
আমি তোমার জন্য এসেছি (পর্ব-পঁচিশ)
-হুম, বুঝছি দোস্ত ভাগ্যে করে তোর মতো একটা বন্ধু পেয়েছিলাম রে..
তুই মানুষ না ফেরেস্তা! আল্লাহ্ দেওয়া আমার জন্য বন্ধু নামের ভাই, জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার।
দেখতে দেখতে প্রিয়া নবম শ্রেণিতে ভালো রেজাল্ট করে দশম শ্রেণিতে উঠে। স্কুলে প্রিয়ার খুব সুনাম এবারের বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগীতায় ছবি আঁকায় সে প্রথম স্থান, চেয়ার খেলায় প্রথম স্থান, মেধা তালিকায় প্রথম স্থান মোট পাঁচটি পুরষ্কারের মালিক প্রিয়া।
এটা আজাদ,মিরার জন্য গর্বের বিষয়, মেয়েকে ওরা পড়াশোনার পাশাপশি সব বিষয়ে পারদর্শি হতে শিখিয়েছে।
-আরাফ রাতটা যেন আজ আরো বড় লাগছে চোখে একদম ঘুম আসছে না। অনেক চেষ্টা করেই দু’চোখের পাতা এক করতে পারল না।
এখানে থাকলে প্রিয়াকে ভুলতে পারব না, আমি আবার জাপানে ফিরে যাব। ওখানে গিয়ে রিহানের সাথে ব্যবসাটা আবার জয়েন করবো। কথা গুলো সকালেই বাবা মাকে সিদ্ধান্তটা জানাতে হবে ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ল।
রাতে রাহাত অনেকটা ক্লান্ত ছিলো তাই আমেনা কোন প্রশ্ন করে নাই। কত বছর নতুন কাপড় পরে নাই! অন্যের বাড়িতে কাজ করে পুরনো কাপড় পরেই জিবনের অর্ধেকটা সময় কেটেছে। সংসারের অভাব অনটনে কতদিন ভালো কোন খাবার চোখে দেখে নাই। রাহাতের কোন কাজের সন্ধান নেই, তাহলে! এত টাকা রাহাত পেল কোথায়? আমেনা যেন আর ভাবতেই পারছিলো না, রাহাত কি তবে অসৎ কোন পথে পা বাড়াল!! মায়ের মন মানছে না, নানা প্রশ্ন তাকে তাড়িয়ে বেড়াছে।
আজাদ খবরের কাগজটায় একবার চোখ বুলিয়ে নিল, দেশের যা অবস্থা পত্রিকা খোলতেই হত্যা, ধর্ষণ, মারামারি, চিনতাই, দেশ যে কোনদিকে যাচ্ছে ভেবেই না। মেয়েটা বড় হয়েছে ওকে নিয়েই আমার যত চিন্তা চারপাশের পরিবেশ ভালো না।
রাহাতের ফোনটা বেজেই চললো আমেনা রিসিভ করলো হ্যালো বলতেই আরাফ কন্ঠ শুনেই বুঝল ওই রাহাতের মা আন্টি কেমন আছেন.?
আমি আরাফ হ্যাঁ বাবা ভালো আছি।
রাহাত কোথায় একটু বাইরে গেছে।
ওকে বাড়ি ফিরলে বলবেন বিকাল ৪ টা আমার অফিসে দেখা করতে।
আচ্ছা বাবা।
রাহাত ঘরে ফিরতেই আমেনা জানতে চাইল সে এত টাকা কোথায় পেল, রাহাত হেসে আরাফের সাথের সব কথা খুলে বললো মা প্রাণ ভরে দোয়া করলেন।
আরাফ সকালেই বাবা, মাকে জানাল এ মাসেই জরুরী একটা কাজে জাপান যেতে হবে। জাপানে ব্যবসা বন্ধু রিহান দেখা শোনা করে ওখানে আরাফের ব্যবসা শেয়ারে সেখানে কাগজপত্রে কিছু সাইন লাগবে। তাই তাকেই যেতেই হবে কাজ শেষ হলেই মাস খানেক পর দেশে ফিরবে।
কারন এই মিথ্যাটুকু না বললে বাবা,মা জাপান যেতে দিবে না।
আরমান,আরাফাত সবাই মতামত দিল দেশে ফিরলেই বিয়ে করাবে। ওরা মেয়ে দেখে রাখবে আরাফ সবার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে রাজি হয়।
আরমান বলে পরিবারের শেষ সন্তানের বিয়ে শহরের বড় বড় ব্যবসায়ী শিল্পপতি সবাইকে দাওয়াত দিবে
মনোয়ারা বলে আমার বাবার বাড়ির আত্নীয়স্বজন সবাই আসবে।
আকরাম সাহেব বলে আমার গ্রামের কৃষক,দিনমজুর সবাইকে দাওয়াত দিতে হবে। আরমান হেসে বলে আরাফের বিয়ের দাওয়াত সবাই পাবে আগে আরাফ জাপানের কাজটা সফল ভাবে শেষ করে আসুক তারপর সব হবে।
আরাফ কলেজ শেষ করে তার অফিসে যায় ব্যবসায় কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনা করে,রাহাত সব কিছু বুঝিয়ে দেয়। সকল কর্মকর্তা,কর্মচারী আরাফের বন্ধু রাহাতকে পেয়ে খুশি হয়। রাহাতকে সবাই আন্তরিকতার সাথে গ্রহন করে এটা দেখে সবার প্রতি আরাফ সন্তুষ্ট হয়। আলোচনা শেষ অফিস থেকে বের হয়ে আরাফ বাড়ি ফেরে না কিছু সময়ের জন্য পার্কে গিয়ে বসে…!
জীবনের সাথে সময়ও পাল্লা দিয়ে চলছে সময়কে বেঁধে রাখা যায় না, আস্তে আস্তে প্রিয়াও বড় হয়েগেছে, আরাফ নিজেকে নিয়ে ব্যস্ততা। মিরা বসে আছে হাতে কোন কাজ নেই, প্রিয়ার এস.সি.সি পরীক্ষা শেষ পাশ করে নতুন ক্লাসে পড়বে। তাহলে পুরনো খাতা,বই, গুলো আর প্রয়োজন নেই,তিনি বুকসেল্ফ এর দিকে এগিয়ে গেলেন ফ্রি সময়টা কাজে লাগাই বলে বুকসেল্ফ থেকে পুরনো ম্যাগাজিন, পেপার,আজাদের অফিসিয়াল কিছু বই। অব্যবহৃত কাগজপত্র, প্রিয়ার রুম পড়ার টেবিল পরিষ্কার করে সব একসাথে করে রেখেদিলেন।
কাগজ বিক্রেতার কাছে বিক্রি করে দিবেন, তাতে কিছু টাকাও আসবে ঘরটাও পরিষ্কার দেখাবে।
আজাদ তখন দুপুরে লাঞ্চ খেতে বাসায় আসে, মিরাকে দেখে সে হাসতে হাসতে ক্লান্ত দাদুমনি হাসির কারন জানতে চান..?
দেখ মা মিরা ঝাড়ু হাতে, কোমরে কাপড় পেঁচিয়ে, মাক্স যেভাবে রুম ঝাঁড় দিচ্ছে তাতে করে একদম পাশের বাড়ির জমিলার মায়ের মতো দেখা যায় যাচ্ছে।
মিরা রাগি মুখ নিয়ে আজাদের দিকে তাকায় কি আমি প্রিয়ার মা থেকে জমিলার মা হয়ে গেলাম..! একটা কাজের মেয়ে রাখ না, তারপরও এত বড় কথা মা মা! আপনি শুনছেন শ্বাশুড়ী মা আবার ছেলে বউয়ের খুনসুটি গুলো খুব উপভোগ করেন এদের ভালোবাসার কমতি নেই।
শ্বাশুড়ী মা আজাদকে চুপ করতে বলে সকাল থেকেই মিরা এগুলো পরিষ্কার করছে মায়ের কথায় আজাদ হাতে খবরের কাগজ পড়তে পড়তে বলে কাজের বেটি মিরা বেগম আজকে খবার পাব..?
মিরা মুখে বেঞ্চি কাটে হাত মুখ ধুয়ে আস আমি টেবিলে খাবার দিচ্ছি বলেই মিরা হাতের কাজ শেষ করে পুরনো বই গুলো দড়ি দিয়ে বেঁধে কাটের নিচে রেখে দেয়।
…..চলবে।
১৫টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
E
সুরাইয়া নার্গিস
অভিনন্দন ভাইয়া।
প্রথম কমেন্টসকরী হিসাবে।
ফয়জুল মহী
অনন্য অপূর্ব শব্দ বুনন । লেখা পড়ে বিমোহিত I
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও ভালোবাসা রইল ভাইয়া।
আপনার সুন্দর মতামতে অনুপ্রাণিত হলাম, সব সময় এভাবে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকবেন।
রমজান মাস আল্লাহর ইবাদতে পার করুন, এই কামনা রইল।
সুরাইয়া পারভীন
যাক রাহাতের একটা ব্যবস্থা হলো।
তাহলে ভালোবেসে ঘর ছাড়তেই হলো আরাফকে।
প্রিয়া কি কখনও বুঝবে আরাফের ভালোবাসা?
দেখা যাক কি হয়
পরের পর্বের অপেক্ষায় শুভকামনা রইলো
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও ভালো রইল আপু।
আরাফ অন্যকে সাহায্য করে যার প্রমান বন্ধু রাহাত, ভালোবাসা মানুষকে সব সময় সুখ দেয় না কষ্টের ভাগটা বেশি থাকে।
আরাফের বিশ্বাস প্রিয়া তার ভালোবাসা বুঝবে, আমরাও তাই চাই।
আপনার সুন্দর মতামতে অনুপ্রাণিত হলাম, সব সময় এভাবে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকবেন।
রমজান মাস আল্লাহর ইবাদতে পার করুন, এই কামনা রইল।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আরাফ পালিয়ে গেল। প্রিয়ার ভাবনাগুলো একটু বিশদ আকারে জানতে চাই। ধন্যবাদ আপু ভালো থাকবেন
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও ভালো রইল আপু।
ভালোবাসা মানুষকে সব সময় সুখ দেয় না কষ্টের ভাগটা বেশি থাকে।
আরাফের বিশ্বাস প্রিয়া তার ভালোবাসা বুঝবে, আমরাও তাই চাই। প্রিয়া খুব তাড়াতাড়ি আরাফের ভালোবাসা বুঝবে বাকিটা পরের পর্বে জানা যাবে।
আপনার সুন্দর মতামতে অনুপ্রাণিত হলাম, সব সময় এভাবে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকবেন।
রমজান মাস আল্লাহর ইবাদতে পার করুন, এই কামনা রইল।
সুরাইয়া নার্গিস
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
শুভ কামনা রইল দিদি ভাই।
সুপায়ন বড়ুয়া
২ টা ভাল খবর জেনে ভাল লাগলো।
প্রিয়ার ভাল রেজাল্ট এবং অল রাউন্ড পারফরমেন্স।
রাহাতকে সবাই অফিসে মেনে নেয়া।
শুভ কামনা আপু।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও ভালো রইল দাদা।
আরাফ অন্যকে সাহায্য করে যার প্রমান বন্ধু রাহাত।
আরাফের বিশ্বাস প্রিয়া তার ভালোবাসা বুঝবে, খুব তাড়াতাড়ি সেটা বাস্তব হবে।
আপনার সুন্দর মতামতে অনুপ্রাণিত হলাম, সব সময় এভাবে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকবেন।
ভালো থাকুন দাদা।
শুভ কামনা রইল
জিসান শা ইকরাম
আরাফ চলেই যাবে জাপান!
রাহাত ব্যবসা দেখার কাজে লেগে গেলো।
ভালো মেয়ে প্রিয়ার উজ্জল ভবিষ্যত কামনা করি।
প্রিয়ার বাবা মা এর ভালোবাসাটা সুন্দর ভাবেই ফুটিয়েছেন।
পরের পর্বের অপেক্ষায়,
শুভ কামনা।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও ভালোবাসা রইল ভাইজান। আরাফ জাপান চলে গেছে ঠিকই তবে তার বিশ্বাস! প্রিয়া তার ভালোবাসা বুঝবে। সেই বিশ্বাসে প্রিয়া খুব তাড়াতাড়ি আরাফের ভালোবাসা বুঝবে বাকিটা পরের পর্বে জানা যাবে।
আপনার সুন্দর মতামতে অনুপ্রাণিত হলাম, সব সময় এভাবে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকবেন।
রমজান মাস আল্লাহর ইবাদতে পার করুন, এই কামনা রইল।
নিতাই বাবু
সুন্দর ভাঙা ভাঙা প্যারায় লেখা খুব ভালো লাগলো! পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। সাথে শুভকামনা থাকলো, শ্রদ্ধেয় দিদি।
সুরাইয়া নার্গিস
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইল দাদা।
আপনার সুন্দর মতামতে অনুপ্রাণিত হলাম, সব সময় এভাবে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকবেন।
ভালো থাকুন, সাবধানে থাকুন।
শুভ কামনা রইল আপনার ও পরিারের জন্য।