সন্ত্রাসীদের ভবিষ্যৎ

কেসি মিলান ২৩ আগস্ট ২০১৬, মঙ্গলবার, ০৯:৪০:২৫অপরাহ্ন বিবিধ ৯ মন্তব্য

এক ধাপ হলেও বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে যে উন্নতি সাধন করেছে তা হলো মোবাইল স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার।

মাত্র ছয়/সাত বছর আগেও গ্রামের মানুষেরা ভাবতেও পারে নি যে তারা একটি মোবাইল ফোনের মালিক হবে আর তা ব্যবহার করে দূরের কারও সাথে কথা বলবে।

কিন্তু এই ছয়/সাত বছরের মধ্যেইে এখন বাস্তবতা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে গ্রামে গঞ্জেও এমন কোন লোক পাওয়া খুবই দূষ্কর যার হাতে মোবাইল ফোন নেই।

গ্রামের অনেক লোকই আজকাল এতটাই ভাগ্যবান যে তারা শুধু সাধারণ ফোন নয় স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে ইন্টারনেটের নানাবিধ সুবিধা ভোগ করছে।

শহুরে মানুষদের মত গ্র্রামের মানুষেরাও ফেসবুক ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে এবং তারা প্রধানত যোগাযোগ, তথ্য সংগ্রহ ও মজা পাওয়ার জন্য ফেসবুক ব্যবহার করে।

আমি ফেসবুক প্রেমিক নই। তবে আমার ফেসবুক একাউন্ট আছে। আর অনেক আগে ছেড়ে আসা জন্ম গ্রহণ করা আমার প্রিয় গ্রাম ও এর আশে পাশে কি হচ্ছে, কি ঘটছে তা জানার জন্য মাঝে মধ্যে ফেসবুকে ঢুঁ মারি।

একদিন দেখলাম ইউনুছ, ইউনুছ আলী ওর টাইম লাইনে ছোট্ট একটা ভিডিও আপলোড করেছে।

আমার ঘনিষ্টজনদের একজন হচ্ছে এই ইউনুছ আলী। ও গ্রামেই থাকে আর গ্রামের হাইস্কুলে দপ্তরীর চাকরি করে।

শিরোনাম হিসেবে লেখা ছিল ‘বাঁশো মাধ্যমিক বিদ্যালয়।’ আর তা দেখেই আমি ভিডিওটির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিলাম। সময় নষ্ট না করে সেই মূহুতের্ই ক্লিক করে ভিডিওটি দেখতে লাগলাম।

ভিডিওটি মাত্র কয়েক সেকেন্ডের। শেষ হয়ে গেল দ্রুত। কিন্তু আমার মনের মধ্যে দারুন এক ছাপ ফেলে গেল। আমার মনে হলো প্রধানত তিনভাবে ভিডিওটি আমাকে প্রভাবান্বিত করেছে।

১. আমি অবাক হয়েছিলাম

২. আমার মধ্যে নতুন এক প্রত্যাশার সঞ্জার করেছিল

৩. নতুন ভাবনায় ভাবিয়ে তুলেছিল।

আমি চিন্তাও করতে পারি নি বাঁশো হাইস্কুলের মত গ্রামের একটি স্কুল সন্ত্র্রাসের বিরুদ্ধে কখনো রুখে দাঁড়াতে পরে। কিন্তু বাস্তবে এটাই হয়েছে। আর সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রাগ, ক্ষোভ, ঘৃনা প্রকাশ করে ছাত্র-ছাত্রী বিশেষকরে ছাত্রীদের প্রতিবাদ করা আমার কাছে এমন একটি বিষয় ছিল যা দেখে আমি বিস্মিত না হয়ে পারি নি।

সমাজে সবকিছু সঠিকভাবে চলছে না। বিশেষকরে অন্যায়, অবিচার ঘুর ঘুর করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর কোন প্রতিবাদ নেই বলে তা স্কুলসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শক্ত গভীর শেকর গেঁড়ে বসছে।

এ ধরণের প্রতিবাদ প্রদর্শন সত্যিই এমন আশা করতে উৎসাহ জাগায় যে অন্যায়, অবিচার দূর হয়ে সমাজের সর্বত্র ন্যায় ও বিচারের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।

সম্প্রতি অন্যায়, অবিচার ছাড়াও কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা হিসেবে দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। সন্দেহ নেই যে অতিতের সব সময়ের চেয়ে বর্তমানে তথাকথিত সন্ত্রাসীরা অনেক বেশী মরিয়া ও তৎপর। তবে ভাল দিকটি হচ্ছে সরকার এ বিষয়ে সজাগ হয়েছে এবং সন্ত্রাস বিরুধী ও সন্ত্রাসীদের নির্মূলে অভিযান শুরু করেছে। কি্ন্তু অভিযান প্রধানত শহর কেন্দ্রিক বলে দেশের অনেক সচেতন নাগরিক ভাবতে শুরু করেছেন যে সন্ত্রাসীরা হয়তো এবার গ্রামের দিকে যাবে এবং গ্রামের মানুষদের সাথে মিলে মিশে নিজেদের আড়াল করে ভবিষ্যৎ এর জন্য তাদের অস্তিত্ব জিঁইয়ে রাখবে।

এভাবে যারা চিন্তা ভাবনা করেন আমি তাদেরই একজন ছিলাম। তবে এখন হয়তো আমি আর তাদের দলে নেই। কারণ আমি এখন অন্য রকমভাবে ভাবতে শুরু করেছি।

ভিডিওটি দেখার পর আমি মনে করি গ্রাম পর্যায় থেকে যদি এ ধরনের প্রতিবাদ প্রদর্শন অব্যাহত থাকে আর গ্রামের মানুষেরা একত্র হয়ে তাতে যোগ দেয় তাহলে সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসীদের ভবিষ্যৎ বলে এ দেশে আর কোন কিছুই থাকবে না।

৬৭২জন ৬৭২জন
0 Shares

৯টি মন্তব্য

  • ব্লগার সজীব

    শিরোনামটি ঠিক করুন। পোস্ট দেয়ার পরে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে দেখুন, বানান ঠিক আছে কিনা। শিরোনামেই যাদি বানান ভুল থাকে, তবে পোস্ট আর পড়তে ইচ্ছে করেনা। এমন আর করবেন না। টাইপ করত্ব জানলেই ব্লগার হওয়া যায় না।

      • ব্লগার সজীব

        লেখার বিষয়বস্তু খুবই ভাল। সন্ত্রাসীদের ভবিষ্যৎ খুবই অন্ধকার এদেশে। গ্রাম থেকেই প্রতিরোধ আরম্ভ হয়েছে।
        ব্লগার হতে হলে অন্য ব্লগারের লেখা আপনাকে পড়তে হবে, নিজের লেখায় প্রতিটি মন্তব্যের জবাব দিতে হবে। ব্লগারদের সাথে ব্লগীয় যোগাযোগ এভাবেই রক্ষা করতে হয়। ব্লগার হবার প্রথম শর্ত এটি। আপনার লেখা যতই ভাল হোকনা কেন, আপনার লেখা পড়াতে হলে, অন্যের লেখা আপনাকে পড়তেই হবে, এর বিকল্প নেই। হয়ত আপনি বলবেন যে আপনি সবার লেখা পড়ি, সময়ের অভাবে মন্তব্য দেয়া হয়না ( এই কথা সবাই বলে ), এ কথা একজন ব্লগারের কথা নয়।
        শুভ ব্লগিং -{@

  • নীলাঞ্জনা নীলা

    বাংলাদেশকে একসময় গ্রামপ্রধান দেশ বলা হতো। এখন বেশীরভাগ গ্রাম হয়ে গেছে মিনি শহর। আর এসব মিনি শহর থেকে যদি আন্দোলন এবং প্রতিবাদ করা হয় সন্ত্রাস আসলেই কমে যাবে।

    কিন্তু আমাদের মধ্যে একতা কোথায়? জনগণ শুধু রাজনৈতিক দল নির্ভর।

  • মৌনতা রিতু

    হ্যাঁ, প্রযুক্তির কল্যানে মানুষ অনেক আগিয়েছে। মানুষের মাঝে যোগাযোগ বাড়লেও দুরত্ব কমেনি, বরং এই দুরত্ব বেড়েছে। এখন গ্রামে, মহল্লায় দেখা যায় চায়ের আড্ডায় উঠতি বয়সের ছেলেরা মুরব্বিদের সামনেই মোবাইলের অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে।
    তবে উপকার ও হয়েছে অনেক। কৃষক সরাসরি তার সমস্যা কৃষিবিদের সাথে আলোচনা করতে পারছে।
    হ্যাঁ, গ্রাম, পাড়া মহল্লা থেকেই প্রতিবাদের সুর তুলতে হবে।

  • আবু খায়ের আনিছ

    মাধ্যমিক স্কুল, অথাৎ ক্লাস সিক্স থেকে ক্লাস টেন। হা, ক্লাস এইট পার করা ছাত্রছাত্রিদের আন্দোলণ নিয়ে আমার কোন মাথাব্যাথা নেই, কিন্তু তার নিচে এলেই সমস্যা।

    আচ্ছা, সন্ত্রাস এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সন্ত্রাসী কমানো যাবে কি? সচেতনতা তৈরি করতে হবে, সন্ত্রাসী যত আপনজনই হোক তাকে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে।
    আন্দোলন কার বিরুদ্ধে করছেন সেটা আগে বুঝতে হবে, আর কার কাছে করছেন। সরকারের কাছে দাবী করা যেতে পারে সন্ত্রাস নির্মূল এর জন্য, কিন্তু সন্ত্রাসীদের কাছে এটা বলে কোন লাভ নেই, যে আমরা তোমাদের পছন্দ করছি না, তোমরা এমনটা করি না। সন্ত্রাসী হওয়ার পথ বন্ধ করতে হবে বলেই মনে করি।

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ