
“আমি তোমার জন্য এসেছি” (পর্ব-দুই)
প্রিয়ার হঠাৎ মনটা উদাস হয়ে গেল আচ্ছা ওই গুন্ডা ছেলেটা কি চলে গেছে নাকি এখনো আমার পাগলামী গুলো ভেবে হাসছে! কথা গুলো মনে আসতেই প্রিয়া চোখে মুখে হাসি ফুটে উঠল। দূর ওই গুন্ডা তো কত শহরের কত সুন্দররী মেয়ে দেখে, আমাকে নিয়ে ভাবার তার সময় কোথায়। তবে গুন্ডাটা দেখতে খুব সুন্দর।
প্রিয়ার রচনা লিখা শেষ হতে মেম খাতা হাতে নিয়েই প্রিয়ার দিকে রাগি চোখে তাকাল, অর্ধেক বানান ভুল, প্রিয়া মাথা নিচু করে রাখল গুন্ডাটা আমার পড়ার টেবিলেও চলে আসলো অন্য ছাত্র/ছাত্রীরা প্রিয়ার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে প্রিয়া অন্য গ্রহের প্রাণী।
কারন একটাই, আজ প্রাইভেটে প্রায় প্রতিটা লেখায় প্রিয়া ভুল করছে যেটা সবার নজরে আসছে, প্রিয়া জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল সন্ধ্যা প্রায় হয়ে গেছে সূর্যি মামা বিদায় নিয়েছে আগেই যাই হোক প্রিয়া পড়াতে মন বসাল।
আরাফের মন স্থির হচ্ছে না বিল্ডিং এর কাজের দিকে খেয়াল নেই সন্ধ্যা হয়ে গেলে প্রিয়া হয়ত এই রাস্তা দিয়েই বাসায় ফিরবে, আরাফের আশার শেষ আলোটুকু নিবে গেল। মাগরিবের আজান শেষ হলো কিছুক্ষন পরেই রাতের ট্রেনে করে বাড়ি ফিরে যেতে হবে…!
আরাফ তুমি যাওনি ?
মিরার হটাৎ প্রশ্নে চমকে উঠল আরাফ, জ্বী আন্টি এক্ষনি যাব। আবার আসলে আমাদের বাসায় এসো বলেই মিরা আন্টি হাতের বাঁ পাশে রাস্তা ধরে চলে গেল হয়ত এদিকেই প্রিয়ার মেম এর বাসা।
যতদূর চোখ যায় আরাফ চেয়ে রইল নীল রংয়ের গাড়িটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ল মিরা আন্টিকে আর দেখা গেল না।
রাজমিশ্রিরা বিদায় নিয়ে চলে গেছে অনেক আগে চারপাশে নিরবতা পাখি গুলো নীড়ে ফিরেছে, বাচ্চাদের হৈ হুল্লুর নেই হয়ত পড়ার টেবিলে মন দিয়েছে।
পিচন থেকে একটা কুকুর ঘেও ঘেও করে ছুটে গেল খাবারের খোঁজে, হয়ত এতক্ষনে মিরা আন্টি প্রিয়ার কাছে চলে গেছে…!
স্টেশন মাস্টারের ফোন স্যার ট্রেন ১০ মিনিটে মধ্যে স্টেশনে পৌঁছবে আপনি চলে আসুন, আরাফ ভুলেই গিয়েছিলো স্টেশন মাস্টারকে ফোন নাম্বার দিয়ে আসছিলো ট্রেনের আসার সময় জানানোর জন্য পৃথিবীতে এখনো কিছু ভালো মানুষ আছে নুন খেযে তার ঋণ শোধ করে স্টেশন মাস্টারকে ৫০ টাকা ফ্রেক্সিলোড করে দিয়েছিলো তাই ফোন কলটা আসলো।
আজাদ সাহেব আরাফের খোঁজ নিল, জ্বী আঙ্কেল আমি স্টেশনের পথে যাচ্ছি।
সাবধানে যেও
জ্বী আঙ্কেল- সবচেয়ে দামী জিনিসটা আপনার বাড়িতে রেখে যাচ্ছি আপনিও তাকে সাবধানে রাখবেন প্লীজ আমি যে তাকে খুব ভালোবেসে ফেলছি, আস্তে করে বললো আরাফ।
আজাদ সাহেব একটু জোরে বললেন কিছু বললে নেট সমস্যার জন্য শোনতে পারি নাই,
আরাফ লজ্জিত হয়ে জ্বী না আঙ্কেল মানে আমি কিছুই বলি নাই।
ওকে সাবধানে যেও রাতের ব্যাপার, ট্রেনে ঘুমিয়ে পড়লে সমস্যা,ব্যাগ সাবধানে রেখো যদিও দুটো মোবাইল আর দু-পিচ ট্রি-সার্ট ছাড়া ব্যাগে কিছুই নেই তারপরও আঙ্কেলের উপদেশটা মেনে নিল, আচ্ছা আঙ্কেল।
বাড়িতে ফিরে একটু জানিও টেনশন করবো জ্বী আঙ্কেল,
স্যারকে আমার সালাম দিও,আর বলো আম্মা ওনাকে একবার দেখতে চেয়েছেন
জ্বী আঙ্কেল সব মনে থাকবে।
ভাগ্যিস আঙ্কেল প্রিয়ার ব্যাপারটা বুঝে নাই বেঁচে গেলাম শুনলে আমার মাথা ফাঁটাতেন…!
প্রিয়া পড়া শেষ করে মায়ের সাথে বাসায় ফিরছে রাস্তার বিদ্যুৎ নেই যান চলাচল কম, মিরা মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে হাঁটছেন। রাস্তায় উঠতেই ট্রেন হুইছেল দিল, মিরা বললো এই ট্রেনেই আরাফ চলে যাচ্ছে।
কথাটা শুনে প্রিয়ার মনটা কেঁপে উঠল আম্মু আরাফ ভাইয়া চলে গেছেন..?
হুম এই ট্রেনেই বাড়ি যাবে।
প্রিয়া কিছুটা শূণ্যতা অনুভব করলো, কি যেন নেই! মনের ভিতরটা কেঁদে উঠল। আরাফের জন্য একটু ভালোবাসা বোধ করলো কিন্তু মমকে বুঝতে দিল না।
প্রিয়া বয়সের তুলনায় অনেক বুদ্ধিমতী, খুব কম বয়সে জ্ঞানটা পরিপূর্ণ ভাবে তার মধ্যে জেগে উঠেছে। প্রিয়া দেখলো আকাশে কোন তারা নেই, মনে হয় চাঁদেরও মন খারাপ। তারারা পাশে নেই, আলো নেই বলেই প্রিয়া মায়ের পাশে হেঁটে চলল..!
আরাফ স্টেশনে পৌঁছল ট্রেনে চড়তেই সিট পেল জানালার পাশেই সুন্দরী ভদ্র মহিলা আরাফকে দাঁড়াতে দেখে সাইড হয়ে বসল…!
….চলবে।
সুরাইয়া নার্গিস আলিফ।
১৮টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অপেক্ষায় রইলাম আরাফ আর প্রিয়ার আবার কবে দেখা হবে ! ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা রইল
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল আপু।
স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্যও।
জ্বী দেখা যাক আরাফ প্রিয়া গল্পের মোড় কোনদিকে যায় আর সামনে কি চমক অপেক্ষা করছে সেটাই এখন দেখার বিষয়..!
আপনও ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন আপু।
শুভ কামনা সোনেলা ব্লগ।
ইসিয়াক
খুব ভালো লাগছে। লিখতে থাকুন সাথে আছি।শুভকামনা রইলো।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রইল ভাইয়া।
স্বাধীনত দিবসের শুভেচ্ছা, শুভ কামনা রইল।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
শুভ কামনা সোনেলা ব্লগ।
সুপায়ন বড়ুয়া
ভালো লাগলো।
নতুন চমকের অপেক্ষায় আছি
শুভ কামনা।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ দাদ আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
সত্যি আমার প্রিয়ার গল্পটা লিখতে আমারও অনেক ভালো লাগছে, জ্বী সামনে আরেকটা চমক আসতে পারে মনে হচ্ছে।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন শুভ কামনা রইল দাদা।
ফয়জুল মহী
দারুণ লেখা ,বেশ ভালো লাগলো । ভালো থাকুন।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
ভালো থাকুন আপনিও।
সাবিনা ইয়াসমিন
গল্পটা তাহলে মুল অংশে এগোচ্ছে। পারস্পরিক ভালো লাগাটা যেহেতু দুজনেই উপলব্ধি করেছে, তার মানে বিরহটাই তাদের দ্রুত গতিতে এক করে দিবে।
বেশ ভালো।
পরের পর্বের অপেক্ষা করছি, তাড়াতাড়ি লিখুন।
শুভ কামনা 🌹🌹
খুব ছোট কিছু টাইপ মিস হয়েছে। চেক করে নিন। পড়তে আরও ভালো লাগবে।
রাজমিস্ত্রী
পিছনে, এমন অল্প কয়েকটা 🙂
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
ইনশাল্লাহ্ পরবর্তীতে বিষয়টা গুলো আরো বেশি খেয়াল রাখব।
এস.জেড বাবু
বেশ জমজমাট হয়ে উঠছে গল্প।
কৈশরের অনুভূতি লিখা অনেক কিঠিন- আপনি সুন্দরভাবে সে কঠিন কাজটি করে যাচ্ছেন।
শুভকামনা রইলো পরবর্তি পর্বগুলোর জন্য
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রানীত হলাম।
ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন শুভ কামনা রইল
জিসান শা ইকরাম
গল্প মূল কাহিনীর দিকে এগোচ্ছে,
আরাফ প্রিয়ার ভালো লাগাটা খুব পবিত্র ভাবে তুলে ধরেছেন।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
খুব দ্রুত চাই পরের পর্ব।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রানীত হলাম।সব সময় লিখতে চাই অবশ্যই ভালো কিছু, আরাফ প্রিয়ার সম্পর্কটা আরো সুন্দরভাবে হবে ইনশাল্লাহ্।
ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন শুভ কামনা রইল
হালিম নজরুল
এক দিনেই দুই পর্ব পড়ে ফেললাম
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রানীত হলাম।
জেনে খুশি হলাম আমার মতো নতুনদের লেখা সবাই পড়ে সুন্দর সুন্দর মতামত জানাচ্ছে সত্যি মুগ্ধ হলাম আপনি আমার লেখাটা পড়ছেন।
ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন শুভ কামনা রইল
তৌহিদ
আরাফ এবং প্রিয়ার ভালবাসাবাসির কথা এগিয়ে যাচ্ছে। হয়তো এই বিরহই তাদের মধুর মিলনের দিকে নিয়ে যাবে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
সুরাইয়া নার্গিস
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
সত্যি আরাফ প্রিয়ার গল্পটা লিখতে আমারও অনেক ভালো লাগছে, জ্বী সামনে আরেকটা চমক আসতে পারে মনে হচ্ছে।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন শুভ কামনা রইল।