
উতলা মেঘের দিন ডাকছে প্রলয়,
শস্যক্ষেতে কুয়াশায় ঢাকা গুচ্ছ গুচ্ছ মাশরুম,
প্রাচীন প্রেমের সাথে উড়ে আসে বোধিবৃক্ষে ঘুম!
এই বৃক্ষতলে হেঁটেছিল চাঁদ বুকে নিয়ে হারানোর ভয়,
নির্লিপ্ত প্রহরে নেমেছিল পৃথিবীর বুকে তীব্র রক্তক্ষয়!
বারান্দায় দেবদূত উঁকি দিয়ে খোঁজে কারো নামধাম,
জানেন ঈশ্বর, মৃত নদীরা মূলত হয়ে যায় নিলাম!
নক্ষত্রের ছায়া মেখে অতল জলে নাচছে সে জাগরী,
ঝংকৃত কাশবনে বেঁচে আছে কিছু রুপালী দীর্ঘশ্বাস,
এই রাজপথে একদিন হেঁটেছিল নীলাম্বরী,
নীল আলো ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে বিঁধেছিল হৃদয়!
তীব্র টানে পৃথিবীকে ছুঁয়ে দিলে চাঁদ,
ধ্বংস হবে জনপদ সব; তবু বাঁচবে আরাধ্য নগরী!
এখানে আকাশগঙ্গায় মিশেছে অশ্রুত টুং টাং,
বাতাসে কল্লোল তুলে দূর্বাঘাসে ভেসেছে অম্বরী!
বাতাসে দুরুদুরু কাঁপছে হলুদ নিয়ন বাতির ঝাড়,
উড়োজাহাজের সাথে বাজি রেখে উড়েছিল বন্য ঈগল,
অবিরত ঝরছে তার সোনালী পশমের কণা,
যুদ্ধক্ষেত্র ঢেকে দিতে নামছে বুঝি সুমেরুর অন্ধকার!
ঝুঁকে পড়া রেলিং এ ভর দিয়ে শুয়ে শুঁকেছিল রোদ,
ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দের ভারে হয়ত ভাঙ্গছে সে সমুদ্রের পথ,
নির্বিকার তবু অগ্নিকুন্ডের পাশে জমে থাকা মু্খ!
এই আলোয় অন্ধকারে গলেছিল বরফে নীলাম্বরী,
প্রাচীন ঝরণায় দেবতারা নেমে সারাতে অসুখ
জেনেছে মানবীই পৃথিবীর উদ্ভাসিত চোখ,
মহাকাশে নীহারিকা ছুঁয়ে ফুটে উঠা প্রথম হৃদয়!
স্ট্রবেরি ফলের মতো হালকা মিষ্টি বাতাসে কাঁপে রোদ,
নীলাম্বরী! ভেসে যায় রাজহাঁস কন্ঠে ভরে নিঃশ্বাস,
এখানে প্রেমের নাম অজন্তার চির অতৃপ্ত বোধ,
হালকা নীলাভ বনে অকারণে আকাশের সাথে বসবাস,
অগম্য জেনেও নাবিকের চোখে নেই কোন ক্ষোভ!
১৫টি মন্তব্য
বোরহানুল ইসলাম লিটন
বর্ণিল অনুভবের বিচ্ছুরণ।
অতুলণীয় শব্দ চয়ণ ও উপমার ব্যবহার।
আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা জানবেন সতত।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা সুপ্রিয় ব্লগার।
খাদিজাতুল কুবরা
সুন্দর শব্দের ঝংকারে কবিতাটি ভীষণ সুখপাঠ্য হয়েছে।
প্রকৃতির রুপে কবিতা সেজেছে রঙধনু আবিরে!
ধন্যবাদ কবি এমন কবিতা পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। যদি ও খুব কঠিন লাগলো। আপনার কবিতার সারমর্ম বোঝা আমার কম্ম না। পড়তে ভালো এ-ই যথেষ্ট।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল।
হালিমা আক্তার
মর্মার্থ বুঝতে কয়েক বার পড়লাম। তবু ব্যর্থ আমি। শব্দের ঝংকারে হৃদয়ে বীণা বাজে। প্রতি শব্দে শব্দে আলোর যেন বিচ্ছুরণ ঘটছে। শুভ কামনা রইলো।
সৌবর্ণ বাঁধন
মাঝে মাঝে নিজেও তল পাইনা এর। অবচেতন থেকে উঠে আসা অর্থহীনতা চেতনার দেয়াল ভেদ করলে সম্ভবত দুর্বোধ্য হয়ে উঠে। অনেক ধন্যবাদ পড়া ও মন্তব্যের জন্য।
রোকসানা খন্দকার রুকু
পড়েছি কিন্তু তিনবার।। কবিমশাই অশেষ শুভকামনা 🌹
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ সুলেখিকা। শুভকামনা জানবেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
চাঁদের বুকে ছিলো হারানোর ভয়, তাই-কি প্রতি পূর্নিমায় চাঁদের বুকে জ্বলজ্বল হয়ে উঠে সেই হারানোর ক্ষত! ক্ষত নয়, যদি ক্ষত-ই হতো তবে বিক্ষত দহনে পূড়ে যেতো নীলাভ বনাঞ্চল, শস্যক্ষেত, রাজপথ- যেখানে হেঁটেছিলো একদিন নীলাম্বরীও। ঈশ্বর জানেন,
চাঁদ আর নীলাম্বরী দু’জনেই দু’জনার। তাই নিশ্চিন্ত সাতারে ভেসে চলে রাঁজহাস… অনুসন্ধিৎসু নাবিকের দৃষ্টি-দ্বারে প্রকৃতি খুলে দিয়েছে অপার সম্ভার।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ আপু অসাধারণ মন্তব্যের জন্য। বিচ্ছিন্ন শব্দগুচ্ছ থেকে কি চমৎকার ভাবে গল্প উদ্ধার করে দিলেন। অনেক শুভকামনা জানবেন।
জিসান শা ইকরাম
অনেক ভালো লেগেছে কবিতা।
শব্দের যাদুকর আপনি।
শুভ কামনা
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ জানবেন শ্রদ্ধেয় ব্লগার। আপনার মূল্যবান মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।
রিতু জাহান
ঝরছে হবে মনে হয়,,
কি দারুন কথামালা!
ভাবনার গভীরে গিয়ে উপলব্ধি যেনো।
প্রেমের নাম অজন্তার চির অতৃপ্তবোধ,, দরুন,,
মৃত নদীরা নিলামে হারায় জন্ম যার পাহড়ের কান্নায়,
নীলাভ বনে নীল রঙ তাও কি আকাশের নয়!
আকাশেরই তো,, ছায়া ফেলে বসে থাকে নিশ্চিত মনে।
নীলাম্বরী তবু যেনো একাই,, নাকি সঙ্গী চাঁদ! যার নিজেরই কোনো আলোর ভরসা নেই!
আসলেই তো অনুদানে পাওয়া আলোর প্রতিফলন যেনো নীল নীলাম্বরী।
অতৃপ্ত কি তাই!
চমৎকার লিখেছেন।
সৌবর্ণ বাঁধন
ঠিক করে দিয়েছি বানান। অনেক ধন্যবাদ জানবেন এতোটা মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। বিশৃঙ্খল শব্দগুচ্ছে থেকে শৃংখলিত ভাবার্থ কোজার জন্য।
সৌবর্ণ বাঁধন
ঠিক করে দিয়েছি বানান। অনেক ধন্যবাদ জানবেন এতোটা মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। বিশৃঙ্খল শব্দগুচ্ছে থেকে শৃংখলিত ভাবার্থ কোজার জন্য।