনের মতো নোনা স্বাদ টেনে নিয়ে কাটে সব রাত,
পোষা বাঘটার সাথে রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করা রোমান সম্রাট
অঞ্জলি ছুঁয়ে করে বিড়বিড়- ‘সিংহাসনে বসেছে বিষাদ!’
হো হো করে হাসে তিস্তার ঢেউ! কাঁদে দূর মোহিনীর ছাদ,
মাঝে মাঝে মনে হয় পুরোটা পৃথিবী বোধ হয় হাসপাতাল!
দান্তের পাশে বসে থাকা দেবদূত বলেছিলে টেনে নাকে
কস্তুরীর সংবেদী ঘ্রাণ- এর চেয়েও ভালো আগ্নেয় পাতাল,
আমাদের ম্রিয়মাণ সংসার নিজেই তো মদ গিলে মাতাল,
ফিরে এসে অর্ফিয়ুস শোনাও বাঁশরী, ঘুম নেই দুই চোখে!
ছবি ক্রেডিট @ সৌবর্ণ বাঁধন
(কিছু কিছু কবিতার কোন মানে থাকেনা, কিছু কিছু শব্দ স্রেফ মাতাল)
১০টি মন্তব্য
রিতু জাহান
বিমোহিত,,,
আবারও পড়তে হবে।
মহাবিশ্বের আজীবন আছে জন্মগত তীব্র অসুখ!
দারুন,,,
দরজায় উঁকি দেয় জলপ্রপাত,,,
পারিজাতের প্রেম পাওয়া কিন্তু দুষ্কর!
প্রচন্ড প্রেমের অভিমানে সে আগষ্ট করেছে তার জীবনবোধ।
বেনেজল এলে ভেসে যায় কতোকিছু!!
অসাধারণ শব্দের কারুকাজ,, এক কথায় দারুন লেগেছে আমার।
এতোটুকু তাল কাটেনি,,,,
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার। একটি মাতাল লেখাকে এতোটা মনোযোগ দেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা রইল।
আরজু মুক্তা
জগত সংসারও টালমাটাল। সুগন্ধ গুলোতে এখন ডেটল আর মরফিনের গন্ধ।
সৌবর্ণ বাঁধন
ধন্যবাদ আপু। আমার কাছে এটা সবসময়ই মনে হয় সব কিছুই টালমাটাল!
হালিমা আক্তার
স্যালাইনের মতো নোনা স্বাদ টেনে নিয়ে কাটে সব রাত– একরাশ মুগ্ধতা ছুঁয়ে গেল। শুভ কামনা রইলো।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানবেন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
তোমার শব্দের কারুকার্যে মুগ্ধ হই বারবার, শতবার। মাতাল লেখায় ও যে সৌন্দর্য, ভালোলাগা খুঁজে পেলাম তা অতুলনীয়। ভালো থেকো তুমি। অফুরন্ত শুভকামনা রইলো
সৌবর্ণ বাঁধন
দিদি মাতাল লেখা তো মাতালই হয়। সে সুন্দর ও না অসুন্দর ও না। অনেক ধন্যবাদ।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
মুগ্ধতা — হো হো করে হাসে তিস্তার ঢেউ! কাঁদে দূর মোহিনীর ছাদ,
মাঝে মাঝে মনে হয় পুরোটা পৃথিবী বোধ হয় হাসপাতাল!
দান্তের পাশে বসে থাকা দেবদূত বলেছিলে টেনে নাকে
কস্তুরীর সংবেদী ঘ্রাণ- এর চেয়েও ভালো আগ্নেয় পাতাল,
আমাদের ম্রিয়মাণ সংসার নিজেই তো মদ গিলে মাতাল,
ফিরে এসে অর্ফিয়ুস শোনাও বাঁশরী, ঘুম নেই দুই চোখে!
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ সুপ্রিয় ব্লগার। ভালো থাকুন সতত।