অনেকেই দেখছি, ফারাজ আর অসি সালাউদ্দিনকে নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন! তাই স্বাভাবিক। আমি নিজেও ফারাজকে প্রশংসা করে লিখেছি। অসি সালাউদ্দিনের সুনাম করা স্ট্যাটাস শেয়ার দিয়েছি ফেসবুকে। এখনো সেগুলো তেমনই আছে। অপেক্ষা করছি সত্য বেরিয়ে আসার। একজন আবার সালাউদ্দিনের কুকর্ম নিয়ে ভিডিওক্লিপ দিলেন, দেখেছি কিন্তু কুকর্ম বলতে যা বুঝায় তেমন কিছুই নেই ভিডিওটিতে। এর আগে নিলয় হত্যাকাণ্ডের সময়ও একটি ভিডিওক্লিপ আসে আমার কাছে, যা দিয়ে নিলয় হত্যাকাণ্ডটি জাস্টিফাই করার চেষ্টা চলে। খেয়াল করলে দেখবেন, একটা গ্রুপ অনলাইনে বেশ সক্রিয়। সেই শাহবাগ গণজাগরণ থেকে এমনটা শুরু হয়েছিলো। একেকটা হত্যাকাণ্ড ঘটে আর একটা গ্রুপ অনলাইনে সক্রিয় হয়ে উঠে সেটা জাস্টিফাই করার জন্য। আর আমরা আমজনতা তা বুঝে না বুঝে শেয়ার দেই, ককিয়ে উঠি আবার কেউ কেউ মাথা ঝাঁকিয়ে বলি ঠিক আছে, ঠিক আছে। এবং প্রতিটি কাজই করা হচ্ছিলো ধর্মের দোহাই দিয়ে। এবারই বোধহয় প্রথম ফারাজ- সালাউদ্দিন এর বাইরে। হত্যা, হত্যাই। একে জাস্টিফাই করার কিছু নেই। এটা বর্বর/আদিম সমাজ নয় যে হত্যা করে প্রতিপক্ষকে দমন করেই পথ চলতে হবে। রাষ্ট্র, আইন, আদালত, সবই আছে। আপনার কিচ্ছু করার ক্ষমতা নেই? আছে। সবচেয়ে বড় শক্তি আপনার আছে। আপনার আছে কণ্ঠ। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুল। কারো ক্ষমতা নেই আপনার আওয়াজকে উপেক্ষা করে। কাদের মোল্লা ‘ভি’ দেখিয়েছিলো। প্রথম রায় কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন হয়েছিলো। একমাত্র গণ আওয়াজই সে রায়কে গণ রায়ে পরিণত করে। এই দেখেন, উদাহরণটা চোখের সামনে তুলে দিলাম। তবে হ্যাঁ, মনে রাখবেন, সে আওয়াজ হতে হবে ন্যায়ের পক্ষে। তবেই এক থেকে তিন, তিন থেকে দশ, দশ থেকে দশ লাখও হয়ে যেতে পারে যদি আওয়াজটা সত্যাশ্রয়ী হয়।
এই সত্যাশ্রয়ী আওয়াজের তোড়ে কাদের মোল্লা ভেসে গেলো। এক এক করে সকল অপশক্তির হোতাই ভেসে গেলো, যাচ্ছে। কই? কেউ ঠেকাতে পেরেছে? পারেনি। কারণ, মিথ্যার বেসাতি খুব বেশিদিন টেকে না। আর যেহেতু মিথ্যার আওয়াজ জোরালো না, শক্তিহীন, দুর্বল। তাই অশুভ শক্তি বর্বর/আদিম ভুল পথ বেছে নিয়েছে। তারা ধর্মের নামে একেকটা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে চারদিকে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে হত্যাযজ্ঞটিকে জাস্টিফাই করার জন্য।
আপনাকে ভাবতে হবে ধর্মের নামে হত্যাযজ্ঞ কেনো? আইন আছে, কানুন আছে, বিচারালয় আছে।
যাহোক, আসি আবার ফারাজ আর অসি সালাউদ্দিনের ব্যাপারে। বিভ্রান্তি এড়াতে সাময়িক চুপ থাকুন। চোখ-কান খোলা রেখে পর্যবেক্ষণ করুন কিন্তু নিশ্চুপ থাকা চলবে না। মনে রাখবেন, বিভ্রান্তি ছড়িয়ে কার্যসিদ্ধিই হচ্ছে শয়তানের কাজ। আপনি বিভ্রান্তির বেড়াজালে পড়ে চুপ করে ঘরে বসলেই তো শয়তানের কার্যসিদ্ধির পথ সুগম হয়।
পর্যবেক্ষণ করুন, ভাবুন, বিশ্লেষণ করুন তারপর নিজের মতামত ব্যক্ত করুন আর অন্যকেও জানার সুযোগ করে দিন।
সত্য বেরিয়ে আসবেই। সে সত্যকে টেনে বের করার দায়িত্ব কিন্ত আপনি আমি এড়াতে পারি না। নাগরিক সচেতনতাই একটি জাতিকে আলোর রাস্তায় হাঠতে সহায়তা করে।
সুতরাং…..
মনে রাখবেন, আপনি একেবারে চুপ, তো সর্বনাশ! আপনার আমার আওয়াজই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করবে।
১৮টি মন্তব্য
অনিকেত নন্দিনী
“নাগরিক সচেতনতাই একটি জাতিকে আলোর রাস্তায় হাঁটতে সহায়তা করে।” (y)
এখন সময় ধৈর্য ধরার, সবাই একত্রিত হয়ে কাঁধে কাঁধ ঠেকিয়ে অন্যায়কে প্রতিহত করার। আমরা বিভক্ত হয়ে গেলে প্রতিপক্ষের জন্য সুবিধা হয়। সেই সুযোগ তাদের দেয়া উচিত নয়। আমরা যেন ভুলে না যাই, “একতাই শক্তি”।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হ্যাঁ, একতাই শক্তি! আমরা যেনো তা ভুলে না যাই।
আজিম
অত্যন্ত ভাল কথা বলেছেন। বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায় এই ”এক থেকে দশ, দশ থেকে শত, ….. আর শত থেকে এভাবে লাখো-কোটি” আওয়াজ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
অবশ্যই সে আওয়াজে সততা থাকতে হবে। তবেই সে আওয়াজ জোড়ালো হবে।
মৌনতা রিতু
এখন সত্যি ধৈর্য্য ধরা আর আফসোস ছাড়া কিছুই তো দেখছি না।
দেখা যাক আদৌ সত্য উন্মোচন হয় কিনা !
ঠিক কথা বলেছো।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হবে এবং হয়েছেও।
ইঞ্জা
জনগণ বিশেষ করে যারা ফেবু, টুইটার বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে আছেন তাদের উচিত আগে বুঝা, জানা তারপর দরকার হলে কমেন্ট করা নইলে ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত অবস্থা হবে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ঠিক তাই। মোনাফেকদের স্বভাব বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ফায়দা লুটা। ভ্রান্ত পথের পথিক বলেই তারা এমনটা করে।
ইঞ্জা
সহমত
জিসান শা ইকরাম
গঠনমূলক পোষ্ট,
বিভ্রান্তিকে উপেক্ষা করে জঙ্গিদের বিরুদ্ধেই প্রচার করা উচিৎ সর্ব শক্তি দিয়ে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
(y) অবশ্যই সকলকে চোখকান খোলা রেখে এগুতে হবে। একেবারে নিশ্চুপ হয়ে থাকলে সুযোগসন্ধানীরা সুযোগ নিবে।
লীলাবতী
খুবই ভাল পোষ্ট, সহমত আপনার সাথে আপু।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
(y)
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু আপনি এমন করে সহজ করে বুঝিয়ে লেখেন, যা অনেকেই পারেনা।
হুম এখন চুপ থেকে পর্যবেক্ষণ করার সময়। তবে নিশ্চুপতার নয়।
ঠিক বলেছেন।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
🙂 মোটামুটি কনফার্ম হওয়া গেছে ফারাজ জঙ্গি ছিলো না।
ভালো লাগে না রে নীলাদি। বুকের ভেতর অনেক যন্ত্রণা হয়। কি হবে আমার দেশটার?
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু আমরা আশা নিয়ে বাঁচি। আমাদের দেশটা পঁচে যাবেনা।
আবু খায়ের আনিছ
আমাদের হয়েছে এক সমস্যা। কিছু ঘটুক বা না ঘটুক, কিছু মিডিয়া ও কিছু নামধারী ফেইজবুক সেলিব্রেটি আছে যারা নিজেদের পন্ডিত্য জাহির করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে।
ঘটনা যেহেতু ঘটেছে নিশ্চয় এর পিছনে কারণ আছে, আর সেই কারণ বেরিয়ে আসবেই। আমরা কি করতে পারি, সেই কারণ উদঘাটন এর চেষ্টা করতে পারি, যারা এই কাজে নিযুক্ত তাদের সাহায্য করতে পারি।
ধন্যবাদ, গুরুত্বপূণ পোষ্ট।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ধন্যবাদ আপনাকেও মতামত ব্যক্ত করার জন্য।