ইদানিং আবার অকবিতা লিখি, আমি কেউনা। আমি শুধুমাত্র চোলাই মদে ডোবা মদ্যপ কবি..
১।তোমার উন্মুক্ত কাঁধে বৃষ্টির কামুক নৃত্যনাট্যে
আমার দেয়াল, চিরকুট ভেজেনি..
২। একজন মানুষ কাউকে না বলে মরে যায়
একটা শামুকের নিঃশ্বাসে কাউকে না বলেই জন্মে শ্যাওলা
একটা বোকা চিল সমুদ্রের খোলস ঠোঁটে নিয়ে উড়ে যায়…
৩।মন ভিজে গ্যাছে রোদ্দুরের পেয়ালায় নতজানু চুম্বনে…
৪।একটা মধ্যবিত্ত মেঘ দুপুর গড়ায়ে বৈকালের দিকে ধায়..
৫।প্রত্যেক ঝরাপাতা একদিন নক্ষত্র হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখিয়েছিল…
৬।রাতের কফিন শুধুই শূন্যতা মোড়া, যার কোন এপিটাফ নেই।
# ব্যক্তিগত লাশ কাধে নিয়ে সমাধি হাতড়ে বেড়াই
৭।আমাদের সময়গুলো ছিল অদ্ভুত, খসখসে, ধুলাবালি মেখে পুরোনো হওয়া বইয়ের পাতার মত। হাত বোলালেই ক্যামন একটা অনুভূতির মত…
৮।তুমি হারানো গ্যাছো..
এক বৈকালীন ছাদে খুজে পাওয়া কোন ম্যাগজিনের প্রচ্ছদে।
৯। পঁচিশ বছর পরেও আমরা খুনিই রয়ে গেলাম। পঁচিশ বছর পরে এসেও আমাদের নিহত ভ্রুণ চায়ের টেবিলে জলের গ্লাস ফেলে দেয়, ভিজিয়ে দেয় দু’জনকেই।
১০। তোমার বাদামী শরীরে আমি অশরিরী নিলামের ডাক দেই!
১১।একটা বোকা চিল সমুদ্রের খোলস ঠোঁটে করে ফিরে যায়
যে চিলের ঠিকানা জানার দায় ছিলোনা!
১২।তুমি যে গ্রহের সাজঘরে মাটির আয়নায় মুখ দেখো, চুল সাজাও
সেখানে কি বসন্ত আসে?
১৩।বসন্তক্ষেত্রে প্রত্যেক যুদ্ধাহত সৈনিক হৃদয়ের জন্য শুভকামনা। পলাশের তীব্র লাল ছেয়ে থাকুক গোলাপের অপঘাতে মৃতপ্রায় সৈনিকের শরীর।
১৪।এই হৃদয়ে মারিজুয়ানা চাষ হয়। মস্তিষ্কে এক গোপন পানশালা খুলেছি। মাতাল শব্দেরা পানশালা ফেরত হয়ে তোমাকে খুব ভোগাবে!
১৫।তোমার বাদামী শরীর খুব গোপনে গড়েছে পুঁজিবাদী সম্রাজ্য!
১৬।ভালোবাসা কোনদিন ওপাশ ফিরে ঘুমোতে গেলে তুমি-আমি বেকার হয়ে যাব!
১৭।তবুও কেন নতজানু চুম্বন এসে ফিরে যায়?
আকণ্ঠ ভরে থাকা নীল পেয়ালায়..
১৮।শুধুমাত্র আয়না তোমার নগ্নতার সাক্ষী। এই আতশবাজি, এই সুরম্য কাঁচ.. কেউ তোমাকে দেখেনি!
১৯।যে রোদ্দুর একা করে গেছে তোমাকে আমাকে…
সে রোদ্দুরের ফসিলে সময় আটকে গেছে…
২০।তোমার চোখ ভাড়া নিয়ে নোনা সমুদ্রের চাষাবাদ করতে ইচ্ছে হয়। তোমার এলসেশিয়ান, বারান্দাভর্তি গোলাপ, দেয়ালে বেড়ে ওঠা অলকানন্দা, বেলকনির উইন্ড চাইম, ছাদে শুকাতে দেওয়া নীল শাড়ি, বিবাহ বার্ষিকীতে উপহার পাওয়া মারুতি দেখে সিদ্ধান্ত বদল করি।
-তুমি এতটা সস্তা দরে বিকিয়ে যাবে জানলে পাইকারি মহাজন হয়ে জন্মাতাম
২১।ভোররাতে অতৃপ্ত সংগম শেষে যখন তুমি আমার কবিতা পড়তে বস
তোমার কেমন লাগে?
২২।যে সমুদ্র গত পুর্ণিমায় তার খোলস রেখে গেছে তোমার উঠোনে
আমি তার গর্জন শুনি।
২৩।এই সময় তোমার মতই চঞ্চল, অষ্টাদশী..এই মধ্যরাত আমার মতই মাতাল, বিভ্রান্ত।
২৪।তোমার শরীরে এখনো কি নক্ষত্রের চাষাবাদ হয়? অগুনিত গোলাপ ফোটে?
২৫।আমি তোমার শোবার ঘরের দেয়াল ঘড়ির মতই বেকার। অনর্থক, উপদ্রব।
২৬।ধর এরকম ভোররাতে আমার নক্ষত্রের মতন মৃত্যু হল। তুমি জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে কাউকে আদুরে গলায় বললে- কি সুন্দর তারা খসা দেখো!!
নক্ষত্রের মৃত্যু পরবর্তী তুমিও ভুলে গেলে আগুনের সংগা, রোদের ফারাক।
২৭।তোমার ড্রেসিংরুমের আয়নাগাছে ঝুলে আছে লং এক্সপোজারে তুলে আনা হাসিকান্না!
২৮।আমার অনুভূতি গুলো নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সি খুজে না পেয়ে আজন্ম এক ঝিরঝিরে সাদাকালো টেলিভিশন
২৯।ইচ্ছে করে বুকে স্থল মাইনের বদলে গীতাঞ্জলি বেধে যুদ্ধবিধ্বস্থ কোন শহরের সামরিক ট্যাংকের নিচে ঝাপিয়ে পড়ি…
৩০।একদিন বিকেলে তোমার কাচের চুরি ভাঙ্গলো রিনরিন।তোমার ব্যক্তিগত প্রশ্নের ঝাপি খুলে গেল সেই ঘোরলাগা সন্ধায়।তারপর ভরদুপুরে তুমি নিয়ম করে দুঃস্বপ্ন দেখতে লাগলে। গভীর কুপ।জলে ছলছল।তুমি অনেকখানি ঝুকে গিয়ে ছুতে গেলে জল।তোমার গা থেকে খসে পড়লো প্রিয় অলংকার।তোমার প্রিয় নাকফুল…
৩১।জীবন হচ্ছে একঘেয়ে সাদাকালো চলচিত্রের ফিল্ম। মৃত্যু হল একটা বন্ধ টেলিভিশনের সামনে আজন্ম একা বসে থাকা
৩২।সর্বশেষ যখন তোমার সাথে দেখা হয়েছিল তখন তোমার কফিন গোলাপে ছেয়ে ছিল।
৩৩।তুমি পালক আর চাবুকের পার্থক্য বুঝতে শেখো
কবর আর পাতালের পার্থক্য বুঝতে শেখো…
অবিরাম ভালোবাসাবাসির যে মেট্রোরেল তোমার আমার আন্তঃনগরে ঝিকিমিকি শব্দ তুলে তোমার মাথাব্যাথার কারন হয়, তোমার সবুজ বন্দরে যে নাবিক অনভ্যস্ত হাতে প্যারাসুটের নাগাল হারায়….তাদের মত, উপদ্রবের মত ভালোবাসি। এই বিচ্ছেদ সাময়িক।
৩৪।একজন শব্দকৌশলী নগর সাজাচ্ছেন-
বেনামী কারখানার চিমনি দিয়ে ধোয়া উড়ে যাচ্ছে মহাশূণ্যে…
লিফট তোমাকে নিয়ে যাচ্ছে পাতালে….
একশো টাকার নোট দিয়ে কিনে নেয়া ভাড়াটিয়া চুম্বনদৃশ্য আঁকা হচ্ছে রাস্তায়..
৩৫।তোমার মুঠোয় আমার ড্রয়ার থেকে চুরি করা এল,এস,ডি
তোমার কিশোরী শরীরে টাংগানো স্বৈরচারী বিলবোর্ড
বৃত্তবুকে কান রাখলেই শুনি রক্ত চলাচলের স্পষ্ট সমস্বর!
#খুলনা
১৩টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
কতো কি যে উঠে এলো আপনার কবিতায়।
এক পংক্তির কবিতা লেখা খুব কঠিন। তাও আবার জন্ম-মৃত্যু-প্রেম-জীবন যুদ্ধ নিয়ে। সেই কঠিনকে আপনি কি সহজ করে লিখেছেন, ভালো লেগেছে। বেশ কয়েকটি লাইন তো খুবই দারুণ। ৪, ৫, ১১, ১৩, ১৪ অসম্ভব ভালো লেগেছে।
তেলাপোকা রোমেন
ধন্যবাদ প্রিয় লাইনগুলো মার্কিং করার জন্য 🙂
আমার যুদ্ধ যুদ্ধাস্ত্র গণকবর পোতাশ্রয় মাইন এগুলো ঘিরেই শৈশবের দিনগুলো ছিল। তাই হয়ত এগুলোই উঠে আসে..
নীলাঞ্জনা নীলা
শৈশবের দিনগুলোর গল্প শুনতে চাই।
মেহেরী তাজ
এত্তো এত্তো এত্তোগুলা কবিতা………..
আর আমি কবিতাই লিখতে পারি না। এমনি বুঝিও কম! 🙁
তেলাপোকা রোমেন
সবাই কবি। আপনি হয়তো প্রকাশ করতে বুঝে উঠছেন না। আমার মত যাচ্ছেতাই লিখে ফেলুন।
ধন্যবাদ।
অনিকেত নন্দিনী
অকবিতার কবি, দেখ তোর ২ আর ১১ মিলেমিশে গেছে। ওইটা ঠিক করে দে।
তোর লেখার হাত দারুণ ভালো এইটা আগেও অসংখ্যবার বলেছি। তোর এই দুচারলাইনের কবিতার একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে আছি সেই কবে থেকে! মন দিয়ে লেখালেখি করতে বলেছিলাম তা তো পাত্তাই দিচ্ছিসনা।
এবারেও একমাস পর উত্তর দিলে মাইর খাবি পাজি। :@
তেলাপোকা রোমেন
২ কে দুইয়ের জায়গায় রেখেছি। একটা শুধুমাত্র এক্সট্রেন্ডেড।
আমি লিখিনা। আমি স্ট্যাটাস দেই। লেখালেখি হবেনা। স্ট্যাটাসেই হুট করে যা দুই চার লাইন বাইর হয়।
নেটের অভাবে রিপ্লাই দিতে দেরি হয়। ইয়ে কিছু ট্যাকাটুকা… ব্লা ব্লা
অনিকেত নন্দিনী
ইয়ে মানে অফলাইনে ট্যাকাটুকা চাস আলাদা কথা, ব্লগে ট্যাকাটুকা চাওয়াচাওয়ি কি ঠিক? :p
স্ট্যাটাস আরো বেশি বেশি দিস। বেশি বেশি স্ট্যাটাস মানেই বেশি বেশি অকবিতা।
তেলাপোকা রোমেন
আমি যা চাই প্রকাশ্যে চাই। খুদ কুড়া সহ চাই।
স্ট্যাটাস দিতেও টাকা লাগে
ব্লগার সজীব
এগুলো অকবিতা বুঝি? তাহলে কবিতা কি?
তেলাপোকা রোমেন
চুল তার কবে কার 😀
উদাহরণ 😀
শুন্য শুন্যালয়
আলাদা করে কোনটা বলা সম্ভব নয়, প্রত্যেকটাই অসাধারণ লাগলো। ঠিক আছে আমরা না হয় আপনাকে অকবি ই বলি, তবু অকবিতার চর্চা সবসময় জারি রাখুন। আমরা সবাই অপাঠক এখানে।
তেলাপোকা রোমেন
ধন্যবাদ অকবিতা ভালো লাগার জন্য।