আপুর বাসার বারান্দা থেকে মেয়েটার বাসার বারান্দা স্পষ্ট । বাই এনি চান্স, দুর্ভাগ্যবশতও যদি প্রেম হয়ে যেতো মেয়েটার সাথে, তাহলে ‘বেল্কনিতে প্রেম’ নামের একটা জঘন্য উপন্যাস অনায়াসে লিখা যেতো ।
জঘন্য উপন্যাস এজন্য যে, মেয়েটার গলার স্বর বাজে, খুবই কর্কশ । উপন্যাসের মিনিমাম ১২ পৃষ্টা জুড়ে এই কর্কশ স্বরের বিবরন দেয়া সম্ভব । ফাঁটা বাঁশের শব্দ নিশ্চই শুনেছেন ।
টিনের চালে কাকের কা কা শব্দ শুনেও ভরদুপুরে নিশ্চিতে ৩ ঘন্টা ঘুমানো যাবে । কিন্তু এই মেয়ে যদি টানা ১০ মিনিট পাশে বসে কথা বলে উইদাউট ব্রেক, আমি শিওর যেকোনো মানুষের কান হ্যাং হয়ে কোমায় চলে যাবে ।
মানুষের শরীরের অঙ্গ কি আলাদা আলাদাভাবে কোমায় যেতে পারে?
পারে মনে হয়! নাও পারতে পারে, শিওর না!
‘প্রেম করুন,
সিঙ্গেলমুক্ত সমাজ গড়ুন ।’
তাই বলে এমন পর্দা ছেঁড়া সাউন্ড বক্সের শব্দের মতো গলার স্বর ওয়ালা মেয়ের সাথে? উহু, কোনো মতেই না, নো ওয়ে ।
মেয়েদের গলার স্বর হবে কোমল, অতিব কোমল । যেনো ৫ মিনিট মেয়েটার সাথে কথা বললে যেকোনো পুরুষ তার প্রেমে পরে যায় । প্রেমে পরে একেবারে লেজেগোবরে অবস্তা হয়ে যায় । কিন্তু এই মেয়েটার ভোকাল কর্ড অতি জোড়ালো শব্দওয়ালা ।
আমি মেয়েটাকে বলতে পারিনি, তোমার গলার স্বর খুবই মারাত্মক, অন্যের কানের জন্য ক্ষতিকর এই জোড়ালো স্বর । আস্তে কথা বলো!
সবদিক বিবেচনায় ভাব দেখিয়ে মেয়েটাকে পাত্তা দেয়া বন্ধ করে দিলাম ।
এরপর, কিছুদিন আগে আমি আপুর বাসায় বেড়াতে এসে বাইরে যাচ্ছিলাম । মেয়েটার সাথে দেখা হতেই সে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, কোথায় যাও?
আমি নিতান্তই মজা করে বললাম:
– ‘আমার পুলিশে চাকরী হয়ে গিয়েছে । আগামী মাসে জয়েন করবো ।’
এরপর আমার ভাব আরোও বেড়ে গেলো । ভাবের চোটে আর শার্টের কলার উঁচু করা ছাড়া রাস্তায় বেরুই না । হা হা
মেয়েটা তার এলাকার কিছু বান্ধবীকে জানিয়েছে আমার চাকরী হওয়ার ব্যাপারটা । আজকে দূর্ভাগ্যবসত ৫ জন বান্ধবী সহ মেয়েটার দেখা হয়ে গেলো রাস্তায় । দুজন মেয়ে আমার দেখে একসাথে বলেই ফেললো :
– ‘এই ছেলেটা পুলিশে চাকরী করে, তাইনাা?’
তাদের মুখভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছিলো, যদি আমি এখানে ধুম করে বলে বসি :
– ‘তোমাদের মধ্যে কেউ কি আমাকে বিয়ে করবে?’
তাহলে শিওর তারা ৫ জন এখানে মারামারি শুরু করে দেবে আমাকে বিয়ে করারা জন্য । যে জিতবে, সে আমার বউ হবে ।
অথচ, সরকারী চাকরী দূরে থাকুক! আমার পকেটে হাত দিকে দুই টাকার একটা নোট বেরুবে কিনা সন্দেহ আছে । মানিব্যাগ আছে, কিন্তু ব্যাগে মানি নেই । Empty ব্যাগ বলা যায়!
আহা সরকারী চাকরী, আহারে কর্কশ গলার মেয়ে! যাইহোক না কেনো, মেয়েটা এলাকার প্রায় অধিকাংশ মেয়েকে জানিয়ে দিয়েছে আমি পুলিশে চাকরী করি । এখন আপুর এলাকায় মিনিমাম ৫-৭ জন মেয়ে আমাকে নিয়ে ভাবে । রাস্তায় দেখলে দূর থেকে দুই হাত গালের কাছে নিয়ে অবাক বিশ্ময়ে তাকিয়ে বলে, ‘ছেলেটা পুলিশে জব করে ।’
আমার গোষ্টিতে কেউ পুলিশে চাকরী করেনি! সম্পূর্ণ এলাকাতেই কেউ করে বলে আমার জানা নেই । আমার এই অভীজ্ঞতা থেকে প্রচলিত একটা কথা মনে পরে আমার!
সরকারি চাকরী যার,
সুন্দরী বউ তার!
পরিশিষ্ট : সরকারী চাকরী ওয়ালা মানেই ভালো মানুষ নয় । এর কোনো মানে নেই যে, সরকারী চাকরী ওয়ালা মানুষটা তার সহধর্মিণীকে সারাজীবন আগলে রাখতে পারবে, সুখে রাখতে পারবে ! শিক্ষিত আর ধনী ফ্যামিলির মেয়েছেলেরাই বেশি ডিভোর্সি হয় । তাই ভালো মানুষ খুঁজুন । মনুষ্যত্ব খুঁজুন । একটা পরিচ্ছন্ন হৃদয় আপনাকে যা দেবে, টাকা-পয়সা কখনোই তা দিতে পারবে না !
১৪টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
সরকারী চাকুরীর জন্য যারা বেশী হায় হায় হায় করে এরা সবাই চাকুরীর বাইরের আয়ের কথা ভেবেই চাকূরীর চেষ্টা করে।
রম্যটি আরো একটু ভালো হতে পারতো।
হিমু ভাই
জ্বি, রম্য বিভাগের জন্য ঠিকঠাক নয় লিখাটি । পরেরবার থেকে নিজেকে শুধরাতে চেষ্টা করবো🌸
মোঃ মজিবর রহমান
হিমু ভাই, বানান আর কিছু বাক্য অপরিপুরন। দয়া করে ঠিক করবেন।
নিজেই আরেকবার পড়ে নিন। ভাল হবে। হা হা হা সরকারির এই অবস্থা বেসরকারি কাট আউট। করকশ গলাটা তিন মিনিটেই জান যায় অবস্থা কোথায় ককিলা পাবেন, টাকা না থাকলে সুরেলাও করকশ কন্ঠি হবেই।
হিমু ভাই
লাস্ট কথাটা ভাল বলেছেন । টাকা না থাকলে কোকিল কণ্ঠও কর্কশ মনে হবে।😐
থ্যাংকস ফর ইউর ভ্যালুয়েবল এডভাইজ । মস্তিষ্কে রাখলাম।😊
মোঃ মজিবর রহমান
ধন্যবাদ ভাই। ভাল থাকুন।
আরজু মুক্তা
তাহলে, সবাই সুন্দরি বৌ আশা করে।
আসুন সবাই মানবিক হই। কথাটা ভালো লাগছে।
চলুক গল্প লিখা!
হিমু ভাই
হ্যাঁ, সুন্দর মনের থেকে সুন্দর শরীর বেশি আকর্ষণীয় । কিন্তু ভন্ডরা বলে উল্টো কথা । ( হুমায়ুন আজাদ )
মোঃ মজিবর রহমান
কে সুন্দর অপছন্দ করে!!!!!
সকলেই পুজারি সুন্দরের, তাই নইকি??
মনির হোসেন মমি
গল্পের থিম বিচ্যুতি হলো কি না জানি না।প্রথম যে কর্কশ গলার মেয়েটির উপর বেশ জোর দিলেন শেষে এসে নিয়ে এলেন গল্পের শেষ পরিনতি মনুষত্বে। মনে হয় তাড়াহুরা ছিলো নতুবা গল্পটি আরো চমক হতে পারত। বাই দা বাই গল্পের ম্যাসেজটি এ সমাজের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।
হিমু ভাই
জ্বি দাদা, গল্পটি রম্যের জন্য পরিপূর্ণ নয়। তবে আপলোড করার পর বুঝেছি । বাই দ্যা ওয়ে, থ্যাংকস 😊
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ ভাইয়া।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
এখন পুলিশকে মেয়েরা প্রথম পছন্দে রাখে না। পুলিশের আগের সেই ইমেজ নেই।
আগে লিখুন, তারপর নিজে বেশ কয়েকবার পড়ুন, কারেকশান করুন, এডিট করুন। তারপর পোস্ট করুন। এতে লেখাটি শ্রুতিমধুর হবে।
এটা খুব একটা খারাপ হয়েছে তা বলছি না। লিখতে লিখতেই তো লেখক…..
সাবিনা ইয়াসমিন
সরকারি চাকরী করলেই বুঝি সুন্দরী বউ পাওয়া যায়!! আমিতো দেখেছি, ব্যাবসায়ী, প্রবাসী, ব্যাংকার, এমনকি মুদি দোকানদারের বউরাও মারাত্বক রকমের সুন্দরী হয়!!
হাহাহা, তবে লেখাটি ভালো লেগেছে। পর্দা ফাঁটা সাউন্ড কিন্তু খারাপ না। যার কাছে একবার ভালো লেগে যাবে, সে আর অন্যকোনো গানও শুনবে না। 😀
অন্যদের লেখাতেও যাবেন হিমু। সবাই সবার লেখায় না গেলে ব্লগে লেখার আনন্দই অর্ধেক মাটি হয়ে যাবে।
ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা অবিরত 🌹🌹
আকবর হোসেন রবিন
ভাই আরেকটু ভেবে লিখুন। পারবেন আশাকরি।