
সকাল সকাল রুদ্রের মোবাইল ফোনটা বেঁজে উঠলো। ওয়াশরুমে থাকার কারণে মোবাইল কল রিসিভ করতে পারেনি সে। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে, টেবিলের উপরে থাকা মোবাইল ফোনটা হাতে নিয়ে চেক করছে রুদ্র। দেখতে পেলো তার বন্ধু, রাশেদের কল। রাশেদের কল দেখে রুদ্র আর দেরি করেনি, তখনি কল দিলো।
রাশেদ- হ্যালো, বন্ধু, তোমাকে কল করেছিলাম একটি সংবাদ দেয়ার জন্য।
রুদ্র- সেটা বুঝতে পারছি, এখন বল, কি সংবাদ? আর ঠিকানা পেয়েছিস?
রাশেদ – হু, সেটাই তোকে জানানোর জন্য কল দিয়েছিলাম।
রুদ্র – আচ্ছা ঠিকানাটা দে,
রাশেদ – মেয়ের বাবার নাম মোহন, গ্রামের বাড়ি- শ্রীনগর, পোস্ট +থানা- শ্রীনগর। মেয়ের বাবা তেমন স্বচ্ছল নয়, তবে তার দুটি মেয়ে, দুজনকেই শিক্ষিত করে গড়ে তুলছে সে। বড় মেয়েটির সাথেই আমাদের বন্ধু সাচ্চুর বিয়ে।
রুদ্র- ধন্যবাদ বন্ধু, আমি আজকেই দ্যাখা করবো, তোরা যেতে চাইলে যেতে পারিস। আর হ্যাঁ মনে রাখিস সাচ্চু যেন না জানে। তাহলে বলবে আমি ওর বিয়ে ভেঙে দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছি।
রাশেদ- কেউ জানবে। আর তোর একা যাওয়াই ভালো। কি হলো সেটা জানাবি কিন্তু।
রুদ্র – অবশ্যই।
বিকেল বিকেল মোহন মন্ডলের বাড়িতে পৌছে গেলো রুদ্র। পারিপাটি বাড়ি, খুব পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বাড়ির আশপাশ। চারপাশ টিনের বেড়া। বাড়িতে প্রবেশ করার জন্য সুন্দর একটা গেইট। গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে রুদ্র বাড়ির মানুষজনকে ডাকছে।
রুদ্র- কেউ বাড়িতে আছেন? কেউ কি বাড়িতে আছেন?
কাশতে কাশতে একজন বেড়িয়ে এলেন, গেট খুলে দিয়ে বললেন- কাকে চাই?
রুদ্র- (সালাম দিয়ে রুদ্র বলল) মোহন মন্ডল কে
মোহন মন্ডল – আমিই মোহন মন্ডল। তা তুমি কে, তোমাকে তো চিনতে পারলাম না।
রুদ্র – আমার নাম আমিনুল ইসলাম রুদ্র, পাশের গ্রামেই আমার বাড়ি, বাবার নাম আরজু।
মোহন মন্ডল – তুমি আরজু ভাইয়ের ছেলে, এসো, এসো ভিতরে এসো।
বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করা মাত্রই মোহন মন্ডল খুব ব্যস্ত হয়ে পড়লেন, চেয়ার টানাটানি, তিনি বাড়ির সবাইকে ডাকতে লাগলেন—
মোহন মন্ডল – অধরার মা তুমি এদিকে আসো, দ্যাখো কে এসেছে। অধরা, সাদিয়া মা তোরা এদিকে আয়, দ্যাখ কে এসেছে।
রুদ্র- চাচা, আপনি ব্যস্ত হবে না। আর আমি তো আপনার ছেলের মতোই। দ্যান চেয়ারটা, আপনি আমার চেয়ার টানলে এটা কেমন দ্যাখায় বলুন তো। চেয়ারে বসতে বসতে পারিবারের সবাই এসে হাজির।
মোহন মন্ডল – বাবা, এটা আমার বড় মেয়ে, অধরা, আর ওটা ছোট মেয়ে সাদিয়া। বড় মেয়েটার বিয়ে ঠিক করেছি তোমাদের এলাকাতে। আগামী সপ্তাহে বিয়ে।
রুদ্র- আল-হাম্দুলিল্লাহ, ভালো সংবাদ।
মোহন মন্ডল – অধরার মা, মেহমনরে আপ্যায়নের বন্দবস্ত করো। খুব ভালো একটি ছেলে। অনেক নাম শুনেছি কিন্তু দ্যাখা হয়নি। মা অধরা, জানিস বাবা কিন্তু পড়ালেখায় খুব ভালো। সরকারি চাকরি পেয়েও করেনি। গ্রামের মানুষ নিয়েই আছে।
রুদ্র- চাচা, আমার জন্য কিছুই করতে হবে না। আসলে আমি একটা সমস্যায় পড়ে আপনার নিকট এসেছি। একটু বসুন তাহলে কথাগুলো বলতে পারি।
মোহন মন্ডল – তা বাবা আমার কাছে এমন কি জরুরী কাজ, আমি তো সামান্য একজন মানুষ। কৃষি কাজ করে সংসার চালাতে হয়। এটা ঠিক অন্যান্যদের থেকে একটু ভালো আছি, আল্লাহ আমাকে ভালো রেখেছেন। এজন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া। তা বলো বাবা।
৭টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি
রহস্য রেখেই শেষ করলেন এ পর্বটা আর এটাই হল একজন সফল নাট্যকার বা লেখকের পরের পর্ব পড়ার আগ্রহের কৌশল। যাই হোক যৌতুক দেয়া এবং নেয়া উভয়তেই যেন আমরা না বলি। গুড পোষ্ট চলুক।
রুদ্র আমিন
চেষ্টা করছি কিন্তু কি লিখছি সেটা আপনাদের মতামতের উপর নির্ভর করে।
মনির হোসেন মমি
আপনার এ গল্পটি আপনার অন্যান্য গল্পের চেয়ে ভাল এর দিকে আমার দৃষ্টিতে প্রথম কাতারে।কারন এ গল্পে এমন একটি ম্যাসেজ আছে যা আমাদের পুরো সমাজ ব্যাবস্থাকে কটাক্ষ্য করে।যৌতুক এ সমাজের একটি সামাজিক অক্ষয়ের দিক যা আপনি সুন্দর ভাবে তুলে ধরছেন।ধন্যবাদ।
নিতাই বাবু
এই পর্বটাও ভালো হয়েছে, ভালো লেগেছে। পরের পর্বের আশায় থাকলাম।
রুদ্র আমিন
জেনে ভালো লাগলো ভাইজান, মন্তব্যে ভালোবাসা।
আরজু মুক্তা
ভালো লাগলো
সাবিনা ইয়াসমিন
পরের পর্বে যাচ্ছি 🙂