কথায় বলে, অর্থই অনর্থের মূল! অন্যদিকে আবার অর্থ ছাড়া জীবনই অচল। প্রকৃতিগতভাবেই মানুষ ক্ষমতাবান হতে চায়। আর ক্ষমতাবান হয়ে ওঠার মূল রসদই হচ্ছে টাকা।
সাধারণত পুরুষ বিপথগামী হয় ক্ষমতাবান হলে আর নারী বিপথগামী হয় ক্ষমতাবান হতে। অর্থাৎ ক্ষমতাবাজিই দু’য়ের বিপথগামীর কারণ, যার রসদ হচ্ছে টাকা। সেই সূত্র ধরেই দু’য়ের টার্গেট এসে একবিন্দুতে দাঁড়ায়। চলে টাকা আর ক্ষমতাবাজির নষ্ট খেলা। পিষ্ট হয় সাধারণেরা, যারা নিরীহ বা যারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে বদ্ধপরিকর। আর যারা এর মাঝেই সুখ বুঝে, তারা গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়েই খেলে যায় টাকার খেলা। এজন্যই সমাজ মাঝেমধ্যে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ক্ষমতাবানদের চেহারা দেখতে পায়। ইদানীং দেখা যাচ্ছে এ যাত্রায় নারীদের মেলা!
প্রকৃতিগতভাবে পুরুষ নারীতে দুর্বল। অন্যদিকে নারীর এ ধরনের দুর্বলতা না থাকলেও কখনো কাড়িকাড়ি টাকার লোভ, কখনো সহজপথে ক্ষমতাবান হওয়ার লোভ আবার কখনোবা টিকে থাকার লড়াইয়ে আত্মসমর্পণ করে ফাঁদে পা দেয়। উল্টোদিকে উচ্চাভিলাষী নারীও কিন্তু পুরুষের নারীপ্রীতিকে আশ্রয় করে ফাঁদ পাতছে।
অর্থাৎ অন্যায় চাওয়াকে পাওয়ায় পরিণত করতেই একে অন্যকে ট্র্যাপ করছে। কখনও পুরুষ নারীকে, কখনো নারী পুরুষকে। এতোকাল একতরফা পুরুষই নারীকে ট্র্যাপ করে এসেছে, হালে ক্ষমতাবাজির নেশায় পড়ে সে কর্মে নারীও সমানতালে পা মেলাচ্ছে। মোদ্দাকথা, ক্ষমতাবাজির লোভই এর কারণ।
তবে ইদানীং একটা ব্যাপার লক্ষ্যনীয়, এ পর্যন্ত বিপথগামী যে নারীগুলোর নাম আসছে মিডিয়ায়, তারা প্রায় সকলেই যেসব ঘটনা থেকে ধৃত হচ্ছেন সেসব ঘটনা এককভাবে পরিচালনা কোনোভাবেই সম্ভবপর নয়। বুঝাই যাচ্ছে, সংঘবদ্ধভাবে ঘটিত ঘটনার তারা একেকটি চরিত্র মাত্র। তো, হঠাৎ গজিয়ে ওঠা এসব ক্ষমতাবান নারীদের যারা প্রমোট করে আসছিলেন, তাদের নামটি সামনে আসছে না কেন? তারা কারা??? আর কী-ই বা ঝামেলা ঘটেছে যে কারণে এতোদিন ঠিকঠাক চললেও হঠাৎ করে কেবল এই নারীরাই ফোকাস হয়ে উঠছেন? বনিবনা না হওয়াতেই কী এ অবস্থা? পেছনের হাতটি তবে আড়ালে কেন?
যেকোনো ঘটনা সমূলে উৎপাটন না করলে সাময়িক বিরতি দিয়ে এর শেকড় আবারও অন্যদিকে মাথা তুলে কার্যক্রম চালানো শুরু করে। ফলে কাজের কাজ কিছুই হয়না, মাঝখান থেকে হট্টগোল করে জল ঘোলা করা হয় কেবল। ধরা পড়লেই সমানে সবাই কোরাস গাইতে শুরু করে। অথচ এসব খবর রাখার জন্য যেমন প্রশাসন আছে তেমনি আছে সাংবাদিক সমাজ। কারোরই যেন কোনো দায় নেই।
এখন কথা হলো, মূলোৎপাটন যারা করবেন তারা কী ঠিক আছেন?
আর মূলে না গিয়ে লোভাতুর এই নারীগুলোকে একের পর এক সামনে এনে, আড়ালে থাকা নাটেরগুরুদের আড়ালে রেখে সমাজকে আসলে কী মেসেজ দিতে চান আপনারা?
নারী বা পুরুষ নয়, গুরু ঠাকরুনদের দেখতে চাই।
৫টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
নারী বা পুরুষ নয়, গুরু ঠাকরুনদের দেখতে চাই। সহমত। কিন্তু নাটের গুরু পুরুষ নারী পুরুষ যেকেউ হতে পারে।
কামাল উদ্দিন
বিষয়টা নিয়ে আমিও ভাবছি, কারণ গত কয়েক দিনে বেশ নামী দামী কয়েকজন মহিলা পুলিশের হাতে ধৃত হয়। যাদের বাসা থেকে নানা রকম নেশা দ্রব্য পাওয়া যায় সতয়িই বিষয়টা ভাবার………ভালো থাকবেন আপু
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
সমসাময়িক প্রসঙ্গে বস্তুনিষ্ঠ এবং চমৎকার লেখা — “প্রকৃতিগতভাবে পুরুষ নারীতে দুর্বল। অন্যদিকে নারীর এ ধরনের দুর্বলতা না থাকলেও কখনো কাড়িকাড়ি টাকার লোভ, কখনো সহজপথে ক্ষমতাবান হওয়ার লোভ আবার কখনোবা টিকে থাকার লড়াইয়ে আত্মসমর্পণ করে ফাঁদে পা দেয়। উল্টোদিকে উচ্চাভিলাষী নারীও কিন্তু পুরুষের নারীপ্রীতিকে আশ্রয় করে ফাঁদ পাতছে”। — ধন্যবাদ।
হালিমা আক্তার
অর্থ অনর্থের মুল চাবিকাঠি। নারী বা পুরুষ বলে নয়।এক শ্রেণির মানুষ যে কোনো মূল্যে ক্ষমতাধর হতে চায়। তারা খুব দ্রুত পাহাড়ের শীর্ষে আরোহণ করতে চায়। পরীমনির চেয়ে সুন্দরী রমণী দেশে আছে। ক্ষমতাবানেরা টোপ ফেলে, পরীরা সেই টোপ গ্রহণ করে। শুভ কামনা রইলো।
আরজু মুক্তা
নাটের গুরু পর্দার আড়ালে কেনো? ওদের ধরা হোক।
ভালো একটা নিষয় নিয়ে লিখলেন।
শুভ কামনা