
তার সাথে দেখা হয়েছিল প্রমত্ত নদীর মৃত্যুর দিনে,
সে বহুকাল হয় বহুদূরে বিলীয়মান ছায়াপথে থাকে!
অথচ এখনো আমি দিব্যি বেঁচে আছি শূন্যে!
মাঝে মাঝে গর্জন করে মস্তিষ্কের বিক্ষুব্ধ টাইটান,
দু চারটা ফাটল বয়ে আনে লোহিত লাভায় তীব্র টান!
তখন কিছুক্ষণ জ্যান্ত ফুল হয়ে বসে থাকি নির্ভুল,
মেঘেরাও জেনেছে ফেসবুকের কল্যাণে-
আত্মার আরেক নাম আগুনের মতো দগদগে ফুল!
হয়তো সেও ছিল তাদের মতো প্লাবনের কোন মেঘ,
আগুন নেভাতে এসে ছড়িয়ে দিত মায়াময় আবেগ!
কয়েক লক্ষ বছর তোমার পাশেই আছি অবন্তিকা,
এরই মাঝে কয়েকবার দাবানলে পুড়ে গেলে সাগর,
কাছিমের দীর্ঘশ্বাসে হয়তো হয়নি দেখা!
নিশীথের দিনে বলেছিলে স্মিত হেসে-
তুমিও এক জ্যান্ত নীহারিকা!
তারপর খুঁজেছি কতো চাঁদের অভিকর্ষহীন খাদে,
নেপচুনের অতল সাগরে, শনির বলয়ে খুটেখুটে,
অথচ কয়েকশ বছর ধরে বসে আছো পৃথিবীর ছাদে,
কতো পাশাপাশি তবু হবেনা ছোঁয়া আর কোনদিন
এতো কাছাকাছি তবু আটকেছি তুমিহীনতার ফাঁদে!
একটি পাতা, দুইটি পাতা, পাতার মাঝে ছোট্ট ফুল,
বিশাল মাঠে ঝড় উঠলেই সবাই বলে প্রেমের ভুল!
বিশাল দেয়াল কান্না মুছে, গহীন বনের হদিস কই,
জল কি জানে মেঘের কথা, মেঘ ঠিক তার কে হয়!
তেমনি তুমি পাতার ফাঁকে ফুলের মতো গাঢ় মায়া,
ও প্রেম তুমি ভুলভুলাইয়া! ও প্রেম তুমিই অবন্তিকা,
আছো লুকানো পাতায়, কাজল চোখের খাতায়,
খাতায় লেখা হিজিবিজি! তবুও অবন্তিকাকেই খুঁজি,
হয়তো প্রেম ভুলেরই নদী, আমি এক পাগলা মাঝি!
ওরা বলে তোমাকে সেদিন সিনডেরেলার মতো লাগছিল,
ওই যে যেদিন ভিক্টোরিয়ান প্রাসাদের ভিতর হেঁটে গেলে
পিছনে সমুদ্রের মতো ফেনা ছড়ালো শুভ্র জল!
কেউ কেউ বলে তুমি স্বর্গের মধ্যিখানে আছ,
আবার কেউ কেউ বলে নরকের গরম নাকি গ্রাস করেছে,
যদিও আমার তেমন কিছুই যায় আসেনা তাতে!
আমিতো চৌচির হয়ে স্রেফ গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন হয়েছি এখন,
তবু উঁকি দিলে দেখি বুকের ভিতর,
কেবল অসংখ্য তোমার জন্মের নাটক,
এক তুমি, বহু তুমি, স্মৃতিতে তোমার অসংখ্য প্রতিরূপ!
আকৈশোর উড়ালাম কতো প্রেম! মায়া মাখা ঘুড়ি,
কিছু তার নিয়ে নিল ঝড়, কিছু হলো কাটাকুটি!
কিছু প্রেম কিনল আকাশ! তাতে ছায়া দিল বটগাছ,
কচুপাতা থেকে পিছলালো জল! মরে গেল বিকাল!
অথচ যখন হাত পেতে প্রেম চেয়েছিল অবন্তিকা,
তখন মাটির ব্যাংকে খুব বেশি আর জমা ছিলনা,
হয়তো পুরুষ নারীকে সবটুকু প্রেম দিতে জানেনা,
সংগঠিত দুঃস্বপ্নের মতো এই কড়াল কার্পণ্য এক,
চাইলেও সবটুকু দেয়া যায়না, অলঙ্ঘনীয় এই সীমা,
হয়তো প্রতিটি দেবীই উত্তাল রোদে হন সর্বংসহা!
ছবি ক্রেডিট@ সৌবর্ণ বাঁধন
১৩টি মন্তব্য
আরজু মুক্তা
সব কবিতা অসাধারণ। তবে, ওরা বলে তোমাকে সেদিন সিনড্রেলার মতো লাগছিলো। ঐটা বেশি সুন্দর।
শুভ সকাল।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ জানবেন। সিনডেরেলা আমার প্রিয় একটা চরিত্র। অনেক সময় চলে আসে সে উপমায় রূপকে।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
শেষাংশ টুকু খুব ভালো লেগেছে। ইস কতো সুন্দর করে লিখো আবার ছবিগুলো ও অসাধারণ হয়েছে। ভালো থেকো, সাবধানে থেকো
সৌবর্ণ বাঁধন
দিদি অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা সতত।
রিতু জাহান
কাছিমের দীর্ঘশ্বাস আছে বৈ কি!
শক্ত খোলসে আটকে থাকে সকল দীর্ঘশ্বাস এর ওঠা নামা।
অবন্তিকা বড় ভাগ্যবতী কয়েক লক্ষ বছর তার পাশে আছে এমন প্রেম।
সবগুলোই দারুন।
সৌবর্ণ বাঁধন
আমার কাছে মনে হয় মহাবিশ্বে সমস্ত কিছুর দীর্ঘশ্বাস আছে। মৃত নক্ষত্র থেকে উন্মাদ সুনামির। সভ্যতার শুরু থেকে শেষ প্রেম থাকবে হয়তো। হোক তা লক্ষ বছর! অনেক ধন্যবাদ জানবেন।
স্বপ্নীল মেঘ
‘অবন্তিকা’ আমার প্রিয় নাম।
এ নামে আমিও কবিতা লিখেছি কিন্তু আপনার মতোন এতো সুন্দর নাহ।
শেষ করতে ইচ্ছে করেনা। কতো সুন্দর লিখেন আপনি ঠিক অবন্তিকার সৌন্দর্যেের মতোন।
ভালো থাকুন। আরাও লিখুন।
সৌবর্ণ বাঁধন
আচ্ছা। আপনার অবন্তিকার জন্য শুভেচ্ছা। শুভকামনা।
হালিমা আক্তার
বাহ্! হয়তো পুরুষ নারীকে সবটুকু প্রেম দিতে জানে না।
যেমন কবিতা তেমন ছবি। সবগুলো ছবি সবগুলো কবিতাই চমৎকার অসাধারণ। শুভ কামনা অবিরাম।
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ জানবেন ব্লগার।
সাবিনা ইয়াসমিন
আপনার লেখা মানেই অন্যকিছু। আবিষ্টমনে শুধু পড়ে যেতে হয়। কখনো পড়া শেষেও গুম হয়ে যেতে হয় কবিতার ভাঁজে।
কিন্তু এবার, পড়বো কি! ছবি আর ছবি দেখি।
একেকটা ছবিতে যেনো হাজারো শব্দের কাব্য লেখা আছে।
নিজের তোলা ছবি আর কবিতার সমন্বয়ে চমৎকার ছবিব্লগ দিলেন। ( ছবিব্লগ বিভাগ আছে)
শুভ কামনা 🌹🌹
সৌবর্ণ বাঁধন
অনেক ধন্যবাদ জানবেন আপু। সবসময় উৎসাহ দেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা।
ফারজানা আক্তার
অনেক সুন্দর,এ যেন গভীর প্রণয়।ডুব দেওয়া সাগরের একটুকু জল।