
বর্তমানে আমরা যারা ফেসবুকিং করছি তারা কেউ নিজ চোখে মুক্তিযোদ্ধ দেখিনি। তাই হয়তো উপলব্দী করতে পারিনা সেই ১৯৭১ সালের ভয়াবহ দৃশ্য! মাঝে মধ্যে মনের কোণে ঘুরপাক খায় হাজারো প্রশ্ন। নীরবে নির্বিত্তে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করে অজস্র কথা! কী দিনটাই নাহ ছিল সেদিন, টানা ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যোদ্ধের পর প্রকাশ্যে উদিত হয় লাল সবুজের পতাকা। ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা! সত্যি মুক্তিযোদ্ধের কথাগুলো ভাবতেই নিজের অজান্তে চোখ দিয়ে অশ্রু নেমে আসে। ফুটফুটে নিষ্পাপ শিশুদের ক্ষুধা মিটানোর চিৎকার, চারিদিকে বাঁচাও বাঁচাও ধ্বনি!নীরহ বোনের ইজ্জত বাঁচানোর আর্তনাদে কম্পিত হয়েছিল বিশ্ব ধরণী। বুড়িগঙ্গায় শত শত লাশ ভেসে উঠেছিল কচুরিপানার মত। মানুষ পচা গন্ধে একটা সময় জেলেরা নদী থেকে মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছিল।।
কি ভয়াবহ যুদ্ধ হয়েছিল তা কল্পনা করতেও গা শিউরে উঠে। পূর্ব পাকিস্তানের অসহায় মুক্তিকামী মানুষদের ধরে নিয়ে যাওয়া হত ফাঁকা মাঠে। তারপর, হাত পা বেঁধে উপড়ে দেয়া হত চোখ। হাতুড়ি দিয়ে থেঁতলে দেয়া হত মাথা। ঘর থেকে সুন্দরী মহিলাদের ধরে নিয়ে দিনের পর দিন চালানো হত যৌন নির্যাতন! তারপর, রাইফেল দিয়ে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দেয়া হত মা – বোনদের লজ্জার স্থান। বিপদগ্রস্ত মানুষদের ‘আল্লাহগো চিৎকারে তরতর করে কেঁপে উঠতো খোদার আরশ। এসবকিছু ভাবলে পাকিস্তানীদের মুখে থুথু ছিঁটাতে মন চায়। কতটা হিংস্র জানোয়ার হলে মুসলিম হয়ে মুসলিমদের এতটা নির্যাতন করতে পারে, তা আমার জানা নেই। পাকিস্তানীদের বর্বরতার দৃশ্য এখনোও ভেসে উঠে বাংলার আকাশে। শহীদ মুক্তিযেদ্ধারা এখনো কবর থেকে বজ্রকন্ঠে বলে ‘শত্রুদের সাথে আপস করতে নেই। তাই পাশাপাশি রাষ্ট্র হিসাবে পাকিস্তানের সাথে সুসম্পর্ক থাকলেও, মন থেকে I hate Pakistan ছাড়া কিছুই আসেনা। ১৯৭১ সালে ১৬ ই ডিসেম্বর সেই বর্বরতাকে উপেক্ষা করেই নিছিয়ে আনা হয় আজকের এই বিজয়! ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস হলেও, এখনো কোটি কোটি বাঙ্গালিদের চোখের কোণে মুক্তিযোদ্ধের সেই চিত্রটি থেকেই যায়। বিজয়ের আনন্দে সবকিছু ভুলে গেলেও পাকিস্তানী দাজ্জাল বাহিনীর নির্মমতার দৃশ্য আজও মনে আছে, আজন্মকাল মনে থাকবে!!
সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা। ৪৯ তম বিজয়ের ঘ্রাণে হিল্লোলিত হোক বাংলার আকাশ বাতাস। মুক্তির সোপানে কম্পিত হোক পাহাড় নদী!
৭টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
চমৎকার বলেছেন। আজো সেইসব দেখলে পাকিস্তানীদের প্রতি প্রচন্ড ঘৃণায় হৃদয় ভরে উঠে। সেই নির্মমতা, ভয়াবহতা, অত্যাচারের কথা শুনলে গা শিউরে ওঠে।
৪৯তম বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা রইলো। বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই সমস্ত শহীদ,বীরাঙ্গনা,মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি
মাছুম হাবিবী
বিজয়ের মাসে দূর হোক সমস্ত ম্লান অভিমান। ভালো থাকবেন দিদি
আরজু মুক্তা
সব কালিমা দূর হয়ে যাক।
বিজয়ের পতাকা পতপত করে উড়ুক।
প্রদীপ চক্রবর্তী
গা শিহরিত হয়ে উঠে এসব পড়লে।
ঘৃণা জানাই পাকিস্তানি হায়নাদের।
.
বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই সকল শহীদ, বীরাঙ্গনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের।
মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ❤️
তৌহিদ
এই প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস তারা জানতেও চায় না এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদকে মনে লালন করতে চায়না। এই ব্যর্থতা আমাদের সকলের ।
আপনাকেও বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
বিনম্র শ্রদ্ধা রইল সেই সব ত্যাগীদের জন্য।
শুভ কামনা রইলো।
জিসান শা ইকরাম
আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি, মনে আছে সব কিছুই।
বিজয়ের শুভেচ্ছা নিন,
শুভ কামনা।