প্রেম চলে যায় চুপিচুপি- ১

মুহাম্মদ আরিফ হোসাইন ২২ আগস্ট ২০১৬, সোমবার, ০২:১০:৪০পূর্বাহ্ন গল্প ১০ মন্তব্য

– এটা কি পরছো?
-লুঙ্গি আবার কি!
– এটা লুঙ্গি না ধুতি?
– আমি কি জানি! একটা প্যাঁচ দিছি আর একটা গিট্টু দিছি।
নীরা তার কথা শুনে হাসছে। এই একটা ছেলেকেই পুরো ভার্সিটিতে তার পছন্দ হয়। আসিফ তা জানে। কিন্তু তারা বন্ধুর মতোই আছে। দুইজনের মনেই আছে গভীর ভালোবাসা। আসিফ খুব ভালো ছাত্র। নীরা অতটা ভালো ছাত্রী না। তবে সে বইয়ের ভিতরই ঘুমায়, খায়, দায় সব করে। বইকে সে নিজের সঙ্গী করে নিয়েছে। নীরার বাবা বিরাট ধনী মানুষ।বংশগৌরব ও আছে অনেক।

আসিফ আত্মসম্মানী ছেলে। আসিফ মিডল ক্লাস ফ্যামিলি থেকে উঠে এসেছে। তার বাবা সামান্য বেতনে একটা ফ্যাক্টরিতে কাজ করে। ছেলে অত্যান্ত মেধাবী বলে তার বাবা মুখ বুঝে সব কষ্ট সহ্য করে ছেলেকে পড়াচ্ছেন। আসিফরা তিন বোন আর এক ভাই। আসিফ তার বাবার সন্তানদের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং মেধাবী। মেয়েগুলা হয়েছে তাদের মায়ের মতো। কম বুদ্ধির, ছোট্ট মাথার কম মেধাবী। ছোট মেয়ের বাংলা বর্নমালা শিখতেই তো ছয় বছর পার হয়ে গেল। অথচ আসিফ তিন বছর বয়সে বাংলা, ইংরেজি সব বর্নমালা পারতো।

নীরা চায় আসিফকে নিয়ে সুখের একটা সংসার বাঁধতে। কিন্তু মুখফোটে বলতে পারে না। কারন আসিফ রাজি হবে না। তাকে অনেক বড় হতে হবে। বিরাট বেতনের একটা চাকরি করতে হবে। বোনগুলারে বিয়ে দিতে হবে। বাবার মুখে হাসি ফুটাতে হবে। তারচেয়ে বড় কথা নীরার ভয় আসিফ যদি এটা শুনে ক্ষেপে যায়! যদি আর কথা না বলে! অতীতে আসিফের এমন অনেক নিষ্ঠুর আচরন সে দেখেছে। রেগে গেলে ফিরেও তাকায় না।
– তা তুই এটা কেমন শাড়ি পরলি নীরা?
-কেন? ভালো দেখাচ্ছে না?
– বুঝলি, একবার ইত্যাদিতে আদিবাসী নেত্য দেখেছিলাম। তোকে দেখে এখন আমার আদিবাসী মনে হচ্ছে।
– ফাজলামো করিস না তো। তুই বলাতে তোদের এই নাটকে আমি জয়েন করেছি। আমি কখনো শাড়ি পরেছি নাকি? কখনো পরি নি। দয়াকরে কোন ফান করবি না। আমার রোলটা কি বল।
– ঠিকাছে আদিবাসী! তোকে গৃহবধূর রোল করতে হবে। সুজন মিয়ার মিস্টি বউ।
-তুই সুজন মেয়া?
– হুম
– হিহিহি।
– হাসবি না। এটা অভিনয়।

অভিনয় শেষে সবাই মুগ্ধ। একটা শর্টফিল্ম তৈরি করেছে তারা। মিস্টি বউ ফিল্মের নাম। নীরা মনে মনে নিজেকে আসিফের বউই ভাবে। তাই কারেক্টারটা তার জন্য খুবই সহজ ছিলো।

হানিফ নীরাকে মনে মনে পছন্দ করে। যদিও জানে যে আসিফ আর নীরার মধ্যে কিছু একটা চলছে। তবুও সে নীরাকে পছন্দ করে। নীরার মতো সুন্দরী, গুণবতী, পড়ুয়া একটা মেয়েকে সবারই পছন্দ হওয়ার কথা। নীরা হাসলে তার গালে টোল পড়ে। ক্লাসে মতিন স্যার প্রায়ই লেকচার ভুলে যায় তার টোলপড়া গালের হাসি দেখে। জুনিয়র ছেলেদের হৃদয়ে রক্তক্ষরন হয় জুনিয়র বলে। সিনিয়র হলেই তো একটু চান্স নিতো পারতো ভার্সিটির এই সেরা অস্পরীর সাথে। হানিফ মনে মনে একটা পরিকল্পনা করে।

৬৫১জন ৬৫১জন

১০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ