বন্দি অনুভব

তৌহিদুল ইসলাম ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার, ১১:১৩:৩৪অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১৩ মন্তব্য

আমি যেদিন প্রথম অনুভব করেছিলাম খাঁচায় বন্দী থাকার কষ্ট সেদিনই অতিপ্রিয় আদরের পোষা পাখিগুলিকে মুক্ত আকাশে ডানা মেলার জন্য স্বাধীন করে দিয়েছিলাম। নিজের বুকের ভেতর গুমড়ে মুচড়ে থাকা বেদনার ঘুড়িটাকে পাখিদের দিয়ে আকাশে ওড়াতে চেয়েছিলাম। সেদিন একবারো বুঝতে পারিনি ভালোলাগার অনুভূতিটুকু আসলে যাদের জন্য জলাঞ্জলি দিয়েছি তারাই আমাকে উপহাস করে ছেড়ে চলে যাবে!

পাখিদের যখন খাবার দিতাম তাদের এঁটো দানাগুলি অন্য পাখিরা এসে খেত, আমিও না করতামনা। ভাবতাম খাকনা, বন্দিদের দেখতে মুক্ত পাখিরা এসেছে সহচর্য দিতে এটাও আনন্দের বিষয়। কিছুতেই বুঝতে পারিনি তারা আসলে বন্দী পাখিদের উপহাস করতে আসতো!

এরপর অনেক বছর কেটে গিয়েছে। পাখির সেই খাঁচাটিতে অযত্নে অবহেলায় মরিচা ধরেছে। আমি বাড়ান্দায় আগের জায়গায় রাখা খাঁচাটির কাছে প্রতিদিন একবার করে যাই। ভাবি যেসব মুক্ত পাখিদের এতদিন খাবার দিয়েছি তারা হয়তো ফিরে আসবে আবার! এবার তাদের মুক্ত করেই রাখবো। খাঁচার দরজা আর বন্ধ করবোনা। কিন্তু হায়! যে যায় সে কি আর আসে?

আগে যদি জানতাম তাহলে কিছুতেই মুক্ত পাখিদের খাঁচায় বন্দীদের কাছে আসতে দিতামনা। যাদের মুক্ত করেছি তারা যেমন আসেনি, যারা সু্যোগ নিয়েছে তারাও আর ফিরে আসেনি। কি স্বার্থপর ছিলো পাখিগুলি!

এটাই হয়, সুযোগের সদ্ব্যবহার যারা করেছে তারা আজ ঠিকই মুক্ত আকাশে ডানা মেলছে। আর আমি বোকার মত নিয়ম মাফিক পুরোনো খাঁচার কাছে গিয়ে অতীতের ভালোলাগার মিথ্যে অনুভবকে আঁকড়ে ধরে আছি।

——-
ছবির পাখিগুলিকে সত্যিই ছেড়ে দিয়েছিলাম।

১০৪৩জন ১০৪৩জন
0 Shares

১৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ