
ভার্চুয়াল জগত হচ্ছে মাকাল ফলের মতন। সেই রঙের মোহে পড়া কিছু মানুষের আচরণ দেখে তাদের মূর্খ ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারিনা।
আমাদের দেশেরই একজন নারী কালোগহ্বর নিয়ে গবেষণা করে বিশ্বের বিশিষ্ট বিজ্ঞানীদের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। বিশ্বাস করুন তার ফেসবুক আইডি নেই, আমি অন্তত খুঁজে পাইনি। ফেসবুকীয় গবেষণা করেনা বলেই হয়তো সে মহাকাশ ছুঁয়েছে।
এরকম অনেক উদাহরণ আছে আমাদের আশেপাশেই। তাদের ভালো দিকগুলি আমরা অনুকরণ করার চেষ্টা করিনা কেউই। অথচ সেই একই দেশের মানুষ আমরা কে কাকে বিয়ে করলো, কার সংসার ভাঙলো আর ক’টা বিয়ে হলো এসব নিয়ে ভার্চুয়াল গসিপ করতে ব্যস্ত।
ক’দিন ধরে নিউজফিডে একজন আমেরিকা প্রবাসীর বিবাহিত জীবনের ছবি নিয়ে অনেকের রসাত্মক গালগল্পে রীতিমতো বিরক্তবোধ করছি। ভদ্রলোক নিজের করুনদশার চিত্র তুলে ধরে স্ট্যাটাস দিয়েছেন দেখলাম। আপনাদের এহেন আচরণে তার মানসিক অবস্থা কি হতে পারে সেটি কি একবারও চিন্তা করেছেন? কেনরে ভাই, তাদের পরিবারের সমস্যা না হলে তোমাদের জ্বলে কেন?
এসব আসলে একটি উপমা মাত্র। তাইবলে কি আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করবোনা? অবশ্যই করবো, তবে তা শিষ্টাচার বহির্ভূত হলে হবেনা কিন্তু।
আমরা অনেকেই ভার্চুয়াল ম্যানার জানিনা, বুঝিনা কার সাথে কিভাবে কথা বলতে হবে। সবাই বন্ধু এখানে তবে অনুভবের তারতম্য বুঝতে হবে। বন্ধু তালিকায় কাউকে রাখলে তাকে সম্মান করুন। নিজের বাপ চাচাদের বয়সী কাউকে হেয় করবেন না। সমবয়সী এবং ছোটদের সাথে কথাবার্তায় নিজের ব্যক্তিত্ব ধরে রাখুন। সমালোচনা করবেন ভালো কথা তবে তা নিজের মুল্যবোধকে জাগ্রত রেখে করুন।
ভার্চুয়াল পরিচয়ে কত সংসার ভেঙে যাচ্ছে তার ইয়াত্তা নেই। অথচ কিছু মানুষের নির্লজ্জতা দেখলে ঘৃণা লাগে। ফান করুন তবে আপনার সীমাবদ্ধতাকেও চিহ্নিত করুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসি একটু রিলাক্সের জন্য অন্যকে নিয়ে নেতিবাচক গালগল্প করার জন্য নয়।
এসব বড়ো বড়ো গালগপ্প মনে হচ্ছে তাইনা? আচ্ছা ভাবুনতো- অল্পসময়ের ভার্চুয়াল জগত, আমার আপনার সম্পর্কে দশজন অন্তত ভালো ভাবুক এটাও অনেক বড় প্রাপ্তি নয় কি?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিশ্চিত না হয়ে হুটকরে কোন ছবি বা বিষয় নিয়ে গালগল্পে লিপ্ত হওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। ভালো থাকুন সকলেই।
২০টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
কঠিন যে ভাই ভার্চুয়াল জগতে ভদ্রতা বজায় রাখা। মানুষ আজ ভদ্রতায় বোঝে কিনা আমার সন্দেহ হয়। তাই ধর্ম, রাজনৌতিক থেকে ভদ্ররা দূরে চলে যাচ্ছে, কিছু এদের মাঝেই টিকে থাকছে আর বেশির ভাগ কাদাছুড়াছুড়ি করছে।
তবে মেডিয়া জগতে বন্ধু বানাইছে বাবাকে, ভাইকে, বোনকে, মেয়েকে সবাই এককাতারে। কিন্তু কে কাকে কি উদ্দেশ্যে বলছে আলাদা করা খুব কঠিন।
সব মেনেই সোস্যাল মিডিয়ায় থাকা লাগবে।
ভুল ক্রুটি মার্জনা করিবেন।
তৌহিদ
কাজটি কঠিন তবে অসম্ভব নয় কিন্তু ভাই। ভার্চুয়ালি অনেক ফেমিলী মেম্বার এড থাকেন, তাদের দিকটাও ভাবতে হবে।
সোস্যাল মিডিয়ার ভালো মন্দ দুটো দিকই আছে। কে কিভাবে বিচরণ করছে সেটাই মুখ্য। ভালো থাকুন ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
কাজটি কঠিন তবে অসম্ভব নয় কিন্তু ভাই সত্য কিন্তু আমরাই কঠিন করে ফেলেছি। ভালো থাকুন।
জিসান শা ইকরাম
গত কিছুদিন ধরে ফেসবুকে যা দেখছি তাতে মানসিক ভাবে ফেসবুক হতে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছি।
আমাদের দেশের অধিকংশ মানুষ যে কোনো বিষয়ের অপব্যবহার খুব ভালোই পারে। অনেক ফেসবুক ব্যবহার কারীদের সামাজিক যে অবস্থান, তাতে তাদের নিজস্ব কোনো চিন্তা ভাবনা নেই। সহমত আর শেয়ার দেয়া হচ্ছে এদের কাজ। এদের কাছে ভদ্র আচরন আশা করা যায় না।
ফেসবুকের নেশা কাটিয়ে উঠেছি আমি। সীমিত কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ থাকবে আমার। আর ব্লগে সময় দেব বেশি। সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত।
শুভ কামনা ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
আমিও তাই করতাম ভাইজান। মাঝে মাঝে আসি। কিছু প্রিয় মানুষের জন্য। ফেসবুক নেশ খুব ভালো না, চোখ, সময়, কাজ খুব ক্ষতিও করে।
তৌহিদ
আমিও একই নিয়মে চলবো ভাবছি। আর ভালো লাগছেনা ভাই।
তৌহিদ
একই কারনে আমিও অনেক জিনিশ এভোয়েড করছি ভাই। আর সময়ও একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া আসা হচ্ছেনা।
ভালো থাকুন ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই। আমরা একেওপরকে মানতে না পারাই ব্যররথতা। পুর্বে কে বাম আর কে ডান, কে আওয়ামিলীগ কে বি এন পি সেটা মুখ্যনা সততা, আদর্শ, নীতি ধর্ম পার্থক্য ছিল কিন্তু সবাই একই সাথে খেয়েছে ঘুরেছে । কিন্তু এখন সব উলটা।
কিছু কিছু জায়গায় দুরত্ব বজায় রাখা খুবই প্রয়োজন মনে হয় আমার।
মোঃ খুরশীদ আলম
প্রযুক্তির অপব্যবহার থেকে দুরে থাকা সম্ভব না হলে সামাজিক সমস্যা দিনকে দিন বৃদ্ধি পেতেই থাকবে। গিবত, অংহকার, অন্যের ছিদ্রন্বেষণ মারাত্বক গুণাহের কাজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এগুলোর চর্চা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোনভাবেই এগুলো থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব নয় যদিনা আমরা মানবিক হই, যদিনা আমরা প্রত্যেকে স্ব স্ব ধর্মের অনুশাসন মেনে চলি। পাশাপাশি সামাজিক সাইট ব্যবহারে আরো কড়াকড়ি আরোপ, আইন করে বয়স সীমা নির্ধারণ, অমান্যকারীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদান এবং অন লাইন চার্জ বৃদ্ধি করা না হয়।
ধন্যবাদ যুযোগপুযোগী একটি বিষয় সামনে আনার জন্য।
তৌহিদ
চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকুন সবসময়।
আলমগীর সরকার লিটন
সত্যই ভার্চুয়াল জগত এক সহেন্দের মত বেশ করে নারীরা সেই চোখে দেখে————-
তৌহিদ
নারী পুরুষ বিষয় নয়, ভদ্রতাব্যঞ্জক অনুভূতি সকলেরই কাম্য ভাই। ভালো থাকুন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আমি প্রচন্ড ভাবে বিরক্ত ভার্চুয়াল জগত নিয়ে তবুও কিছু ভালো লাগা আছে বলে , সময় কাটানোর জন্য, যোগাযোগের জন্য ছাড়তে পারছিনা। বিভিন্ন ধরনের নিউজে মন্তব্যগুলো, বেশীরভাগ নিউজ নিয়ে শিরোনাম গুলো এতটাই জঘন্য, অপ্রয়োজনীয় যে ভালো লাগা কাজ করে না একদমই। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা অবিরত
তৌহিদ
আমি এখন নিজের মত করে থালি। কারো কথা ভালো না লাগলে এভোয়েড করে যাই।
শুভকামনা আপু।
রিমি রুম্মান
জগতটি ভার্চুয়াল হয়তো। কিন্তু এখানে আমাদের পদচারনা আমাদের শেকড়কে চিনিয়ে দেয়। আমরা কেমন পরিবার থেকে উঠে এসেছি, কেমন শিক্ষা পেয়েছি, কী আমার পরিচয়, এসব কিন্তু সহজেই বুঝে নেয়া যায় এই জগতে আমাদের আচরণের মাধ্যমে। তেমন মানুষদের বন্ধু তালিকা থেকে ঝেটিয়ে বিদেয় করলে এরা একঘরে হয়ে যাবে।
তৌহিদ
একদম ঠিক, ব্যবহারই বংশের পরিচয়। ধন্যবাদ আপু।
রোকসানা খন্দকার রুকু
খুবই সুন্দর একটি বিষয়। আপনি ঘেটেঘুটে একজন মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করবার জন্য তৈরি হলেন মানে তাকে রিকু দিলেন তিনি আগ্রহী ম্যাসেন্জার, পরিবার পরিজন, প্রেম এসবে। এজন্য এটি জটিল হয়ে উঠছে।
শুভ কামনা ভাই॥
তৌহিদ
আমি সচরাচর কাউকেই রিকু দেইনা। আর কেউ অত্যাচার করলে এভোয়েড করি আপু। বলেকয়ে কাউকে শুধরানো যায়না।
শুভকামনা জানবেন।
আরজু মুক্তা
এখন আসলে ম্যানারিজম বা আচরণ কেমন হওয়া উচিত, কীভাবে চলবো, এগুলোর স্কুল খোলা উচিত।
সবাই সবকিছু বাপ দাদার সম্পত্তি মনে করে। কিন্তু নিজস্ব স্বকীয়তাও তো আছে বা থাকবে। আসলে আমরা পরিবার থেকে কিছু শিখি না। অথবা আমরা বাবা মা বেশি ব্যস্ত। সময় দেই কম।
তৌহিদ
এই বিষয়টিই অনেকেই বুঝতে চায়না আপু। সবার বোধদয় হোক।
ভালো থাকুন আপনিও।