পর্যটন শহর সানিয়া হলো চায়নার এক দ্বীপ, এই দ্বীপ তাইওয়ানের একদম কাছে, এই দ্বীপে পাহাড় সমুদ্র মিশে একাকার।
এই সানিয়াতে ২০১০ আমন্ত্রণ পেলাম ডিলার কনভেনশনে, ডংফেং শোকোন আয়োজিত এই কনভেনশন হবে তিন দিনের আলিশান প্রোগ্রাম, আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে সাত স্টার মার্কা হোটেল রয়াল অর্কিডে যা বিশ্বের বৃহত চেইন হোটেলের একটা অংশ।
ইমেল পাওয়ার পরই বিষয়টা জানালাম কোম্পানির সিইওকে, উনি বললেন “ওকে আপনিই চলে যান”।
আমি বুঝালাম এমন একটা প্রোগ্রামে আপনি না গেলে কেমনে হয়?
উনি দোনোমনা করে রাজি হয়ে গেলেন, উনাকে ডিটেলস পাঠিয়ে দিয়ে ভিসা সংক্রান্ত সকল ব্যবস্থা নিলাম পরের এক সপ্তাহে, উনি ঢাকায় এসে আমি সহ ভিসা নিলাম, এরপর চায়না সাউদার্ন বিমানের টিকেট কাটা হলো।
নির্ধারিত দিনে আমরা চায়না সাউদার্নে চেপে বসলাম গুয়াঞ্জু প্রদেশের উদ্দেশ্যে আমাদের সময় রাত একটায়।
পরদিন ভোরে পোঁছালাম গুয়াঞ্জু শহরে, এইখানে আমাদের সিকিউরিটি চেকইন করে নিলাম, লাগেজ কালেক্ট করে বেড়িয়ে এসে লিফটে চড়ে আভ্যন্তরীন ডেস্কে গিয়ে সানিয়ার বোর্ডিং পাশ নিলাম, আমাদের ফ্লাইট সকাল এগারোটায়, লাগেজ গুলো বোর্ডিং পাশ নেওয়ার সময় দিয়ে দেওয়া হয়েছে, শুধু সাথে আছে হ্যান্ডব্যাগ।
এরপর গেলাম স্টারবাক্সে, কিছু খেতে হবে আমাদের, দুজনের জন্য স্যান্ডুইচ এবং মোকাচিনো কফি অর্ডার দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম, কিছুক্ষণের মধ্যে খাওয়া এসে গেলে ওগুলো দিয়েই সকালের ব্রেকফাস্ট করলাম, খাওয়া শেষে নির্ধারিত গেইটে প্রবেশ করে সিকিউরিটি চেক শেষে আমাদের জন নির্ধারিত গেইটের সামনে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম, সময় হয়ে এলে আমাদের ডাক পড়লো বিমানে প্রবেশের, আমরা বোর্ডিং পাশ দেখিয়ে বিমানে প্রবেশ করে গন্তব্যে রওয়ানা হয়ে গেলাম।
দুপুর দুইটার পর আমরা সানিয়ার আকাশে পোঁছে গেলাম, একদিকে বড় বড় পাহাড় এবং অন্যদিকে চায়না সি এক মহোময় সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে, পাহাড়ের ভাজে ভাজে সুন্দর সুন্দর ঘর বাড়ী দেখা যাচ্ছে, বিমান পুরা সানিয়া শহর এক রাউন্ড দিয়ে ডাইভ দিলো নিচে নামার জন্য, দূর থেকে সামনে দেখে ভয়ই পেলাম বিমানের ডাইভ দেওয়া দেখে, কারণ সামনে প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে আছে বড় বড় পাহাড়, পরে লক্ষ্য করলাম আমাদের বিমান সেই প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে সামনের ল্যান্ডিংয়ের দিকেই এগুচ্ছে, কিছু সময়ের মধ্যে মাটি ছুঁয়েই ল্যান্ড করে সামনে দিকে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে স্পিড স্লো করে বিমান বন্দরের দিকে বাঁক নিয়ে এগিয়ে গেল।
বিমান থেকে নেমে আমাদের লাগেজ কালেক্ট করে বেড়িয়ে এলাম এক্সজিট দিয়ে, বেড়িয়েই ভড়কে গেলাম, সামনে প্রচুর সাংবাদিক ক্লিক ক্লিক করে ছবি তুলছে, কয়েকজন ভিডিও করছে, ভাবলাম কি ব্যাপার কোন মন্ত্রী মিনিস্টার আসছে নাকি আমাদের সাথে, সামনে তাকিয়ে দেখি ইস্টেফেন (ডংফেং শোকোনের এশিয়া ম্যানেজার) এগিয়ে আসছে আমাদের রিসিভ করতে, আমাদের সাথে হ্যান্ডসেইক করে আমাদের লাগেজ পোর্টারকে বুঝিয়ে দিলো এবং আমাদেরকে নিয়ে দাঁড়ালো পোজ দিতে, বুঝতে পারলাম সাংবাদিকরা অন্য কারো জন্য নয়, আমাদের জন্যই রাখা আছে, পোজ দেওয়া শেষে আমাদেরকে নিয়ে এগিয়ে গেলো গাড়ীর উদ্দেশ্যে, গাড়ীতে উঠার পর আমাদের নিয়ে চললো হোটেলের উদ্দেশ্যে।
চলবে।
ছবিঃ গুগুল।
২৪টি মন্তব্য
রিতু জাহান
চায়নাদের এ সকল অনুষ্ঠান খুব জমকালো আর উপভোগ্য হয় শুনেছি।
আহ ভাইজু, সামনে এমন করে ক্যামেরা ক্লিক ক্লিক করলে তো হেব্বি মজা পেতাম আমি।
চলুক তো অবশ্য।
পরের পর্বের অপেক্ষায়।
ইঞ্জা
আপু, আপনি এই ভ্রমণেই পাবেন চায়নিজদের জমকালো অনুষ্টানের পরিচিতি, আসলেই বেশ জমকালো আয়োজন হয়। (3
ছাইরাছ হেলাল
যাক, এত অপেক্ষার পর আবার পড়তে পেরে আনন্দিত হচ্ছি।
চলুক, চলতেই থাকুক।
ইঞ্জা
\|/
ইনশা আল্লাহ্ এইবারের পর্ব একটু দীর্ঘই হবে, দোয়া রাখবেন ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
আপনার লেখার পর্ব পেলাম। নিয়মিত থাকছি।
ইঞ্জা
খুব খুশি হলাম ভাই, ধন্যবাদ।
মাহমুদ আল মেহেদী
চলুক ভাই ভ্রমন এর সাথে ইতিহাস ও জানতে মন চায়
ইঞ্জা
ধন্যবাদ ভাই, খুশি হলাম।
জিসান শা ইকরাম
চীন গেলাম তিনবার, একবারও কোনো সীবিচ দেখিনি। মনেই হয়নি আসলে বিচ দেখার কথা।
সোনিয়া পড়ে আগ্রহ হলো এটি দেখার।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম ভাইসাব।
ইঞ্জা
কি বলেন ভাইজান, আপনি সাংহাই, গুয়াঞ্জু গেলেন আর বীচই দেখলেননা, strange!
অবশ্য সানিয়ার কথা আলাদা, এইটা পর্যটন শহর, পাশে থাকবেন, ধন্যবাদ।
তৌহিদ ইসলাম
ভ্রমন কাহিনী আমার পছন্দের বিষয়। আপনি এত সুন্দরভাবে লেখেন শুধু পড়তেই মন চায়। পরের পর্বের অপেক্ষায়
ইঞ্জা
আপ্লুত হলাম ভাই, ইনশা আল্লাহ্ কাল পাবেন।
মায়াবতী
(y)
ইঞ্জা
-{@
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাইয়া ছবিটা দেখেই ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে!
আপনার এই ভ্রমণ কাহিনী পড়ে আমার জাপানের “টয়োটা সিটি”তে ভ্রমণের কথা মনে পড়ে গেলো। কিন্তু সবকিছু মনে নেই। চীন এবং জাপান আপ্যায়ণে যথেষ্ট রাজসিক।
দ্বিতীয় পর্বও পড়া হয়ে গিয়েছে। তৃতীয় পর্ব তাড়াতাড়ি চাই।
ইঞ্জা
ধন্যবাদ আপু, সময় করে সানিয়া না হয় মালদ্বীপ ঘুরে আসুন, এই দেশ গুলো দেখার মতো।
রেজওয়ান
ব্লগে পড়বো বলে ফেইসবুকে পড়িনি!☺অনেকদিন পর আজ আসলাম ব্লগে! সব পর্ব পড়বো আজকে✌
ইঞ্জা
ধন্যবাদ রেজওয়ান। (3
সাবিনা ইয়াসমিন
ভ্রমন কাহিনী পড়ার মজাই আলাদা।একটি দেশ ,তাদের ভাষা ,কালচার ,জাতীয়তা,প্রকৃতি সব কিছুই মোটামুটি ভাবে জানা যায় একজন ভ্রমন রচিয়তা কারী লেখকের হাত ধরে।আপনার সানিয়া ভ্রমন সিরিয়ালটি প্রথম থেকেই খুব ভালো লাগতো।
ইঞ্জা
সত্যি তাই, ভ্রমণ কাহিনীর সুবিধাই হলো যে অজানাকে জানা।
ধন্যবাদ আপু।
কামাল উদ্দিন
একটাই মাত্র ছবি দিলেন, ওটা দেখেই মনটা শিরশির করে উঠলো, চায়না কখনো যাওয়া হয়নি………..
ইঞ্জা
এই ছবিটা হলো চায়নার বিখ্যাত টুরিস্ট এবং পর্যটন সানিয়ার, কখনো গেলে এই সানিয়াতেই ভ্রমণ করে আসুন, এছাড়া চায়না দেশটাই দেখার মতো।
কামাল উদ্দিন
কোন এক সময় যাবো এটা নিশ্চিৎ
ইঞ্জা
ইনশা আল্লাহ