-{@
আমাদের দেশে অনেক অভিভাবক আছেন যারা নিজেদের ব্যর্থ স্বপ্নকে তাঁদের সন্তানের দ্বারা পূরণের চেষ্টা করেন। সে স্বপ্ন পূরণের জন্য সন্তানদের উপর অনেক মানুষিক ও শারিরীক চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু আমরা ভুলেই যাই সেওতো এক আলাদা স্বত্তা সেও স্বপ্ন দেখে কিছু করার, আক্ষরিক অর্থে তার স্বপ্নটাই একজন অভিভাবকের ইচ্ছার চাইতে মুল্যবান। তারও একটা ভুবন আছে, সেও চায় নিজের স্বপ্ন বা ইচ্ছাটা পূরণ করতে কিন্তু আমরাই তার ভুবনকে অন্ধকার করে দেই আমাদের স্বপ্ন দিয়ে।
ছেলেটা হয়তো ভাল ছবি আঁকে কিন্তু আমি তাকে ডাক্তার বানিয়েই ছাড়ব। হয়তো মেয়েটার শখ ছিল টেনিস বা ক্রিকেটে কিন্তু বাবার ইচ্ছা মেয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে। অনিচ্ছা সত্যেও সেই মেয়েকে অংক নিয়েই বসতে হবে হয়তো সে অংকের “অ” ও বুঝে না সে দিকে কারো খেয়াল নেই।
মধ্যবিত্ত মানুষিকতার মানুষের একটাই চিন্তা সমাজকে কি জবাব দিবো, লোকে কি বলবে! “সমাজ কি বলবে” শুধুমাত্র একথা ভেবে এলোমেলো করে দিচ্ছি এক সুন্দর স্বপ্নকে। একবারও ভাবি না আমার সন্তান কি চায়? সে খুশিতো?
সমাজে আমাদের স্ট্যাটাস রাখতে গিয়ে নানান অপ্রয়োজনীয় শিক্ষা সনদ গ্রহণের দৌরাত্মে নিজেদের ভুলে যাই, ভুলে যাই আমরাও মানুষ! রোবট না। “A+” না পেলে তো সমাজে আর মুখ দেখানো যাবে না। কিন্তু কেউ ভাবে না এই “A+” পেতে গিয়ে সেই হাসিখুসি ছেলে/মেয়েটা হারিয়ে ফেলেছে নিজ শৈশব কৈশোর। ভুলে যাচ্ছে সেও স্বপ্ন দেখেছিলো জাতীয় দলে খেলার। ছেড়ে দিচ্ছে ছবি আঁকা বা ফফটোগ্রাফি। ডিপ্রেশনে থেকে ভুলে যাচ্ছে পারিবারিক সম্পর্কের মূল্য। যেখানে অভিভাবকগণের ই উচিৎ সন্তানের বেষ্ট ফ্রেন্ড হওয়া সেখানে সম্পর্কের উন্নতি না হয়ে নষ্ট হচ্ছে সে সম্পর্ক। পরীক্ষায় ভাল ফলাফল না করতে পেরে চলে যাচ্ছে নেশার রাজত্বে অথবা বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার মত কঠিন পদক্ষেপ। কমছে পারিবারিক মূল্যবোধ, নষ্ট হচ্ছে সমাজ, বাড়ছে অপরাধ!
অভিভাবকের উচিৎ গাইড করা, সন্তানকে বুঝা, সময় দেয়া, নিজের স্বপ্ন সন্তানের ঘাড়ে না চাপানো। এতে সন্তান থাকবে বিশ্বস্ত, বাবা-মা কে দিবে প্রাধান্য, বন্ধু সুলভ আচরণ করবে সবার সাথে। প্রতিদিন নতুন কিছু শেখার জন্য পড়াশুনা করবে “A+” এর জন্য নয়। মন থেকে মজা করে পড়াশুনা করলে ভাল রেজাল্ট সাভাবিক ভাবেই হবে। পরিবারে থাকবে আনন্দ, থাকবে নিজেদের মধ্যে ভালবাসা।
আসুন নিজেকে বদলাই, বদলে যাবে সন্তানের ভবিষ্যৎ। জোর করে নয় বরং পাশে থেকে ওর মতন করে ওর জীবনটাকে গড়তে সাহায্য করি। সন্তানকে আশ্বাস দিন “তোমার স্বপ্ন ই আমার গর্ব” দেখবেন দিন শেষে এই সমাজের কাছেই বুক ফুলিয়ে গর্বের সাথে বলবে “আমার বাবা-মা ই আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড” আমরা সুখী পরিবার। সবাই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারেনা হওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধু ভাল মানুষ, সুন্দর মনের মানুষ হলেই চলবে জীবনকে সুন্দর করার জন্য।
৭টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
প্রত্যকের সন্তানদের তাদের স্বমতের মতামতটা নেয়া জরুরী।চাপিয়ে দেয়ার কোন কাজই সুফল হয় না।ভাল পোষ্ট।
রেজওয়ান
আসলেই ভাই
অসংখ ধন্যবাদ আমাকে সময় দেওয়ার জন্য (3
মোঃ মজিবর রহমান
এখন তো স্বপ্ন বাবা মা সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়ার পুরবেই দেখে থাকে। অথচ সন্তাঙ্কে মানুস করতে চাই কিনা সন্দেহ, অর্থ উপার্জনের হাতিয়া বানাতে চেস্টা করে। কিবাই করা উপায় তো নায়। দেশের সরকার জনসাধারণের জন্য কিছুই করে অসহায়, গরীব, প্রবীন্দের জন্য। তাই বাবা-মা সন্তানের উপর নিরভর করেই তাদের সন্তান্দের অর্থ উপার্জনের জন্য তৈরি করার চেস্টা করে সন্তান্দের।
আপনার সংগে সহমত।
রেজওয়ান
সুন্দর বলেছেন ভাই। অনেকদিন পরে ব্লগে এলাম। ধন্যবাদ ভাইজান পাশে থাকার জন্য -{@
মোঃ মজিবর রহমান
(y) -{@
জিসান শা ইকরাম
আমরা আমাদের সন্তানদের যন্ত্র বানিয়ে ফেলছি, যা কোন মতেই কাম্য নয়।
আমরা আমাদের স্বপ্নকে সন্তানের উপর চাপিয়ে দেই।
সময়যোগী লেখা।
রেজওয়ান
আমাদের স্বপ্নপূরণের জন্য আসলেই সন্তানদের উপর অনেক কিছুই চাপিয়ে দেই যা মোটেও কাম্য নয় (y) অনেকদিন পরে এলাম। অনেক শ্রদ্ধা ও ভালবাসা প্রিয় ভাইজান (3