
অন্তরা আয়শার একমাত্র ছোট বোন। আয়শার মা- বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে অন্তরা আয়শার সাথেই এ বাড়িতেই থাকেন। সামনে সপ্তাহে অন্তরার আকদ। ছোট বোনের বিয়ে নিয়ে আয়শার পরিকল্পনার কোন শেষ নেই। আয়শা নওশাদের বিয়েতে কোন আচার – অনুষ্ঠান হয়নি বলে আয়শা নওশাদের প্রবল ইচ্ছে তাদের একমাত্র ছোট বোনের বিয়েটা খুব ঘটা করেই হবে। অন্তরা সম্পর্কে নওশাদ সাহেবের শালিকা হলেও নওশাদ সাহেব আর আয়শার যখন বিয়ে হয় তখন অন্তরা বয়সে খুব ছোট ছিলেন। সেই থেকেই নওশাদ সাহেব অন্তরাকে তার নিজের ছোট বোন হিসেবেই জানেন। অন্তরাও ভাইয়া বলতেই অজ্ঞান। কিন্তু গত কয়েকদিন হল নওশাদ সাহেব আর সেই আগের মানুষটি নেই। অনেক বদলে গেছেন। রাত করে বাড়ি ফিরেন। মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেছে। খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া কথা বলেন না কারো সাথে। ইদানিং রাত জেগে প্রচুর ধুমপানও করেন। গত কয়েকদিনে নওশাদ সাহেবের দুধে আলতা গায়ের রঙ একেবারে পুড়ে কালচে হয়ে গেছে। চোখগুলো ভিতরে ডেবে চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে। নওশাদ সাহেব কিছু একটা নিয়ে চিন্তিত। অন্তরার বিয়ে নিয়ে আয়শাও খুব পেরেশানিতে আছেন বলে জোর দিয়ে নওশাদ সাহেবকে কিছু জিজ্ঞাসাও করছেন না তিনি। আজ একটু বেশিই ক্লান্ত আয়শা। দুপুরে খাবার পর বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করছেন আয়শা। গভীর একটা ঘুম দরকার আয়শার এখন। কিন্তু দুচোখে তার ঘুমের লেশটুকু পর্যন্ত নেই। অথচ, আয়শার মাথাটা ব্যাথায় টনটন করছে কয়েকদিন ঠিকমত ঘুম না হওয়ায়। আয়শা হঠাৎ তার একটা হাত দিয়ে তার পাশে শুয়ে থাকা নওশাদ সাহেবকে জড়িয়ে ধরতে ধরতে বললেন , এই আমার ঘুম আসছে না কেন? খুব খারাপ লাগছে। নওশাদ সাহেব আয়শার হাতটা সরাতে সরাতে বললেন , সরো। ভাল লাগছে না। বিরক্ত করো না। চোখ বন্ধ করে চুপচাপ শুয়ে থাকো এমনিই ঘুম চলে আসবে।আয়শা নওশাদ সাহেবের ব্যবহারে প্রচন্ডরকম একটা ধাক্কা খেলেন। চোখ বেয়ে সাথে সাথে তার পানি পড়তে লাগল। আয়শা নওশাদ দুজনেই কিছুক্ষণ নিশ্চুপ হয়ে রইলেন। আয়শা অনেকক্ষণ কাঁদলেন। তারপর নওশাদ সাহেবকে একে একে প্রশ্ন করতে শুরু করলেন। তোমার কি হয়েছে ইদানিং? রাত করে বাড়ি ফিরো কেন? কই থাকো তুমি? এতো এতো সিগারেট টানো কেন? তুমি এতো কি চিন্তা কর? আগে তো কোনদিন তুমি আমার সাথে এমন ব্যবহার করো নি? কোন প্রেমিকা আবার আসছে তোমার জীবনে যে আমার স্পর্শে তোমার বিরক্ত লাগছে আজ? নওশাদ সাহেব আয়শার প্রশ্ন শুনে ঘাবড়ে গেলেন। গত একুশ বছরে আয়শা কোনদিন তার সাথে চোখ রাঙিয়ে কর্কশ কন্ঠে এইভাবে কথা বলেননি। এই প্রথম আয়শা তার সাথে এই ব্যবহার করছেন। আয়শার ভয়ে নওশাদ সাহেবের গলা একদম শুকিয়ে গেলো।
৮টি মন্তব্য
সুরাইয়া পারভিন
গতকাল পড়েছি।
চমৎকার গল্প
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
মুক্তা মৃণালিনী
ধন্যবাদ প্রিয় আপু।
জিসান শা ইকরাম
নওশাদ সাহেবের গলা শুকিয়ে গেছে, এর মানে ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।
ঝরঝরে বর্ণনা,
ধারাবাহিক গল্প একটু দ্রুত দিতে হয় প্রিয় ব্লগার, নইলে আগের পর্ব টা ধরতে একটু সমস্যা হয়।
শুভ কামনা।
মুক্তা মৃণালিনী
আচ্ছা দাদা।
সঞ্জয় মালাকার
চমৎকার গল্প, পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
মুক্তা মৃণালিনী
ধন্যবাদ দাদা।
এস.জেড বাবু
দুজনেই অন্তরা কে ভিষন ভালবাসেন।
কিন্তু গত কয়েকদিন হল নওশাদ সাহেব আর সেই আগের মানুষটি নেই। অনেক বদলে গেছেন। রাত করে বাড়ি ফিরেন। মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেছে। খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া কথা বলেন না কারো সাথে। ইদানিং রাত জেগে প্রচুর ধুমপানও করেন। গত কয়েকদিনে নওশাদ সাহেবের দুধে আলতা গায়ের রঙ একেবারে পুড়ে কালচে হয়ে গেছে।
হয়ত সন্তানের মতো মানুষ করেছেন বলেই তিনি অনেকটা কাতর।
সুন্দর এগিয়েছে পর্ব-
মনির হোসেন মমি
পড়ছি আপু। জীবন এমনিই কখনো রোদ কখনো বা বৃষ্টির খেলা। পরের পর্বের অপেক্ষায়।