বারমুডায় বক্সী- ২

নবকুমার দাস ২২ জুন ২০২১, মঙ্গলবার, ০৮:০০:১৩পূর্বাহ্ন উপন্যাস ৭ মন্তব্য

|| #বারমুডায়_বক্সী_২||

#নবকুমার_দাস

#ধারাবাহিক_উপন্যাস #সায়েন্স_ফিকশন #বিজ্ঞানী_বি_কিউব  #ডক্টর_বন_বিহারী_বক্সী

(২)

[ ৪ঠা মে,বনবাস,খোয়াই  ]

 

না , শুধুমাত্র পল-কে একা  নয় ।

ম্যাসাচুসেটস-এ আমার প্রাক্তন মার্কিন সহকর্মী রিচার্ড টমসনকেও ই-মেল করে আমার ইচ্ছের কথা জানালাম।

দুই জনই উৎসাহ দেখিয়ে ফিরতি ই-মেল করেছে।  তবে হাতে এখন অনেক কাজ থাকায় পল এবার সময় করতে পারবে না। ওদিকে রিচার্ড লিখেছে ,”ডক্টর বক্সী আপনি ডাকলে আমি হাজার কাজ  বা ব্যাস্ততা থাকলেও আমি আসব । এম আই টি-তে আপনার সহকারী হিসাবে  যেটুকু শিখেছি তার জন্যে সারা জীবন আমি কৃতজ্ঞ থাকবো। ”

ইতিমধ্যেই অনেকগুলি কেস ডায়েরি পড়লাম , এছাড়া অগুন্তি জার্নাল ও বই পড়েছি । সাংবাদিক গাড্ডিস সাহেব জায়গাটিকে নিজের লেখনীর মাধ্যমে বিখ্যাত করে তুললেও প্রথম নজরে নিয়ে আসেন এডওয়ার্ড ভন উইঙ্কল জোন্স । উনিশ-শ’ পঞ্চাশ  সালের সেপ্টেম্বর মাসের সতেরো তারিখে ‘দি মিয়ামি হেরাল্ড’ পত্রিকায় তিনি আটলান্টিকের এই অঞ্চলে ঘন ঘন জাহাজ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা প্রথম নজরে আনেন । এই লেখার বছর দুই পরে জন এক্স স্যান্ড  নামে এক ভদ্রলোক তত্কালীন ‘ফেট ‘ পত্রিকায় “সী মিস্ট্রি আট আওয়ার ব্যাক ডোর ” নামে এই বিষয়ে একটি অসাধারণ আর্টিকল লিখলেন । এই লেখায় প্রথম দাবি করা হয়েছিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ‘ফ্লাইট নাইনটিন’ ও মার্কিন নেভির পাঁচ পাঁচটি  ‘টর্পেডো আভেঞ্জার’  সহ আরো অনেকগুলি উড়ান এবং জাহাজ এই  ত্রিকোণ এলাকায় আচমকা তলিয়ে গেছে বা একেবারে হারিয়ে গেছে । তবে এইগুলির কোন চিহ্ন এমনকি কোন ধংসাবশেষ এই চত্ত্বরে দেখাও যায়নি।

বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবেই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। জন এক্স স্যান্ডের এই লেখাটাই প্রকৃত পক্ষে বর্তমানে প্রচলিত বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের এলাকার বিস্তারিত লিপিবদ্ধ বিবরণ। সে যাই হোক না কেন , এরপর প্রায় বারো বছর পর ১৯৬২ সালের এপ্রিল সংখ্যার আমেরিকান লিজিয়ন পত্রিকায় ‘ফ্লাইট নাইনটিন’ -এর ঘটনার কথাটি পুনরায় উল্লেখ করা হয়। এই লেখায় লেখক অ্যালেন ডাব্লিউ একের্ট দাবি করেন বিমান বাহিনীর প্রধান রেডিও বার্তায় বিমান চালকের মুখে শুনেছেন , ” আমরা সাদা জলের ভিতরে প্রবেশ করছি। কোনকিছুই ঠিক নেই। না না আমরা কোথায় তা ঠিক বুঝতে পারছি না , জলের রঙ এখন সবুজ , সাদা নয়।”

তিনি আরো লেখেন যে নৌবাহিনীর তদন্তে থাকা আধিকারিকরা জানিয়েছেন, “উড়োজাহাজ গুলি মঙ্গল গ্রহের দিকে উড়ে গেছে “।

এই রকম অবিশ্বাস্য ঘটনার বর্ণনা স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং অবশ্যই অনেকেরই ঘুম কেড়ে নেয়।

তবে স্যান্ডের প্রবন্ধে কোনো সুপার ন্যাচারাল বা অলৌকিক শক্তির উল্লেখ করা হয় , বিশেষ করে ফ্লাইট নাইন্টিনের ঘটনায়। ওই এলাকার অদ্ভুত আচরণের বর্ণনা দিয়ে ১৯৬৪ সালে অর্গসি পত্রিকায় ভিনসেন্ট গাড্ডিস নতুন একটি আর্টিকেল লিখলেন। “দি ডেডলি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল ” নাম এই লেখায় সেই ফ্লাইট নাইন্টিনের ঘটনার পুনরুল্লেখ করে রহস্যের দাবিকে আবারো উত্থাপন করলেন।  শুধু এখানেই থেমে না থেকে গাড্ডিস পরের বছরেই  ‘ইনভিজিবল হরাইজন’ বা ‘ অদৃশ্য দিগন্ত ‘ নামে বই লিখে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে উঠলেন।

এরপর একেএকে অনেক লেখক লেখিকা এই আসরে নেমে পড়লেন, জন ওয়ালেশ স্পেনসার ১৯৬৯ সালে প্রকাশ করলেন ‘লিম্বো অফ দি লস্ট ‘ বইটি যেটা ১৯৭৩ সালে পুনর্মুদ্রিত হয়। এই বইটি আমি পড়লাম।  বেশ লেখা, তোফা লেখা , কিন্তু বিশ্বাস করা কঠিন। চার্লস বার্লিটজ-এর ‘দি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল’ এবং রিচার্ড উইনারের ‘দি ডেভিলস ট্রায়াঙ্গেল’ বই দুটিতেও সেই একই ঘটনা এবং এর সম্ভাব্য কারন-অকারণ রহস্য নিয়ে নানান আলোচনা করা হলেও মূল সুর সেই একের্টের মত। সবার দাবি অলৌকিক কিছু আছে।

সত্যিই কি অলৌকিক কিছু না লৌকিক এবং বিজ্ঞান-ই  একমাত্র এর উত্তর  দিতে পারে ,তার জন্যেই আমি অপেক্ষা করছি।

 

[ পাঁচ মে,বনবাস,খোয়াই ]

 

অপেক্ষার অবসান।

মনস্থির করে ফেলেছি। অকুস্থলে যেতে হবে।

রাধানাথ শিকদারমশাই বড় বিচক্ষণ ছিলেন তাই এভারেস্টের চূড়োয় না উঠে বেশ অঙ্ক কষে তার উচ্চতা সঠিকভাবে মেপে দিয়েছিলেন। কিন্তু ঘটনাস্থল না দেখে এতবড় বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য বোঝা যাবে বলে আমার মনে হয়না।  বিভিন্ন পরিসংখ্যান দেখে বোঝা যাচ্ছে প্রতিবছর জুন মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের দুর্ঘটনার সংখ্যা বেশি। ভাবছি এবার ওই সময়ে ওদিকটায় থাকবো।পরিস্থিতির উপর নজর দেওয়া জরুরি। বিষয়টাকে গভীরভাবে অনুধাবন করতে হবে।

অনেকগুলো বিষয়ে গুরুত্বপূর্ন পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। ওই অঞ্চলের ভুপ্রকূতি ,আবহাওয়া , চৌম্বকীয় ক্ষেত্র ইত্যাদির প্রচুর তথ্য বিশ্লেষণ করা দরকার।

রিচার্ডকে সেই মত ইমেইল করলাম। ব্যাপারটাকে নিয়ে ওর বেশ উৎসাহ তা বোঝা গেল। আমি বললেই সে হনলুলু থেকে মিয়ামি আসবে। আমি ভাবছি এবারের বারমুডা রহস্যের সমাধানের জন্যে বা কারন খোঁজার জন্যে বিস্তর ঘোরাঘুরি আর খোঁজখবর করতে হবে। ভাবছি মিয়ামি দিয়েই শুরু করব।কেননা ,শয়তানের ত্রিভুজ বা বারমুডা ত্রিকোণের একমাত্র মেন্ল্যান্ডের কোণ মিয়ামি। ফ্লোরিডা উপ-দ্বীপের দক্ষিণপ্রান্তের এই মহানগর অনেক মহা তান্ডবের শিকার।

অন্যদুটো কোণে আছে দুটো দ্বীপ ; সানজুয়ান এবং  ভুবন বিখ্যাত বারমুডা আইল্যান্ড।

প্রথমত এই সব জায়গায় আমাকে বেশ কিছু দিন  থাকতে হতে পারে ,দ্বিতীয়ত এর জন্যে অনেকটাই খরচ-খরচা হবে। অবশ্য এথেনিয়াম সোসাইটি কিংবা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে আমার এই প্রজেক্টের কথা বললে লুফে নেবে সে কথা আমি জানি।

কিন্তু রিচার্ডের এক কথা ,” ডক্টর বক্সী ,আপনি শুধু আমাদের মহাদেশে আসুন,বাকি খরচ আমার , আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। ”

কিন্তু নিশ্চিন্তে আর থাকতে পারছি কই ?

বোলপুরের এই গবেষণাগার ,কেয়ারটেকার করালীকিঙ্কর ,পোষা কুকুর ‘টাইগার’ আর পুচকে লা কোস্ট কুমীর ‘ডারউইনকে’ ছেড়ে থাকতে মন খারাপ তো করেই। তাছাড়া খোয়াইয়ের এই বাগান বাড়িতে পৃথিবীর নানান দেশ থেকে আনা শ-পাঁচেক বিচিত্র রকমের গাছপালার বাহারি সামিয়ানা ছেড়ে দূর বিদেশ বিভুঁইতে থাকতে ইদানিং বেশ খারাপ লাগে। এটা ঠিক যে একবার কাজে জমে গেলে আমার এসব খেয়াল থাকেনা, কিন্তু দীর্ঘদিন এদের সঙ্গে থাকতে থাকতে কেমন যেন মায়া পরে গেছে।   দ্বিতীয়ত এই অভিযানের শেষে আবার এখানে ফিরে আসতে পারবো কিনা তারই বা নিশ্চয়তা কি ? খুব চিন্তা হয়। তবে কিনা গৌতম বুদ্ধের একটা কথা আমায় প্রেরণা দেয় খুব – “অতিরিক্ত চিন্তা অসুখের অন্যতম কারন “, তাই নিজেকে নিয়ে খুব একটা ভাবিনা,ভাববার মত বিষয় তো দুনিয়াতে কম নেই। বরং সেই সব নিয়েই ভাবা যেতে পারে।

 

[ ছয় মে,বনবাস,খোয়াই ]

 

ঘরের মায়া কাটিয়ে ফ্লাইটের টিকিট কাটলাম। কলকাতা থেকে মিয়ামি যাওয়া যায় পূর্ব এবং পশ্চিম দুই দিক দিয়েই। তবে কলকাতা থেকে সরাসরি কোন ফ্লাইট নেই।  এশিয়া থেকে উত্তর আমেরিকা অথবা এশিয়া থেকে ইউরোপ হয়ে উত্তর আমেরিকা। সময় কম বেশি একই রকম লাগে।

[ পনেরোই মে , মিয়ামি , ইউ এস এ  ]

 

আজ ভোরবেলায় মিয়ামি এসে পৌঁছেছি। যাত্রা শুরু করেছিলাম বারো তারিখ বিকেলে। বোলপুর থেকে দমদমের নেতাজি সুভাষ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর। সেখান থেকে মাঝ রাতের ফ্লাইটে হংকং । হংকং থেকে কাথেপ্যাসিফিক এয়ারওয়েজের বিমানে নিউ ইয়র্ক । জন এফ কেনেডি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। তারপর আমেরিকান এয়ারলাইন্সে  নিউ ইয়র্ক থেকে সরাসরি মিয়ামি।

আমার প্রাক্তন মার্কিন সহকর্মী রিচার্ড টমসন হনলুলু থেকে আগেই এখানে এসে পৌঁছেছিল। রিচার্ড দেখি সেই আগের মতই আছে। ধবধবে ফর্সা এবং ছোট করে ছাঁটা সোনালি চুল। দাড়ি গোঁফ ও কোন কালেই রাখতে দেখিনি ,এখনো নেই। গাট্টাগোট্টা চেহারার ছয় ফুটিয়া আমেরিকান। বয়স বেড়েছে। হুম পঞ্চান্ন বছর তো হয়ে গেল। তবে চেহারায় তেমন কোন ছাপ পড়েনি , এখনো বেশ তাগড়াই আছে। যথেষ্ট ফিট। শরীরে বাড়তি মেদ নেই। আমি ম্যাসাচুসেটস ছেড়ে দেওয়ার পরের বছরে সেও ইনস্টিটিউট ছেড়ে চলে যায় নিজের বাড়ি হনলুলুতে। সেখানেই নিজে গবেষণা করে ও একটা কলেজে পড়ায় এবং তার ল্যাবরেটরির দেখাশোনা করে।

আমরা দুইজনেই উঠেছি মিয়ামি শহর থেকে একটু দূরে মিয়ামি রক রিজ এলাকার এভারগ্লেডস ন্যাশনাল পার্কের একটি গেস্ট হাউসে। এখানে নিরিবিলিতে গবেষণার সুবিধা হবে বলে রিচার্ড এই ব্যাবস্থা করেছে।

দীর্ঘ বিমান যাত্রার ধকল কাটিয়ে বিকেল নাগাদ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরলাম।

গেস্ট হাউসের বারান্দায় হ্যামকে শুয়ে দূরের জলাজঙ্গল এবং ফ্লোরিডা উপকূলের সামুদ্রিক ঢেউ আছড়ে পড়া দেখছি।

রিচার্ড বলল ,”বড় অদ্ভুত এই এভারগ্লেডস ন্যাশনাল পার্ক।”

আমি বললাম ,”কি রকম ?”

সে বলল ,” মিসিসিপি নদীর পুবদিকে এতবড় জাতীয় উদ্যান যুক্ত রাষ্ট্রে আর নেই। আয়তনের দিক দিয়ে আমেরিকার তৃতীয় বৃহত্তম। ডেথ ভ্যালি ও ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের পরেই এর ঠাঁই।প্রকৃতির দিক দিয়ে এটা  হল আমেরিকার একমাত্র ট্রপিক্যাল ও ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট।  ”

আমি বললাম ,”আচ্ছা। ”

রিচার্ড বলল ,”হুম ,শুধু তাই নয় ইউনেস্কো তিন-তিনটি গুরুত্বপূর্ণ তালিকায় এই ন্যাশনাল পার্ককে রেখেছে। ”

আমি জিগ্যেস করলাম ,”কি কি শুনি। ”

সে বলল ,”উনিশ শ ছিয়াত্তর সালে এভারগ্লেডস এন্ড তর্তুগাস বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের তালিকায় রাখে। এর তিন বছর পরে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায় রাখে। তার পরে উনিশ শ সাতাশি সালে  রামসর কনভেনশন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমির তালিকায় জায়গা পায়।”

আমি বললাম ,”বেশ ইন্টারেস্টিং। ”

রিচার্ড বলল ,”হবেই তো ,তিন তিনটি তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে যখন তার গুরুত্বই আলাদা। তবে…”

আমি বললাম ,”তবে কি ?”

রিচার্ড বলতে শুরু করল ,”এই পার্কের অনন্য ভৌগলিক বৈশিষ্ট আছে। এখানকার ইকোসিস্টেম খুবই ভঙ্গুর বা পরিবর্তনশীল ঠিক বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মত। ”

এই কথাটা শুনে আমি উঠে বসলাম। কথাটার সারবত্তা আছে।

রিচার্ড বলে চলল ,”এভারগ্লেডস হল জলাভূমি ,জঙ্গল ও নদীর নেটওয়ার্ক। লেক ওকেচবে থেকে ছোট্ট একটা নদী দক্ষিণ পূর্ব দিক দিয়ে ফ্লোরিডা উপসাগরে প্রবাহিত হয়। আপনাদের সুন্দরবনের মতই এখানে ম্যানগ্রোভ জঙ্গল আছে যা কিনা পশ্চিম গোলার্ধের বৃহত্তম উদাহরণ।এই জঙ্গলেই আছে প্রায় ছত্রিশ রকম লুপ্তপ্রায় প্রাণী। ”

আমি একটু অধের্য হয়ে বললাম ,” তা তো বুঝলাম,কিন্তু এর সঙ্গে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের কি সম্পর্ক ?”

রিচার্ড বলল ,”ডক্টর বক্সী ,আপনিই তো বলেছেন ,সবকিছুর গভীরে গিয়ে ভাবতে হবে ,কার্যকারণ খুঁজে বার করতে হবে। ”

আমি বললাম,” রাইট রিচার্ড ,তুমি চালিয়ে যাও। ”

রিচার্ড আবার শুরু করল ,”ধন্যবাদ ডক্টর বক্সী ,ফ্লোরিডা প্যান্থার ,আমেরিকান ক্রোকোডাইল এবং ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান মানাটি ছাড়াও এখানে আছে সাড়ে তিনশ রকমের পাখি , মিষ্টিজল ও নোনাজল দুয়েরই প্রায় তিনশ রকম মাছ,চল্লিশ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পঞ্চাশ রকমের সরীসৃপ। তবে এটা কোন বড় কথা নয় ,বড় বিষয়টা হল এই যে সারা ফ্লোরিডার মিষ্টি জলের উৎস নলকূপগুলির উপযুক্ত পানীয় জল রিচার্জ হয় এই অরণ্যেই। আকুইফারগুলির মুখ এখানে খোলা। ”

আমি বললাম ,”বুঝলাম। তবে তো এখানকার জিওলজি বা ভূতত্ব এবং আবহাওয়া নিয়ে একটু চর্চা করতে হয়। ”

রিচার্ড বলল ,”একদমই তাই ডক্টর আপনি ঠিকই ধরেছেন, সাবট্রপিকাল ও ট্রপিক্যাল এলাকার মিলনস্থল বা ট্রানজিশন জোন এই ফ্লোরিডা উপকূল।  ”

আমি বললাম ,”গুড পয়েন্ট রিচার্ড ,ট্রানজিশন জোন মানেই ঝড় ঝঞ্ঝা এবং গোলমাল। যা কিনা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ”

রিচার্ড বলল ,”হুম ,এখানে মূলত দুই রকম ঋতু দেখা যায় – নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ড্ৰাই সিজন বা শীতকাল অন্যদিকে মে মাস থেকে অক্টেবর পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল। যা কিনা ঝড় ঝঞ্ঝাপূর্ণ। ”

এবার আমি বললাম ,”ভালো পয়েন্ট রিচার্ড। কাল থেকেই আমরা কাজে নেমে পড়ব। ”

রিচার্ড বলল ,”একদম। ” (ক্রমশঃ)

 

Photo Courtesy: Google

 

 

৬১২জন ৫০৮জন
0 Shares

৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ