
শোন মেয়ে! স্মৃতি তো পুতুল খেলা,
কতো আজব চিড়িয়া এসে বসায় রঙ্গিন মেলা!
কেউ মাটিতে কঠোর! কেউ পাথরে কোমল!
কেউ ভাস্কর্যে গম্ভীর! কেউ প্লাস্টিকে ম্যানিকিন!
কেউই তো পারল না দিতে সুখের খবর,
জনমে যময পেলে দুঃখ তার নাম,
কিভাবে ছাড়বে বলো সেই তীব্র ভার!
মাঝে মাঝে কাঁদ,
হুহু করে কাঁদ দুপুরের মতো রাতের গভীরে,
গালের মসৃণে নামে কি নিঃখুত টোল!
এতোটা দুঃখ কেন রেখেছ জমিয়ে,
ভেবে ভেবে শহুরে জ্যোৎস্নাও হয়েছে পাগল!
শোন মেয়ে প্রতিটি আকাশই চিতা,
প্রতিদিন নিয়ম মেনে সূর্য্য পুড়ায়!
জীবন মানেই ম্যাচের কাঠিতে আগুন,
হয়তো নিজেই পুড়ে অথবা পুড়ায়!
রূপালী হ্রদের জলে নেমে খেলাচ্ছলে,
হুটহাট ডুবে যায় হস্তীশাবক!
এভাবেই চলে যায় কতো প্রেম,
ডুবে যায় স্রেফ!
তুমি তো পুরাণের পাখি পুড়েছ অনেক,
তবুও এখনো দাঁড়িয়ে আকাশে,
তবুও এখনো অমর!
মানবীর দীর্ঘশ্বাসে জাগ্রত দেবী,
হাসে প্রতিরাতে! আহা, গালে পড়ে টোল!
হাসে স্থির সরোবরে আহত কমল!
তুমি নাকি স্থির সরোবর!
অলিন্দে জমিয়েছ দুঃখের পলল,
এখানে ভাসেনা কেউ,
এখানে ডোবেনা কেউ আর,
মাঝে মাঝে পা দুটো ভিজায় জোয়ার,
একটি বদ্বীপ দিচ্ছে উঁকি দরোজার ওপার!
এইতো সেদিন তুমি নিতান্ত মানবী ছিলে,
এখন অম্লান দেবী!
উঠোনে জ্বালানো আছে বিরহ প্রদীপ বাতি,
তবুও সবই কল্পনায় স্থির!
আহ্নিক গতি স্থির! সৌরমন্ডল স্থির!
আরো স্থির তোমার বেদনার মন্দির!
১১টি মন্তব্য
সুরাইয়া পারভীন
নিতান্ত মাবনী স্রেফ পুড়ে পুড়ে হয়ে যায় স্থির দেবী
যাকে আর কিছুই পোড়াতে পারে না, ডোবাতে পারে না
কাঁদাতে পারে না, হাসাতে পারে না
কোনো কিছুই আর তাকে ছুঁতে পারে না
চমৎকার লিখেছেন
ভীষণ ভালো লেগেছে
সৌবর্ণ বাঁধন
নারী প্রকৃতির মতো পুড়ে গিয়ে নতুন রূপে আসে হয়তো। অনেক ধন্যবাদ জানবেন।
আরজু মুক্তা
আমার দুঃখগুলো কাছিমের মতো। সেই গানটা মনে পরলো।
আচ্ছা। আপনার সেই দেবিকে ফিনিক্স পাখি বানালে কেমন হয়? বেশি দুঃখ পেলেই পুড়ে আবার নতুন করে মানসী হবে।
শুব কামনা
সৌবর্ণ বাঁধন
ধন্যবাদ অনেক আপু। নারীতো বস্তুত ফিনিক্স পাখিই, কতো শতোবার সংসার বলয়ে পুনর্জন্ম নেয় তারা!
সুপর্ণা ফাল্গুনী
দুঃখ বিলাসী মেয়ে পুড়ে পুড়ে হবে কি খাঁটি সোনা ! দুঃখের সাগরে ডুবে থেকে সুখ চাইলেই কি সুখ মেলে? অসাধারণ একটি কবিতা। এটিও প্রিয়তে রেখে দিলাম ভাই। ভালো থেকো সাবধানে থেকো
সৌবর্ণ বাঁধন
ধন্যবাদ দিদি। পুড়ে পুড়ে খাঁটি সোনা হবে কিনা জানিনা, তবে দুঃখই হয়তো আমাদের প্রকৃত মানুষ করে।
হালিমা আক্তার
পুড়ে পুড়ে খাটি হয়ে, হয় যদি সে দেবী। দেবীকে ধারন করতে আর সাগর পারে কি। দুঃখের আগুনে পুড়ে গড়েছে যে নিজেকে। বেদনা তাকে ছুঁতে পারে কি। ভীষণ ভালো লাগলো কবিতাটি। শুভ কামনা রইলো।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ। কাব্যিক শৈলীর মন্তব্যে মুগ্ধতা জানবেন। সত্যিই দেবীকে তো সাগর ধরে রাখতে পারেনা!
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
অপূর্ব লেখনী — আহ্নিক গতি স্থির! সৌরমন্ডল স্থির!
আরো স্থির তোমার বেদনার মন্দির!
সৌবর্ণ বাঁধন
সময় ও গতির বোধ অনেকটাই হয়তো আপাত! অনেক ধন্যবাদ জানবেন। শুভকামনা রইল।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপনার প্রতিও শুভ কামনা রইলো।