নওশাদ সাহেব পেশায় একজন পাবলিক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক । আয়শা সেই একই ইউনিভার্সিটির ইংরেজি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন । আয়শাদের প্রথম সেমিস্টারে অবশ্য নওশাদ সাহেব কোন ক্লাস পান নি । তিনি ক্লাস পেলেন তাদের তৃতীয় সেমিস্টার থেকে । তবে আয়শার নওশাদ সাহেবের সাথে ইউনিভার্সিটির ওরিয়েন্টেশন এর দিন সামান্য আলাপ পরিচয় হয়েছিল । সুদর্শন এই নওশাদ স্যার সদা হাস্যোজ্বল স্বভাবের ছিলেন বলে এই ইউনিভার্সিটির ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের প্রতিটা ছাত্র-ছাত্রীর কাছেই তিনি ছিলেন দেবতুল্য । কিন্ত একমাত্র আয়শাই যে কিনা কখনো অন্যান্য ছাত্র- ছাত্রীদের মতন এই নওশাদ স্যারকে দেবতুল্য ভাবা তো বহু দূরের কথা তাকে কখনো টিচার হিসাবে কাউন্টও করতেন না । যতটা সম্ভব আয়শা তাকে সযত্নে ইগনর করতেন । নওশাদ সাহেব ভাল উপস্থাপনা করতে পারতেন । সেই সাথে ভাল কবিতা আবৃত্তি ও ভাল গান করতেন । লেখালেখিতে তার হাত ছিল এক্কেবারে পরিপক্ক লেখকদের মতনই । নওশাদ সাহেব বিচিত্রমুখী এত প্রতিভার অধিকারী বলেই আয়শা তাকে প্রচণ্ডরকম হিংসা করতেন । তৃতীয় সেমিস্টারে যখন নওশাদ সাহেব আয়শাদের ক্লাস নেয়া শুরু করলেন তখন অস্থির স্বভাবের এই আয়শা রীতিমত অস্বস্তি ফিল করতেন তার ক্লাস করতে । নওশাদ সাহেবের সুস্পষ্ট বাচনভঙ্গি , পাঠ বোঝানোর দক্ষতা , আর তার অসাধারন যাদুকরি কন্ঠস্বরে ধীরে ধীরে বিমোহিত হয়ে উঠেছিলেন আয়শা । হঠাৎ একদিন নওশাদ সাহেব ক্লাসে আসলেন না । খোঁজ নিয়ে জানা গেল তার ১০২° জ্বর আসছে । সেদিন মনে প্রথম আঘাত পেলেন আয়শা । মনে হল তার কলিজার ভেতরটাতে কেউ একজন বসে বসে ধারাল নখ দিয়ে তার কলিজাটাকে টেনে ছিড়ে রক্তাক্ত করছে । তার বুকের ভেতরে একটা নতুন কষ্টের সন্ধান পেলেন আয়শা । এই কষ্টের কোন নাম তার জানা নেই। এ এক অদ্ভুত অপরিচিত কষ্ট । অপরিচিত বেদনা । আয়শা কোনরকম সেদিন দাঁতে দাঁত চেপে ক্লাসটা শেষ করলেন । আয়শা যখন ইউনিভার্সিটির সিঁড়ি বেয়ে নীচে নামছিলেন ঠিক তখন সে স্পষ্ট অনুভব করলেন নওশাদ স্যারের গায়ের ঘ্রাণ । বাতাসে যেন স্যারের গায়ের ঘ্রাণ এদিক ওদিক ভেসে বেড়াচ্ছে । যে ঘ্রাণ সে আগে কোনদিন অনুভব করেন নি । মুহুর্তেই আয়শার টগবগে রক্ত গরম শরীরটা হঠাৎ কাঁপুনি দিয়ে ঝাড়া মেরে উঠল । আয়শা খুব তড়িঘড়ি করে বাড়ি গিয়ে নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে হাওমাও করে বিলাপ করা শুরু করে দিলেন । সারাদিন মুখে কিছু দিলেন না । নিজের রুম থেকে একটিবারের জন্যে বেরও হলেন না সেদিন আর ।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া ” মায়াবতীদের হিংসুটে হতে দেখলে ভালোই লাগে।” কারণ মায়াবতিদের হিংসাই প্রেমে রুপান্তর হয়। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া গল্প পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
বিরুপ মন থেকে হঠাৎ ভালো লেগে যাওয়া নিজের কাছেই বেশ অসস্থিকর হয়। কাউকে বলাতো দূরের কথা, নিজের ভেতরেই ঝড় বইতে থাকে। কখন, কেন, কিসের জন্যে এই ভালোলাগা,, ভাবনার টানাপোড়নের অনুভূতিটা আয়শার কাছে ক্যামন লাগছে বুঝতে পারছি।
১০টি মন্তব্য
সুরাইয়া পারভিন
হিংসা থেকে ভালোবাসার সূচনা,,, দারুণ ব্যাপার
চমৎকার লিখেছেন 👏 👏
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
মুক্তা মৃণালিনী
অনেক ধন্যবাদ প্রিয় আপু।
এস.জেড বাবু
মায়াবতীদের হিংসুটে হতে দেখলে ভালোই লাগে।
মায়াভরা হিংসে।
সুন্দর এগিয়ে যাচ্ছে গল্প
মুক্তা মৃণালিনী
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া ” মায়াবতীদের হিংসুটে হতে দেখলে ভালোই লাগে।” কারণ মায়াবতিদের হিংসাই প্রেমে রুপান্তর হয়। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া গল্প পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
সাবিনা ইয়াসমিন
বিরুপ মন থেকে হঠাৎ ভালো লেগে যাওয়া নিজের কাছেই বেশ অসস্থিকর হয়। কাউকে বলাতো দূরের কথা, নিজের ভেতরেই ঝড় বইতে থাকে। কখন, কেন, কিসের জন্যে এই ভালোলাগা,, ভাবনার টানাপোড়নের অনুভূতিটা আয়শার কাছে ক্যামন লাগছে বুঝতে পারছি।
চলুক, পড়বো আশা রাখছি।
শুভ কামনা, ভালোবাসা ❤❤
মুক্তা মৃণালিনী
অশেষ ধন্যবাদ আপু ❤
জিসান শা ইকরাম
অস্বস্তি থেকে ভালোবাসার জন্ম,
টান অতি তীব্র হলে পছন্দের মানুষের শরীরের ঘ্রাণ পাওয়া যায় আসলেই।
গল্প ভালো হচ্ছে।
শুভ কামনা।
মুক্তা মৃণালিনী
অনেক অনেক ধন্যবাদ তোমাকে প্রিয় দাদা।
ছাইরাছ হেলাল
খুব-ই এক পাক্ষিক প্রেমের গল্প, এটি হতেই পারে।
মুক্তা মৃণালিনী
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। গল্পের বাকী পর্বগুলো নিশ্চয়ই পড়বেন আশা করি।