২৭ বছর বয়সে পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে মিঃ সিম জিং মেং পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে সবে চাকুরী পেয়েছেন। মিঃ সিম এর একটু বর্ণনা দিয়ে নেই। ছয় ফিট লম্বা এই চাইনিজ মানুষটা খুব ফর্সা, সুন্দর ও শুঠাম দেহের অধিকারী। চাইনিজ বংশভূত এমন পুরুষ খুব কম ই দেখা যায়। যে কেউ দেখেই প্রেমে পরে যাবে। কেন যে সে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে না গিয়ে ডিফেন্সে এসেছে কে জানে?
তো ঘটনার শুরু চাকুরী পাওয়ার দুই মাস পর থেকে..
মিঃ সিম এর এক চাইনিজ মেয়ে কলিগ তাকে খুব পছন্দ করে উনাকে বেশ কয়েকবার প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে লাভ হয়নি। প্রতিবার একই উত্তর ‘আমি জেনিফার নামের এক ইন্ডিয়ান মেয়েকে ভালবাসি এবং অল্প সময়ের মধ্যেই বিয়ে করবো!’ কিন্তু মেয়েটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না। অনেক ঈর্ষা করতে থাকে কারণ জেনিফার ও সিম দুজনেই দু’প্রান্তের ধর্ম,বর্ণ কালচার সব দিক থেকেই। অন্যদিকে কলিগ লিনেট একই কালচারের। তবে লিনেট হাল ছাড়ে না। ছলে বলে সবসময় সিমের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করে। বিভিন্ন সরকারি ফাংশনে উনার সাথেই যায় কারণ দূর্ভাজ্ঞবসত তারা একই ডিপার্টমেন্টের একই টিমের সদস্য। এভাবেই চলতে থাকে আট-নয় মাস। এরপর একদিন লিনেট প্রায় মাস তিনের জন্য ছুটি নিয়ে নেয়। অন্যদিকে সিম ও তেমন পাত্তা না দিয়ে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পরে।
মিঃ সিমের চাকুরীর বয়স মাত্র এক তখন তার খুব সখ হয় শরীরে ট্যাটু করার এবং সরকারি অনুমতি নিয়ে করেও ফেলে পুরো শরীরে সব ভয়ংকর ভয়ংকর ট্যাটু। সবচেয়ে ভয়ংকর পিঠে প্রায় ২১ ইঞ্চির কালী দেবির ট্যাটু। ট্যাটু করার কয়েকদিনের মধ্যেই লিনেট চাকুরীতে যোগদান করে সেও আগের মতই মেশার চেষ্টা করে সিমের সাথে। এবার সিম একটু কড়া সুরেই জানিয়ে দেয় সামনের সপ্তাহে তাঁঁর ভালবাসার মানুষকে বিয়ে করতে যাচ্ছে, সে যাতে আর বিরক্ত না করে।
কিছুদিন পর সিম বিয়ে করে নেয়। বিয়ের ঠিক চৌদ্দদিন পর মিঃ সিম অনেক অসুস্থ হয়ে পরে হঠাৎ করেই। প্রচন্ড জ্বর, মাথা ও শরীর ব্যাথা। প্রথম ধাপে ডাক্তার কিছু মেডিসিন দেয় এতে অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায় দেখে মেডিকেলে ভর্তি করা হয় কিন্তু নানান চেকয়াপ করার পরেও কোনো রোগ ধরা পরে না। মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই বিশাল দেহের মানুষটা কঙ্কালসাড় হয়ে যায়। অসুস্থতার প্রায় আড়াই সপ্তাহ পর তাকে সিংগাপুরে নেওয়া হয় আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য। সেখানে আরো অবনতি হয়ে যায়। সম্পূর্ণ শরীর নীল হয়ে হয় রক্তবমি ও চুল বমি!! হ্যা পাঠক/পাঠিকা সত্যি ই বমির সাথে প্রচুর লম্বা লম্বা চুল বেরিয়ে আসে। শুতে পারে না কেউ ছুতেও পারে না। ছুলেই প্রচন্ড ব্যাথায় চেঁচিয়ে উঠতেন তিনি। এমন অবস্থায় সকল ডক্টর বলে দেন উনাকে বাঁচানো সম্ভব না, বাড়ি নিয়ে যান বলে রিলিজ করে দেয় সিংগাপুরের হস্পিটাল থেকে।(সিকিউরিটির জন্য হস্পিটালের নাম গোপন রাখতে হলো)
মেডিকেল রিলিজের পর যখন সবাই মিঃ সিমকে নিয়ে আসায় ব্যস্ত সেদিন ই বিকেলে এক ফোনকল পায় উনার স্ত্রী জেনিফার। ফোনের সারমর্ম যত দ্রুত সম্ভব সিমকে বাসায় নিয়ে আসুন, আমি আপনার বাসার বারান্দায় আছি গত তিন দিন যাবত কিন্তু কেউ নেই এখানে। একথা শুনে সবাই অবাক হয় কে এই ব্যক্তি জানা নেই শোনা নেই হুট করে বলে দিলো বাসায় আসুন! যেতেতো হবেই সেদিন রাতেই পুলিশের ইমার্জেন্সি হেলিকপ্টারে উনাকে বাসায় আনা হয়। এসে দেখে এক তান্ত্রিক টাইপ মানুষ বারান্দায় বসা।
কাউকে কথা বলতে না দিয়ে সোজা এম্বুল্যান্সের কাছে গিয়ে দড়িয়ে বলে উনি কালোজাদুর প্রভাবে এমন হয়েছেন তবে এখনো চিকিৎসা সম্ভব তবে কে করেছে তার নাম বলবো না আমি। কিন্তু যে করেছে সে একজন মহিলা এবং আগামী তিন দিনের মধ্যে সে নিজে এসে সব বলবে ও ক্ষমা চাবে। আগামীকাল আমি উনার চিকিৎসা করবো তোরা সব যোগার করে রাখবি এই কথা কিছু জিনিসের নাম বলে চলে গেলো।
পরদিন ভোরে ওই তান্ত্রিক এসেই বললো উনার শরীরে ট্যাটু করা উচিৎ হয়নি। এর পর একটু সময় নিয়ে যোগ্য করা শুরু করে ওই তান্ত্রিক। এর মধ্যে পরিবারের সবাই মিলে বাসার হল রুমে রাখা হয় মিঃ সিম কে এভাবে তিন দিন তিন রাত পার হওয়ার পর উনার কালীর ট্যাটুর ভেতর থেকে কালো ধোয়ার এক অবয়ব বেড়িয়ে আসে সকলের উপস্থিতিতেই। সেই বলে কালো অবয়বটা কিছু বলার চেষ্টা করতেছে কিন্তু বলতে পারছে না বলেই সবাইকে অন্য রুমে যেতে বলাহয় শুধু জেনিফার থাকার অনুমতি পায়। কালো অবয়ব টা আবার মিঃ সিমের ট্যাটুতে ঢুকানো হয় এবং সে বলে ওর মালিক অনেক টর্চার করে যদি মিঃ সিম কে পেইন না দেওয়া হয়। যখন তান্ত্রিক জিজ্ঞাসা করে কিভাবে ঢুকলো মিঃ সিমের শরীরে তখন বলে ওর মালিক সিমের চুল ও নখ সংগ্রহ করে এই কালোজাদু করে এই বলেই কালো অবয়বটা বেরিয়ে আসে এবং তান্ত্রিক বলে এর পর এই প্রেতআত্মা কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। এমন সময় সবাইকে অবাক করে দিয়ে লিনেট পাগলের মত দৌড়ে আসে এবং সবাইকে জানায় কালোজাদু ওই করেছিলো, বিভিন্ন ফাংশনের সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে কিছু একটা খাওয়ানো হয়েছিলো মিঃ সিমকে এতে সাহায্য করেছিলো থাইল্যান্ডের এক কালো জাদুকর! পরে সবার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে বিদায় নেয়।
সব শেষে এই তান্ত্রিক যানায় কালির ট্যাটু রিমুভ করতে হবে তা না হলে যে কোনো সময় আবার যে কোনো কিছুই হতে পারে কারণ ওই থাইল্যান্ডের জাদুকরের এটাই ছিলো শেষ জাদু এর পর সে মারা যায়।
প্রায় আট মাস কষ্টভোগ করার পর মিঃ সিম সুস্থ হয় এবং ট্যাটু রিমুভ করে চাকুরীতে যোগদান করে। তখন সে এও জানতে পারে লিনেট আত্মহত্যা করেছে উনি যোগদানের দুইদিন আগে।
🌹পরিশেষেঃ এটি একটি সত্য ঘটনা যা ঘটে যায় আমার ফুফা শশুরের সাথে। উনি এখনো আন্ডার কাভারে চাকুরীরত আছেন এবং সম্ভবত ২০২০ সালে অবসরে যাবেন। যদিও ছবিটা উনার না কিন্তু উনার কালির ট্যাটু অনেকটাই এমন ছিলো আর জিহ্বা টা ছিলো লাল। আমি চেয়েছিলাম অরজিনাল ছবিটা দিতে কিন্তু ফুফু শাশুরী বললো কাহিনীটা শেয়ার করো সমস্যা নেই তবে ছবি দিও না তাই অনলাইন থেকে ছবিটা দেওয়া।
✌নোটঃ ট্যাটু আমার কাছেও খুব পছন্দের এবং মাঝে মাঝে করতেও চাই কিন্তু ভয় হয় তাই এখনো করিনাই! আমি বলবো না ট্যাটু করা ভাল! আমি এও বলবোনা আপনারা ট্যাটু করুন তবে এটা বলবো যাই করুন দেখেশুনে বুঝে তারপর করুন। করে ভাববেন না, পস্তাবেন..
সমাপ্ত
২০টি মন্তব্য
ইঞ্জা
ওরে বাবা ভয় পাইছি। 😮
রেজওয়ান
ব্ল্যাক ম্যাজিক খুব খারাপ ও ভয়ংকর! আমি ওই আংকেলের ইয়ং বয়সের ট্যাটুর ছবি দেখেই অনেক ভয় পেয়েছিলাম😰
ইঞ্জা
😮
জিসান শা ইকরাম
সত্যি ঘটনা এটি?
কালো যাদু তাহলে থাইল্যান্ড, সিংগাপুর, চায়নায়ও আছে?!
আমার তো ধারনা ছিল এসব কেবল এই ভারতীয় উপমহাদেশেই চালু আছে।
তোমার লেখার বর্ননা সব সময়ই ভালো,
আরো লেখো সময় করে ছোট ভাই।
প্রবাসে ভাল থেকো।
শুভ কামনা।
রেজওয়ান
জি ভাইজান ঘটনা সত্যি ফুফা শশুরের সাথে ঘটা এবং উনি নিজেই বলেছেন! উনার শরীরের ট্যাটুগুলোও দেখেছি ছবিতে বেশ ভয়ংকর!
থাইল্যান্ড আর ইন্দোনেশিয়া তো জাদুটোনার আতুরঘর!!
মালয়েশিয়াতে ভুত,প্রেত অনেক ঘটনা অপ্রচলিত সময় করে লিখবো ভাই দোয়া করবেন।
🍷আপনিও ভাল ও সুন্দর থাকবেন সব সময়♥
মোঃ মজিবর রহমান
কি বলেন রেজয়ান ভাই, এটা সত্যি!!! খুব খু বি ভয়ের পড়তেই ভয় লাগছে। বাস্তব আরো ভয়ংকর। ট্যাটু শরীরে করা অনুচিত। সৃষ্টিকর্তা সুন্দর একটি দেহ দিয়েছেব তা রঙ বদলালেও অতসুন্দর হবেনা। যাক ভাল লাগলো।
রেজওয়ান
জি ভাই যার সাথে ঘটেছে উনি ই বলেছেন😰সত্যিই ভয়ংকর ব্যাপার এটা😖
মোঃ মজিবর রহমান
-{@
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ট্যাটু চাইনিজ,থাইল্যান্ডি,খুবই প্রিয়।ওরা এ ট্যাটু হাতে পায়ে দেহে প্রায় করে থাকে।দেখতে সুন্দর হলেও ভয়ংকর।সিঙ্গাপুরে বহু দেখেছি।কালো যাদুর নামটা খুব পরিচিত।লেখাটা দারুন হয়েছে। -{@
রেজওয়ান
হ্যা ভাই এই সকল দেশগুলোতে ট্যাটুর অনেক ব্যবহার। অনেক ধন্যবাদ সময় করে পড়ার জন্য😍
মায়াবতী
এমন সত্য ঘটনা এই প্রথম পড়লাম, খুব ই অবাক হইছি ঘটনা টা পড়ে। কত অদ্ভুত ঘটনাই না ঘটতে থাকে পৃথিবীতে! তোমার লেখা এক নিশ্বাসে পড়ে ফেলতে পারি রেজোয়ান, কেমন যেনো একটা ঘোর লাগা থাকে লেখায় । খুব ভালো লেখো তুমি, মাশাল্লাহ। ভালো থাকো ভাই, শুভ কামনা।
রেজওয়ান
অদ্ভুত এই দুনিয়ায় কতকিছুই হয়!
আপি আপনার মন্তব্যগুলো অনেক মোটিভেট করে😍এত সুন্দর করে কথা বলেন♥ভালবাসা রইলো আপি! দোয়া করবেন আমার জন্য -{@
সাবিনা ইয়াসমিন
ট্যাটু করাটা ইদানিং ফ্যাশনে পরিনত হলেও ট্যাটুর ইতিহাস কিনতু ভিন্ন কথা বলে।প্রাচীন যুগে বা নিকট অতীতেও দেহে ট্যাটু করার আলাদা আলাদা গল্প আছে।বিভিন্ন ধর্মে ও গোত্রে ট্যাটু করার জন্যে অনেক রীতি নীতি পালন করতে হয়।আমাদের ইসলাম ধর্মে ট্যাটু করাকে কঠিন ভাবে নিষেধ করা হয়েছে।
আপনার লেখার ধরন বরাবরই ব্যাতিক্রম।অনেক ভালো লাগে পড়তে।তবে আজকের লেখাটি কিছুটা ছন্দ হারিয়েছে।কয়েকটি জায়গায় বানান ভুল হয়েছে বলে মনে হলো।একটু দেখে নিলে ভালো হয়।
অনেক ভালো থাকুন।শুভ কামনা রইলো । -{@
রেজওয়ান
জি আপু ট্যাটুর ভিন্ন ভিন্ন ইতিহাস ও ব্যবহার আছে।👌অনেক জাতিতে তাঁদের বয়স ও পজিশনের ভিন্নতায় ট্যাটু করা হয়!✌
অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য!😍বানানের দিকে খেয়াল রেখে ধিরে লিখা উচিৎ ছিলো, আমি দুঃখিত ধিরে না লিখার জন্য!🌹এর পর থেকে আরো স্থির হয় লিখার চেষ্টা করবো😎
সাবিনা ইয়াসমিন
-{@ -{@
তৌহিদ
ব্লাকমেজিক সত্যিই আছে। আমার কাছেই তার প্রমান আছে। এটা যারা করে তারা ভয়ংকর মানসিকতার। সবার উপরে যদিও কাজ করেনা এটি। সত্য ঘটনাটি পড়ে ভালো লাগলো ভাই। আমি ট্যাটু করার বিপক্ষে।
রেজওয়ান
আসলে যে কালোজাদুর ক্ষপ্পরে পরে সেই বুঝে এর ঝাল! যদিও আমি বড় হওয়ার পর এখনো ফেইস করি নাই তবে অনেক ঘটনা শুনেছি! লেখার ইচ্ছা আছে! দোয়া করবেন ভাই, ভাল থাকবেন সব সময়😍
নীলাঞ্জনা নীলা
কী ভয়ঙ্কর! আমি জানি ব্ল্যাক ম্যাজিক আছে। এসব নিয়ে প্রচুর গল্প শুনেছি। আপনার ফুফা শ্বশুরের ঘটনা শুনে আতঙ্কিত হোলাম। কী ভয়ঙ্কর!
ট্যাটু করা আমি মোটেও পছন্দ করিনা। চা’ বাগানে যখন ছিলাম, বাগানের মানুষদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ট্যাটু থাকতো দেখতাম। ট্যাটুকে ওরা বলে “দাগা/ধাগা।”
আপনার লেখা বৈচিত্র্যময়। আর তাই ভালো লাগে পড়তে। আরোও লিখুন।
রেজওয়ান
অনেক ধন্যবাদ আপি কষ্টকরে সময় নিয়ে পড়ার জন্য! নিয়মিত লিখার চেষ্টা করবো✌ভাল থাকবেন🍷
নীলাঞ্জনা নীলা
কষ্ট হয়নি মোটেও। পড়তে আমার ভালো লাগে।