
মধুর স্মৃতি
ছোটবেলার মজার মজার স্মৃতি সবার জীবনেই থাকে। আমারও আছে। তখন স্কুলে দশম শ্রেণির ছাত্রী আমি। একদিন স্কুল গেইটে ঢুকার সময় দেখি সানগ্লাস পরা খুব সুদর্শন এক যুবক বেতন বই হাতে স্কুলের ভিতরে উঁকিঝুঁকি মারছে।যুবকটি অসম্ভব সুদর্শন, আমার মনে ধরলো।স্কুলের ক্লাসে ব্যাগ রেখেই আমার অন্য দুই সহপাঠী দিপু আর রোকসানাকে বললাম ব্যাপারটা।ওরা সুদর্শন যুবকটিকে দেখার জন্য আমার সাথে গেইটের সামনে এগিয়ে আসলো।রোকসানা বলল,আসলেই রে হেব্বি মাল।সুদর্শন যুবক দেখেই কতক্ষণ দৃষ্টি আর্কষণের জন্য সামনে দিয়ে আমরা তিন বান্ধবী মিলে ঘুরাঘুরি করতে লাগলাম।ছেলেটা প্রথমে খেয়াল করেনি।পরে বুঝতে পারে আমাদের কীর্তিকলাপ।যুবকটি মুচকি মুচকি হাসছে দেখেই আরো দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কৃষ্ণচূড়া গাছের ফুল হাতে নিয়ে দাড়ালাম। যুবকটি একটু পরে দেখলাম আমাদের দিকেই এগিয়ে এলো।কাছে আসতে দেখে আমাদের তিনজনেরই হার্টবিট বেড়ে গেলো।বুকের ভিতর ধড়াস ধড়াস শব্দ নিজের কানেই শুনতে পেলাম।আমরা ভাবলাম আমাদের মধ্যে কাউকেই নিশ্চয় ওর ভালো লেগেছে।শুধু বুঝতে পারছিলাম না কাকে প্রপোজ করবে।আমাদের দিকে আরো এগিয়ে এসে বলল,আচ্ছা দশম গ শাখার আনিলাকে চেনো খুকিরা? আমরা সাথে সাথেই বেলুনের মতো চুপসে গেলাম আর রাগ বেড়ে ৪৯ হয়ে গেলো।ভাবলাম ও আচ্ছা আনিলার সাথে টাংকি মারার জন্য আসছো।দাড়াও দেখাচ্ছি মজা।মুখে বললাম, কেনো আনিলাকে কি দরকার? যুবকটি বলল,ওর বেতন দিতে আসছি ওকেই তো লাগবে।আমি এগিয়ে গিয়ে বললাম, আনিলা বাবা-মা ছাড়া বাইরের কারো সাথে কথা বলেনা।যুবকটি এবার মজা করে জবাব দিলো, তাই?
তাহলে আনিলাকে গিয়ে বলো আনিলার বাবা এসেছে বেতন বই নিয়ে দাড়িয়ে আছে, ও যেনো একবার এসে দেখা করে।
নিজেদের কানকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না।বলে কি এই ছোড়া? হুশ আসতেই তিনজনই দৌড়ে পাললাম লজ্জার হাত থেকে বাঁচার জন্য।
সেদিন যা লজ্জা পেয়েছিলাম তা কি আর বলতে।।
১২টি মন্তব্য
ফারজানা তৈয়ূব
পেরেছি অবশেষে। ইয়াহু
নিতাই বাবু
মজার ব্যাপার তো! আমি শুধু ভাবি, ছেলেরাই এরকম দুষ্টুমি করে। এখন আপনার লেখা পড়ে ভাবনাটা উল্টে দিলাম। হাহা হোহো!
ফারজানা তৈয়ূব
আমার জীবনে আরো মজার মজার কান্ড আছে। ভূত সেজে ভয় দেখানো।বাড়িওয়ালাকে শায়েস্তা করবার জন্য পাড়ার সব বিচ্ছুদের সাথে নিয়ে গাছে সব বরই সাফা করা।আস্তে আস্তে সবই লিখবো আর আপনাদেরকে জানাবো।
নিতাই বাবু
আপনিতো সাংঘাতিক দুষ্ট ছিলেন মনেহয়।
রেজওয়ানা কবির
দারুন মজা পেলাম।মনে পড়ে গেল আমারও অনেক স্মৃতি। আহ!!এরকম চরম দুষ্টু আমরাও ছিলাম, এখনো আছি!!!দিপু আমার নিক নেইম। তাহলে আমিও এক রকম মেইট হলাম আপু🥰। শুভকামনা।
ফারজানা তৈয়ূব
ধন্যবাদ আপনাকে, শুভকামনা রইল।
হালিমা আক্তার
ওই স্কুলের মেয়েরা দুষ্টুমিতে নিশ্চয়ই ছেলেদের হার মানাতো। গেইটের কাছে কৃষ্ণেচুড়া এখন মনে হয় আর নেই। লেখা স্কুলের স্মৃতিতে নিয়ে গেল। দিপু মানে কি দিপু কাজল। শুভ রাত্রি।
ফারজানা তৈয়ূব
তুই তো আগে থেকেই কাহিনীটা জানতে?
আলমগীর সরকার লিটন
আসলে বেশী রোমান্টিক ঘটনা এরকমী হয় এই থেকে প্রমান হয় মেয়েরা মনের মানুষ চিনতে ভুল করে আপু
সাধরায় শুধু রাগবাগ দিয়ে ভাল থাকবেন
ফারজানা তৈয়ূব
হাহাহা
মো: মোয়াজ্জেম হোসেন অপু
দারুণ মজা পাইলাম।ঐ সুদর্শন যুবক যদি হুমায়ুন আহমেদ কিংবা অন্যকেউ হতো,তবে হয়তো কৃষ্ণ চুড়া নিয়েই নিতো,আপনার যাপিত জীবনও অন্যরকম হয়তো হতো।হাহাহা
ফারজানা তৈয়ূব
হুমায়ুন আহমেদ স্যার আমার মায়ের ক্লাসমেট ছিলেন।তাছাড়া ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়ার সময় স্যারকে প্রায় দিন শহীদুল্লাহ্ হলে পুকুরপাড়ে পাওয়া যেতো।স্যার তখন রসায়ন ডিপার্টমেন্টে পড়াতেন এবং শহীদুল্লাহ্ হলের প্রভোস্ট ছিলেন।