কেস হিস্ট্রি ১: রুপা । বয়স ১৯ । অনার্স ১ম বর্ষ । বছর দুই আগে ফেসবুকে পরিচয় অতঃপর ভার্চুয়াল প্রেম ইমনের সাথে । ইমন খুবই কেয়ারিং ছেলে । ইমন রুপার সমস্ত সত্বা দখল করে নেয় । দুজনের দেখা হয়নি বাট ফেসবুক আর ফোনে চলে প্রেমালাপ । হঠাত্ ইমন চেন্জ হয়ে যায় । রুপাকে ইগনোর করতে থাকে । একটা পর্যায়ে দুর্ব্যবহার শুরু করে । অন্য এক মেয়ের সাথে রিলেশনে জড়ায় ইমন । রুপা ইমনকে তবু ভালবাসে । ফেরানোর চেস্টা করে বেহায়ার মত বাট পারে না । দুঃখের সাগরে ভাসতে থাকে রুপা । চাতকের মত চেয়ে থাকে ফেসবুকের নীলাভ স্ক্রিনের দিকে-এই বুঝি ইমন ফিরে এলো !!! কিন্তু ইমন ব্যস্ত তার নতুন রিলেশন নিয়ে। রুপার আবেগ অনুভুতি অবমূল্যায়িত ও অসম্মানিত হওয়ার পরও রুপা ভুলতে পারে না ইমনকে। পড়াশোনায় মন বসে না, ক্ষুধা মন্দা, অনিদ্রায় আক্রান্ত হয় রুপা। একা একাই কাঁদে। কারো সাথে কথা বলতে ভালো লাগে না। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
রুপাঃ “আমি এই কস্ট সহ্য করতে পারছি না । আমি সুইসাইড করবো ।”
কেস হিস্ট্রি ২: ফারা । বয়স ১৮ । ইন্টার ২য় বর্ষ । বছর ২ আগে ফেসবুকে পরিচয় অতঃপর প্রেম একই শহরের ছেলে সুমনের সাথে । দুই তিনবার দেখা হয়েছে ওদের বাট ফেসবুক আর ফোনে চলতো প্রেমালাপ । সুমন খুবই কেয়ারিং ছেলে । ভালোবাসা দিয়ে ফারার সমস্ত সত্বা দখল করে নেয় । হঠাত পরিবর্তন আসে সুমনের আচরণে । অন্য এক মেয়ের সাথে রিলেশনে জড়ায় । এটা জেনে ফারা সরে আসে বাট সুমন ওকে ছাড়তে চায় না । ওকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে অনলাইন ও অফলাইনে । ডমিনেট করার চেস্টা করে ফারার কাজে কর্মে । ভয় দেখায় বাসায় জানিয়ে দেয়ার । ফারা ওকে ঘৃণা করে ওর কাছ থেকে মুক্তি চায় । নিজের ভালোবাসার অসম্মান মানতে পারে না। বর্তমান ডমিনেটিং আচরণও মানতে পারে না ফারা। ভুলে যেতে চায় সুমনকে, বেরিয়ে আসতে চায় অপমানিত ঐ সম্পর্কের বন্ধন থেকে। দুঃখের সাগরে ভাসতে থাকে ফারা । পড়াশোনায় মন বসে না, ক্ষুধা মন্দা, অনিদ্রায় আক্রান্ত হয় ফারা। একা একাই কাঁদে। কারো সাথে কথা বলতে ভালো লাগে না। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
ফারাঃ “আমি এই কস্ট সহ্য করতে পারছি না । আমি সুইসাইড করবো ।”
উপরোল্লেখিত দুইটি ঘটনা উলটো হলেও ফলাফল একই। রুপা এবং ফারা উভয়েই টিন এজার এবং তারা উভয়েই ভার্চুয়াল কারো সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। সম্পর্কগুলো ছিল খুবই ঠুনকো এবং এর ভিত্তি ছিল নড়বড়ে। কিন্তু এই সম্পর্ক ভাঙ্গনের “ব্যাথা”টা নিতে পারেনি ওদের কিশোরী মন। বিষন্নতা ওদের আকড়ে ধরে। এমনকি “সুইসাইড” এর মত বাজে চিন্তাও খেলে যায় তাদের মাথায়। সম্পূর্ণ অদেখা অচেনা কারো সাথে “প্রেম” হয় কী করে!!!??? এটা কী আদৌ প্রেম? নাকি মোহ? অথবা সময়ের তাড়না??
২৬টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
এমন সম্পর্ক আসলে সময়ের তাড়না।
বাস্তবতা সম্পর্কে ধারনা কম থাকায় এবং ব্যাক্তি জীবনে নিজকে তেমন প্রকাশিত করতে না পারার ফলেও এমন হতে পারে।ব্যাক্তি জীবনে এমন সুযোগের অভাবে,নেটে এরা নিজকে প্রকাশ করে।আর ভুল গুলো মেয়েরাই করে বেশী। অচেনা অজানা কারো সাথে প্রেম হতে পারে।প্রেমটা সম্পুর্নই অনুভুতির বিষয়।
এই ঘটনা,তাদের দুজনকেই বাস্তববাদী করতে সাহায্য করবে।
শিপু ভাই
“প্রেম” এর মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আরেকটু ভাবা উচিত
ছাইরাছ হেলাল
ভার্চুয়াল সম্পর্ক ও বাস্তবতা এক করে ফেলে তারা ভুলের শিকার হয়েছে। অন্যেরা এ থেকে শিক্ষা নেবে এ আশা করি।
কথায় কথায় যখন তখন প্রেমে পড়া ঠিক না। প্রেম এত সহজ কিছু নয়।
শিপু ভাই
ঠিক বলেছেন মামা। প্রেম এত সহজ কিছু না।
মেহেরী তাজ
মেয়েরা খুব সহজে বিশ্বাস স্থাপন করে। মানুষের মাঝে এত কুটিলতা থাকতে পারে,তা তাঁরা চিন্তাই করতে পারেনা।
শিপু ভাই
এর উল্টাটাও আছে আপু। 😛
স্বপ্ন নীলা
ভাই, এই ধরনের সচেতনতামূলক পোস্ট দেয়ার জন্য অন্তর থেকে ধন্যবাদ
আমাদের মেয়েরা সচেতন হোক সেইসাথে ছেলেরাও সচেতন হোক
শিপু ভাই
ধন্যবাদ 🙂
বনলতা সেন
লেখা পড়ে কেউ সচেতন হবে বলে মনে করি না। তবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
শিপু ভাই
ধন্যবাদ বনলতা সেন 🙂
নওশিন মিশু
এই ভুল শুধু টিন-এজ মেয়েরাই করেনা, মধ্য বয়সি মহিলারাও করে থাকে। আমার মনে হয়না কেই সচেতন হবে কারন এই অনুভুতিটা যে অতি আদিম ….. :p
শিপু ভাই
হুম, তেমনই একটা কে লিখবো সামনে। 😛
অরণ্য
“আমি এই কস্ট সহ্য করতে পারছি না । আমি সুইসাইড করবো ।” – মজা পেলাম। তবে এরা খুব শিগগিরই আবার প্রেমে পড়বে সে হোক অনলাইন কিংবা অফলাইন প্রেম। অল্পতেই মেজাজ খিটিমিটি মানে “হি অর শি নিড্স লাভ”। সবক্ষেত্রে নাও হতে পারে। 😀
শিপু ভাই
তাই হয় সাধারণত 😀
মাহামুদ
সোনেলায় আমার সবচাইতে বেশি ভালো লাগে কেস হিস্ট্রি… কেস হিস্ট্রি আরো দিবেন ভাই ধন্যবাদ।
শিপু ভাই
আপনাকেও ধন্যবাদ
খেয়ালী মেয়ে
বর্তমানে এই ভার্চুয়াল সম্পর্কের কথাটাই সবচেয়ে বেশী শোনা যায়–এফবিতে একটা আইডি খোলে তারপর জড়িয়ে পড়ে এই ধরনের সম্পর্কে–বর্তমানে অহরহ ঘটছে এই ঘটনাগুলো..
শিপু ভাই
হ্যা
খসড়া
বড় ভীতিকর পরিস্থিতি ও সমাজ
শিপু ভাই
আবেগে প্রায়ই বিবেক লোপ পায়
শুন্য শুন্যালয়
নওশীন মিশু আপুর সাথে একমত। 🙂
আর মন্তব্যে জিসান ভাইএর এই লাইন… এই ঘটনা,তাদের দুজনকেই বাস্তববাদী করতে সাহায্য করবে।
আমরা ওই সময়টা পেরিয়ে এসেছি তাই ওটাকে মোহ, ঘোর অনেককিছুই বলতে পারি। কিন্তু একসময় আমরাও ওরকম ইমোশোনাল ছিলাম। তখন এটাকে ভালোবাসা ছাড়া আর কিছু ভাবতাম কি? 🙂 অন্যের অভিজ্ঞতা কিংবা পরামর্শ আসলে খুব একটা কাজে দেয়না, যতক্ষন কেউ ঠেকে না শিখছে, বিশেষ করে এই বয়সটাতে। আর ভুল শুধু অনলাইনেই হয়, এটা ঠিক নয়, এখন অনলাইন আছে বলে আমরা সহজে দেখতে পাচ্ছি, অনেক সময় পজিটিভলিও ভাবছি, অনলাইন আছে বলেই ভুল গুলো খুব দ্রুত চোখে পরছে।
ভালো হচ্ছে কেস ফাইল।
শিপু ভাই
thanks. 🙂
sorry for late answer . i’ve forgotten my password. 🙁
রাইসুল জজ্
এর থেকে বের হওয়ার কোন উপায় নাই । এভাবে দিনে দিনে চলছে চলবে । এক সময় চিঠিতে প্রেম হত, তারপর ফোনে, মোবাইলে আর এখন ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসএপ ……।। তারও আগে হয়তো অন্য কোন ভাবে হত । দুরের আর অপরিচিত মানুষের প্রতি প্রেম মানুষের একটি সহজাত প্রবৃত্তি । আর টিন এজারদের কাছে এডভ্যাঞ্চারের মত ।
শিপু ভাই
thanks for comment 🙂
ব্লগার সজীব
শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।
শিপু ভাই
ধন্যবাদ