
সত্যি! সে কাঁদছিল। চোখের কোণে বেয়ে বেয়ে অশ্রুসিক্তগুলো এতো আবেগে টলমল করছিলো যে কখনো বারান্দার টিনের চালেও বৃষ্টি ফোঁটার এমন বর্ষণ দেখিনি। ঢোক গিলে গিলে উদাস উদাস চেয়ে চেয়ে প্রেমের গন্ধ এতো মাখামাখি করে ছড়াচ্ছিলো যে প্রেমে না পড়েও উপায় নেই। আর অবচেতনে ওড়নায় এতো গিটঠু দিচ্ছিল যে আজীবন এভাবেই ঠোঁটের ডগায়, নিশ্বাসের স্রোতে, চোখের পাপড়িতে কিলবিল করে হেসেখেলে উড়াল দিতে পারবো।
হাসি। উমা! খিলখিলিয়ে হাসি। একঝাঁক জংলী পাখিদের নীড়ে ফেরার হাসি। যে পাখিগুলো সাবলীল বাংলায় কিচিরমিচির আওয়াজে রূপ-প্রতিরূপ ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত। যে আওয়াজে মনপবনে প্রতিনিয়তই বসন্ত আসে, হেমন্তে ভিড় করে কাশফুল আর সাদা বকের ডানা।
দাঁত। বামপাশের ক্রমিক নম্বর ৯। আহা! সে দাঁতের হাসি এতো মধুর দেখতে, পাগল হয়েছি সে দাঁতের ফাঁকেই। চোখ নগরের প্রথম পলক ফটক সেখানেই শিকল বন্দী। আর ভাজ হওয়া গালের ছোট তিলক। ডুবে যাই ডুবতে চাই। তিলকের কিনারে বারবার ভেসে যাই।
লিপস্টিক। হালকা গোলাপি রঙের ঠোঁট। সদ্য ফোঁটা গোলাপের পাপড়ি। যে পাপড়ির ঘ্রাণে মাদকাসক্তের গন্ধ মেলে। এক নিমেষেই শরীর পিষে ঠোঁট তিনটি শব্দ বলে। আর লজ্জায় লাল টিপের গোপনে ঘর বাঁধে সে।
চোখ। সাত আসমানের বরকত। আকাশী-নীল রঙের ঢেউ খেলে মেঘের আড়ালে। গর্জনে জব্দ হয়ে সূর্যমুখী, কুমড়োর ফুল ফোটে। মাঝেমাঝে চোখ টিপনি ঘুড়ির রশ্মিতে গাঁথে।
নাক। হাতের চিপায় জব্দ হওয়া রপ্ত করা কৃষ্ণের বাঁশি ন্যায়। যে বাঁশির সুরে কোকিল টিয়ে কথা কয়। আনমনে শোনে বাসন্তী নামের গান।
ছোঁয়া। লোমহর্ষক স্বাক্ষী। শরীরের শিরা-উপশিরায় অনুভূতিরা আত্মগোপনে যাযাবর। শরীরে ছেদ করে রক্তের লোহিত সরণে বসবাস। দেহ থেকে মুক্ত হয় তৃপ্ত-সন্তুষ্টির ধূপকাঠির ধোঁয়া।
সুরসুরি। হাতের তালুতে নরম চিমটি কাঁটার শব্দ। সত্যি! বিমূর্ত বিমুগ্ধতায় মুখ চাপাচাপির হাসি। সহ্য, সে-তো অসহনশীল। আর অনুভব! মাথা নিচু করে পায়ের সাথে গুতাগুতি।
হাত। দু’হাতে চার। আঙুলে বিশ। শুধুশুধু মুচকি মুচকি হাসিতামাশা। চোখে চোখে কথোপকথন। নিশ্বাসে নিশ্বাসে অনুমতি। পলকে পলকে প্রেম গ্রহণ।
কনুই আঙুল। সৌভাগ্যেরা দড়ি বেঁধে কপালের সংসার। আঙুলে ছোঁয়াছুঁয়ি ঘষাঘষির জ্বালাতনে বালিশটাও হেসেছে খুব।
ছাড়ো…।
আর একটুখানি।
১৬টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
প্রিয়াত্বায় খুব খুব দারুন অনুভুতি ও প্রেমএর কুহক কুহকীর অবস্থার চিত্র। রেখে গেলাম চিততে।
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ হে প্রিয় সহোদর। ভালো লাগা রইলো আপনার প্রতিও।
মোঃ মজিবর রহমান
হুম! লিখুন সময়ের মাঝে পড়ে নেবক্ষন।
সুরাইয়া পারভিন
হাতের তালুতে নরম চিমটি কাঁটার শব্দ। সত্যি! বিমূর্ত বিমুগ্ধতায় মুখ চাপাচাপির হাসি। সহ্য, সে-তো অসহনশীল। আর অনুভব! মাথা নিচু করে পায়ের সাথে গুতাগুতি,,,, চমৎকার শব্দ চয়ন। অসাধারণ উপস্থাপন
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার,
জিসান শা ইকরাম
যে বর্ণনা দিলেন তাতে আর একটুখানির বর্ণনা আর না দিয়ে ভালো করেছেন 🙂
ভালো লেগেছে ছোট গল্প।
শুভ কামনা।
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয়, এভাবেই ভালোবাসাটা প্রকাশিত..
সঞ্জয় মালাকার
হাতের তালুতে নরম চিমটি কাঁটার শব্দ। সত্যি! বিমূর্ত বিমুগ্ধতায় মুখ চাপাচাপির হাসি। সহ্য, সে-তো অসহনশীল। আর অনুভব! মাথা নিচু করে পায়ের সাথে গুতাগুতি,,,, দারুণ শব্দ চয়ন গল্প পড়ে বেশ আনন্দ পেলাম।
শুভ কামনা ভাইজানা 🌹👍
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ ভাই, ভালো লাগলোআপনাদের ভালো লেগেছে বলে।
সঞ্জয় মালাকার
শুভেচ্ছা জানাবেন দাদা,
এস.জেড বাবু
চোখ। সাত আসমানের বরকত। আকাশী-নীল রঙের ঢেউ খেলে মেঘের আড়ালে। গর্জনে জব্দ হয়ে সূর্যমুখী, কুমড়োর ফুল ফোটে। মাঝেমাঝে চোখ টিপনি ঘুড়ির রশ্মিতে গাঁথে।
কি সুন্দর বর্ণনা করেন আপনি
মুগ্ধতা
নৃ মাসুদ রানা
ধন্যবাদ প্রিয়, উৎসাহ পেলাম।
মনির হোসেন মমি
হাত। দু’হাতে চার। আঙুলে বিশ। শুধুশুধু মুচকি মুচকি হাসিতামাশা। চোখে চোখে কথোপকথন। নিশ্বাসে নিশ্বাসে অনুমতি। পলকে পলকে প্রেম গ্রহণ।
প্রথমতো থ’ খেলাম আঙুলে বিশ? অবশেষে বুঝলাম আর ভাবলাম কত সুন্দর বাক্য শব্দের রোমান্টিক খেলাকে আপনি দারুণ খেলছেন।
নৃ মাসুদ রানা
আমিও বেশ খুশি আপনাদের মতো সাহিত্য মনা মানুষ পেয়ে।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
আমি সাদা সরল পাঠক। জটিল লেখা কম বুঝি।
তবু ভালোলাগা রেখে গেলাম।
নৃ মাসুদ রানা
ও তাই। বেশ ভালো লাগলো।।