নাইন-ইলাভেন ও ক্লাসিফায়েড ২৮ পৃষ্ঠা
শেকড় থেকে সুত্রঃ
নাইন-ইলাভেনের ঘটনা নিয়ে ২০০৩ সালের জুলাই এ একটি রিপোর্ট দিয়েছিল কংগ্রেসের যৌথ তদন্ত কমিটি। ঘটনার আগে পরে বিদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতাই ছিল এই রিপোর্টের বিষয়বস্তু। ঐ রিপোর্টের ২৮ পৃষ্ঠার একটি পরিচ্ছেদ আজও প্রকাশ করতে দেওয়া হয়নি। কি ছিল ঐ রিপোর্টে?
ছবিঃ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সেই জায়গাটিতে এখন লেজার বিম।
নাইন-ইলেভেন ও জর্জ বুশের রহস্যজনক আচরন!
কি আছে ক্লাসিফায়েড ঐ আটাশ পৃষ্ঠায়?
সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্স বানদারের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা!
কি বলেছেন সিআই-এ’র সাবেক পাইলট?
লাসভেগাস ফ্লোরিডা সান্তিয়াগোতে সৌদি গোয়েন্দাদের তৎপরতা নিয়ে-আল আওলাকির ভূমিকা!
আহমেদ শাহ্ মাসুদের রহস্যময় মৃত্যু
সন্ত্রাস-বিরোধী যুদ্ধের সূচনা।
আল-কায়দা থেকে হালের আইএস এর সৃষ্টি।
অনেক প্রশ্ন! চলুন উত্তর খুঁজি-পর্ব এক থেকেঃ
পর্ব একঃ
১০ সেপ্টেম্বর ২০০১। পূর্ব নির্ধারিত একটি সফরে ফ্লোরিডা এসেছেন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিও বুশ। উঠেছেন মেক্সিকো উপসাগরের তীরবর্তী কোরাল দ্বীপের একটি রিসোর্টে। ফ্লোরিডায় সারাসোটা এলাকার একটি অবকাশ যাপন কেন্দ্র এটি। হোয়াইট হাউসের ভাষায়, প্রেসিডেন্টের এই “সফট প্রোগ্রামটি” ঠিক হয়েছিল আগস্ট মাসে। কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানটির সময় সূচি প্রকাশ করেছেন ৭ সেপ্টেম্বর। আর সেইদিনই আরও দুজন মানুষ ফ্লোরিডার সারাসোটায় বেড়াতে যান। তাদের একজন মোহাম্মদ আতা, আরেকজন মারোয়ান আল শেহহি। বলা বাহুল্য, এই দুজনেই নাইন-ইলেভেন ট্রাজেডির বিমান ছিনতাইয়ের দুই নায়ক। প্রসিডেন্ট বুশের কোরাল দ্বীপ থেকে মাইল দুয়েক দূরে হলিডে ইনন-এ ড্রিংক আর ডিনার সেরেছেন ঐ দুইজন। বলছি ১০ সেপ্টেম্বর রাতের কথা। ফ্লোরিডায় রিপাবলিকান দলের নেতাদের সাথে ডিনারে অংশ নিলেন প্রেসিডেন্ট। সাথে ছিলেন ছোট ভাই জেব বুশ। প্রেসিডেন্ট ঘুমাতে গেলেন রাত ১০টায়। রিসোর্টের ছাদে তখন পাহারায় ছিল ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপ যোগ্য একটি মিসাইল। আর নিঃশব্দে আকাশে টহল দিচ্ছিল AWACS( Airborne Warning & Control System) এর একটি বিমান। সেই রাতে কেন তা ব্যাবহার করা হল? সেই রাতে প্রেসিডেন্টের কোন নিরাপত্তা হুমকি কি ছিল? নাকি এটাই স্বাভাবিক ব্যাবস্থা, তা নিয়ে কখনও কোন ব্যাখ্যা দেয়নি হোয়াইট হাউস!(সুত্রঃ Fighting Back: The War on Terrorism-From Inside the Bush White House, by Bill Sammon).
সেই রাতে আরও একটি ঘটনা ঘটেছে। জয়নাল আবেদিন ওমর নামে সারাসোটায় এক সুদানি বাসিন্দা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, সাঈদ আল ঘামদি(ফ্লাইট নাইনটি থ্রী’র ছিনতাইকারি-যিনি সৌদি এয়ারলাইন্সে চাকরি করতেন) নামে মধ্যপ্রাচ্যের কোন এক দেশের বাসিন্দা যিনি জানেন যে, প্রেসিডেন্ট এখন সারাসোটায় রয়েছেন। সেই লোক একটি কফি শপে বসে বুশকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। খবরটা তখনই এফবিআইকে জানিয়েছে পুলিশ। রাতেই সারাসোটার দুটি এপার্টমেন্টে তল্লাশি চালায় এফবিআই। তবে কাউকে আটক বা হুমকি মূলক কিছু পাওয়া যায়নি, বলে জানিয়েছে এফবিআই।
পরদিন ১১ সেপ্টেম্বর। প্রেসিডেন্টের ঘুম ভেঙ্গেছে ভোর ৬টার কিছু আগে। শর্টস, টিশার্ট আর জগিং সু পরে বেরিয়ে পড়লেন বুশ। সঙ্গে এক সাংবাদিক বন্ধু আর এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং রক্ষীরা। ভোরের আলো আধারিতে মেক্সিকো উপসাগরের সৈকত ধরে বুশ যখন চার কিলোমিটারের সীমানা ছুঁলেন, রিসোর্টের গেটে তখন ছোট্ট একটা জটলা। মধ্যপ্রাচ্যের কোন এক দেশের দুজন নাগরিককে ঘিরে আছে প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা রক্ষীরা। তারা একটি টিভি চ্যানেলের ক্রু। প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎকার চাইছেন। খবরটা রিসোর্টের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জানানো হলো। তাদের কেউ একজন বাইরে এসে দুই সাংবাদিককে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্টের প্রেস উইংয়ের সাথে কথা বলতে বললেন তিনি। সাংবাদিকদের ভ্যানটি ঘুরে চলে গেল।
ছবিঃ পাঞ্জশির-এর সিংহ খ্যাত আহমেদ শাহ্মাসুদের মৃত্যুদিবস ৯ সেপ্টেম্বর আজও আফগানিস্তানে সাধারন ছুটি পালিত হয়।
এর ঠিক দুদিন আগে সাক্ষাৎকারপ্রার্থী দুই সাংবাদিকের হাতে খুন হয়েছেন আফগানিস্তানের তালেবান বিরোধী লড়াইয়ের-নরদান অ্যালায়েন্সের নেতা আহমেদ শাহ্ মাসুদ। আর নিউজ ইন্টারন্যাশনালের সাংবাদিক পরিচয়ে তিউনিশিয়ার দুই ব্যাক্তি আগস্ট থেকেই মাসুদের একটি সাক্ষাৎকারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। মাসুদের ব্যাক্তিগত কর্মকর্তা জামসেদ বলিছিলেন, একটা ইন্টারভিউয়ের সুযোগ পেতে লোক দুটি রীতিমত পায়ে ধরেছিল। শেষ পর্যন্ত ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তাদের সময় দেওয়া হলো। কে জানত বড়সড় একটা ভিডিও ক্যামেরাকেও বোমা বানিয়ে আত্মঘাতী হামলা হতে পারে? মারাত্মক আহত মাসুদকে সামরিক হেলিকপ্টারে করে তাজিকিস্তানের একটি হাঁসপাতালে নেওয়া হলো। তবে তার আগেই মারা গেছেন তালেবান জঙ্গিদের জন্য আতঙ্ক হয়ে উঠা মাসুদ। নরদান অ্যালায়েন্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র আবদুল্লাহ(বর্তমানে আফগানিস্তানের প্রধান নির্বাহী) সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে ওই হামলার জন্য আল-কায়দা এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে দায়ী করা হয়েছিল। তবে বিবৃতিটি এসেছে ১৪ সেপ্টেম্বর। তার আগ পর্যন্ত গোপন রাখা হলো আহমেদ শাহ্মাসুদের মৃত্যু সংবাদ। কেন এই গোপনীয়তা? মাসুদের মৃত্যুর সাথে কি তবে নাইন-ইলেভেন ট্রেজেডির কোন যোগ ছিল? আফগান মুক্তি আন্দোলনের এই প্রভাবশালী নেতা; আফগানিস্তানের সাধারন মানুষ যাকে ভালোবেসে “পাঞ্জশির-এর সিংহ” নামে ডাকত-তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো অন্যরকম হত আজকের আফগানিস্তানের ইতিহাস।
জগিং সেরে রিসোর্টে ফিরে গোসল সেরেছেন প্রেসিডেন্ট বুশ। কর্মকর্তাদের সাথে নাশতা সেরে বসেছেন রোজকার ইন্টেলিজেন্স ব্রিফিং-এ। তবে রোজকার হলেও আজকের ব্রিফিংটা জরুরী। আগস্ট থেকেই সন্ত্রাসী হামলার একটা সতর্কতা ছিল। সেটা গুরুতর হয়ে হাজির হয়েছে। যদিও ব্রিফিং-এ সুনির্দিষ্ট কোন হুমকির তথ্য প্রমান হাজির করা হয়নি।
সময় তখন সকাল ৮টা। ততক্ষনে প্রথম বিমানটি অর্থাৎ আমেরিকারন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ইলাভেন বোস্টনের লোগান বিমানবন্দর ছেড়ে আকাশে উড়ছে। ৮টা ১৩ মিনিটে সেটি আকশের ৩৫ হাজার ফুট উপরে। কিন্তু সমস্যা হলো বিমানটি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের নির্দেশ অমান্য করে সোজা একশো ডিগ্রি ঘুরে নিউ ইয়র্কের দিকে রওনা হয়েছে। বলাবাহুল্য যোগাযোগের রেডিও ট্রান্সপন্ডারটিও বন্ধ করে দিয়েছে পাইলট। কিন্তু রেডিও বন্ধ হবার আগেই ককপিটের কিছু কথাবার্তা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে রেকর্ড হয়ে গেছে। যেমন-দয়া করে কেউ নড়বেন না। আবারো বলছি কেউ বোকার মতো নড়তে যাবেন না। আমরা এয়ারপোর্টে ফিরে যাচ্ছি। এদিকে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল নিশ্চিত হল ৮টা ২০ মিনিটে যে ফ্লাইট ইলাভেন হাইজ্যাক হয়েছে। কিন্তু তারপরও (NORAD) নো রেডিও ঘোষনা করা হলো না। প্রসঙ্গত (NORAD: North American Aerospace (formerly Air) Defense Command) এই ঘোষনা হলে হাইজ্যাক হওয়া বিমানটিকে বলপূর্বক নামিয়ে আনার চেষ্টা করে সামরিক বিমান। এই কমান্ড সাধারনত এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বুঝতে পারার সাথে সাথে ঘোষনা করা নিয়ম তাকলেও তা করা হয়নি। পরে তারও বিশ মিনিট পর ৮টা ৪০ মিনিটে NORAD ঘোষনা করল বোস্টন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল। ততক্ষনে ফ্লাইট ইলাভেন নিউ ইয়র্কের আকাশে-ছুটিছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার লক্ষ্য করে।
এদিকে ৮টা ২০ মিনিটে শেষ হলো প্রেসিডেন্টের ব্রিফিং। তিনি রেডি হয়ে গাড়িতে চড়লেন ৮টা ৩৫ মিনিটে। ভিআইপি পাসিং-এর জন্য সারাসোটা বে’র রাস্তা আটকে দিয়েছে পুলিশ। ৮টা ৫০ মিনিটে আটকে পড়া গাড়ির জটলায় সকালের সেই ভ্যানটা। ভ্যানের জানালা দিয়ে মাথা বের করে, মধ্যপ্রাচ্যের কোন এক দেশের মানুষ আকশে মুঠি পাকিয়ে বলছিলো “বুশ তুমি নিপাত যাও”। গাড়িটা এবং গাড়ির মানুষ দুজন ছিলেন সকালে প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎকারী সেই দুই সাংবাদিক। পরে এফবিআই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু এ বিষয়েও কোন তথ্য জানানো হয়নি এফবিআই থেকে।
ছবিঃ ৯টা ৬ মিনিটে প্রেসিডেন্টের কানে কানে খবরটা জানালেন চিফ আব স্টাফ এন্ডি কার্ড।
৯টা বাজার কিছুক্ষন আগে সারাসোটার এলিমেন্টারি (Emma E. Booker Elementary School) স্কুলে প্রবেশ করলেন বুশ। ৯টা ২ মিনিটে, স্কুলের সেমিনার কক্ষে শিশুদের গল্প শোনাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। গল্পের নাম বাংলায় ‘পোষা ছাগল’। এর ঠিক পনের মিনিট আগে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট যখন গাড়িতে তখন ৯২ জন যাত্রীসহ নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর টাওয়ারের ৯৩ থেকে ৯৯ তলার মধ্যে ঢুকে পড়েছে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ছিনতাই হওয়া প্রথম বিমান ফ্লাইট ইলাভেন। অন্যদিকে, ৯টা ৩ মিনিটে ৭৫ থেকে ৮৫ জন যাত্রী নিয়ে দক্ষিন টাওয়ার ভেদ করে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের আরও একটি বোয়িং ওয়ান সেভেনটি ফাইভ। এরও তিন মিনিট পর ৯টা ৬ মিনিটে ক্লাসরুমে ঢুকে প্রেসিডেন্টকে কানে কানে খবরটা জানালেন চিফ অব স্টাফ এন্ডি কার্ড। সময় নিলে দুই সেকেন্ড। খবরটা শুনে কিছুক্ষন ভাবলেশহীন তাকিয়ে রইলেন বুশ। এন্ডি কার্ডকে পালটা কোন প্রশ্ন করলেন না, কোন নির্দেশন দিলেন না, কোন সামরিক পদক্ষেপ বা পেন্টাগনের তৎপরতা সম্পর্কে কিছু জানতেও চাইলেন না। প্রেসিডেন্ট ফিরে গেলেন বাচ্চাদের সাথে গল্পে। বিশ্ব জুড়ে টিভি পর্দায় যখন ব্রেকিং নিউজঃ “ইউএসএ ইজ আন্ডার এটাক” প্রেসিডেন্ট তখন উচ্চস্বরে পড়ছিলেন “But the goat did something’s, that made the girl’s dad mad”। ১০ মিনিট পর ৯টা ১৬ তে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে পূর্ব নির্ধারিত বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট জানালেনঃ “Ladies & Gentlemen, this is a difficult moment for America…” তখন ৯টা ৩১। বক্তব্য শেষে ফটোসেশনেও অংশ নিলেন বুশ। ৯টা ৩৩ মিনিটে ফ্লোরিডার সারাসোটা এয়ারপোর্টে ছুটল প্রেসিডেন্টের গাড়িবহর। ৯টা ৫৭ মিনিটে ফ্লোরিডার আকাশে উড়লো প্রেসিডেন্টের বিমান এয়ারফোরস ওয়ান। তার দুইপাশে তখন আরো দুইটি সামরিক বিমানের প্রহরা। প্রায় এক ঘন্টা সেটি উদ্দেশ্যহীনভাবে আকাশে উড়ে নেব্রাস্কার একটি সেনাঘাটিতে অবতরন করে। নেব্রাস্কা থেকে লুইজিয়ানা এবং শেষে ওয়াশিংটনে ফিরে এলেন বুশ। তারপর……?
ছবিঃ ওয়ার্ল্ড ট্রেডসেন্টার ধসে পড়ার আগে ভবনের কার্নিশে অসংখ্য মানুষের বেঁচে থাকার প্রাণান্ত চেষ্টা
এই পর্বের সমাপ্তি।
কিন্তু চলবে……
পর্ব এক শেষেঃ আমার এ চেষ্টায় কোন ভুল থাকলে ধরিয়ে দিবেন দয়া করে। সব পর্ব শেষ করতে হয়ত বছর লেগে যাবে। আশাকরি পাশে পাবো আপনাদের। যারা বাংলাদেশে বসবাস করছেন এই মুহূর্তে তাদের প্রত্যেকের প্রতি অনুরোধ চোখকান খোলা রাখুন। আপনার আশেপাশেই হয়ত অবস্থান নিয়ে আছে জঙ্গী দোসরা, সময় সুযোগে হামলে পড়তে পারে সর্বশক্তি নিয়ে, আমাদের সোনার বাংলায় আর তাদের সহযোগিতার জন্য তো মুখিয়ে আছে আমাদের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিগুলো, যারা পাকিস্তান নামক নীতিহীন রাষ্ট্রটির দোসর, আর আইএস আলকায়দা তো মৌদুদীবাদিদের নতুন সংস্করণ মাত্র। সচেতন হোন অন্যকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিন। আমাদের দেশে জঙ্গীবাদের মদদ দেওয়া হচ্ছে, পাকিস্তান থেকে আর এই পাকিস্তান বিশ্বব্যাপী জঙ্গী ষড়যন্ত্রের অংশ হয়েছে কেবল মাত্র বাংলাদেশ এবং ভারতের উপর প্রতিশোধ নিতে আর তাদের মাটি পশ্চিমাদের ব্যাবহার করতে দিচ্ছে তাদের ব্যাক্তি আর্থিক স্বার্থ হাসিলের জন্য।
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। জোট বদ্ধ হয়ে প্রতিরোধের জন্য তৈরি হন এদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে।
বিশ্ব রাজনীতি বনাম আলকায়দা থেকে আইএস-বিহাইন্ড দি সিন। ভূমিকা পর্ব।
২৩টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
এই যে যারা লিখছেন, তারপর কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা, কিন্তু একটি পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
উন্মাদ ভাইয়া এসব লিখে আজ পর্যন্ত কি কোনো উপকার হয়েছে?
থাকনা এসব। ভালোবাসা মানুষকে স্বার্থপর করে তোলে, আমি সোনেলার সবাইকে ভালোবেসে ফেলেছি।
সবার মঙ্গল চাই।
এজন্য যদি আমায় কেউ খারাপ-বাজেও বলে, বলুক।
সীমান্ত উন্মাদ
আপু আহমেদ শাহ্মাসুদের একটা মন্তব্য দিয়ে প্রতিউত্তর দিচ্ছি, তিনি বলেছিলেনঃ Death is better than life in humiliation। জানি অনেক স্নেহ এবং ভালবাসা নিয়ে একজন বোন হিসেবেই বলেছেন এসব লিখা থেকে বিরত থাকতে।আপনার এই আবেগ আমাকে ছুঁয়ে গেছে কিন্তু আপু একটু চিন্তা করে দেখেন ৫২ থেকে ১৯৭১ তখন যারা আমাদের মাটি, পতাকা, দেশ এবং স্বাধীনতা শব্দটার জন্য জীবন দিয়েছেন, লিড়াই করেছেন প্রশিক্ষিত এক পৃথিবীর জঘন্যতম সেনাবাহীনির বিপক্ষে তখন যদি মা বোনরা তাদের বলতেন যে না যেও না, তবে কি আমারা বাংলাদেশ পেতাম? মৃত্যু ভয় থাকলে সেদিন মুক্তিযোদ্ধারা হামলে পড়তে পারতেন বুলেট, বোমা কিংবা ট্যাংকের সামনে। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম বুক খালি করে রুমি যুদ্ধে যেতে দিয়েছিলেন, জানেন রুমি সেদিন কি বলেছিল তার মাকেঃ রুমি বলেছিল “মা আমি হয়ত পড়াশুনা করে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারবো কিন্তু দেশের ডাকে সাড়া না দিয়ে যদি আমি বসে থাকি তবে বিবেকের দংশনে সারাটা জীবন পুড়তে হবে, তুমি কি তাই চাও”? জননী আর বাধা দেন নি, আমার পরিবারের কথা বলিঃ আমার বাবা, দাদা,দাদীর একমাত্র সন্তান, আমার বাবা যখন আমার দাদার সাথে যুদ্ধে যেতে চাইলেন আমার দাদী বাধা দিচ্ছিলেন, তখন আমার বাবা আমার দাদিকে বলেছিলেনঃ মা, তুমি আমার মা, কিন্তু এই মাটিও আমার মা, আর এই সময়ে, আমার আর এক মা আমাকে ডাকছে আমি সাড়া না দিয়ে পারবো না, কারন এই মা স্বাধীন না হলে তুমি আমার জন্মদাত্রী মাও নিরাপদ থাকবে না। আমার দাদী আর বাধা দেন নাই। বাবা নভেম্বরের ৩০ তারিখে পেটে গুলি খেয়ে আহত হলেন, কিন্তু ভাগ্যের জোরে বেঁচে গিয়েছিলেন সেদিন তার সহযোদ্ধা চাচাতো ভাই তাকে উদ্ধার করে বলে, আমি এই বাবার সন্তান, তাই আমিও ভয় পাইনা আপু। জানি দেশে হায়না শকুন এখনও আছে, তবুও লড়াই চালিয়ে যেতে হবে আপু, চিন্তা করো না, কতজনকে মারবে, এক আমি সীমান্ত উন্মাদ গেলে আরো হাজারো সীমান্ত উন্মাদের জন্ম হবে। আর আমার যেটুকু ভয় ছিল তাও কেটে গেছে যখন রাজাকারের গাড়িতে পতাকা আর আমি নিয়মিত বাংলাদেশের স্যাটায়ার ম্যাগাজিনে লিখে চলেছিলাম রাজাকারের বিরুদ্ধে, তখন কত হুমকি যে আমি পেয়েছি, তার কোন হিসেব নেই। আপু ভাববেন নাঃ অপরাধী গুপ্তঘাতক কখনো সাহসী হতে পারেনা। আর এসব লিখে হয়ত আজ কিছু হচ্ছে না, কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে যে আমাদের লিখাগুলো কাজগুলো ইতিহাসের দলিল হবে না, আর তারা তা নিয়ে এই লড়াই জিততে পারবেনা কে বলতে পারে। একদিন আমাদের বাংলাদেশ সব কিছু থেকে মুক্ত হবেই হবে। এইটা আমার দূড় বিশ্বাস। দোয়া করবেন সব সময়।
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা নিরন্তর।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাইয়া পাশে আছি। -{@ 🙂
সীমান্ত উন্মাদ
আপু আপনারা পাশে থাকলেই সাহস আরো বেশি সংমিশ্রিত হবে আমার চলার পথে। ধন্যবাদ আপু অসংখ্য।
নীলাঞ্জনা নীলা
-{@
ছাইরাছ হেলাল
বিচ্ছিন্ন ভাবে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় পড়েছি, এতটা ডিটেইলে জানি না।
লিখুন, সাথেই থাকব।
আর ভুল ধরে দেয়ার মত জানাশোনা বিষয়ে নেই। তবে কেউ যেন পড়তে গিয়ে খেই হারিয়ে না ফেলে
সেদিকে নজর রাখবেন, অনেক বড় ধারাবাহিক হলেও সমস্যা নেই।
সীমান্ত উন্মাদ
আশাকরি খেই হারাবে না। তবে অনেকগুলো চরিত্র আসবে একে একে, তাই প্রতি পর্ব পড়ার আগে, আগের পর্বটা একবার দেখে নিলে ভাল হবে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা নিরন্তর।
শিশির কনা
প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছেন এই লেখার জন্য বুঝা যাচ্ছে, পুর্বের পোষ্ট সহ পড়লাম এটি।খুবই সমৃদ্ধ লেখা।আগ্রহ থাকলো এটির আগামী পর্ব সমূহ পঠনের।
সীমান্ত উন্মাদ
আপনার মন্তব্যে অনুপ্রেরনা পেলাম। সাথে থাকবেন জেনে সাহস পেলাম।
শুভকামনা জানিবেন নিরন্তর।
জিসান শা ইকরাম
অনেক অজানা কিছু জানলাম।
এসব নিয়ে আমাদের সবার ভাবা উচিৎ এবং শতর্ক থাকা উচিৎ
আমাদের দেশেও তো এর আগমনী ঘণ্টার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি।
লেখা চলুক আপন গতিতে
সাথে আছি।
সীমান্ত উন্মাদ
আগমনি ঘন্টা বাজছে বেশ ভালভাবেই মামা।আপনি সাথে থাকলে অনেক বেশি সাহস পাবো মামা এগিয়ে যাবার।
শুভকামনা জানিবেন নিরন্তর।
লীলাবতী
গতকাল পড়লাম আপনার এই লেখা।এমন লেখার বহুল প্রচারণা প্র্যোজন।সচেতন থাকতেই হবে এমন দানবদের হাত হতে।লিখুন নিয়মিত।
সীমান্ত উন্মাদ
ধন্যবাদ আপু লিখাটা পড়ার জন্য। আমি লিখে যাবো সচেতন করার প্রচেষ্টায় কিন্তু ব্লগে প্রচারনা বৃদ্ধিতো আর আমার দ্বারা সম্ভব না। আপনাদের সহযোগিতা চাই। প্রতি সপ্তাহে একটা পর্ব দেবার প্লেন আমার। সেই ভাবেই লিখছি। আসলে আমার জব টাইমিং এর ঠিক নাই। তবুও কষ্ট করে লিখার চেষ্টা করছি। ভাল থাকুন, সাথে থাকুন আপু। দোয়া করবেন আর শুভকামনা জানিবেন নিরন্তর।
খেয়ালী মেয়ে
একটা ঘটনা–সে ঘটনার পেছনে রয়েছে আরো অনেকগুলো ঘটনা–প্রতিটি ঘটনায় আলাদা, আবার প্রতিটি ঘটনার সাথে প্রতিটি ঘটনার লিংক রয়েছে—অনেক কঠিন কাজ এই সবগুলো ঘটনাকে একসাথে বেঁধে এতো পরিষ্কারভাবে সামনে নিয়ে আসা—-অনেক ধন্যবাদ আপনেকে লেখাটার জন্য–সামনে চলার জন্য অতীতের এই ঘটনাগুলো যার শেকড় দিনদিন মজবুতভাবে ছড়াচ্ছে তা আমাদের জানতে হবে….
ভালো থাকবেন, সেইসাথে সর্তক থাকবেন………
সীমান্ত উন্মাদ
দোয়া করবেন প্রতিনিয়ত যাতে হায়নার খপ্পরে না পড়ি। আপনার জন্যও অনেক অনেক শুভকামনা নিরন্তর।
ব্লগার সজীব
অসাধারণ এক পোষ্ট।অত্যন্ত সমৃদ্ধ (y)
সীমান্ত উন্মাদ
ধন্যবাদ এবং শুভকামনা নিরন্তর সজীব ভাই।
অলিভার
ঘোলাটে হয়ে আছে অনেক প্রশ্ন। আর দূর থেকে দেখলেও হয়তো এদের মাঝেই যোগসূত্র রয়ে গেছে।
আপনি বেশ অনেক তথ্য ঘেঁটে এইসব তুলে নিয়ে এসেছেন, সেটা বোঝাই যাচ্ছে। আশা করছি পরবর্তী পর্ব দ্রুতই নিয়ে আসবেন।
শুভ কামনা জানবেন 🙂
সীমান্ত উন্মাদ
কষ্ট করে আমার লিখার পাঠের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা নিরন্তর। প্রতি শনিবার রাতে একটি করে পর্ব পাবেন যদি বেঁচে থাকি ইনশাল্লাহ
শুন্য শুন্যালয়
অনেক প্রশ্নের উত্তর জানবো নাকি প্রশ্ন আর বাড়বে। কিন্তু তো এমনিতেই বাড়িয়ে দিয়েছ।
লেখাটার মধ্যে গ্যাপ দিয়োনা। মন দিয়ে পড়ছি, জানছি অনেক কিছুই। সবাই কম বেশি জানি আমরা কোথা থেকে এলো, তবে প্রমান তথ্যাদি সহ তোমার এই লেখাটির জন্য ধন্যবাদ তোমাকে। কস্ট করে চলো 🙂
সীমান্ত উন্মাদ
আশা করি আমার ক্ষুদ্র মাথায় এই সম্পর্কিত যত প্রশ্ন এসেছে সবগুলোর উত্তর দিতে পারবো? তবে সাথে সাথে কিছু চলমান প্রশ্নও থাকবে! পরের পর্বে উত্তর খোঁজার জন্য। না বন্ধু বেঁচে থাকা অবস্থায় গ্যাপ দিবনা কথা দিলাম।
বন্ধু পাশে থাকলে এগিয়ে যাবই।
শুভকামনা তোমার জন্য।