
আগের পর্বের লিঙ্ক- মামাকে দেখতে যাওয়া (পর্ব-২১)
পর্ব-২২
কেওলাদেও পার্কে আজ আমাদের শেষ দিন। বিকাল ৪টায় “সালিম আলী” মিউজিয়াম থেকে বের হলাম। সূর্য অস্ত যেতে আরো আড়াই ঘন্টা বাকি। তাই আমাদের হাতে এই আড়াই ঘন্টাই সময় ছিলো। সকলের সঙ্গে আলোচনায় সিদ্ধান্ত নিলাম যে, যতটুকুন সম্ভব ৪,৫, ও ৬ নাম্বার জোনে ঝটিকা সফর দিবো। নতুন কিছু সংগ্রহের লোভে।
আমরা যার যার রিক্সায় উঠে রওনা হলাম। আমি ও কিসমত খোন্দকার ভাই সকলের আগের রিস্কায়। আমাদের পরে বাকি দুই রিক্সা। ৪ নাম্বার জোনে যাবার পথে জীতেন বললো-“সাহাবজি, আপকো ক্য়ায়া লাগা হামারা এ্যা ন্যাশনাল পার্ক? জো জো বার্ড প্যায়্যা আপলোগ খুশ হ্যায়? আমি জীতেনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বললাম-“হামলোগ খুশ, দিল ভরগিয়্যা”
৪ নাম্বার জোনের ভিতরে প্রবেশের আগে সবার উদ্দেশ্যে ব্রিফ করলাম। বললাম যেহেতু সময় কম তাই প্রতিটি জোনে আমরা ৩০ মিনিটের বেশী সময় নষ্ট করবো না। জোনের ভিতরের পথে এক নজর দেখা ছাড়া কোন বিকল্প নাই। তাই সকলে যেন একসঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে থাকি। কারন নুতন কিছু পাওয়া গেলে যেন অন্যদের জন্য অপেক্ষায় সময় নষ্ট করতে না হয়। সকলে সম্মতি দিলো।
এই জোনে হাঁস জাতীয় পাখির উপর আমার কোন আগ্রহ ছিলো না। জলাশয়ের ভিতরে ও রাস্তার ধারে ছোট ছোট ঝোপ-ঝাড় ও গাছের প্রতি নজর রাখলাম। কারন, যদি কোন ছোট পাখি পাওয়া যায় সেই লোভে। আমি আশাবাদী ছিলাম যে, এই বনে যত প্রজাতির ছোট পাখি পাবো তা সবই হবে আমার নতুন সংগ্রহ। কারন এরা ভারতীয় আবাসিক পাখি। ভৌগলিক রেখা অতিক্রম করে কোন দেশেরই আবাসিক পাখি পরিযায়ী হয় না। নিজ দেশে এদের আহার ও প্রজননের কোন ঘাটতি হয় না।
রাস্তার দুই ধারে শুধু হাঁস আর হাঁস পাখি। তখন এদের দিনের শেষ বেলার খাবারের সময়। বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এরা খাবারের সন্ধানে থাকে। ১ ঘন্টা কোন গাছের ডালে বা জলের ধারে রোস্টিং করে। সূর্য অস্ত যাবার সঙ্গে সঙ্গে গোধূলী-লগনে যার যার নীড়ে ফিরে যায়। আর এমন ভাবেই সৃষ্টিকর্তা প্রকৃতির এই জীব-বৈচিত্রকে চলাফেরার ও জীবন ধারনে অভ্যস্ত করেছেন।
আমরা বেশ কিছু ছোট প্রজাতি পাখির দেখা পেলাম। তার মধ্যে Tree Sparrow বা গেছো চঁড়ুই, Laughing Dove বা পেঙ্গা ঘুঘু, Indian Robbin বা ভারতীয় রবিন, Green Magpie বা সবুজ হাঁড়িচাচা বা সবুজ তাউরা, Monarch বা নীলরাজা, Scally breasted Munia.বা তিলা মুনিয়অ ও Ruddy breasted Crack বা রঙ্গিলা গুরগুরি উল্লেখ যোগ্য। আমার পাঠক বন্ধুদের কাছে ছবিগুলি দেখার অনুরোধ রইলো।
বেশ কয়েক প্রজাতি ছোট পাখির ছবি তুলে আমরা ৪ নাম্বার জোন থেকে বের হলাম। পরবর্তী গন্তব্য ৫ নাম্বার অভিমুখে।
Tree Sparrow বা গেছো চঁড়ুই
Laughing Dove বা পেঙ্গা ঘুঘু
Indian Robbin বা ভারতীয় রবিন,
Green Magpie বা সবুজ হাঁড়িচাচা বা সবুজ তাউরা।
Monarch বা নীলরাজা।
Scally breasted Munia.বা তিলা মুনিয়া
Ruddy breasted Crack বা রঙ্গিলা গুরগুরি
(চলবে)
২২টি মন্তব্য
আলমগীর সরকার লিটন
জীবন্ত মনে হলো ————-
শামীম চৌধুরী
ধন্যবাদ ও কৃতার্থ রইলাম কবি দাদা।
আলমগীর সরকার লিটন
জ্বি দাদা আপনাকেউ
আরজু মুক্তা
ছবি দেখে মন ভরাই।
ধন্যবাদ আপনাকে
শামীম চৌধুরী
আপনার মন ভরাতে পারায় আপ্লুত। শুভেচ্ছা জানবেন।
ভালো থাকুন আপু।
প্রদীপ চক্রবর্তী
দাদা,
আপনার সাথে ঘুরতে চাই প্রকৃতি আর পাখিকে অবলোকন করার জন্য।
আপনার প্রতিটি লেখা ও ছবি যেন জীবন্ত।
ভালোলাগার মতো লেখনী।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
শামীম চৌধুরী
করোনার প্রকটটা একটু কমে আসুক দাদাভাই।
অবশ্যই সঙ্গে যাবেন। প্রকৃতিকে নিজের চোখে দেখে স্বাধ মিটাবেন।
সাথে পাখ-পাখালী তো থাকবেই।
খুব শীঘ্রই পরের পর্ব পড়তে পারবেন।
প্রদীপ চক্রবর্তী
হ্যাঁ, দাদা পৃথিবী সুস্থ হয়ে উঠুক।
পরের পর্বের অপেক্ষায়।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
প্রতিটি পাখিই আলাদা আলাদা রঙের, সৌন্দর্যের তাই মনটা ভরে গেল ভাইয়া। গেছো চড়ুই টা অন্যরকম ভালো লাগলো, নীলরাজা টাও দারুন লাগলো। সবুজ তাউরা টা বর্ণীল লাগলো। অফুরন্ত কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। আপনার এই সাফল্য আরো অনেক দূর এগিয়ে যাক। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো।
শামীম চৌধুরী
দিদিভাই
আপনার মন্তব্যে উৎসাহিত হলাম। আরো বেশী বেশী কাজ করার ইচ্ছা জাগ্রত হলো।
প্রকৃতিতে যত পাখ-পাখালী আছে কারো সঙ্গে কারো রঙের মিল নেই। কালো হলেও তার মাঝে বিধাতা কিছু না কিছু রং লেপে দিয়েছেন যেন আরো বর্ণিল দেখা যায়। যেমন কাক কালো তবে এমন কালো রঙ আপনি নিজে তৈরী করতে পারবেন না। কাকের কালো পালকে চাকচিক্য আছে। সঙ্গে আছে ধূসর রং।
আপনার আশীর্বাদ আমার পথ চলার সাথী।
ভাল থাকবেন।
সুপায়ন বড়ুয়া
প্রকৃতির অপরূপ রূপ তুলে এনেছেন গভীর আদরে
এক একটা পাখির ছবি দেখে মনটা গেল ভরে।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
শামীম চৌধুরী
দাদা
আমি যানপরণাই আনন্দিত হলাম আপনার ভাল লাগায়।
শুভ কামনা রইলো।
তৌহিদ
ছোট পাখিরা কেন পরিযায়ী হয়না আজ তা জানলাম। আপনার লেখার মাধ্যমে নিত্যনতুন তথ্যে নিজের জ্ঞান সমৃদ্ধ হচ্ছে। ধন্যবাদ আপনার প্রাপ্য।
পাখির ছবিগুলি অসাধারণ সুন্দর। শুভকামনা রইলো ভাই।
শামীম চৌধুরী
ধন্যবাদ ভাইজান।
ভালো থেকো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ইশ্ এত সুন্দর সুন্দর পাখি।আজকের মত ছোট ছোট করে লিখল্ মজা বোধহয় বেশি হবে। পড়া আর পাখি দুটোই তাহলে আকর্ষণ রাখবে।
শুভ কামনা ভাই।
শামীম চৌধুরী
জ্বী আপু,
পরামর্শের জন্য উপকৃত হলাম।
আমার পাঠক বন্ধুরা যে ভাবে উপভোগ করবে সেভাবেই লিখবো।
শুভ কামনা রইলো।
উর্বশী
যাক, প্রকৃতির মানুষ আরও একজন পাওয়া গেল, যিনি কিনা গভীরে মিশে যেতে পারেন।প্রতিটি ছবি একদম সত্যি মনে হয়
ভাল লেগেছে। অনেক সুন্দর পাখি, নাম ও জানা হলো।
দারুন লিখেছেন।অনেক ধন্যবা।
শামীম চৌধুরী
অনেক শুভ কামনা রইলো।
ইঞ্জা
চমৎকার লেখাটি প্রথম দিনই পড়েছি আমি, যদিও অনিবার্য কারণে মন্তব্য দিতে পারিনি।
পাখি গুলো সম্পর্কে ডিটেইলস লিখলে আরও খুশি হতাম ভাই, মনে আফসোস রয়ে গেলো।
শামীম চৌধুরী
ভ্রমনের গল্পটি শেষ হোক। পরে সব গুলি পাখির পরিচয় ও স্বভাব এক এক করে তুলে ধরবো।
তাতে প্রতিটি পাখি সম্পর্কে পাঠক বন্ধুরা জানবে স
ইঞ্জা
অপেক্ষায় রইলাম ভাই। 😊
শামীম চৌধুরী
আপনার সহযোগিতা কামনা করি।