মেয়ে,
তুমি যেখানেই যাও মানসিক বিকারগ্রস্ত বিকৃত রুচির কিছু পুরুষ তোমাকে ধাওয়া করবেই। বিধাতা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষকে বুদ্ধি বিবেচনা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। এই বুদ্ধি বিবেচনার ব্যবহার করেই মানুষ সভ্যতার পৃথিবী গড়ে নিয়েছে। আর এই সভ্য পৃথিবীতে মানুষের আবাসকে সুন্দর করে রাখতে তাই মানুষ বিধাতা প্রদত্ত যৌনক্ষুদাকে নিয়ন্ত্রনে রেখেই নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করে। কিন্তু কামাসক্ত কিছু অসভ্য পুরুষ নিজেদের মনোবিকৃতি নিবারণে হেন কোন নষ্টামী নেই যে করে না বা করতে ছাড়ে না। আড়ালে এদের সংখ্যা নেহায়েত কম না হলেও সামাজিকতার চাদরে ঢাকা এই দুনিয়ায় চরম বিকৃত মনোভাবাপন্ন কিছু কুলাঙ্গারের দেখা প্রায়শঃই পাওয়া যায়। কাজেই প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য এসব বিকারগ্রস্তদের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে তাই সদাসর্বদা তোমাকে সচেতন হয়েই পথ চলতে হবে। পৃথিবীতে নারীর চলার পথ বরাবরই কন্টকাকীর্ণ। কন্টকাকীর্ণ সে পথকে মসৃণ রাখতে খোলসবন্দী হয়ে নিজেকে অন্যের হাতের পুতুল করে তোলা কোন সমাধান নয়। বরং সে পথকে মসৃণ রেখে এগিয়ে চলতে চাই সদা জাগ্রত এবং সাহসী পদক্ষেপ।

আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছি হুমায়ুন আজাদ স্যারের একটা কথা, “নারীর কোন সহজাত অযোগ্যতা নেই, তাঁর সমস্ত অযোগ্যতা পরিস্থিতিগত, যা পুরুষের সৃষ্টি বা সুপরিকল্পিত এক রাজনীতির ষড়যন্ত্র।”

কাজেই প্রাণে সাহস সঞ্চয় করার মন্ত্র রপ্ত করো, “মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়।”

গতকাল রাজধানীর পপুলার ডায়গণস্টিকের ধানমণ্ডি শাখার টয়লেটে ঢোকার পর এক মেয়ে লক্ষ্য করে, পাশের বাথরুমের নীচ দিয়ে মোবাইলে কে যেন তার ছবি তুলছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসায় সারাদেশে এ নিয়ে তোলপাড় উঠেছে। লোকটি আবার ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই টেলিফোন অপারেটর হিসাবে কর্মরত। তারমানে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত প্রতিষ্ঠানটির কতিপয় লোক এই অসৎ কর্মপ্রক্রিয়ায় জড়িত।

বাহবা দিচ্ছি মেয়েটাকে, ভয়ে বা লজ্জায় চুপসে না গিয়ে ঘটনাটি সামনে নিয়ে আসার জন্য। সবসময় মনে রাখতে হবে, পথচলায় কাটা এড়িয়ে নয়, বরং কাটাকে উপড়ে ফেলেই এগুতে হবে প্রতিটি মেয়েকে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। উপড়ে ফেললে আবার গজাবে কিন্তু অভয়ারণ্য মনে করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না।

এই অসভ্য প্রজাতিরই কিছু মানুষ আবার নারীর রমণীয় সৌন্দর্যকে বিকৃত উপস্থাপন করে নোংরা ব্যবসায়ীক ফায়দা লুঠতে জোটবদ্ধভাবে কিছু অনৈতিক কাজ করে। যেমন: বিউটি পারলার বা শপিংমলে গোপন ক্যামেরা ব্যবহার করে ভিডিও ধারণ। কাজেই এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে নিচের লেখাটি মনযোগ সহকারে পড়ে নাও।

trialroominside
★ব্ল্যাকমেইল করার জন্য ব্যবহৃত গোপন ক্যামেরা সনাক্তকরনের উপায়!

শপিংমলের ট্রায়াল রুমে যেখানে মেয়েরা কাপড় পাল্টায় বা ফিটিং চেক করে সে রুমটিতে লাগানো গোপন ক্যামেরায় আপত্তিকর ছবি তুলে সহজেই যে কাউকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারে।

আবার সেখানে যে আয়না থাকে সেটা আসল নাও হতে পারে, এটিও গোপন ক্যামেরার মতই মারাত্মক।

একটু সচেতন হলে খুব সহজেই নির্ণয় করা যায় রুমে গোপন ক্যামেরার অস্তিত্ব আছে কিনা।
এর জন্য লাগবে সিম এক্টিভ করা একটা মোবাইল ফোন, যা থেকে কল করা যায়। ট্রায়াল রুমে ঢুকে মোবাইল থেকে কাউকে কল দিলে যদি কল করা যায় ও নেটওয়ার্ক থাকে তাহলে নিশ্চিত কোন গোপন ক্যামেরা নেই। আর যদি কল করা না যায় ও নেটওয়ার্ক হঠাৎ করে ডাউন হয়ে যায় তাহলে অবধারিত ভাবে বুঝতে হবে সেখানে গোপন ক্যামেরা রয়েছে।

গোপন ক্যামেরার সাথে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল থাকে, সিগন্যাল ট্রান্সফার করার সময় এর ইন্টারফিয়ারেন্স হতে থাকে। যার ফলে মোবাইল নেটওয়ার্ক ওই জায়গায় কাজ করে না।

আবার শপিংমলের ড্রেসিং/ট্রায়াল রুমে যে আয়না থাকে সেখানেও প্রযুক্তির অপব্যবহারে আসল আয়নার মাঝে এখন যুক্ত হয়েছে নকল আয়না, যাকে বলা হয় দ্বিমুখী আয়না। এই আয়নায় চেহারা দেখা যায় ঠিকই, কিন্তু ভুলেও বুঝার উপায় নেই যে আয়নাটির অন্যপাশ থেকেও কেউ তোমাকে দেখতে পারে। অথবা আয়নার অন্য পাশে লাগানো আছে অত্যাধুনিক কোন ক্যামেরা!

বিষয়টি পরীক্ষার জন্য আয়নার উপরে আঙ্গুল রেখে যদি আঙ্গুলের মাথা প্রতিবিম্ব আঙ্গুলের মাথার সাথে না লাগে, যদি মাঝে ফাঁকা থাকে, তাহলে বুঝতে হবে আয়না আসল।

আর যদি আঙ্গুলের মাথা প্রতিবিম্বের মাথার সাথে লেগে যায়, তার মানে আয়না নকল! এটা একটা দ্বিমুখী আয়না! যার অন্যপাশে থেকে তোমাকে দেখা যাবে, কিন্তু তুমি তাকে দেখতে পাবে না। অর্থাৎ অন্যপাশ থেকে যে কেউ তোমাকে ভিডিও করতে পারবে! ভাবতে পারো, কি ভয়ঙ্কর???

আসল আয়নার সিলভার প্রলেপ থাকে আয়নার পিছনে, ফলে আঙ্গুল ও প্রতিবিম্বের মাঝে ফাঁকা থাকে আয়নার পুরুত্বের জন্য।
আর নকল আয়নার (দ্বিমুখী) সিলভার প্রলেপ থাকে আয়নার সামনে, ফলে মাঝে কোনো বাধা না থাকায় আঙ্গুলের ছাপ আঙ্গুলের প্রতিবিম্বের সাথে লেগে যায়।
এভাবেই গোপন ক্যামেরার নোংরামি থেকে বাঁচা সম্ভব।

৫৬১জন ৫৬১জন
0 Shares

১৫টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ