
বেশ কিছুদিন ধরে রুপার সাথে দেখা নেই হিমুর। করোনা কাল চলছে। রুপার বাইরে যাওয়া নিষেধ। হিমু মাঝেমধ্যে বাইরে গেলেও রপার বকুনিঝকুনি শুনতে হয়। এজন্য আজকে বেচারার মনটা বেশ খারাপ। খারাপ হবেই না কেন? কেউ একজন ফোন করে কাচ্চি বিরিয়ানির দাওয়াত দিয়েছিল। কিন্তু রুপার বিধিনিষেধে আর যাওয়া হলোনা তার। এজন্য অবশ্য অতনুকে প্রায়ই সময় দোষ দেয় হিমু। কারণ হলো- অতনুই নাকি রূপার গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করে।
– শালা, তোর জন্যই আমার কাচ্চি বিরিয়ানির অফারটা মিস হয়ে গেলো।
– আমার জন্য…। মানে কি?
– হুম, তোর জন্য। শুধু তোর জন্য আজ আমার এই অবস্থা।
– শোনেক, তুই মিছামিছি আমাকে দোষারোপ করছিস।
– আমি মিছামিছি দোষারোপ করি।
– হুম অবশ্যই। আমি রুপাকে কল দিই না।
– তাহলে কে দেয়? আমার দাদু…।
– শোনেক, তোর সাথে এবিষয়ে কোন কথা নেই।
– এখন তো থাকবেই না।
দুজনেই চুপচাপ। কথাকথি বন্ধ। সেজনু শুধু মুচকি মুচকি হাসছে। কিছু বলছে না। কারণ হলো – হিমু আর অতনুর মনোমালিন্য খুবই উপভোগ করে সে। খবরাখবর তো সেজনু নিজেই পাঠায়। তবে হিমু বিশ্বাস করে সেজনু একাজ কখনোই করতে পারবে না। কেননা, সেজনু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, মিথ্যা কথা বলে না ইত্যাদি ইত্যাদি।
হিমুর মোবাইলটা বেজে উঠলো। হিমু মোবাইল আর সিগারেট নিয়ে জানালার কাছে গিয়ে বসলো। আহা! সিগারেট আর নারী কি অমায়িক বন্ধুবাৎসল সম্পর্ক। সত্যি! ইতিহাসের বিরল সম্পর্কের এটি একটা।
হিমু চুপিচুপি কথা বলতে পারে না। চুপিচুপি কথার মধ্যে নাকি কোন স্বাদ নেই। এনিয়ে রুপার সাথে ঝগড়াও হয়েছে বেশ কয়েকবার। কিন্তু তারপরও কোন লাভ হয়নি।
হিমু রুপার কথোপকথন চলছে। হিমুর কথার আওয়াজে বোঝা যাচ্ছে তারা যৌতুক নিয়ে কথা বলছে। হঠাৎই সেজনু মাইক্রোফোনে গান ছাড়লো। আমি সিগারেট ধরিয়ে জানালার কাছে বসেছি। হিমু বলছে, একটু অপেক্ষা মোবাইলের লাউডস্পিকারটা দিয়ে নিই।
– লাউডস্পিকার অন করলে কেন?
– সেজনু গান বাজাচ্ছে। তোমার কথা শুনতে পারছি না।
– ঠিক আছে। এখন বল, তুমি আব্বুর থেকে কত টাকা যৌতুক চাও।
– না, আমি কোন যৌতুক চাইনা। তবে…।
– তবে, তবে কি?
– তোমার আব্বুকে বলবো সুন্দর করে একটা টয়লেট তৈরি করে দিতে।
– কেন? পৃথিবীতে এতোকিছু থাকতে তুমি হঠাৎ টয়লেট চাচ্ছো কেন? তবে কি…।
– না না না। তুমি যেটা মনে করছো আসলে সেটা নয়।
– তাহলে…।
– বিয়ের পর তোমার সাথে যখন ঝগড়া হবে, যখন তুমি তোমার বাপের যৌতুকের কথা বলবে তখন।
– তখন?
– তখন আমি বলবো তোমার বাপের যৌতুকে আমি মুতি।
১০টি মন্তব্য
আলমগীর সরকার লিটন
মজাই লেখেছেন রানা দা
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয়।
সুপায়ন বড়ুয়া
তোমার আব্বুকে বলবো সুন্দর করে একটা টয়লেট তৈরি করে দিতে যাতে যৌতুক টয়লেট ফ্লাশ করা যায়।
মজা পেলাম। শুভ কামনা।
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয়
হালিম নজরুল
এ কেমন কৌশলী যৌতুক চাওয়া!!!! হা হা হা
ফয়জুল মহী
অনবদ্য লেখনী l
নিতাই বাবু
হাহাহা, দারুণ, দারুণ! মজাই পেলাম দাদা। আসলেও এটা একরকম দারুণ বুদ্ধিই বটে। সব পুরুষ মানুষেরেই উচিৎ হবে, বিয়ের সময় যৌতুক বাবদ দামী কিছু না দাবি করে এইরকম গিরিঙ্গি বুদ্ধি খাঁটিয়ে কিছু চাওয়া দরকার বলে আমি মনে করি। এসব বুদ্ধি পান কোত্থেকে?
আরজু মুক্তা
মাথায় এতো বুদ্ধি!
আপনি কি নিবেন যৌতুকে?
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আর কিছু পাইলেন না যৌতুক হিসেবে জিনিসটা কিন্তু আসলেই ভালো। বৌরে খোটা দেয়ার, দাবিয়ে রাখার জন্য খুব ভালো বুদ্ধি।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
সুন্দর লিখেছেন — হিমুর মোবাইলটা বেজে উঠলো। হিমু মোবাইল আর সিগারেট নিয়ে জানালার কাছে গিয়ে বসলো। আহা! সিগারেট আর নারী কি অমায়িক বন্ধুবাৎসল সম্পর্ক। সত্যি! ইতিহাসের বিরল সম্পর্কের এটি একটা।
ধন্যবাদ।