জানলাতলে ভোরের আনন্দ রক্তজবা।।

অনেকটা আশ্চর্য সব জীবনবোধনের পরিক্রমায় ফেলে এসেছি বহুবিধ এষণাময় সুখদুঃখের অম্লমধুর ছাপ্পান্নটি বছর। সাতান্নও ফুরোবে মাস চারেক পর। হ্যাঁ এভাবেই হয়তো জীবন হতে ক্রমেই টুপটাপ খসতে থাকে অনেক সাধের জীবন্ত দিনগুলি। স্মৃতির খেরোখাতার পাতাও মর্মরিত শুকনো পাতার মতোই ওড়ে অলস দুপুর গড়ানো সোনালি বিকেল ছেড়ে সন্ধের দিকেই। তখন সূর্যাস্তের মতোন একটি দিনের শেষে রাতের চন্দ্রতারা খচিত আকাশতলে অতন্দ্র পাখি ও প্রকৃতির   অমোঘ নিয়মে পরিচালিত জিজীবিষাময় জীবনটা নতুন করে স্বপ্নের হাতে ছাড়তে বড়ো ভালোলাগায় আঠা দুচোখ। ঘুমঘোর ভেঙেই ভোরের আলোরেখার আগমণে জগত কি যে মধুর লাগে! তখন ভাবাও যায় না একদিন সমস্ত ছেড়েছুড়ে চিরঘুমের দেশে যেতেই হবে! যে দেশ বিষম অচিন, তবু যেতেই হয়, বিধিপ্রদত্ত এই-ই নিয়ম। জীবনকে ছাড়িয়ে সারিসারি চলে যাওয়া স্মৃতির খাতায় নাম লিখিত হয়। কবির দল কতভাবেই এই চলে যাওয়া এই স্মৃতিবন্দনা নিয়ে পঙক্তিঘোরের খোঁজেই এক জীবনভর হন্যে হয়েও পায় না মনের মতো পঙক্তিখানি! কেউকেউ হয়তো পায়, তবুও কি জানি কি অব্যক্ত আকুলতা পড়েই রয় পিছনে, আর জীবন পাড়ি জমায় জীবনসায়াহ্নে!  সুখদুঃখের সহস্র জটিল উপলব্ধির কাল ফুরোলে অজানিত অচিনপুরে সেইতো চলেই যাওয়া চিরতরেই! তা স্বত্বেও জীবন নিয়ে বাড়াবাড়ির সীমা রাখে না দুনিয়ার মানুষ! একরত্তি সুযোগ পেলে জীবনটাকে আসমানে চড়ায়! সুযোগের অভাবে গোত্তা খেয়েও পড়ে! তবুও নাছোড় মানুষ! বিশ্বলোকে নিজের বোধ ও বোধন, দেশপ্রেম ছড়িয়ে দিতে ছাড়িয়ে যেতে জীবনভর ব্যাস্ত পথিক! পথে খানাখন্দও কিছু কম না, তবু পরোয়া নেই! এই যে অনেকটা কালের স্বাক্ষী আমিও দিব্যি অসুখবিসুখ পরোয়া না করেই যখনতখন লিখতে বসি যা খুশি, কেউকেউ কবিও ভাবে, আবার অনেকেই কবির তালিকায় রাখেনও না, তাতে আমার ক্ষতিবৃদ্ধি ঘটে না। আমি কি নিজেও জানি কিসের অন্বেষায় আজও বসি লিখতে! সেই অনেক কাল আগের লেখা আমার একখানা কাব্যিক অনুভূতির পঙক্তিমালা মনে আসছে এইখানে “সোনেলা” ব্লগে প্রথম লেখাটি লিখতে বসে, শিরোনামটি মনে আসছেনা, যদ্দুর মনে পড়ছে “ও পাতাল ও মাটি” গ্রন্থভুক্ত কবিতা, আমি কবিতা ভাবি না, কেবল শব্দবদ্ধ অনুভবই ভাবি, যাহোক, পঙক্তিগুলো স্মরণশক্তি হতে লিখছি –

ভারি তো সবুজ দেখা –
জানালায় দোল খায় জং!
অদেখায় ডুবেছে দুচোখ আহা –
তৃষ্ণাকাব্যে পাতার কি আসে যায় যখন সূর্যাস্ত ঢংঢং!

বলি, লতাফুল নিজেই ফুটেছে ভাই –
আর তা বলছে গাছ স্বয়ং!
সাক্ষ্যপ্রমাণের প্রয়োজন নাই –
তবু কি না কৃতিত্বের ভাগের জন্যই রাজ্যের ভড়ং!

কোনও মানে হয়? বলুনতো জনগণ?
এতো মুফত পাওয়া প্রকৃতি ও বন –
তথাপি কবির মনে রঙ
আড়ালে অনেকে বলে – ঢঙ!

প্রকাশ্যেও কেউকেউ বলেই বসেন –
মাথামুন্ডু বুঝিনাতো কি লেখেন?
রোজরোজ মাথাগোঁজ কবিতা রচেন –
আদতে তো ছাইপাশ আহ কি কান্ডই না করেন!

কে কারে বোঝায় হায় কোনও মানেই নাই –
মরাহাজায় তবুও ভাগ চাই!
কে কারে বোঝায় হায় কোনও মানেই নাই –
মরাহাজায় তবুও ভাগ চাই!

(আমার স্মরণশক্তি আদতে কম বিষম, জানিনা, পঙক্তিগুলো যথাযথ লিখেছি কি না, তা হোক, আমারই রচিত যখন, তখন ভুলভাল থাকলেই কি, তথাপি ভদ্রতাবশে ক্ষমাপ্রার্থী।)

আরও একটা প্রধান কথা বলছি, আমার অনুজপ্রতীম প্রিয়জন জিসান শা ইকরাম-এর অনুরোধেই আমি “সোনেলা” ব্লগে রেজিস্ট্রিকৃত হয়ে লিখতে বসেছি, এবঙ এই আমার অজানিত আনন্দনের খোঁজে হঠাত পাওয়া আনন্দ। বেঁচে থাকলে আগামীতে আরও আনন্দপ্রাপ্তি হয়তো জুটবেই কপালে। কপালের লিখন না যায় খন্ডন – এই প্রবাদ মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি।

আশ্বিন ১৪২০ বঙ্গাব্দ।।

৬৫৮জন ৬৫৫জন
0 Shares

১৬টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ