আপনাকে কেউ জানোয়ারের বাচ্চা বললে আপনি রেগে যান কেন? কারন আপনার জন্মের ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে, আপনার মাকে অপদস্ত করা হয়েছে। আপনি আপনার জন্মেও ইতিহাস বিকৃতকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ করছেন অথচ আপনার জন্মভূমির ইতিহাস নিয়ে যখন রাজাকারকুল শিরোমণি গোলাম আযমের পুত্র আব্দুল্লাহিল আমান আজমী যা ইচ্ছে তাই বলে মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করতে ইতিহাস রচনা করার চেষ্টা করছে, । তখন আপনার মনে কেন দাগ কাটছে না?
রাজাকার শিরোমণি গোলাম আযমের পুত্র আব্দুল্লাহিল আমান আজমী প্রথমে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।বলেছে, মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের তথ্যকে ‘কাল্পনিক’। এরপর মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদ ও তাদের সেনাবাহিনীর অবদান নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছে। পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয়ের গ্লানি ঢাকতে এবং মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অস্বীকার করার অপচেস্টায় ইতিহাস বিকৃতির পথে নেমেছে এই কুলাঙ্গারের বাচ্চা। মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করতে একযোগে উঠেপড়ে লেগেছে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সন্তানেরা। জামায়াত ও সমমনারা এর আগেও বিভিন্ন সময়ে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক তোলার চেষ্টা করেছে। সুযোগ পেলেই পাকি দালালেরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে শুরু করে। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিভ্রান্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সন্তানেরা।
আমাদের এমনই দুর্ভাগ্য যে স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের মিথ্যা বানোয়াট ইতিহাস বলে যাচ্ছে কুলাঙ্গারদের বাচ্চারা। রাজাকার পুত্রও দেশপ্রেমের বয়ান দিচ্ছে, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ’ বলে আবার সাজিয়ে গুছিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।এর আগেও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে মুক্তিযুদ্ধ আর আইসিটি নিয়ে। এতকিছুর পরও কেন প্রধান রাজাকারের পুত্রের বিরুদ্ধে এখনও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হচ্ছে না?
ইতিহাসকে সম্মান না করলে, ইতিহাসকে রক্ষা করা যায় না। বাংলাদেশের সকল ইতিহাসের মধ্যে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস আমাদের জন্মের ইতিহাস। এ ইতিহাস বিকৃতি করার অপচেষ্টা মানেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা। এখনই সময় আইন করে এসব অপচেস্টাকে রোধ করতে হবে।
এবার আসুন আব্দুল্লাহিল আমান আজমীর বাপ প্রধান কুলাঙ্গার গোলাম আযমের ব্যাপারে কিছু কথা আলোচনা করা যাক। কোটি মানুষের কান্না, রক্ত, আর্তনাদ আর দীর্ঘ নিশ্বাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সহযোগী, গণহত্যা ও বাংলাদেশবিরোধী রাজনীতির হুকুমদাতা গোলাম আযম। গোলাম আযম বা গোলাম আযমরা ১৯৭১ সালে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছিল। মানবতাবিরোধী অপরাধেরও প্রতীক ছিলেন গোলাম আযম। গোলাম আযম স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কিভাবে বিরোধীতা করেছে তার ইতিহাস কমবেশি দেশের জনগন জানে। এ অপরাধে তার ৯০ বছরের সাজা হয়েছে। কিন্তু একবার চিন্তা করে দেখেন স্বাধীনতার পরও কি এই কুলাঙ্গারের মনে ভয় ডর কিছু তৈরী হয়েছিল ? ইতিহাস কি বলে-
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হলে গোলাম আযম পাকিস্তানে বসে মাহমুদ আলীসহ ‘পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি’ নামে একটি সংগঠনের সূচনা করেন। পূর্ব পাকিস্তান পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন গড়ে তোলার আয়োজন করেন এবং ১৯৭২ সালে গোলাম আযম লন্ডনে ‘পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি’ গঠন করেন এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র উচ্ছেদ করে আবার এই ভূখণ্ডকে পাকিস্তানের অংশে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করে।
১৯৭৩ সালে ফেডারেশন অব স্টুডেন্টস ইসলামিক সোসাইটির বার্ষিক সম্মেলনে এবং ব্রিটেনের লেসটারে অনুষ্ঠিত ইউকে ইসলামিক কমিশনের বার্ষিক সভায় গোলাম বাংলাদেশবিরোধী বক্তৃতা দেয়। ১৯৭৪ সালে মাহমুদ আলীসহ কয়েকজন পাকিস্তানিকে নিয়ে গোলাম পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটির এক বৈঠক করেন। এই সভায় গোলাম আযম ঝুঁকি নিয়ে হলেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থেকে ‘কাজ চালানোর’ প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেন। এভাবেই গোলাম আযম পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে গেছেন।
জামাতের এই নেতার বিরুদ্ধে আরো মারাত্মক অভিযোগ আছে। ১৯৭২ সালের ডিসেম্বরে গোলাম আযম রিয়াদে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইসলামি যুব সম্মেলনে যোগদান করেন এবং পূর্ব পাকিস্তান পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সকল মুসলিম রাষ্ট্রের সাহায্য প্রার্থনা করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত তিনি সাতবার সৌদি বাদশাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেয়ার আহ্বান জানান এবং কখনো তিনি বাদশাহকে বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করতে ও কখনো বাংলাদেশকে আর্থিক বা বৈষয়িক সাহায্য না দিতে অনুরোধ করেন। ১৯৭৪ সালে রাবেতায়ে আলমে ইসলামির উদ্যোগে মক্কায় অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এবং ১৯৭৭ সালে কিং আবদুল আজিজ ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত একটি সভায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করেন। জামাতে ইসলামীর এ সাবেক আমির ২০০২ সালে প্রকাশিত তার নিজ জীবনী ‘জীবনে যা দেখলাম’ বইয়েও এসব কথা অকপটে স্বীকার করেছেন।
তাহলে বলুন এই অমানুষটা সহ তার অনুসারীদের জন্য একটি ঘৃণাস্তম্ভ জরুরি কিনা? আমার একটা দাবি আমাদের জাতীয় স্মৃতিসৌধের পাশের গোলাম আজমের একটি ঘৃণাস্তম্ভ তৈরী করা হোক। আর সেখানে বড় করে লেখা থাকবে জাতির কুলাঙ্গার । একই সাথে বাংলাদেশের প্রতিটি অলিগলিতে একটি করে রাজাকারদের চিহ্নিত করে ঘৃণাস্তম্ভ তৈরী করতে হবে । তা না হলে রাজাকার পুত্রদের দৌরাত্ম্য ক্রমান্বয়ে বেড়েই যাবে। একদিন হয়তো দাবি করে বসবে রাজাকারদের অনুরোধে পাক বাহিনী এদেশকে মুক্ত করে দিয়েছে।
জাতির কুলাঙ্গারদের জন্য একটি ঘৃণা স্তম্ভের দাবি সম্পর্কে আমার একটি লেখা পড়ুন এখানে।
১৪টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
ঘৃনা জানাই এহেন কার্যকলাপকে। জাতির কুলাঙ্গারদের জন্য একটি ঘৃণা স্তম্ভের দাবির সাথে একমত।
অরণ্য জুয়েল
ধন্যবাদ। এখন দাবি আদায়ের সময়। কন্ঠ ছাড়তে হবে জোরে
জিসান শা ইকরাম
এইসব রাজাকার পুত্রদের মদত দাতা আছে।
এদের বিষ দাঁত ভেঙ্গে দিতে হবে।
নইলে এরা দংশন করেই যাবে।
ঘৃনা স্তম্ভ তৈরী করতেই হবে।
সাইফুর মিশু
ইতিহাসকে সম্মান না করলে, ইতিহাসকে রক্ষা করা যায় না (y)
অরণ্য জুয়েল
পোস্ট পড়া এবং মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সীমান্ত উন্মাদ
ওর বাপ আছিল পাকি বাটপার যে মরার আগ পর্যন্ত লেঞ্জা দেখাই গেছে আর পোলা হল পাকিস্তানী স্পাম এ সৃষ্ট নরকের কিট, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গোলামের পোলা আজমী, মুজাহিদের পোলা যেটা অস্ট্রেলিয়া থাকে আর কাদের কসাইএর পোলা একসাথ হইছে তান্ডব চালানোর জন্য বাংলাদেশে। লগে এইগুলারে সমর্থন দিতেছে জিয়াউর রহমানের আবাল পোলা তারেক রহমান। তবে টেনশন কইরেন না, তাদের জন্য প্রতি ইঞ্চি আইক্কাওয়ালা বাঁশ রেডি করা হচ্ছে। আজকে শিবিরের কয়টারে ধরছে শুনছি সকালে খবরে গেলে বাকি খবর পামু, এর মধ্যে মিজানুর রহমান নামের একটা থাকার কথা, এই খবিসটা রাজাকারদের সব পেইজ চালাতে সাহায্য করে। শিবিরের সূরার সদস্য নাকি বেটা খচ্চর। বাকিটা খবরের পেশাদারিত্বের স্বার্থে বলা গেল না এখন। পরে এই খচ্চরদের আদিপন্ত জানামু। এইভাবে পোষ্ট দিতে থাকেন, মুক্তি যুদ্ধের সত্যিকারের স্বপক্ষের শক্তির অনলাইনে মাঠে ঘাটে, পাড়ায় মহল্লায় সক্রিয় হয়ে উঠতে হবে।
জয় বাংলা।
সীমান্ত উন্মাদ, বাংলাদেশ সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী।
অরণ্য জুয়েল
ভালো বলেছেন।
তবে ইতিহাস বিকৃত করার অপরাধে দন্ড প্রদানের আইন জরুরি
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
আর সহ্য হয় না মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকতেও যদি এ সব শুনতে হয় তখন আর কিছুই ভাল লাগে না।যা অবস্থা দেখছি তাতে ওদের এ দেশের নাগরিকত্ত বাতিল করা উচিত।
অরণ্য জুয়েল
দেশের ইতিহাস বিকৃতি করার অপচেষ্টা মানেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা। এখনই সময় আইন করে এসব অপচেস্টাকে রোধ করতে হবে।
আশা জাগানিয়া
গোলামের ছেলে রাস্তায় পিটিয়ে মাথা কামিয়ে দিলে অন্য কেউ আর এমন কথা বলতে সাহস পেত না।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
একমত।
নজীর স্থাপন করতে হবে, যাতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
’স্মৃতিসৌধ’ এর মতো ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ এর প্রতিষ্ঠা জরুরী হয়ে পড়েছে।
প্রতি বৎসর আমরা যেমন স্মৃতিসৌধে গিয়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগকারী শহীদদের সন্মান জানাই, ফুল দিয়ে স্বরণ করি তেমনি মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী সকল কুলাঙ্গারদের ঘৃনাস্তম্ভে গিয়ে থুঃ থুঃ প্রদানের মাধ্যমে ঘৃনা প্রকাশ করে আসবো, জুতা ছুড়ে আসবো।
ঘৃণাস্তম্ভ তৈরীর জোর দাবী জানাই।
এ দাবী আরো আবশ্যক হয়ে উঠেছে কুলাঙ্গারদের সন্তানদের আস্ফালন দেখে। তাই ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ স্থাপনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে তাদের অপকর্মকে স্থায়ীভাবে সীল মেরে দিতে হবে।
তানজির খান
সহমত জ্ঞাপন করছি। আমাদের ইতিহাস রক্ষায় আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। গো পুত্র বা স্বাধিনতা বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে।
অরণ্য জুয়েল
প্রজন্ম পোস্ট লিবারেশন বলে একটা কথা আছে। সেটার দায়িত্ব তোমার….. —————————————– বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তাদের কারনে আজ তুমি শিক্ষা, কর্ম সহ সকল ক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারছো। মনে রেখো স্বাধীনতা বিরোধীরা আবারো সোচ্চার হতে পারে, সেটা প্রতিহত করতে হবে তোমাকেই। তা না পারলে কি হবে তার একটা নমুনা জেনে নাও। ছবিতে চোখ মুছতে থাকা বৃদ্ধ মানুষটি’র নাম Sheikh Mohammad Ali Aman, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকেই জুলাই ২০০৮, ঢাকা ইঞ্জিনিয়ার’স ইন্সটিটিউট অডিটোরিয়ামের দরজার সামনে, দিনে দুপুরে, প্রকাশ্য দিবালোকে লাথি দিয়েছিল জামাতের এক নেতা। তার দোষ ছিলো একটাই। তিনি ভুল করে জামাত-শিবির আয়োজিত তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে গিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েছিলেন। ঐদিন এই বৃদ্ধ মানুষটিকে অমানবিকভাবে পেটায় জামাতের ঐ ক্যাডার। কোন বিচার হয়নি, কেউ টু শব্দটিও করেনি। কিন্তু ঠিক সাড়ে ৫ বছর পরে এসে, কাদের মোল্লার ফাসির রায়ের খবরে এই লোকটার খুশিতে চোখ মোছার ছবিটা আমাদেরকে কতটা আবেগাপ্লুত করে দেয় তা বলে বোঝাতে পারবো না। ৪৩ বছরের অভিশাপ ঝরে পরছিলো পোড়া গাল বেয়ে। বিজয়ের আনন্দ অশ্রু। রাজাকার ফাসিতে ঝুলছে, আরো ঝুলবে। নিজামীও ঝুলে যাবে সাম্প্রতিক সময়েই। কিন্তু চাচার এই ছবিটা যেনো আমাদের দায়িত্বটা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে … . ভাইলোগ, অনেক দূর এগিয়েছি আমরা। এখন ইতিহাস লক করে দেয়ার সময় হয়েছে। এমন কিছু চাই যাতে, এই ইতিহাস নিয়ে আর কোন রাজাকারের বাচ্চা নোংরামী করার সাহস না পায়। ঐ বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া দরকার, চোখ মোছেন চাচা। আরেকটু ধৈর্য্য ধরেন, আমরা ঘুমাই নাই . https://m.facebook.com/photo.php?fbid=10205595983273421&id=1068301025&set=a.10200174335135606.1073741826.1068301025
https://m.facebook.com/photo.php?fbid=10205595983273421&id=1068301025&set=a.10200174335135606.1073741826.1068301025