আমার ফিরে যাবার কথা দেয়া ছিলো একটা পাহাড়ি রাস্তার পাশের টং দোকান কে –
খাগড়াছড়ির শাপলা চত্বর থেকে কোর্টের সামনে দিয়ে ইসলামপুর হয়ে যে রাস্তাটা দীঘিনালা গেছে ঐ রাস্তায় দোকান টা। এক হাস্যমুখী মারমা প্রৌঢ় চালাতো দোকানটা… বাপের চেয়েও অধিক হাস্যমুখী ছিলো তার বছর তিনেকের মেয়েটা – নামকিরে তোর জিজ্ঞেস করলেই ফিক করে হেসে দিয়ে বলতো থুকলা লোয়াদা (শুকলা রোয়াজা)
…… হয়তো কোনদিনই আর যাওয়া হবেনা। হয়তো এতোদিনে সেটলাররা পুড়িয়ে দিয়েছে সে দোকানটা। অথবা পাহাড়ের হিংসার আগুন এখনো ছুঁতে পারেনি ছোট্ট সে দোকানটাকে … ভরসা হয়না, তবুও বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে – সেই থুকলা লোয়াদা ভালো আছে প্রাণখুলে হাসছে।
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের যে কয়টি বড় বড় ক্ষতি করে গেছে তার অন্যতম এই পাহাড়ের আগুন, সেটেলারদের পাহাড়ে পাঠিয়ে, পাহাড়ীদের জমি জায়গা দখল করে সেই যে আগুন জ্বলেছে – জ্বলছে তা আজকেও…
আমরা ফাকিস্তানিদের অত্যাচারের কথা লিখি, অমানুষিক ঘৃণা করি – হয়তো পাহাড়ের এই ক্ষুদ্র নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠির বাংলাদেশিরা এই সেটেলারদের জন্য সমতলের বাংলাদেশিদের একদিন একই পরিমান ঘৃণা করবে, কিজানি হয়তো এখনই করে। করারই কথা তাদের জুমের ক্ষেত পুড়ে যায় , মেয়েরা রেপ হয় উপাসনালয় পুড়ে যায় লোভের আগুনে… বাংলাদেশের বিজয়ের দিনে সেটলাররা উল্লাসে পোড়ায় তাদের বসত ……
প্রভু হে ,
সমতলের অধিবাসী হিসেবে পাহাড়ের অধিবাসিদের ঘৃণার লক্ষ্যবস্ত যার কারনে তাকে অনন্ত নরক দাও। আর, পাহাড়ে শান্তির বাতাস বহাও… বিজু পাখি ডেকে যাক… ফুল ভাসুক জলে
২৪টি মন্তব্য
হৃদয়ের স্পন্দন
দ্বিমত পোষন করলাম, যদি জিয়া না হয়ে সে স্থলে আপনি হতেন? যতক্ষণ নিজে কাউকে ছাড়িয়ে না যাচ্ছি ততক্ষণ অন্যের নামে বলা শোভন নয় বলেই জানি, তাছাড়া একজন প্রেসিডেন্ট সব দিক দিয়ে পারফেক্ট চিন্তা ভাবনা করবেন সেটা ভাবা ভুল বৈকি
সাইদ মিলটন
আপনি দ্বিমত পোষণ করতেই পারেন – কিন্ত ইতিহাস সাক্ষী শুরুটা করে দিয়ে গেছে জিয়াউর রহমান পাহাড়ে অর্থাৎ রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে ছিল শুধু আদিবাসীদের নিবাস।যখন কোনভাবেই জিয়া সেই আদিবাসীদের বাগে আনতে পারছিল না,তখন কুমিল্লা, ফেনী, বগুড়া অঞ্চল থেকে সেটেলারদের ডুকিয়ে দেয় তিন পার্বত্য অঞ্চলে।
জিয়া খুন হলে তার জায়গায় আসে আরেক স্বৈরাচার এরশাদ।এরশাদ বজায় রাখে তার পুর্বের স্বৈরাচারের পুশ ইন কর্মকান্ড।এবার আসে তার এলাকা রংপুর এর দিক থেকে।
এই সেটেলারদের সরকার জায়গা দিয়েছিল থাকার তারা পাহাড়িদের জায়গা দখল করে করেছে ক্ষেত খামার। তারা পাহাড়ে সংখ্যালঘু হলেও প্রশাসনের সহায়তায় হয়ে উঠে সংখ্যাগুরুদের থেকেও ক্ষমতাশালী।শুরু হয় দাংগা, ৯০ দশকের শুরু থেকে শুরু হওয়া দাংগা চলছে এখনো।
শুন্য শুন্যালয়
ভালোবাসার ক্ষমতা ঘৃনার চাইতেও বেশি বলে জানি। আমরাও কেউই মমতা, ভালোবাসার স্পর্শে সেই ক্ষত সারাতে পারিনি। দায় আমাদের সবার।
সাইদ মিলটন
হ্যাঁ ঠিক বলেছেন দায় আমাদের সবার – বিভিন্নভাবে পাইক্যারা যখন বলে (ভার্চুয়াল এবং রিয়েলটাইম) ৭১ এ তাদের সেনাবাহিনী কি করেছে তারা জানেনা, আমার তাদের কানাপট্টির নীচে দিতে ইচ্ছা করে।
সেম, আমরা যখন কোন আদিবাসী কে বলি সেটেলাররা পাহাড়ে কি করছে আমরা জানিনা – তাদের ও নিশ্চয়ই আমার কানের নীচে দিতে ইচ্ছে করে 🙂
শুন্য শুন্যালয়
থুকলা লোয়াদা ভালো আছে, হাসছে প্রান খুলে সত্য মিথ্যা যাই হোক বিশ্বাস করতেই ভালো লাগে। প্রার্থনা থুকলাদের জন্য।
সাইদ মিলটন
অনন্ত শুভকামনা তাদের জন্য, তাদের হাসি অমলিন থাকুক 🙂
প্রহেলিকা
কোন নরকে আছে সংবাদটা যদি পেতাম তাহলে খুব খুশি হতাম সেই পাহাড়িদের সাথে সাথে। আরো একটি সুবিধা হতো তার পোলা নরকের নাম শুনে মুখে লাগাপ দিতো , বাপকা ব্যাটা আছরতো পরবেই।
পাহাড়ের মাঝে শান্তির বাতাস বয়ে যাক নিরন্তর। এটিই যেন হয় ! ধন্যবাদ সাইদ ভাই।
সাইদ মিলটন
পাহাড়ি ঘর বাড়ী পুড়ে, রেপ হয় পাহাড়ি নারী।প্রতিবারের দাংগায় ভাঙ্গে বৌদ্ধ মন্দির, মার খায় বৌদ্ধ ভিক্ষু।
কিন্তু বিচার হয়না একটিরও।শান্তির জনপদ হয়ে উঠে অশান্ত।তারই ধারাবাহিকতায় বিজয় দিবসে একজনের আনারস ক্ষেত নষ্ট হলো পুড়ে ছারখার হয় প্রায় ৭০ টি ঘরবাড়ি ও দোকান।
এর জন্য এককভাবে জিয়াউর রহমান দায়ী, শুরু করার জন্য ।
পাহাড়ী মানুষদের অভিশাপ তাকে নরকের তলদেশে ঠাই দেবে ।
প্রহেলিকা
এই ৭০টি ঘরবাড়ি পোড়ার দায় দাঙ্গাকারীর যতটুকুই হোক, দাঙ্গা জন্মদাতার দায় সবটুকুই। যদি শুরু না হতো তাহলে আজ আর এই দাঙ্গায় অশান্ত বাতাস বইতো পাহাড়ের বুকে। পাহাড়কে এখন পা হারা (পা)হাড় মনে হয়।
সাইদ মিলটন
পাহাড়কে পা হারা করার পরিনতি কারো জন্যই শুভ হবেনা প্রহেলিকা, ধরেন আজ যদি কেউ বাংলাদেশকে দখল করে ফেলে, যে কেউ – তাহলে সবাই কি পরাধীনতা মেনে নিবে? ছোট একটা সংখ্যা হলেও কি “বিচ্ছিন্নতাবাদী” হয়ে নিজেদের ভূমি আর সংস্কৃতির জন্য লড়াই করবে না? পাহাড়ের এই অনধিকার দখলদারী কি তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদের পথে ঠেলে দিচ্ছেনা ?
মরুভূমির জলদস্যু
যার যেখানে থাকার কথা সেখানে থাকাটাই ভালো। সমতলের মানুষ পাহারে বাস করবেনা বা পাহারি মানুষ সমতলে বাস করবে না এটাও কেমন যেন মনে হয়।
সাইদ মিলটন
নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকেই বলা হয়েছে যে, “জমির মালিকানা থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামের মূল সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ী জনগণ তাদের জমির ওপর অধিকার ফিরে পাবে”।এই বাস্তবায়ন করা হোক, অধিকাংশ সমস্যা এম্নিতেই সমাধান হয়ে যাবে
ব্লগার সজীব
সহমত আপনার লেখার সাথে। ” প্রভু হে ,
সমতলের অধিবাসী হিসেবে পাহাড়ের অধিবাসিদের ঘৃণার লক্ষ্যবস্ত যার কারনে তাকে অনন্ত নরক দাও। আর, পাহাড়ে শান্তির বাতাস বহাও ” (y)
সাইদ মিলটন
থ্যাংকস সজীব
বনলতা সেন
ওরা যন্ত্রণায় আছে এটিই সত্যি।
সাইদ মিলটন
হ্যাঁ, প্রায় একিরকম যন্ত্রনায় আমরা ছিলাম ৭১ এ । আমাদের বোঝা উচিত
আজিজুল ইসলাম
জিয়াউর রহমান সেটেলার পূণর্বাসন করে জঘন্য অন্যায় করেছেন, এটা নিশ্চিৎ। পাহাড়ীদের অবস্থার উন্নতি অর্থাৎ এই দুই গোষ্টির মানুষের সহাবস্থানই কাম্য।
এটা অত্যন্ত অত্যন্ত কঠিন এক সমস্যা।
সাইদ মিলটন
সহাবস্থান দুরুহ একটা কাজ – কারন সমতলের মানুষের ভাবনা চিন্তা জীবন প্রণালী আর পাহাড়ের মানুষের জীবন প্রণালীই সম্পূর্ণ আলাদা। পাহাড়ে শান্তি চাইলে পাহাড়ের মালিকানা (বসবাস চাষবাসের জন্য) পাহাড়িদের কাছেই থাক, সমতলের মানুষ সেখানে গিয়ে পাহাড়কে পাহাড় রাখবে না, রাখতে পারবে না। সে পাহাড় শুইয়ে দেবেই, কেননা তার অভ্যস্ততা চিন্তা, জীবনভাবনা তাকে বাধ্য করবে
জিসান শা ইকরাম
থুকলা লোয়াদারা ভালো থাকুক তাদের স্বকীয়তা নিয়ে
বিজু পাখি ডেকে যাক
ফুল ভাসুক জলে ।।
সেটেলাররা হায়েনা না হোক।
সাইদ মিলটন
হ্যাঁ দাদা সবাই ভালো থাকুক , নিজেদের ভুমি সংস্কৃতি নিয়ে যার যার নিজের মতো 🙂
ছাইরাছ হেলাল
শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন হলে মনে হয় সমস্যা কমে যেত।
তাঁরাও এদেশের ই মানুষ ,আমাদের ই জনগোষ্ঠী, তাদের ব্যাথা আমাদের ও।
সাইদ মিলটন
শান্তি চুক্তি মাস্টারস র্যাভুলেশন থামাইছে ঠিক দাদা, কিন্ত ইউপিডিএফ জন্ম দিয়া গেছে। পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি চাইলে পাহাড়ের ভুমির মালিকানা পাহাড়ের মানুষদের দিতেই হবে দাদা, এর কোন বিকল্প নাই। ভূমির অধিকার ভুমিপুত্রদেরই
লীলাবতী
পাহাড়ে এত কিছু হয়েছে?জানাই ছিলো না।পাহাড়িদের তাদের মতই থাকতে দেয়া হোক।
সাইদ মিলটন
তাই দেয়া উচিত, কারন পাহাড়ের আর সমতলের জীবন এক নয়। সমতলের মানুষ পাহাড়ে গেলে পাহাড়কে সমতল হিসেবে চাইবে এবং করে নিবে সেটা কারুর জন্যই মংগলজনক নয়