
ঘুম থেকে তখনো উঠিনি। কিন্তু হঠাৎ আচমকা ডাকে ঘুম ভেঙে যায়। দুচোখ মিলে ধরতেই দেখি হিমু হলুদ পাঞ্জাবি পরে দাঁড়িয়ে আছে। বুকটা ধরফর করে উঠলো। অবশ্য হিমু বুঝতে পেরে কাছে এসে গায়ে হাত বুলিয়ে বললো – আমি হিমু। বোতলের পানি চোখেমুখে ছিটিয়ে দিলো। কিছুটা সময় পর স্বাভাবিক হয়েছিলাম।
হিমু বললো – ১০০ টাকা হবে?
আমি কোনরকম প্রশ্ন কিংবা উত্তর না দিয়ে মানিব্যাগ থেকে ১০০ টাকা বের করে হাতে ধরিয়ে দিলাম। হিমু আলগোছে পাঞ্জাবির ডান পকেটে রেখে দিল। বললো পুরান ঢাকায় যাবে।
পুরান ঢাকার সবকিছুই পুরাতন হওয়ার কথা। কিন্তু না পুরান ঢাকার কাচ্চি বিরিয়ানির সুস্বাদু গন্ধ আজও পুরনো হয়নি। কাচ্চিবিরিয়ানির কথা মনে পরতেই ঠোঁটে লোভ আসে জিভে আসে স্বাদ। হিমুকে ফোন দিলাম।
হ্যালো – তুই কতদূর গিয়েছিস?
হিমু – এইতো রাস্তার মোড়ে।
আমি – ও আচ্ছা, বাসায় আসতে পারবি?
হিমু – হু, আসছি।
ব্রাশ হাতে রুমের মধ্যে পায়চারি করছিলাম। কলিং বেল বাজলো। মানিব্যাগ থেকে তিন’শ টাকা হাতে নিয়ে দরজার ছিটকিনি খুললাম। হিমুর হাতে তিন’শ টাকা গুঁজে দিয়ে বললাম – পুরান ঢাকায় যাচ্ছিস আর কাচ্চিবিরিয়ানি…। আসার সময় আমার জন্যও নিয়ে আসিস। হিমু বললো – তোর কাচ্চিবিরিয়ানি খাওয়ার স্বভাবটা আর গেলো না।
মোবাইলের স্কিনে হিমুর নাম্বারটা ভেসে উঠলো। ধরবো ধরবো করছি হঠাৎই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো। আবারও হিমুর নাম্বারটা ভেসে উঠলো তৎক্ষনাৎই লাইনটা কেটে গেলো। শালা! কল দেওয়ার সময় দিবি তো (মনে মনে)।
হুমম, বল।
হিমু – একটু নিচে আয়না।
কেন? কি হলো আবার?
হিমু – কাচ্চিবিরিয়ানির প্যাকেট নিয়ে যা।
ও আচ্ছা। ভুলেই গিয়েছিলাম। তো তুই উপরে আয়।
হিমু – আমার হাতে সময় খুবই কম।
ঠিক আছে। তুই একটু দাঁড়া আমি আসছি।
হিমুকে একটু বিষন্ন ভগ্নহৃদয় ভুগছে মনে হচ্ছিল। চাহনিতে চিন্তার মুখোশের প্রতিফলন ফুটেছে। কেমন যেন একটু চুপসে যাওয়ার মতো। জলন্ত মোমবাতির নিবুনিবু ভাব। মনে হলো সময়টা বোধ হয় আমার জন্য খরচ হয়ে গেলো। হিমুর কাছাকাছি যেতেই কিছুটা রাগান্বিত গলায় বলে উঠলো – ছয়তলা থেকে নামতে এতো সময় লাগে?
আমি কিছু বলার আগেই বিরিয়ানির প্যাকেটটি হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে যেতে লাগলো। আমি বললাম কোথায় যাচ্ছিস?
হিমু বললো – জিয়া উদ্যান।
তোর বাম হাতের শপিং ব্যাগে কি?
হিমু বললো – কদম্বফুল।
তুই কি তাহলে পুরান ঢাকায়….।
হিমু বললো – হু, ঠিকই ধরেছিস।
ফিরবি কখন?
হিমু বললো – জানিনা, তবে দেরি হবে।
আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি। যদিওবা ইচ্ছে ছিলো কিন্তু হিমুর ততটুকু সময় ছিলো না।
ছবিঃ সংগৃহীত ও এডিটিং করা
১২টি মন্তব্য
সুরাইয়া পারভিন
বাহ্ চমৎকার লিখেছেন
পাঠে মুগ্ধতা অনিমেষ
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয়, হিমুকে ৩০ দিনে ৩০ টি গল্প লেখার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি ইনশাআল্লাহ।
এই ৩০ টি গল্প দিয়ে বই প্রকাশ করতে চাই।
আশাকরি পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
কাচ্চি বিরিয়ানি আমিও পছন্দ করি।
লেখাটি হঠাৎ শেষ করলেন মনে হচ্ছে।
ভাল লেগেছে,
শুভ কামনা।
নৃ মাসুদ রানা
আসলে আমিও বাড়াতে চেয়েছিলাম কিন্তু নির্দিষ্ট শব্দ সংখ্যায় লিখতে হচ্ছে এজন্য অনেক অংশ সংক্ষিপ্ত আকারে লিখতে হয়েছে।
এজন্য ক্ষমা প্রার্থী।
ধন্যবাদ প্রিয়, হিমুকে নিয়ে ৩০ দিনে ৩০ টি গল্প লেখার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি ইনশাআল্লাহ।
এই ৩০ টি গল্প দিয়ে বই প্রকাশ করতে চাই।
আশাকরি পাশে থাকবেন।
এস.জেড বাবু
দারুন লিখেছেন ভাই। মুগ্ধ।
ত্রিশ দিন পড়ার ইচ্ছে রাখি।
এবং দোয়া আপনার জন্য যেন আপনি লিখাগুলি সময় মত আমাদের উপহার দিতে পারেন।
নৃ মাসুদ রানা
হুমম, এভাবেই পাশে থাকুন, পাশে রাখুন।
ধন্যবাদ প্রিয়, হিমুকে নিয়ে ৩০ দিনে ৩০ টি গল্প লেখার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি ইনশাআল্লাহ।
এই ৩০ টি গল্প দিয়ে বই প্রকাশ করতে চাই।
আশাকরি পাশে থাকবেন।
এস.জেড বাবু
এবং একটা বই আমার লাগবে। সংগ্রহে রাখবো।
সফলতা কামনা করছি।
ছাইরাছ হেলাল
আপনার হাত ধরে হিমু এগিয়ে যাক, আমরাও তা চাই।
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয়, হিমুকে নিয়ে ৩০ দিনে ৩০ টি গল্প লেখার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি ইনশাআল্লাহ।
এই ৩০ টি গল্প দিয়ে বই প্রকাশ করতে চাই।
আশাকরি পাশে থাকবেন।
তৌহিদ
আপনার কাছ থেকে হিমুকে নিয়ে আরও কিছু লেখা চাই। ভালো লিখছেন কিন্তু।
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয়, হিমুকে নিয়ে ৩০ দিনে ৩০ টি গল্প লেখার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি ইনশাআল্লাহ।
এই ৩০ টি গল্প দিয়ে বই প্রকাশ করতে চাই।
আশাকরি পাশে থাকবেন।
তৌহিদ
শুভকামনা রইলো ভাই।