অপরাজিতা এবং আরও কিছু কথা…..
নারীদের সক্ষম করতে, উদ্যোগী ও উৎসাহিত করতে কি না করছে সরকার? অামরা অনেক খারাপ কিছুর পাশাপাশি ভালো দিকগুলো দেখতে ভুলে যাই। একসময় ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেনি পর্যন্ত উপবৃত্তি পেয়েছি, কোন বেতন লাগে নাই পড়াশোনা করতে। এখনতো ছাত্রছাত্রীরা বিনামূল্যে বই পায়। দিনে দিনে উন্নত হচ্ছে সেবা, এগিয়ে যাচ্ছে দেশ, এগিয়ে যাচ্ছে জাতি।
কিন্তু……
পরনির্ভরশীল নারীজাতি কি সত্যিই এগুচ্ছে? এ প্রশ্নটা শুনে অবাক হলেন তো? তাহলে শুনুন, অপরাজিতা নারীদের কিছু কীর্তি…..
অপরাজিতা সিম তুলতে গেলাম টেলিটক কেয়ারে। আরো অনেক মেয়ে এলো সিম নিতে। তো একটি করে ফর্ম সকলকে দেয়া হলো এবং বলা হলো পূরণ করতে। এবার, তারা এটাও জানে না ফর্মটা কি করে পূরণ করতে হয়! (দেখে একজনকেও অশিক্ষিত মনে হয়নি।)
গ্রাহকের নাম : এখানে যে নিজের নাম লিখতে হয় এটা জানে না। :p
কোথায় সাইন করতে হবে,
ফর্মের কোথায় বাবার নাম, মায়ের নাম লিখতে হবে…
তারা কিছুই জানে না! 🙁
এমনকি ফ্রী সিম নিতে এসেছে, ফর্ম পূরণ করার জন্য একটা কলম ও সাথে আনেনি। :c
এরপর আরও আছে, তা হলো কার্বন কপি। আমরা জানি সাধারণত প্রতিটি ফর্মের ভেতরেই একটা কার্বন কপি থাকে। আমরা ওপরের কপিতে লিখলে নিচেরটাতে এমনি লেখা ওঠে।
তো তারা ওপরেরটা অালাদা করে লিখে কার্বন কপিতে আবার সেসব লিখছিলো! :p
তারচেয়ে মজার কথা হলো, ছেলেরা একটু পরপর উঁকি দিয়ে জিজ্ঞেস করছিল, “ভাই কি কি লাগে?” 🙁
প্রতিনিধি বলছিল, “ভাই আপনাদের জন্য না,মহিলাদের জন্য।” 🙁
তারা মুখ ভার করে চলে যাচ্ছিল। 🙁
একজনতো প্রতিনিধিকে ধমকে উঠলেন, “সবখানেই যদি আপনারা শুধু অপরাজিতা নিয়া বিজি থাকেন তাহলে তো চলবো নাহ! ^:^
(হিংসা…. হিংসা…. আর কিচ্ছু নাহ ;? )
এইবার আসি মাইয়াগো অভিবাবকদের কাছে। আপনারা নিরাপত্তার কারণে আপনাদের মেয়েদের সকালে বিকালে আনা নেওয়া করেন ঠিক আছে, কিন্তু এদেরকে এতটা হাইব্রিড প্রানি না বানালেও তো পারেন। এরা একটা ফর্ম পূরণ করতেও সাতবার সাতজনকে জিজ্ঞাসা করে, তাহলে এদেরকে কি এত পড়াশোনা করালেন? হোম টিউটর রেখে বলবেন, “আমার মেয়ের সব লেখা তুমি লিখে দাও, সব পড়া পড়ে দাও, আমার মেয়ে শুধু বসে বসে দেখবে, ব্যাস।” পারলে টিউটরকে বলতো, “পরীক্ষাটাও বরং তুমিই দিয়ে দাও!” :c
আমাদের দেশের মেয়েরা কেন এত পরনির্ভরশীল বলতে পারেন? সৃষ্টিকর্তা এদেরকে কোনটা কম দিয়েছেন? চোখ,কান, মুখ, মস্তিষ্ক সবইতো দেখি আছে এদের, তাহলে? আসল কথা হলো, আরামে সোনার পালঙ্কে বসে সব রেডিমেইড পেতে পেতে এদের মস্তিষ্কে জং ধরে যায়। তাই নিজে থেকে বুদ্ধি খাটিয়ে কোন কাজ করতে চায় না।
পিতার নাম: “এখানে কি লিখতে হবে? ”
এমন প্রশ্ন কি ডিজিটাল অপরাজিতাদের কাছ থেকে কাম্য?
আরও সমস্যা হলো আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থায়, যেখানে ৮০% ত্বত্তীয় এবং ২০% নামে মাত্র ব্যবহারিক শেখানো হয়। ফলে এসব শিক্ষার্থীদের সুযোগ কোথায় হাতে কলমে কাজ শেখার? এদিকে উন্নত বিশ্বে হাতে কলমে কাজের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, সেখানে এদেশে ঘটছে উল্টোটা।
যাই হোক, অবশেষে বলি, আমাদের অপরাজিতারা পরনির্ভরশীল, পরগাছার জীবন ছেড়ে মননে, মেধায়, প্রজ্ঞায় এবং কর্মে সকল ক্ষেত্রেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠুক। (y)
(বিঃদ্রঃ টেলিটক অপরাজিতা সিম বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে শুধুমাত্র নারীদের জন্য। 🙂 এতে ৮ টাকায় ১ জিবি, ১৩ টাকায় ২ জিবি পাওয়া যাবে, যার মেয়াদ ১ সপ্তাহ। :v
এরকম ডাটা প্যাক নেওয়া যাবে ৩ মাস পর্যন্ত যতখুশি ততবার! :c
ধন্যবাদ সরকারকে এমন উদ্যোগ নেওয়ার জন্য।) :=
১৩টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
ণেট থাকেনা যেখানে সেখানে ফ্রী সিম খাবে মানুষ। শহরেই থাকুক বন্ধি।
তবে অপরাজিতরা জিতে যাক । -{@
নীরা সাদীয়া
কথা বলার জন্যই যথেষ্ট নেটওয়ার্ক নেই, সেখানে এমবি থাকলেই কি হবে? আমিতো ওটা ব্যাহারই করতে পারিনি।ঠিকই বলেছেন।
এগিয়ে যাক অপরাজিতারা, শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
মোঃ মজিবর রহমান
এগিয়ে যাক অপরাজিতারা, শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
(y)
নিতাই বাবু
এই এগিয়ে যাওয়ার পেছনেও অনেককিছু খারাপের লক্ষণ বিদ্যমান।
ভালো লিখেছেন দিদি, ভালো থাকবেন।
নীরা সাদীয়া
ধন্যাবাদ। আপনিও ভালো থাকবেন। শুভকামনা রইল।
শুন্য শুন্যালয়
আমাদের মেডিকেলে এক সহপাঠি কে দেখে আমি খুবই অবাক হতাম, সে সাধারন ইংরেজী শব্দগুলোর বানান পারতো না। কিভাবে মেডিকেলে এলো অবাক হওয়া ছাড়া উপায় আছে? ফরম ফিলাপের যে কথাগুলো বললে, তা ছেলেদের ব্যাপারেও প্রযোজ্য, শিক্ষার অবস্থার এতো অবনতি হয়েছে যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা।
আর মেয়েদের অবস্থা উন্নয়নের জন্য আগেতো তাদের মন উন্নয়ন লাগবে, যারা দিনে দিনে বস্তার মধ্যে ঢুকতে চাচ্ছে, তাদের কিভাবে উন্নয়ন সম্ভব? তা সে বিনা বেতনে পড়াও, আর সিম দাও, কোনটাই কাজে লাগবেনা।
গ্রেট পোস্ট।
নীরা সাদীয়া
সম্ভবত এদেশের শিক্ষা ব্যবস্হা ধংস হতে চলেছে। এটা তারই আলামত। তবে এখনো যদি সঠি “পাঞ্জেরী”র আগমন ঘটে তবু রক্ষা করা যাবে এ দেশ ও জাতিকে।
শুভকামনা।
নীলাঞ্জনা নীলা
আমি শুন্য আপুর মন্তব্যের সাথে একমত।
অনন্য লেখনী।
নীরা সাদীয়া
শুভকামনা জানবেন দিবানিশি।
জিসান শা ইকরাম
যারা এসব ফর্মের সাধারন অংশ গুলো লিখতে পারেনা, তাঁদের সিমই দেয়া উচিৎ না।
এমন পরগাছা দিয়ে দেশের কি হবে? ভবিষ্যত সন্তানদেরই বা কি হবে?
নীরা সাদীয়া
এদেরকে আবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা উচিত। শুভকামনা রইল দাদা।
অপার্থিব
৮ টাকায় ১ জিবি, ১৩ টাকায় ২ জিবিতে পাওয়া ফেসবুকে (বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের কাছেই ইন্টারনেট মানেই ফেসবুক সো অপরাজিতাদের কাছে ব্যতিক্রম কিছু আশা করা যাচ্ছে না) অলস সময় পার করে ব্যবহার করে অপরাজিতাদের পরনির্ভরশীলতার থেকে মুক্তি ঘটবে বলে মনে তো হচ্ছে না। এত সস্তায় ইন্টারনেট দেওয়ার আগে সবাইকে ইন্টারনেটের ব্যবহার শেখানো প্রয়োজন অন্যথায় অলস সময় পার করা ছাড়া ইন্টারনেটের কোন সুফল নারী পুরুষ কারো জীবনেই দেখা দেবে না।
নীরা সাদীয়া
তাও ঠিক। তবে সরকার কিন্তু এ সুযোগটা দিয়েছে ইন্টারনেটে সার্চ করে নিজের জ্ঞান বৃদ্ধি করার জন্য, অজানাকে জানার জন্যে, অদেখাকে দেখার জন্যে। তাই ফেসবুকের বাহিরে জ্ঞানচর্চা কিভাবে করতে হয়, কিভাবে নিজের মেধাকে ক্ষুরধার করতে হয়, তা এই অলস জাতিকে একটা ট্রেনিং এর মাধ্যমে বোঝানো/শেখানো উচিত।
শুভকামনা।