অনেক জন্ম আগে আমি ছিলাম স্প্যানিশ শৈলচূড়ায় সাদা ঘোড়ার পিঠে লাল ব্যান্ডানা বাধা ব্যান্ডিতো। অলিভকুঞ্জে আমি ঘুরেছি হতশ্রী, বান্ধবহীন, তৃষ্ণার্ত। প্রতিটি জনপদ পেরিয়ে গেছি অবহেলায়, কোন নীল চোখ, জেটব্লাক চুল, মোহন হাসি কিচ্ছু আটকাতে পারেনি তখনো। কেবলই তোমার খোঁজ, খোঁজার শেষ হয়নি এক জন্মে।
তাই,
আরেক জন্মে আমি এসেছিলাম স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ভাইকিং যুবা হয়ে, আবছায়া মনে আছে ঝড়ের সাথে যুদ্ধকরে টিকে থাকা আপেল কাঠের বোটে কত উত্তাল জলপথে ঘুরেছি একা একা। তিমির চর্বির মোম জ্বালিয়ে, সীলের চামড়ার তাবুতে কত দীর্ঘরাত চাঁদকে দেখেছি বরফের ওপর পিছলে যেতে। নবোড়া চাঁদ কতবার মুখ লুকিয়েছে মেঘের আঁচলে,ইর্ষায়।
আমার একলার খোঁজ দেখে ভেবেছে আমাকে কেউ খোঁজেনা কেন এমন?
কিন্ত মুক্তি মেলেনি।
তাই পরের জন্মে হয়েছিলাম, একটা দুরন্ত গাংচিল। গাঙ্গেয় পলিভুমিতে নেমে এসেছিলাম উষর পর্বত থেকে, নখের দাগ রেখে যেতে নরম পলিতে। উড়ে উড়ে, উড়ে উড়ে খুজেঁ গেছি কত দীর্ঘদিন দীর্ঘতর রাত্তির। বিরুদ্ধ বাতাসে।
পাওয়া হয়নি।
তাই পাখিজন্মের শেষে আমি জন্মেছিলাম একবার ঘাস হয়ে, একবার পথ। কোনবারেই রাঙা চরনের ছোঁয়া পায়নি অপেক্ষমান তৃষ্ণার্ত।
তাই বুঝে এই জন্মে বেছে নেয়া শাপগ্রস্ত জীবন।
এই জনমে হয়েছি আমি সাধারণ এর চেয়েও সাদামাটা। সাদাকালো দিন যাপনের ফাকেই তোমার খোঁজ চলছিল …….. তোমারও বুঝি পছন্দ নয় বর্নচ্ছটা। তাই বুঝি অশ্রুজলে মিটিয়ে দিতে অনন্তের তৃষ্ণা, নেমে এলে ধূলিতে। ছুঁয়ে দিয়ে শাপমুক্তি ঘটাতে। জন্মান্তরের সঞ্চিত ব্যথার সুর মুহুর্তেই মুছে গিয়ে বেজে ওঠে অতাশ্চর্য সিম্ফনী। যুগল শ্রাবনের আবাহনে স্বপ্নযাত্রা অনন্তকালের সুতীব্র উষ্ণতার আস্বাদে।
হাজারো প্রতিকুলতা পেরিয়ে আমি আমার তোমাকে পেয়েছি, তবুও ….
আমাদের রাজত্বে মেঘেদের আনাগোনা খুব –
খুব বেশী আসে যায় অঝোর শ্রাবণ,
আমাদের সোনাধুলি সংসারে রোজ রোজ
বেজে যায় আটপৌড়ে কান্নাহাসির সাতকাহন।
আমাদের রাজত্বে ঢেউয়েদের উথালপাথাল –
বিপন্ন কুয়াশায় ঢাকা পরে সোনাবরু সকাল,
আমাদের সাঁঝবেলা ছুঁয়ে থাকে সাঁওতালী মাদলের সুর
আমাদের সংসার ; দুই গোলার্ধের এপার ওপার।
– এটা সোনেলায় আমার শততম ব্লগপোস্ট। আমার মতো অস্থির ফাকিবাজ টাইপ মানুষ একশটা পোস্ট দিছে … এইজন্যই সবাই আমাকে শুভেচ্ছা জানান
১৫টি মন্তব্য
নীহারিকা
সেঞ্চুরী করার জন্য অভিনন্দন আপনাকে।
সাথে অনেক অনেক শুভকামনা -{@ :c :T
আগুন রঙের শিমুল
ধন্যবাদ নীহারিকা
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা শুভকামনা নিরন্তর।
আগুন রঙের শিমুল
ধন্যবাদ ভাই
ইঞ্জা
-{@
হৃদয়ের স্পন্দন
সেঞ্চুরি পোষ্টে সেঞ্চুরির মতই লেখা বটে। জন্ম আজন্মে তবু যদি পাওয়া যায়, আসুক তাতে শ্রাবণের দিন কিংবা বিদ্যুৎ চমকের আগে তীব্র রোদে পরশ হাও্যা, তাতে কি বা এসে যায়! কাঙ্খিত জন্ম যেখানে সার্থকতা খুঁজে পায়।
আগুন রঙের শিমুল
এক জনমে পাওয়া যা কিছু তা দিয়ে জীবন সাজালে অনেক আক্ষেপ ঘুচে যায়।
ধন্যবাদ 🙂
জিসান শা ইকরাম
ভাগ্যিস এই জনমে সাদামাটা এক সাধারণ হয়ে এসেছেন,
নাহলে এমন লেখা পেতাম কই?
একশত পোষ্ট হয়ে গেলো!
মনে হয় এইত সেদিন সোনেলায় লেখা শুরু করলেন,
বিন্দু বিন্দু জলে কত জল সাগর অতল।
সেঞ্চুরী করার জন্য অভিনন্দন ও আন্তরিক শুভেচ্ছা -{@
একশত কোয়ালিটি লেখার জন্য ধন্যবাদ অনেক অনেক।
আগুন রঙের শিমুল
ভাগ্যিস জন্মেছিলাম, নাহলে কোথায় পেতাম এইসব খন্ড খন্ড মৃত্যু।
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা 🙂
শুন্য শুন্যালয়
আমি আগের জন্মের কিচ্ছু মনে করতে পারিনা গো ভাউ 🙁
প্রিয়তে রেখে দিয়েছি, এর চাইতে ভালো লেগেছে ক্যাম্নে প্রকাশ করে কইতে পারিনা। শততম পোস্ট এর চাইতে সুন্দর হতেই পারতো না।
অভিনন্দন -{@ x100
একটি প্রশ্ন: এজন্ম কী স্বার্থকতা পেলো? নাকি আরো আরো দূরে যেতে হবে যে পথের নাম বহূদূর?
আগুন রঙের শিমুল
মেনে নেয়াও একধরনের সার্থকতা শুন্য আপু 🙂
আমার কোন অভিযোগ নেই।
প্রহেলিকা
বর্তমানে যাদের কবিতা পড়ি, আপনি তাদের মাঝেই একজন। কোথায় কোন শব্দটি ব্যবহার করতে হবে তা যেন কেবল আপনারই জানা। ভালো লাগে।
শততম পোষ্টের অভিনন্দন প্রিয় সাঈদ ভাই। ভালো থাকুন। শুভকামনা।
আগুন রঙের শিমুল
অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় প্রহেলিকা (3
নীলাঞ্জনা নীলা
শততম পোষ্টের জন্য ফুলেল অভিনন্দন।
আপনার লেখার কথা কি আর বলবো! গতকালই পড়া হয়ে গিয়েছিলো, আজও পড়েছি। ভালো লাগলে সেই লেখা হিসেব ছাড়া পড়ি।
আবারও অভিনন্দন। আশা করছি দ্বিশততম তাড়াতাড়ি পেয়ে যাবো।
আগুন রঙের শিমুল
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ নীলাঞ্জনা 🙂