এক ছিলো রাজপুত্তুর , তার ছিলো একটা পঙ্খীরাজ ঘোড়া ।
নাহ, এইরকম গল্প অনেক হয়েছে – আজ তবে হোক সাধারন মানুষের কথা । এক ছিলো চন্দ্রগ্রস্ত অর্ধেক মানুষ, তার অর্ধেক জীবন নিয়ে সে বেচে থাকে হাসে গান গায় মাঝেমধ্যে পাগলামী করে – তাও অর্ধেক । একদিন দুইদিন করে অনেকগুলো বছর পেরিয়ে যাবার পর সে ভাবে , আর অর্ধেক কই ? কই ? কই? কই? সে খোঁজে আর খোঁজে, এতো সহজে কি আর মেলে । তাই তার কখনো হতে হয় ল্যাবরেটরির গিনিপিগ কখনো বা সিঁড়ি আবার কখনো আলাভোলা ভেবে কেউ বা ট্যিসু বানায় … সে দেখে আর হাসে কে সারা সারা
তারপর , তার অনেকদিন পর একদিন সে একটা জলাশয় দেখে থামে। সেই জলাশয়ে একটা জলের পাখি চুপচাপ একাকীত্ব পোহায়। অর্ধেক মানুষের ছায়া পরে জলে – জলের পাখির পাশাপাশি । যেহেতু অর্ধেক মানুষ , তার ভাবনাও অর্ধেক – তাই সে পাশাপাশি দুই প্রতিবিম্ব দেখে ভেবে নেয় , ছায়ারাই সত্যি। জলের গভীরতা ভাবেনা … জল পেড়িয়ে যাওয়ার কথাও না । অতঃপর , পাখীর ডানায় এসে লাগে উত্তুরে বাতাসের হিম । ঘরে ফেরবার টানে পাখী নিরুদ্দেশ অচিন উড়ালে… শুন্য জলবুকে থিরথির থিরথির কম্পন, নিস্তব্ধ উচ্চারের কথা ব্যথা সব নেই নেই এবং নেই। … সে দেখে আর হাসে কে সারা সারা
যেতে যেতে , যেতে যেতে একদিন ডাক দেয় দূর্বাদল, একদিন বেদেবহর … আরেকদিন ডেকে বলে শান্ত কুটির – এইখানে থেমে যাও দেখে যাও জীবনের মানে । যার অদৃষ্ট দিয়েছে পায়ের তলায় সর্ষে সে কেমনে থামে ? সে কেমনে শুনবে থামবার ডাক … সে কেমনে জানবে গার্হস্থ্য সুখের মানে … কে সারা সারা
এবং নিভে যাবার ঠিক আগে আগে, আলো দেখায় আরেক জীবন । অর্ধেকটা, অথচ তার অপূর্ণতা কেউ জানেনা জানে শুধু অর্ধেক জীবন। বীপরীত হাওয়ার সাথে যুঝে সে হয়েছে এতোটা উজ্জ্বল – তার উজ্জ্বলতার অন্ধকারে খেলা করে নিরুচ্চার বিষ। তাই সে বাকি অর্ধেক খোঁজে … একা একা একা একা এবং একা একা। হাওয়ার সাথেই লড়াই তার , তাই উচ্চারিত এবং নিরুচ্চার সব কিছুতেই বড় ভয়। যে বেঁচেছে তার গোটা জীবন ঘন্টা এবং মিনিটের হিসেবে সে আর হারাবে কোথায় – বোঝেনা অন্ধকার। তাই একটা সুঘ্রাণ সকালের কৌটায় বন্দী থাকে বাকি অর্ধেক … অর্ধেক জীবন। … সে দেখে আর হাসে কে সারা সারা
এক জীবন পেয়ে গেলে অর্ধেক জীবনের দামে , তাকে আগলে রাখতে হয় ; নির্ভয় ভব:
৩৮টি মন্তব্য
আবু খায়ের আনিছ
অর্ধেক জীবন! শব্দটা বড় চেনা মনে হচ্ছে।
আগুন রঙের শিমুল
হতেই পারে , আমার শব্দ ভাণ্ডার সীমিত … অধিকাংশ শব্দই আমার আগে কেউনা কেউ ব্যবহার করেছেন 🙂
আবু খায়ের আনিছ
কখনো ব্যবহার করা হয়নি এই শব্দ তবে জীবনের সাথে মিলে গেছে। সেই জন্যই বলা।
আগুন রঙের শিমুল
জীবন মোটামুটি একই ধরনের অবিচার সবার সাথেই করে তাইলে 🙂
আবু খায়ের আনিছ
হুম।
অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী, আহামেদ ছফার বইটা পড়েছেন?
আগুন রঙের শিমুল
পড়েছিলাম অনেকদিন আগে
লীলাবতী
এ কাকে দেখছি সোনেলায়? স্বপ্নে দেখছি না তো? আচ্ছা আগে একটা হাতে চিমটি দিয়ে দেখি 😀
আগুন রঙের শিমুল
ফিরা আইলাম ভত্তাবতী প্রাণের টানেই ফিরলাম 🙂
লীলাবতী
বিশেষণটা মনে রেখেছেন তাহলে?এমন প্রাণ পাবেন কোথাও ভাইয়া? ফিরে আসতেই হবে আপনাকে, বার বার আবার।কতটা ভালো লেগেছে আপনাকে দেখে লিখে বুঝাতে পারবো না।এক বছর আগের সেই সব আড্ডার দিন গুলো এখনো স্মৃতিতে উজ্জ্বল। তাকে মলিন হতে দেইনি -{@
নীতেশ বড়ুয়া
আরশি ক্কাক্কা, ভত্তাবউ নিজেই এখন ডুব দিয়া থাকে :@
লীলাবতী
ডুব দিয়ে থাকলে এখন কে মন্তব্য করছে নীতেশ ভাইয়া? 🙂
নীতেশ বড়ুয়া
মাসে একদিন ;(
নীতেশ বড়ুয়া
🙁
আগুন রঙের শিমুল
কিচ্ছে রে ব্যাটা ;?
নীতেশ বড়ুয়া
কিসসু না। ;(
এতোদিন বাদে তুম্রে এইহানে দেইক্কা অবাক হইচি।
ডীগুরে আইতে কই, মাগার আহে না ^:^
আগুন রঙের শিমুল
হেয় বিগি -_-
লীলাবতী
বাব্বাহ কি লেখা। ‘একদিন দুইদিন করে অনেকগুলো বছর পেরিয়ে যাবার পর সে ভাবে , আর অর্ধেক কই ? কই ? কই? কই?’ এমন করে খুঁজলে বাকী অর্ধেক কেন আসবেনা?
আপনার এমন লেখা হতে আমাদের বঞ্চিত করছেন,এটি এক ধরনের অপরাধ,এটি কি বুঝেন আপনি?
ভাইয়া ভালো আছেন তো আপনি ? -{@
আগুন রঙের শিমুল
হাহাহাহহা এইসব আউলফাউল লেইখা মাইন্সের মাথায় প্যাচ লাগায় দেওয়াটাই অপ্রাধ ডিয়ার ভত্তাবতী 🙂
অরুনি মায়া
ভাল লিখেছেন! সুন্দর উপস্থাপন 🙂
আগুন রঙের শিমুল
থ্যাঙ্কিউ
নীলাঞ্জনা নীলা
এ গল্প যেনো আমার মনের কথা। অর্ধেক জীবন। সেই তো পূর্ণতা কি আছে কোথাও? নিঃশ্বাস সে তো অপূর্ণ। দেয়া-নেয়ায় একটু কম-বেশী হয়ে গেলেই শেষ। বৃক্ষ নেই, মানুষ নেই।
অনুভব করছি প্রতিটি শব্দ। মনটা কেড়ে নিলো লেখাটি। অক্ষরের এতো জৌলুষ দেখিনি আগে। অথচ ব্যবহার করেছি কতো, শব্দের এমন প্রাচুর্য বহুদিন পরে পেলাম মনের মতো করে। (y) -{@
আরোও লিখুন।
আগুন রঙের শিমুল
আমার আপনার আমাদের সবারই জীবন মোটাদাগে একইরকম 🙂 কত অপূর্ণতা নিয়ে বাচি … তবুও বেঁচেই থাকি ,তাইনা
ধন্যবাদ পড়া আর সুন্দর মন্তব্যের জন্য
শুন্য শুন্যালয়
এ কাকে দেখি? রিসেন্ট মেমোরী লস? ভুল করে আগের পথে চলে আসা? কি করেছি আমরা ভাইয়া?
রাগ থাকলে লিখে আমাদের এক হাত নিন, তবু চলে যাওয়া কেন? জানি কতো অজুহাত দেবেন, কিছু বলবো না।
লেখা নিয়ে কি বলবো? সব বলা হয়ে গেছে।
শুন্য জলবুকে থিরথির থিরথির কম্পন, নিস্তব্ধ উচ্চারের কথা ব্যথা সব নেই নেই এবং নেই। অর্ধেক মানুষের ভাবনা অর্ধেকই হবে। নেই কি? আছে আছে আছে।
শেষ লাইনটা ছুঁয়ে গেলো। এক জীবন পেয়ে গেলে অর্ধেক জীবনের দামে , তাকে আগলে রাখতে হয় ; নির্ভয় ভব: ঠিক। আগলে রাখতে হয় সম্পর্ক, স্নেহে ভালোবাসায়। তবে অর্ধেক জীবন যতটা এর মূল্য বোঝে, এক জীবন তা বোঝেনা।
অসাধারন।
আগুন রঙের শিমুল
রাগ টাগ নাই শূন্য , আসলে কিছুতেই কিছু যায় আসেনা । তারওপর কথা দিতে হইসিলো আর ব্লগিং করমু না 🙁 ইউ নো আমরা মানুষেরা কথা দেইই কথা না রাখবার জন্যই 🙂
ব্লগার সজীব
কত মিস করি আপনার এমন লেখাকে জানেন আপনি? এমন লেখা একজনই লেখেন সোনেলাতে, তিনি হলেন আপনি।
আগুন রঙের শিমুল
লাভ ইউ ব্রাদার 🙂
জিসান শা ইকরাম
অনেক দিন পর সেইরকম লেখা আবার পড়লাম
এটা ব্লগিং না ভাবলেই হয়, লেখা শেয়ার সবার সাথে
আর কথা বলা ……… আড্ডা দেয়া।
আমরা তো এমনই করি সোনেলায়…… বলগাই না 🙂
শুভকামনা।
আগুন রঙের শিমুল
এইটা ভালো বলছেন দাদা , আছি কিছুদিন দেশে ফ্রীই আছি আশা করি নিয়মিত হাজিরা দিতে পারবো 🙂
জিসান শা ইকরাম
দেশে নাকি ? আরে জানিই তো না।
ফেবুতে খুব অনিয়মিত এখন …… অনেক কিছুই অজানা থাকে আজকাল।
আগুন রঙের শিমুল
হ দাদা 🙂
মেহেরী তাজ
যাক আমাদের এই অর্ধেক জীবনে আপনাকে আবার পেয়েছি তাতেই খুশি। তবে পরের বার কি হবে ঠিক জানি না। অনেক ব্রেক দিয়েছেন। এবার সোনেলায় পার্মানেন্ট হয়ে যান। ভালো থাকুন। 🙂
আগুন রঙের শিমুল
থ্যাঙ্কিউ মেহেরীন , সোনেলায় আসলে ভাল্লাগে জাস্ট ফিলিং হোমলি 🙂
ছাইরাছ হেলাল
কথা দেই তা না রাখার জন্যই, এর তাতেই পেয়ে যাই হারানো ধন,
মূল্য অমূল্যের হিসাবহীনতায়।
অর্ধেক জীবনের সামান্য সময়ে আবার দেখা হোল তাই বা কম কিসে!!
লেখা নিয়ে নূতন করে আর কী লিখব!!
ভালো কাটুক সামান্যের সামান্য সময়টুকু এ কামনাই করি।
আগুন রঙের শিমুল
হু, ঘড়িহীন ভালোবাসার সময় 🙂
মনে রাখার জন্য ধন্যবাদ ভাই
স্বপ্ন
কয়েকবার পড়লাম লেখাটি। কত যে ভালো লাগলো বুঝিয়ে লিখতে পারবো না। শব্দকে কিভাবে রঙ দিতে হয় জানেন আপনি ভাইয়া।
আগুন রঙের শিমুল
ধন্যবাদ স্বপ্ন, সত্যিই যদি পারতাম ভাবনার রঙ শব্দে বন্ধে তুলে দিতে 🙂
মিথুন
অদ্ভূত সুন্দর একটি লেখা। শিমূল ফুল কৌটাবন্দী হয়ে গেছে 🙂
শেষ লাইনটা সবার উপলব্ধি করা উচিৎ……… দারুন (y)
আগুন রঙের শিমুল
🙂