আগে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে বাংলা বিষয়ে বাংলা প্রথম পত্র বাংলা দ্বিতীয় পত্র দুইটি পৃথক বিষয় ছিল। প্রথম পত্র ছিল সাহিত্য নির্ভর এবং দ্বিতীয় পত্র ছিল ব্যাকরণ ও রচনা। কিন্তু নতুন কারিকুলামে বাংলা একটি বিষয়। পূর্বের বইগুলোতে ৮ থেকে ১০টির অধিক কবিতা ও গল্প ছিল। ছিল সারাংশ, সারমর্ম ভাবসম্প্রসারণ, আবেদন পত্র ও রচনা। বর্তমান বইতে গল্প এবং কবিতার আধিক্য নাই। নাই সারাংশ, সারমর্ম, ভাবসম্প্রসারণ আবেদন পত্র ও রচনা চিঠি। তাহলে কী আছে বইতে। শিক্ষার্থীরা কী শিখবে। দেখা যাক তাহলে কী আছে বাংলা বইতে।
প্রথম অধ্যায় “মর্যাদা বজায় রেখে যোগাযোগ করি” – পরিবার ছাড়াও আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশী সহ পথ চলতে জানা-অজানা অনেকের সাথে যোগাযোগ করতে হয়। এই যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে আমরা কথা বা ভাষার প্রয়োগ করি। কোথায় কখন তুই, তুমি, তোমরা, আপনি, আপনাদের বলতে হবে তার প্রয়োগ দেখানো হয়েছে। আছে মর্যাদা অনুযায়ী সর্বনাম ও ক্রিয়া পদের ব্যবহার। সর্বনাম ও ক্রিয়া পদ দিয়ে বাক্য তৈরি। ভাষিক ও অভাষিক যোগাযোগের বর্ণনা।
দ্বিতীয় অধ্যায় ” প্রমিত ভাষা” – এই অধ্যায়ে ভাষার চর্চার জন্য রয়েছে একটি ছড়া “চিঠি বিলি”ও “সুখী মানুষ” নাটক। এখানে শব্দের প্রচলিত বানানের সাথে প্রমিত ভাষার রূপ তুলে ধরা হয়েছে।
তৃতীয় অধ্যায় ” অর্থ বুঝে বাক্য লিখি”- এ অধ্যায়ে ধারাবাহিকভাবে কিছু নমুনা পাঠ দেয়া আছে। পাঠ গুলো থেকে শিক্ষার্থীরা বিশেষ্য, সর্বনাম, ক্রিয়া, ক্রিয়া বিশেষণ ও যোজক শব্দ খুঁজে বের করে লিখবে। সুকুমার রায়ের “পাকাপাকি” কবিতা থেকে একই শব্দের ভিন্ন ভিন্ন রূপ তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও এই অধ্যায় আছে প্রতিশব্দ, বিপরীত শব্দ, যতি চিহ্নের ব্যবহার, বাক্যের প্রকারভেদ। ” সুখী মানুষ” মানুষ নাটক থেকে বিভিন্ন প্রকার বাক্য খুঁজে লিখতে বলা হয়েছে। যার ফলে শিক্ষার্থীরা সহজেই বাক্যের প্রকারভেদ সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে।
চতুর্থ অধ্যায় ” চারপাশের লেখার সাথে পরিচিত হই”- এ অধ্যায় সাইনবোর্ড, ব্যানার, আমন্ত্রণ পত্র, বিজ্ঞাপন, পোস্টার কীভাবে লিখতে হয় চিত্রসহ বর্ণনা দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানবে এবং পরবর্তীতে দলীয়ভাবে তৈরি করব।
পঞ্চম অধ্যায় ” বুঝে পড়ি লিখতে শিখি” – ১) প্রায়োগিক লেখা- ” একাত্তরের দিনগুলি ” ২) বিবরণ মুলক লেখা-“আমার দেখা নয়াচীন” ৩) তথ্য মূলক লেখা-” রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন” ৪) বিশ্লেষণ মূলক লেখা-” কীট পতঙ্গের সাথে বসবাস” ৫) কল্পনা নির্ভর লেখা-” সাত ভাই চম্পা”। এখানে প্রতিটি পাঠ শেষে শব্দের অর্থ দেয়া আছে। আছে পাঠ শেষে পড়ে কী বুঝলাম। এর উপর পাঁচটি প্রশ্ন। এবং পাঠ নিজের ভাষায় লেখা।
ষষ্ঠ অধ্যায় ” সাহিত্য পড়ি লিখতে শিখি” – এ অধ্যায়ে আছে কবিতা, গান, গল্প, প্রবন্ধ। এখানে সাহিত্যের ভিন্ন ভিন্ন রূপের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
সপ্তম অধ্যায় ” জেনে বুঝে আলোচনা করি”- ছবি দেখে প্রশ্ন করা। কী? কেন? কীভাবে? কে? কারা? কার? কোথায়? কখন? ইত্যাদি শব্দের ব্যবহার ও বাক্য তৈরি। সর্বশেষে আছে বিতর্ক। পুরাতন খেলার মাঠ চাই, না নতুন শিশু পার্ক।
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে হয় নতুন এই বইটিতে শেখার আছে অনেক কিছু। শিক্ষার্থীর সুকুমার প্রতিভা বিকাশের জন্য যথেষ্ট উপাদান রয়েছে। আমাদের প্রয়োজন শিক্ষার্থীদের সঠিক ভাবে পরিচালনা করা। সময়ের সাথে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়। আর সেই পরিবর্তনের হাত ধরেই এগিয়ে চলুক ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।