বেশ কয়েকদিন কেটে গেলো, অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম, ছোটো কাল থেকেই আমার বাতজ্বর, বড় হবার সাথে সাথে ঝেকে ধরলো মাইগ্রেন আর সাইনাস, বয়স সবে চব্বিশ, খুব একটা তো পরে এখনো যৌবনের অর্ধেক আমার দেখা হয়নি, আমি এভাবেই দিন কাটাচ্ছিলাম, মা নাই, বাবার অতি টাকায় নষ্ট হওয়া সেই ছেলেটা, অসুস্থতার জন্য বেশ কদিন ছাদে যাওয়া হয়নি আমার, জানিনা মেয়েটা আসে কিনা, হয়তো মেয়েটা আমার জন্য অপেক্ষা করে, আর নয়, ছাদে আজ যেতেই হবে যদিও খুড়িয়ে খুড়িয়ে ও হাটতে পারিনা, ক্রাচে ভর করতে হয়, সেদিন প্রচুর গাজা খেয়েছিলাম, নিজের হাত কেটে রক্ত মিশিয়েছি গাজার সাথে, তারপর শুকিয়ে তা সিগেরেট ফিল্টারে ভরে খেয়েছি, খুব নেশা হয়েছিলো সেদিন, সিড়ি দিয়ে নামার সময় পড়ে যাই, আর বা পায়ের মেরুদণ্ডে আঘাত প্রাপ্ত হই আমি, অপারেশন হলো , ডাক্তার বলেছে রেষ্টে থাকতে, কিন্তু পারছিনা, আজ দু তলা থেকে ৬ তলায় একাই উঠতে হবে আবার নামতে হবে আর তার জন্য আমাকে ক্রাচ সাহাজ্য করবে, বাবা বেশ কয়েকদিন ছুটি নিয়েছিলো এখন বাবা বাসায় নাই, গতকাল ই তার ছুটি শেষ হয়েছে আজ থেকে তিনি অফিসে, কিন্তু আমি কার জন্য ছাদে যাব? সেই মেয়েটি আসে কিনা সেটা দেখতে? নাকি আমি জানি মেয়েটি আসবেই রোজ একবার সে জন্য? নাকি আমি মেয়েটিকে ভালোবেসে ফেলেছি এ জন্য, নাহ তার কিছুই না আমি ছাদে যাবো আমার শিকার ঠিক আছে কিনা সেটা দেখার জন্য, আমাকে আত্বঘাতি হতে হবে, আমার আত্বহত্যা করতে হবে, আর তার জন্য সাহস প্রয়োজন, মানুষ মারবো অবশ্য নিজেকেই মেরে ফেলা যায় কিন্তু আমি সম্ভবত মানুষ নই, যদি মানুষ হতাম তাহলে নিজেই আত্বহত্যা করতে পারতাম, আমি পারছিনা, আর তাছাড়া ঘরে কোথাও গাজার একটু ভাং ও নাই, বাবা সব ফেলে দিয়েছেন, আমাকে কিছু বলেন নি উনি, বাবা বুঝতে পেরেছেন মা হারা ছেলেটা এখন গাজা খায়, কবে যেন বিয়ে করে বউ নিয়ে আসেন আর আমাকে তাজ্য করে দেন সে চিন্তায় আছি, যাই হোক বাবা হয়তো সে সময় পাবেন না, আমি তার আগেই দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবো, একা নই মিনিমাম দুজন কে সাথে করে নিয়ে যাবো, একটা হত্যা করে সাহস পুরো টা হবে কিনা সে ব্যাপারে আমি সন্দিহান আছি এখনো, এসব ভাবার অবকাশ আর নেই, উঠে দাড়ালাম আমি, ছাদে যাবো, ক্রাচে ভর দিয়ে এক পা এক পা করে উঠে চলেছি আমি, ক্রাচে ভর দিয়ে নিজের বা পা নয় মনে হচ্ছে ১০০০ কেজির কোনো পাথড় উঠাচ্ছি আমি, ৪ তালায় উঠেছি, আর উঠার মত শক্তি আমার নেই, কিছুক্ষন বিশ্রাম নেওয়া যাক, তারপর যাবো, হাত ঘড়িতে সময় দেখে নিলাম আমি ৪.৩৮ , খুব বেশি একটা সময় না, ধীরে ধোরে ক্লান্ত৬ শরীর আর অসুস্থতা ভর করে ছাদে উঠলাম আমি, তাকালাম ঠিক সেই কোনে, ছাদের ওপাশে, যেখানে সে থাকে। নাহ আজ নাই
অদ্ভুত এক বিষন্নতা আর খারাপ লাগা বোধ কাজ করা শুরু করলো আমার মাঝে, সেটা কিসের জন্য আমি জানিনা, আমার খুনের স্বিকার হাতছাড়া হয়ে গেলো সেই আশঙ্কায় নাকি ভালোবাসায়, আচ্ছা আমি কি মেয়েটিকে ভালবাসতে শুরু করেছি? নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করতে করতে ফিরে এলাম ঘরে
বাবা আসার সময় হয়েছে
২০টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
বেশ সুন্দর হয়েছে একান্ত অনুভূতিগুলো।তবে ছেলেটার মনে রাখা জরুরী মানুষ পৃথিবীতে এক বারই আসে অযথা নিজেকে নিঃস্ব মনে করে নিজেকে শেষ করা মানে নিজের কাছে নিজেকে পরাজয় বরণ করা।মানুষ সেই জন যেই জন মৃত্যুকে মৃত্যু দিকে নয় জয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারেন।
হৃদয়ের স্পন্দন
যাযাবরের নাম পরিচয় এখনো জানা হয়নি আমার, আমি জানিনা সে কোনদিকে ধাবমান হচ্ছে, তবে আপনার সাথে সহমত, মানুষ চাইলে জয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে, ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকুন
জিসান শা ইকরাম
ভালো লিখছেন
হৃদয়ের স্পন্দন
ধন্যবাদ আপনাকে । ভালো থাকবেন
কৃষ্ণমানব
পর্ব করাতে ভালো হয়েছে ।
কোন কবি হয়ত বলেছিলেন , নিজে কষ্টে থেকে অন্যকে সুখী করার নাম স্বার্থকতা ।
জানি না , গল্পের ছেলেটি কিসের মোহে স্বার্থকতার পূর্ণচিত্র খুজছে ?
এক আকাশ নীল হলেও তার চাওয়া পূর্ণতা পেয়েছে ?
জানেন , আত্মহত্যার প্রবনতা মাঝে মাঝে খুব জাগে , , কিন্তু তা যে পারিনা ।
আমার যে বদ্ধতা রয়েছে ।
মনের সুতো যে টান পড়েছে ।
তবুও বাচবো হয়ত নিজের জন্যে নয়,,
অন্য একটি অবহেলিত জীবনের মুখে হাসি ফুটাবার জন্যে.
হৃদয়ের স্পন্দন
কোন কবি হয়ত বলেছিলেন , নিজে কষ্টে থেকে অন্যকে সুখী করার নাম স্বার্থকতা ।
জানি না , গল্পের ছেলেটি কিসের মোহে স্বার্থকতার পূর্ণচিত্র খুজছে ?
এক আকাশ নীল হলেও তার চাওয়া পূর্ণতা পেয়েছে ? না পায়নি, আমার জানামতে পাবার কথা না, মানুষ কিছুতেই পূর্ণতা পায় না ভাই, আত্বহত্যার প্রবনতা কেন জাগে বলবেন দয়া করে? আত্বহত্যার প্রবনতা জাগা ভালো কথা না, কিন্তু মনের সুতায় টান পড়া ভালো কথা, আপনাকে দেখে বরং হিংসে হচ্ছে যে মনের সুতোয় টান দেবার মত কেউ আছে আপনার, কিন্তু আমার নাই, জানেন ভাই আত্বহত্যা আমার করা প্রয়োজন তবু করিনি আর আপনি? ছি ছি ভুলেও এইসব কথা মাথায় আনবেন না
তবুও বাচবো হয়ত নিজের জন্যে নয়,,
অন্য একটি অবহেলিত জীবনের মুখে হাসি ফুটাবার জন্যে. এই কথা টি সম্বল করে বাচুন, শুভ কামনা রইলো
রিমি রুম্মান
ভালোলাগা নিয়ে পড়লাম… ভাল থাকুন
হৃদয়ের স্পন্দন
আপনিও শুভ কামনা রইলো
শুন্য শুন্যালয়
আমি খুব অপেক্ষায় আছি টার্নিং পয়েন্টে কি হয় দেখবার জন্য। যাযাবরের হতাশা কেটে যাক এমনটাই চাচ্ছি। হৃদয়ের স্পন্দন দেখছি লেখক হিসেবে পাকা। চলুক লেখা।
হৃদয়ের স্পন্দন
আমাকে লেখক হিসেবে পাকা বলায় মেজাজ প্রচুর খারাপ আপনার উপর, আমার কুখাদ্য পড়ে আমাকে লেখক বলা যে লেখক দের অপমান করা। এই ব্যাপার টা দয়া করে মাথায় রাখবেন ভাই, হাবিঝাবি আর অখাদ্য এসব, যাই হোক লেখা চলবে যদি আপনি পড়েন , পাশে থাকবেন, ভালো থাকুন
বন্য
মন্তব্য পরে হবে কারণ আগে দুই পর্ব পড়তে হবে, আশ্চর্যের বিষয় হলো এই পর্ব পড়ে মনে হচ্ছে আমার আগের দু পর্ব আগে পড়া উচিত। সত্যি অনেক ভালো লিখেছেন আপনি। শুভকামনা রইল।
হৃদয়ের স্পন্দন
ধন্যবাদ আপনাকে শুভ কামনা রইলো
মেহেরী তাজ
ভালো লিখেছেন। পরের পর্ব গুলো খুব তাড়াতাড়ি লিখুন।
শুভ কামনা রইলো।
হৃদয়ের স্পন্দন
ধন্যবাদ আপনাকে, আমার লেখা ভালো বলার জন্য, আমি চেষ্টা করবো তারাতারি লেখার জন্য কিন্তু আপু ব্যাস্ততা আমাকে দেয়না অবসর 🙁 আপনিও ভালো থাকবেন
খেয়ালী মেয়ে
পরবর্তী পর্ব পড়ার অগেক্ষায় রইলাম..
হৃদয়ের স্পন্দন
আমার লেখা পড়ার জন্য অপেক্ষা শব্দ টা আমার কাছে এতোই আনন্দের যা বলার ভাষা আমার নাই, ধন্যবাদ আপনাকে শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন
লীলাবতী
আপনি ভালো লিখছেন বলে আমার পচা লেখা পড়া যাবেনা এমন কি আইন আছে দেশে ? আমার পচা লেখা পড়ার জন্য আমন্ত্রন জানাচ্ছি।
হৃদয়ের স্পন্দন
আপনি পচা লেখেন এইডা কে কইলো, আপনার লেখা পড়ি কিন্তু জিভে জল আসে তাই কমেন্ট করিনা তেতুল পাগলা
মোঃ মজিবর রহমান
ভাল লাগলো।
অলিভার
ঠিক কেমন ভাবে দেখছি বুঝতে পারছি না। মায়ের আচলের ছায়া হারিয়ে এভাবেই অনেকে অন্ধকার পথে পা বাড়ায়। আর নিজের ভেতরেই নিজেকে কুড়ে কুড়ে মারতে থাকে। যখন ভেতরে ভেতরে মরে যায় তখনই শুরু হয় বাইরে থেকেও নিজেকে নিঃশেষ করে ফেলার প্রচেষ্টা। গল্পের বর্ণনাতে এই জিনিষটাই ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে আকর্ষণও চলে এসেছে এর মধ্যে, মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইছে মন। যদিও নিজেই আবার দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে সেটা অস্বীকার করে যাচ্ছে। বোঝাতে চাইছে এই সবই তার পরিকল্পনার অংশ।
আশা করি মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ভালবাসার কাছে সকল ক্রোধ আত্মসমর্পণ করবে।
শেষ পর্যন্ত কি হয় জানার অপেক্ষাতেই রইলাম 🙂