প্রথম যখন ওকে দেখি এক অন্য রকম ভালোলাগায় সিক্ত হয়েছিলাম। খুশিতে আনন্দে যেন আত্মহারা ছিলাম। বারবার তাকিয়ে দেখতাম। আমার এভাবে তাকিয়ে থাকার জন্য আমার মা প্রায়ই বলতেন, ওভাবে নাকি বারবার তাকাতে নেই। নজর লেগে যায়। তবুও দেখতাম ওর মুখটি। দেখে আনন্দ পেতাম। অন্যরকম একটি ভাল লাগা কাজ করতো। মাঝেমাঝে কাছে টেনে নিয়ে গায়ের গন্ধ শুঁকতাম। অন্যরকম এক গন্ধ। ভালোলাগার, ভালবাসার। মাঝেমাঝে চুলে ইলিবিলি কাটতাম। কোলে নিয়ে আদর করতাম, তুলতুলে গালে চুমু খেতাম। ওর হাসিমাখা মুখটি দেখলে ভেতরটা কেমন যেন করে উঠত। নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হতো। এরপর একসময় আপন মানুষটির কাছাকাছি থাকাটা বেশীদিন আর সইল না। চলে এলাম দূরে কর্মস্থলে। একমাস দুমাস পরপর দেখা হতো আমাদের। এর মধ্যে কেটে গেলো সাতটি বছর। দূরে থাকি বলে দেখাও হয় অনেকদিন পরপর। ইদানিং মনে হয় আমাদের মধ্যে কেমন যেন একটি দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আগে তো প্রায় প্রতিদিনই মোবাইলে কথা হতো আমাদের। কিন্তু এখন খুব একটা হয় না। হয়তো লজ্জা কিংবা জড়তা কাজ করে ওর ভেতর। তবে মাঝেমাঝে দুষ্টমিও যে করে না তা নয়। ম্যাসেঞ্জারে চ্যাট হয় আমাদের। কখনও ভিডিও কলেও কথা হয়। সেলফি তুলে আমাকে ইনবক্সও করে। আরও কত কি!
দেখতে না দেখতে ও বেশ বড় হয়ে গেছে। ওকে কাছে না পাবার একটা চাপা কষ্ট রয়েই গেছে। জানি না এভাবে আর কতকাল থাকতে হবে। মোবাইলে নয়, সামনাসামনি ওর মুখ থেকে ‘আব্বু’ ডাকটি শোনার চেয়ে মধুর ব্যাপার আর কি হতে পারে! আম্মু, তোকে দেখিনা অনেকদিন হল। বড্ড দেখতে ইচ্ছে করছে রে!
আমাদের সরকার জাতির জন্য চাকুরী সৃষ্টি করেনি;
ফলে, জাতির সাধরণ মানুষ বৌ বাচ্চা ফেলে প্রবাসে পাড়ি জমাচ্ছে-ইহা বেদনা দায়ক।
আপনার মনের বাসনা দ্রুত পুর্নহোক, শুভ কামনা রইলো।
প্রথম দুই লাইন পড়েই বুঝে ছিলাম সন্তানের জন্য পিতার ভালোবাসা। চমৎকার লিখেছেন ভাইয়া।
আমার কন্যা যখন এলো আমিও বার বার দেখছিলাম। আমাকেও মা বলেছিলো এতো দেখতে হয় না।
আমি প্রবাসী না। দেশেই থাকি। পরিবার আমার বাড়িতে থাকে। নারায়ণগঞ্জে। আমি আছি এখন কুমিল্লায়। এক দুবছর পরপর পোস্টিং হয় একেক জায়গায়। তবে ছুটি পাওয়া হয় না তেমন। দেড় দুমাস পরপর ছুটি পাই ৩/৪ দিনের জন্য। কখনও আরও কম।
খালাতো বোনের বাচ্চা হয়েছে, মাস পাঁচেক হলো, পিচ্চিটাকে সারাদিন আদর করতে ইচ্ছে করে, সারাদিন দেখতে ইচ্ছে করে। আর নিজের সন্তান তো আরও অভিনব, আরও আদরের।
শিশুরা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টি। মায়ায় ভরে রাখে বলেই তো ওদের এত ভালো লাগে।
আমার ভাগ্যটাই খারাপ। ওর শৈশবগুলো খুব মিস করি। বেশিদিন পাইনি দিনগুলো। চোখের অগোচরে বড় হচ্ছে। তারমধ্যে আবার একটাই সন্তান। তাও আবার কন্যা সন্তান। ওকে কাছে না পাবার যে কি কষ্ট!
১৬টি মন্তব্য
নুর হোসেন
আমাদের সরকার জাতির জন্য চাকুরী সৃষ্টি করেনি;
ফলে, জাতির সাধরণ মানুষ বৌ বাচ্চা ফেলে প্রবাসে পাড়ি জমাচ্ছে-ইহা বেদনা দায়ক।
আপনার মনের বাসনা দ্রুত পুর্নহোক, শুভ কামনা রইলো।
রুমন আশরাফ
ধন্যবাদ ভাই। আপনার প্রতিও শুভ কামনা রইলো।
সুরাইয়া পারভিন
প্রথম দুই লাইন পড়েই বুঝে ছিলাম সন্তানের জন্য পিতার ভালোবাসা। চমৎকার লিখেছেন ভাইয়া।
আমার কন্যা যখন এলো আমিও বার বার দেখছিলাম। আমাকেও মা বলেছিলো এতো দেখতে হয় না।
রুমন আশরাফ
ধন্যবাদ আপু।
তৌহিদ
সন্তানের জন্য পিতার ভালোবাসা ভাষায় লিখে বর্ণনা করা কষ্টসাধ্য। দারুন অনুভাবী লেখা।
সন্তানেরা সবাই সুখে থাকুক এটাই কাম্য।
রুমন আশরাফ
ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই। শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
বাবার ভালোলাগা এমনি। মায়ের টা সবাই বুঝতে পারে কিন্তু বাবার ভালোবাসা তার তুলনা হয়না।
রুমন আশরাফ
ঠিক বলেছেন সুপর্ণা দি।
নূর নাহার রাহিমা
চোখে পানি চলে আসলো আমার ছেলেটাকেও ওর বাবা দেখে নি এখন। প্রবাসীরা এভাবে পরিবারের জন্য খেটে যায়। তার তুলনায় আমরা তাদের জন্য কিছুই করতে পারি না
রুমন আশরাফ
আমি প্রবাসী না। দেশেই থাকি। পরিবার আমার বাড়িতে থাকে। নারায়ণগঞ্জে। আমি আছি এখন কুমিল্লায়। এক দুবছর পরপর পোস্টিং হয় একেক জায়গায়। তবে ছুটি পাওয়া হয় না তেমন। দেড় দুমাস পরপর ছুটি পাই ৩/৪ দিনের জন্য। কখনও আরও কম।
জাকিয়া জেসমিন যূথী
খালাতো বোনের বাচ্চা হয়েছে, মাস পাঁচেক হলো, পিচ্চিটাকে সারাদিন আদর করতে ইচ্ছে করে, সারাদিন দেখতে ইচ্ছে করে। আর নিজের সন্তান তো আরও অভিনব, আরও আদরের।
শিশুরা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টি। মায়ায় ভরে রাখে বলেই তো ওদের এত ভালো লাগে।
চমৎকার অনুভূতির প্রকাশ।
রুমন আশরাফ
আমার ভাগ্যটাই খারাপ। ওর শৈশবগুলো খুব মিস করি। বেশিদিন পাইনি দিনগুলো। চোখের অগোচরে বড় হচ্ছে। তারমধ্যে আবার একটাই সন্তান। তাও আবার কন্যা সন্তান। ওকে কাছে না পাবার যে কি কষ্ট!
ফজলে রাব্বী সোয়েব
দারুণ আবেগী লিখা। বাবাদের ভালবাসার কোন শেষ নেই। শুভ কামনা।
রুমন আশরাফ
ধন্যবাদ সোয়েব ভাই।
এস.জেড বাবু
দুনিয়ার প্রতিটি মেয়ের বাবা যেন এমন হয়।
অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই।
শুভকামনা রইলো এবং দোয়া।
রুমন আশরাফ
অনেক ধন্যবাদ বাবু ভাই। ভাল থাকবেন।